সন্ধ্যায় ফ্যামিলি গার্ডেনে কিছু মুহূর্ত
09-04-2024
২৬ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। আমি বলতে গেলে আজকে জার্নি করে ক্লান্ত ভীষণ। আজকের জার্নিটা খুবই কষ্ট হয়েছে আসলে। এতো জ্যাম আমি জীবনেও দেখি নাই। যাক, এ বিষয়ে পরে লিখবো। আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে গতকাল সন্ধ্যায় ফ্যামিলি গার্ডেনে কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। আসলে গতকাল আপুর বাসায় গিয়েছিলাম। আপুর বাসা গেন্ডারিয়াতে। আমি থাকি জয়দেবপুর এ। সেখান থেকে আবার ট্রেনে করে কাছে। কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া বাইকে বা রিকশা করে যেতে হয়। তো আপুর বাসায় যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। রোজা রেখে খুবই টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম আসলে। সারাদিন রোজা তার উপর তাপমাত্রাও বেশি ছিল। বাসায় আসার পর আমার ভাগ্নী মাওয়ার দুষ্টুমিতে আমি একদম অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে আমি যখনই আপুর বাসায় যায় আমাকে ধরে নিয়ে চলে যায় দোকানে। ওর মন মতো সবকিছু কিনে দিতে হবে। যেটা বলবে সেটাই।
না দিলে ডিরেক্ট কান্না! আসলে বাসায় থেকে বোরিং হয়ে যায়। ঢাকা শহরের মানুষগুলো দেয়ালের ভিতরে কেমনে থাকে সেটাই বুঝি না। আমি আপুর বাসায় দুদিনের বেশি থাকতে পারি না। খুবই কষ্ট লাগে আমার কাছে। চারিদিকে শুধু বিল্ডিং! দম ফেলার জায়গা নেই। তার উপর খোলামেলা পরিবেশও নেই! গতকাল সন্ধ্যায় মাওয়া বলতেছিল দোকানে নিয়ে যেতে। কি আর করার আমার পকেট যে ফাকাঁ করে ছাড়বে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। তো মাওয়াকে নিয়ে চলে গেলাম প্রথমে ফ্যামিলি গার্ডেনে। সেখানে এর আগেও গিয়েছিলাম। মূলত মাওয়ার জন্য জামা কাপড় কেনার জন্য। বিশেষ করে এখানকার দোকানগুলোতে ছোট বাচ্চাদের কিউট কিউট জামা পাওয়া যায়। তাছাড়া কসমেটিক্স এর দোকানও রয়েছে।
ফ্যামিলি গার্ডেনকে অনেকেই আবার ফুলদানি গার্ডেন বলেই চিনে। তো সেখানে যেতেই দেখলাম নানা রকমের আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ভিতরের স্পেসটাও বড় করা হয়েছে। ভিতরে কয়েকরঙের বাতি সেট করা হয়েছে। এজন্য সন্ধ্যায় দেখতেও চমৎকার লাগছিল। তো মাওয়াকে সেখানে নিয়ে যেতেই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। আসলে বাসার ভিতর থেকে ওরও বোরিং লাগছিল। কারণ শেষ সম্ভল মোবাইলটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এজন্য বের হয়েই দৌড়াদৌড়ি করতেছিল। আমি মনে করি বাচ্চাদের মাঝে কোথাও ঘুরতে নিয়ে গেলে ভালো। তাদের মানসিক বিকাশের জন্য কোথাও ঘুরা জরুরি। মাওয়া আমাকে দেখাচ্ছিল ভিন্ন ভিন্ন রঙের ল্যাম্পগুলো। সে বললো তার যেন ছবি তুলে দেয়। আমি তখন মাওয়ার কয়েকটা ছবি তুলে দিলাম।
এদিকে দেখলাম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভালোই ভীড় মানুষের। বলতে গেলে আশেপাশের বাসার কোনো ছোটখাটো মার্কেট করার দরকার হলে এখানে এসে পরে। তাছাড়া বড় কোনো মার্কেট করার প্রয়োজন হলে জুরাইন মার্কেট রয়েছে সেখানেই চলে যায়। সেখানে মানুষের উপচে ভরা ভীড় সবসময় থাকে।
ফ্যামিলি গার্ডেনের ভিতর একটা রেস্টুরেন্ট রয়েছে। যেহেতু রোজার সময় তাই অনেক আইটেম আপাতত বন্ধ ছিল। হালিম, লাচ্ছি ,বিরিয়ানী, ফ্রাই চিকেন, কফি এগুলো এভেইলেবল ছিল। সারাদিন বলতে গেলে খুব গরম গিয়েছিল। তাই আমি আর মাওয়ার জন্য দুইটা আইস লাচ্ছি অর্ডার করেছিলাম। আইস লাচ্ছি খেয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে পরেছিলাম। তারপর মাওয়া বললো দোকানগুলো ঘুরে দেখবে। তাকে কসমেটিক্স এর দোকানগুলো দেখালাম। তবে সমস্যা হলো যখন কসমেটিক্স এর দোকানে নিয়ে গেলাম মাওয়ার মেকআপ বক্স চয়েস হয়ে গেল! আর সেটার জন্য কান্না শুরু করে দিয়েছিল! বাসায় অলরেডি দুইটা মেকআপ বক্স ছিল। আরেকটা নেয়ার জন্য সে কান্না শুরু করে দিয়েছিল। আসলে বাচ্চাদের মাঝে মাঝে কিছু মিথ্যা বলতে হয়। যাতে অন্তত কান্না থামায়! আর বাচ্চাদের মার্কেটে নিয়ে গেলে যেটা পছন্দ হয় সেটাই কিনে দিতে বলে।
আমি তখন বললাম মেকআপ বক্স না কিনে খাবার কিছু কিনে দেয়। তবে সে বললো তার যতগুলো খাবার পছন্দ হবে ততগুলোই কিনে দিতে হবে! তবে কিছু পছন্দ করেনি। একটা বার্গার, দুইটা চাম্প চপ, একটা বিগ ললিপপ, একটা আইসক্রিম আরেকটা ক্রিন্জ চিপস! মোটামোটি চার পাচঁশ টাকা খরচা হয়ে গিয়েছিল আমার! তবে কান্না যে থামাইছিল এটাই অনেক। তারপর আরও কিছুক্ষণ সেখানে ঘুরে মাওয়াকে নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Gandaria, Dhaka |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফ্যামিলি গার্ডেন এর ভিতরে রেস্টুরেন্টটি বেশ সুন্দর ছিল। ওখানকার পরিবেশটা বেশ শান্তশিষ্ট। ছোট্ট একটা মার্কেটে এত সুন্দর জিনিসপত্র বা ভালই তো। অতিরিক্ত গরমের জন্য আইস লাচ্চি অর্ডার করেছেন। ভালো করেছেন। কসমেটিকসের দোকানগুলো বেশ আকর্ষণীয় এবং ছোট বাচ্চাদের ড্রেস গুলো বেশ সুন্দর ছিল।
আসলেই ভাই দোকানগুলো ভালো ছিল। ছোট পরিসরে ভালো একটা মার্কেট।
মাওয়া মেকআপ বক্স চয়েস করলো, মাওয়ার অলরেডি দুইটা মেকআপ বক্স বাড়িতে আছে ।মেকআপ বক্স কিনে না দেওয়ার কারণে মাওয়া কান্না শুরু করে। তখন আপনি তাকে বুঝান মেকআপ বক্স না কিনে দিয়ে খাবার কিনে দিবেন । বাচ্চাদের কোথাও নিয়ে গেলে এমনি বায়না করে ভাইয়া ফ্যামিলি গার্ডেনের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মেকআপ বক্স ছিল এজন্য কিনে দেয়নি আপু । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
এখনকার বাচ্চাদেরকে থামানো যায় না উল্টো নিজেদেরকে থামিয়ে তাদের কথাগুলো মেনে নিতে হয়। এমন ধরনের বায়না ধরে কিনে না দিয়ে কোন উপায় থাকে না। হাজারটা থাকলেও তাদের কেনার শেষ নেই নিতে চাই। এমন কর্মকান্ড শুরু করে কিনে না দিয়ে উপায় থাকে না। ভাগ্নিকে নিয়ে ফ্যামিলি গার্ডেনে গেলেন ভালো লাগলো। আসলে বাচ্চাদেরকে কিনে দিতে পারলে নিজেদেরও ভালো লাগে।
এটা ঠিক আপু, বাচ্চাদেরকে কিছু কিনে দিলে নিজেদেরও ভালো লাগে আসলে।
এখনকার বাচ্চারা খুবই আপডেট। তারা সবকিছুই বুঝতে পারে। তাই কোনো কিছু পছন্দ করলে কিনে দিতে হবেই। নয়তো কান্না থামানোর কোনো উপায় নেই। যাইহোক সন্ধ্যায় আপনার ভাগ্নি মাওয়াকে নিয়ে ফ্যামিলি গার্ডেনে গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন ভাই। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই ভাইয়া, এখনকার বাচ্চাদের যেটা চাই সেটা না কিনে দিলেই কান্না শুরু করে দেয়।