দশদিন
30-12-22
১৬ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় সবাই ভালো আছেন! শীতের সময়টা উপভোগ করছেন। তবে শীতে ঠান্ডার পরিমাণটাও বেড়ে গেছে। এর প্রভাবটাও গ্রামে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো শীতকে উপেক্ষা করেই চলে যায় কাজ করতে! গ্রামে আসলে এ দৃশ্যগুলো আপনার চোখে পড়বে। যায়হোক, আপনারা হয়তো জানেন যে, আমি ইউনাইটেড আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টে গত তিনমাস ধরে ইন্টার্নিতে আছি! এখন প্রায় শেষের দিকে। আমরা শুরুতে একটি বাসা নিয়েছিলাম তিসমাসের কথা বলে। বাসার মালিক আমাদের বলে দিয়েছিল যেন এই মাসের ২৯ তারিখে বাসা ছেড়ে দেয়! আর আমরা কয়জন যারা বাসায় থাকতাম তারা জানতাম ইন্টার্নি ১ তারিখে শেষ হবে! কিন্তু ঝামেলাটা হলো সেখানেই। কলেজের নোটিশ অনুযায়ী জানুয়ারীর ১০ তারিখ পর্যন্ত ক্লাস করাবে। পড়ে গেলাম আরেক বিপদে!
বাড়ি থেকে এসে ইন্টার্নি করা পসিবল না কোনোভাবেই! আর দশদিনের জন্য কেউই বাসা ভাড়া দিবে না। আর আমি প্লেন করে রেখেছিলাম ১ তারিখ শেষ হলে সোজা গাজীপুর চলে যাবো। কিন্তু তা আর হবে না। গাজীপুরে বাসা ঠিক করে রেখেছিলাম! দেড়িতে গেলে বাসাটাও মিস হবে। আর এদিকে আমাদের বলা হলো, আমাদের ভাইবা নেয়া হবে। ভাইবার উপর ডিপেন্ড করে মার্কস দেয়া হবে। এখান থেকে ১৫০ নাম্বার স্যারদের কাছে বাকি ১৫০ কলেজ থেকে দিবে। কিন্তু আমরা চারজন বাসা নিয়ে থাকতাম। আমাদের চারজনের বাসায় ময়মনসিংহ জেলাতে। সেখান থেকে আসাটাও কষ্টকর! আর দশদিনের জন্য মিস দিয়ে লাভ আছে! ইতোমধ্যে শুনেছিলাম, আমাদের কয়েকজন ফ্রেন্ড পাওয়ার প্লান্টের কোয়ার্টারে থাকে। কোনো ভাড়া দিতে হয় না। শুধু খাওয়ার খরচটা দিতে হয়। তারা কয়েকজন শুরু থেকেই উঠেছে। কিন্তু আমাদের চারজনকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। আমরা পরে বাধ্য হয়ে স্যারকে বলেছিলাম, আমাদের বাসা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টা!
কোয়ার্টার বিষয়ে সব দায়িত্ব থাকে একাউন্ট এন্ড এডমিন স্যারের কাছে। শুনেছিলাম আগে যারা কোয়ার্টারে উঠেছিল তারা এডমিন স্যারের সাথে কথা বলেই উঠেছিল। আমরা যেহেতু আগেই বাসা নিয়ে নিয়েছিলাম। তাই আর বিষয়টা এতো গুরুত্ব দেয় নি। আর বাসা চেইঞ্জ করাও ঝামেলার একটা কাজ। কিন্তু বিপদে পড়লে সবকিছুই সম্ভব! এডমিন স্যারের সাথে কথা বলে জানতে পারি কোয়ার্টারের একটি রুম খালি আছে। আমরা চারজনই উঠতে পারবো। আমাদের চারজনের মধ্যে দুইজন আবার আর করবে না ক্লাস। তারা এতোটা গুরুত্বও দেয় নি। ঢাকা চলে যাবে দুজন। শুধু ভাইবা এসে দিবে। আমি আর আরেক ফ্রেন্ড মিলে কোয়ার্টারে উঠার প্লেন করলাম। আসলে এই তিনমাসে অনেক কিছু শিখেছি। আমার মনে হয় না এতো স্বাধীনভাবে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের শেখাবে। সব থেকে ভালো লাগে প্লান্টের ডিসিপ্লিন। পুরো সিস্টেমটা শৃঙ্খলার মধ্যে পরিচালিত হয়।
একজন ডিপ্লোমার স্টুডেন্ট হিসেবে আমি মনে করি, কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু এখানে সবকিছু বেদ্যুতিক কাজ বেশি। একটু ভুলের জন্য অনেক বড় ঝামেলা হয়ে যেতে পারে। এজন্য সবকিছু প্রপার ডিসিশন নিয়ে করতে হবে। বাংলাদেশের পাওয়ার প্লান্ট সেক্টরটা বিশাল! গ্যাস হওয়ার কারণে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন তেমনভাবে হচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশের বেশিরভাগ পাওয়ার প্লান্টের প্রধান কাচাঁমাল হচ্ছে গ্যাস। গ্যাস স্বল্পতার কারণে উৎপাদনও ব্যাহত। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতেও ব্যর্থ। শীতকালে ডিমান্ড একটু কমে অবশ্য। তবে ইন্ডাস্ট্রিগুলাতে আবার ফুল ডিমান্ড থাকে। যায়হোক, আর মাত্র কয়েকদিন ইন্টার্নি বাকি। শেষটা যদি ভালো না হয় তাহলে লাভ নেই। কথায় আছে না, "শেষ ভালো যার, সব ভালো তার!" তাই শেষটা সুন্দর হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
গত বুধবারে চলে গেলাম কোয়ার্টারে! কোয়ার্টারে পরিবেশ দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগলো। এ কয়টা দিন তাহলে আরামছে থাকা যাবে। তবে যে রুমে উঠেছি সেটা পরিষ্কার করতে হয়েছিল। নয়তলায় কোয়ার্টার অবস্থিত ছিল। স্যার সবাই দশতলায় থাকে। যায়হোক, সবকিছু ঘুছিয়ে নিলাম। আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড উঠেছিলাম। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ! কিছুটা ভালো লাগছিল আবার খারাপও লাগছিল। কারণ তিনমাস একটি বাসায় থেকেছি। ঐ বাসায় একটা ভালো লাগা শুরু হয়েছে। বাড়ির মতো চলাফেরা করেছি। আর হয়তো সে বাসায় যাওয়া হবে না। আর এখানেই আছি দশদিন। তারপর আবার নতুন ঠিকানায় চলে যেতে হবে। এভাবেই তো জীবন চলে যায়। আপন মানুষজন ছেড়ে মাঝে মাঝে অনেকদূরে থাকতে হয়। যদিও সেটা কষ্টের তবুও পারতে হয় আমাদের। যে পরিবেশেই আপনি যান না কেন, সে পরিবেশের সাথে থাকার কারণে আপনার একসময় ভালো লাগা শুরু করবে। প্রথমে অবশ্য মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হয়।
যায়হোক, জীবন সুন্দর! আপনি যে পরিবেশেই যান না কেন! যদি আপনি উপভোগ করতে পারেন। আর বেশি কথা বাড়ালাম না। আপনাদের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মনে হচ্ছে একটি বড় সমস্যার মধ্যে এগিয়েছেন কারণ এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়ার পরে মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হয়। কিন্তু দু একদিন থাকার পর সবকিছুই ঠিক হয়ে যায়।মনে হয় এখন যেই জায়গায় উঠেছেন আপনি এবং আপনার ওই ফ্রেন্ড সেই জায়গাটি অনেক সুন্দর। আপনার এই দশ দিন যেন খুবই আনন্দে এবং ভালোভাবে কাটে সেই কামনা করি। সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
জি আপু! প্রথম প্রথম একটু খারাপ লাগে। তবে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়া যায় কদিন পর ৃ
একেবারে কনফার্ম না হয়ে আপনাদের আগে বাসা ছেড়ে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। আর এদিকে বাড়িওয়ালার ওতো কিছু করার নেই কারণ সে অন্য জায়গায় নিশ্চয়ই ভাড়ার ব্যাপারে কথা বলে ফেলেছে। আপনার বন্ধুরাই বা কেমন ওরা প্রথম থেকে কোয়ার্টারে থাকে অথচ আপনাদেরকে জানায়নি। যাক শেষ পর্যন্ত আপনারা দশ দিনের জন্য উঠতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। এটা ঠিক বলেছেন এতদিন কষ্ট করে শেখার করে শেষটা যদি ভালো না হয় তাহলে কোন কিছুই ভালো মত হয় না। আশা রাখছি শেষ পর্যন্ত সুন্দরভাবে সবকিছু কমপ্লিট করে ফিরতে পারবেন। আর কাজের তাগিদে মানুষকে যে কোথায় কখন পরিবার-পরিজন ছেড়ে থাকতে হয় তার কোন ঠিক নেই।
আমার বন্ধুরা আসলেই স্বার্থপর আপু! এটা বললেও ভুল হবে না। দুনিয়াটাই আপু স্বার্থপর। এখানে কেউ কারো ভালো দেখতে পারে না
আপনি যেহেতু বরাবর ৩ মাসের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তাই আপনাকে বাড়তি দশ দিন থাকার জন্য দেয়নি ওনারা। এখন তো দেখছি খুবই ভালো একটি জায়গায় উঠেছেন।বিভিন্ন জায়গা পরিবর্তন করতে আমার একেবারেই পছন্দ না। একবার এখানে যেতে একবার ওখানে যেতে এটা ভালো লাগেনা। কোয়ার্টারের খুবই ভালো একটি রুম পেয়েছেন আপনারা দুই বন্ধু মনে হয়। এই দশ দিন খুবই ভালো করে সময় কাটবে আপনাদের। এই দশ দিনও কিন্তু আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া শেষ দশদিন অন্তত একটু আরামে থাকা যাবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
কবিগনেরা হয়তো সেজন্যই একটা বাক্য সব সময় বলতেন সেটা হচ্ছে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। আসলে কোন কাজ করতে গেলে সেটা নিয়ে কিছুটা ভাবেই করা দরকার তাহলে ভবিষ্যতে কি ধরনের সমস্যা আসতে পারে সে ব্যাপারে ধারণা লাভ করা যায় । আসলে বর্তমান সময়ে শহরের বুকে সবথেকে লাঞ্ছিত হচ্ছে ব্যাচেলরেরা। একটু এদিকে ওদিকে হলেই তাদের সমস্যার ঠিক থাকে না নানান রকম সমস্যা এসে হাজির হয় আপনার ক্ষেত্রেও দেখছি সেটাই ঘটেছে। আসলে বাসা পরিবর্তন করে অন্য বাসায় যাওয়াটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তবুও দশ দিনের জন্য থাকার একটা জায়গা পেয়েছেন এটা জেনে খুবই খুশি হলাম। সর্বশেষে সময়টা ভালো কাটবে বলে মনে হচ্ছে।
ভাই কিছু স্বার্থপর মানুষের জন্য তিন মাস কষ্ট করতে হয়েছে! তবে আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া!
কিছু স্বার্থপর মানুষ সবসময়ই আশেপাশে থাকবে, তারা সবসময়ই অন্যদের থেকে বেশি সুবিধা ভোগ করতে থাকে। তাই চোখ এবং কান খোলা রেখে এগিয়ে যেতে হবে। দেখুন শুরুতেই যদি বিষয়টি বুঝতে পারতেন এবং ওই কোয়ার্টারে উঠতে পারতেন তাহলে আপনাদের তিন মাসের ঘর ভাড়া বেঁচে যেত এবং বেশ সুশৃংখল একটি পরিবেশে থাকতে পারতেন। যাক শেষ পর্যন্তও সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন এবং ওই কোয়ার্টারে উঠতে পেরেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার পরবর্তী জীবনের ধাপগুলো সুন্দর হোক এই কামনা করছি।
জি ভাইয়া। স্বার্থপর মানুষ থাকবেই! সবসময় তারা শুধু নিজেরটা বড় মনে করে! খারাপ লাগে মাঝে মাঝে অনেক