নৌকা দিয়ে নদী পাড়!
01-12-2022
১৭ অগ্রহায়ণ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। গতকাল রাতে আর্জেন্টিনা বনাম পোল্যান্ড এর খেলাটা অনেক উপভোগ করেছেন! খেলাটা খুব ভালো লেগেছিল। তবে পোল্যান্ড এর খেলা দেখে মনে হয়েছিল, গোলকিপার বাদে কারো যেন জোর নেই! গোলকিপার একাই কয়েকটা সেভ দিল। আর্জেন্টিনা শুরু থেকেই এটাকিং খেলতেছিল। পোল্যান্ড এর কাছে খুব কম গেছে। যায়হোক, খেলা দেখে গভীর রাতে ঘুমিয়েছিলাম। আর সকালে কাজ নেই তাড়াতাড়ি সকালে ঘুমটাও বেশি হবে। কারণটা বলছি।
আপনারা হয়তো জানেন যে, আমি আশুগঞ্জ এ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করছি। আর আশুগঞ্জ যেতে হলে সেতু পার হয়ে যেতে হয়। মাঝে মেঘনা নদী । নদীটা আবার দুটি এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর এপা-ওপারের মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করে দিয়েছে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত প্রায় ৯৮৪ মি লম্বা সেতুটি। সেতুটি ইউকে বাংলাদেশ ব্রিজ নামেও পরিচিত। তবে আমি মেঘনা সেতু নামেই চিনে আসছি। এই সেতুটি পার হলেই ৩০ টাকা ভাড়া দিতে হয়! গাড়ি চলাচল করলে টুল ফি দিয়ে তারপর পার হতে হয় সেতু। কিন্তু এক কিলোমিটারেরও কম রাস্তার জন্য দিতে হয় ৩০ টাকা। সেতুটি পার হতেও তেমন সময় লাগে না। লেগুনা ও বাইক শেয়ার করে অনায়াসে পার হওয়া যায়। তবে লেগুনাগুলাতে একদম ফিলআপ না হলে ছাড়ে না। এজন্য আমি বাইক শেয়ার করে চলে যায় ভৈরব থেকে আশুগঞ্জ এ।
তবে আমি জানতাম না যে মেঘনা নদীতে নৌকা দিয়ে ওপারে যাওয়া যায়। আর ভাড়াও কম লাগে! আমি শুনেছি আমার বন্ধুর কাছে। গত সপ্তাহে বাড়িতে গিয়েছিল নৌকা দিয়ে! আর নৌকা দিয়ে গেলে আলাদা একটা ভালো লাগা তো আছেই। আর ভাড়াও কম! ১৫ টাকা করে ভাড়া নেয় নৌকা দিয়ে গেলে। তাই আমি প্লেন করেছিলাম এবার বাড়িতে গেলে নৌকা দিয়ে পার হবো। যেই কথা সেই কাজ! গতকাল প্লেন করেছিলাম বাড়িতে আসবো। তাই প্লান্ট থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় এসে পরেছিলাম। সাথে আমার বন্ধু নিশাদ। দুজনের বাড়ি প্রায় পাশাপাশি। আর যাওয়াও হয় ট্রেন দিয়ে একসাথে! তবে ট্রেনে উঠতে হয় ভৈরব রেলস্টেশনে গিয়ে।
প্লান্ট থেকে সাড়ে বারোটার দিকে বেরিয়ে পড়ি। স্যারকে অবশ্য বলে বের হয়েছিলাম এবং ছুটি নিয়ে এসেছিলাম। মূলত পর্দায় খেলা দেখার মুহূর্তটা উপভোগ করার জন্য একদিন আগে আসার প্লেন করেছিলাম। গ্রামে এখন সব বন্ধুরা চলে এসেছে। সবার ভার্সিটি বন্ধ। সামনে আবার ডিসেম্বর আসছে। তো সবার সাথে মোটামোটি দেখা হয়ে যাবে। বাসায় এসে গোসল করে রেডি হয়ে পড়ি। দুপুর আড়াইটা সময় আবার বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন ধরতে হবে। তাই আর দেরি করলাম না। নিশাদকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। সোজা চলে যায় আশুগঞ্জ ফেরিঘাটে! বাসা থেকে ফেরিঘাট কাছেই। হেটেঁ গেলে দশমিনিটের মতো লাগে!
ফেরিঘাটে গিয়ে দেখি সারি সারি নৌকা দাড়ঁ করানো। যেতেই দেখলাম সিরিয়ালে একটা নৌকা ছেড়ে যাবে এপার থেকে। ভিতরে আরও কিছু ভদ্রলোক বসা। আমি আর নিশাদ উঠে পড়লাম নৌকায়। তীব্র রোদের তাপ শরীরে এসে পড়ছে। তবুও একটা ভালোলাগা কাজ করতেছিল। অনেকদিন পর নৌকায় উঠেছি। নদীতে পানিও কিছুটা কমে গিয়েছে। আর মেঘনা নদীতে স্রোত নেই বললেই চলে। নদীর পাশে দাড়ঁ করানো বিশাল বিশাল লঞ্চ, স্টিমার! দূর থেকে মেঘনা সেতু দেখা যাচ্ছে। তা পাশেই রেলের সেতু। দুটি সেতুই পাশাপাশি নির্মিত হয়েছে। দুই সেতুর নিচ দিয়েই যেতে হয় ওপারে।
আরও কয়েকজন মানুষ হতেই আমাদের নৌকা ছেড়ে দেয়। পানিতে নৌকা ভালো স্পিডেই যাচ্ছে। সাথে পানির মধ্যে ঢেউয়ের সৃষ্টি করে। সেই মিঠামইনের কথা পড়ে গেছিল তখন! 'ইত্যাদি' অনুষ্ঠান দেখতে সেবার টলার দিয়ে মিঠামইন গিয়েছিলাম। ভালোই লেগেছিল নৌযানে করে জার্নি করতে। এবারও ভালো লাগলো। তবে নদীতে খেয়াল করলাম অনেক বর্জ্য পদার্থ পড়ে আছে। নদীর পানি দূষিত করছে। নদীর পানির কালার পরিবর্তন হয়ে গেছে। যানবাহন থেকে নির্গত বর্জ্য ফেলার কারণে এ অবস্থা! যাক, আমি ভেবেছিলাম যেতে সর্বোচ্চ পাচঁ মিনিট লাগতে পারে। এপার থেকে ভৈরবের ফেরিঘাট কাছেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু যতই যাচ্ছিল সময় আরও বাড়ছিল। ভৈরব ফেরিঘাটে আসতে আসতে দশমিনিটের বেশি সময় লেগে যায়। সেখানেও গিয়ে দেখি সাড়ি সাড়ি নৌকা, স্টিমার দাড়ঁ করানো আছে।
নৌকা থেকে নেমে দুজনের ভাড়া দিয়ে দিলাম! পনেরো টাকা করে ভাড়া ছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই ভৈরব চলে আসতে পেরেছিলাম। পনেরো টাকাও বেচেঁ গেল, হাহাহা। বাইক দিয়ে গেলে ত্রিশ টাকা লেগে যেত। আর রেল স্টেশন পর্যন্ত গেলে আরও দশটাকা। কিন্তু ভৈরব ফেরিঘাট থেকে ভৈরব রেল স্টেশন বেশিদূরেরে পথ নয়। হেটেঁ গেলে দশমিনিটের মতো লাগে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Date | 30 November, 2022 |
যাক, নতুন অভিজ্ঞতার সাথে দারুণ একটা নৌকা জার্নি হয়ে গেল। আশা করি আপনারাও উপভোগ করেছেন। আপনাদের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমার কাছেও নৌকা দিয়ে নদী পার হতে অনেক ভালো লাগে।আমি তো যখন গ্রামে যাই তখন স্পিড বোড দিয়ে পার হয়ে যেতে হয় আমাকে।আপনারা দুইজনে মিলে নৌকায় চড়ে নদী পারাপারের সময় অনেক আনন্দ করে গেছেন জেনে খুব ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।