৭ম পর্বঃ লিপা
02-02-23
২০ মাঘ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন 🌼🦋। যাক, দেখতে দেখতে গল্পের সপ্তম পর্বে চলে এলাম।আশা করি এ পর্বটিও আপনারা উপভোগ করবেন!
৬ষ্ঠ পর্বের পর থেকে
জীবনের হিসাব নিয়ে বসলে এর হিসাব মেলানোই কঠিন হয়ে যাবে! লিপার মাথায় এখন তার বাবার কথা চিন্তা হচ্ছে! হঠাৎ করেই কি হলো তার বাবার? কখনো তো বিয়ের কথা বলেও নি! লিপা যে অনেকক্ষণ ধরে টেনশন করছে সেটা শিলা ঠিকই বুঝতে পারছে!
-কিরে, এদিক-ওদিক ঘুরাঘুরি করছিস কেন? কিছু হয়েছে?
-না, তেমন কিছু না!
-সমস্যা নেই আমাকে বলতে পারিস! অনেকক্ষণ ধরেই দেখছি এদিক-সেদিক ঘুরাঘুরি করছিস!
-শিলা, হঠাৎ করেই বাবার মাথায় বিয়ের কথা আসছে! বাবা পড়ালেখার মাঝে কখনোই আমাকে বিয়ের কথা বলে নি! ভার্সিটিতে উঠার পর বলেছে আগে নিজের পায়ে দাঁড়াতে তারপর বিয়ে!
-ওহ, এইজন্য এতো টেনশন করতেছিস! আঙ্কেল আরেকবার বিয়ের কথা বললে আমাকে ফোনটা দিস, বুঝায় বলবো নে!
-আমি বাবার কথা ছাড়া কখনো এক পা আগায়ও না! দেখ, আমার অনার্স শেষ হতে আরও কয়েক বছর! এখন বিয়ে করলে পরে আর পড়ালেখাটাও হবে না! আমার এতোদিনের স্বপ্ন সব ধুলিসাৎ হয়ে যাবে!
-বুঝতে পেরেছি! এতো টেনশন করার কিছু নেই! সব ঠিক হয়ে যাবে।
-তাই হলে ভালো! ভাইয়া পরে বাসায় পৌঁছেছে?
-হুমম, বললো তো পৌঁছেছে!
-ওহ! তোদের দুজনকে মানিয়েছে রে! ভাইয়াও অনেক ভালো!
-দোয়া করিস! আমি অভিকেই বিয়ে করতে চাই !
-দোয়া তো করি!
সকাল থেকে খাওয়া-দাওয়া হয়নি দুজনের! তাড়াতাড়ি রান্না করে খাওয়ার পর্বটাও সেরে নেই। বিছানায় ফোন রেখে এসেছে লিপা! সাইলেন্ট করা! কিছুক্ষণ পর রুমে গিয়ে দেখে সাত মিসড কল! কি ব্যাপার এতো মিস কল কে দিল! বুঝার বাকি রইল না যে শাওন মিসকল দিয়েছে! শাওনের সাথে কোনোভাবেই কথা বলা যাবে না। ছেলেটা দিনকে দিন লিপার প্রতি উইক হয়ে যাচ্ছে। ঐদিকে শাওন ছটফট করছে লিপার সাথে কথা বলার জন্য। লিপার এমনিতেই মন খারাপ। বাড়ি থে মা বিয়ের কথা বলছে। তার উপর শাওনের যে পাগলামো তা মোটামোটি লিপাকে সামলাতে হচ্ছে!
ঠিক পাচঁ মিনিট পর আবার ফোন! নাম্বারটা সেভ করা নেই! মেসেজ এ নাম্বার দিয়েই দেয়। শাওনের নাম্বারটা লিপা ভালো করেই চিনে রেখেছে! আগে মেসেজ দিতো, এখন সোজা কল! একটু উপরে উঠে গেল ছেলেটা! আসলে ছেলেদের এজন্য পাত্তা দিতে নেই। পাত্তা দিলেই মাথায় উঠে পরে! লিপার মনে হচ্ছে শাওনকে পাত্তা দিয়ে এই অবস্থা!! লিপা কিছুটা বিরক্ত হয়। শিলাকে তখন ফোনটা দেয়!
-শাওন, আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে! ছেলেটাকে একটু ঝারি দে তো!
-ফোনটা রিসিভ করেই সালাম গ্রহণ করে শিলা। কি ব্যাপার আপনি বারবার এভাবে ফোন দিচ্ছেন কেন??
-না মানে এখানে কি লিপা আছে?
-কেন?লিপাকে কি দরকার?? (কিছুটা রেগে)
-অনেকক্ষণ ধরে ফোন দিচ্ছি কিন্তু পাচ্ছি না!! একটু দিতে পারবেন?
-আপনার সাহস তো কম না!! এখনি পুলিশকে ফোন দিয়ে ধরিয়ে দিব! রাতে মেয়েদের ডিস্টার্ভ করেন, তাই না!!
শিলার কথা শুনে শাওন তাড়াহুড়া করে ফোনটা কেটে দেয়! কি সাঙ্গাতিক মেয়ে!! এভাবে কেউ কাউকে হুমকি দিতে পারে! শাওনের হার্ট বিট রেইট বেড়ে গেছে! এদিকে শিলা আর লিপা হাসছে! শাওন যে অনেক ভয় পেয়েছে শিলা ঠিকই বুঝতে পেরেছে! যে কথা বলেছে, আর কখনো ফোন দেয়ার কথা না! লিপার অবশ্য একটু খারাপ লাগছে।
-পুলিশের ভয় না দেখালেও পারতি!!
-তোর মায়া হচ্ছে এখন?
-ভয় পেয়েছে অনেক বেচারা মনে হয়!
-হুমম! এতো ফোন আর দিবে না!
-আমি রাগের মাথায় বলছিলাম, তুই একদম দিলি জল ঢেলে! আমার আবার খারাপ লাগছে!
-তাহলে কথা বল! এর পরে আমাকে কিছু বলতে পারবি না!
একটু পরেই শাওনের মেসেজ!
-আপনার এটা ফ্রেন্ড নকি অন্য কিছু??
-শিলা, শাওন মেসেজ দিয়েছে, হাহাহা! বেচারার শিক্ষা হয়নি!
-কেন কি করেছে?
-পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার কথা বলেছে! কি সাঙ্গাতিক মেয়ে!
-তো কি? আপনাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়াই উচিত! এতো ফোন কেউ দেয়!
-সরি! আসলে আপনার সাথে কথা না বলে থাকতে পারছিলাম! তাই বাধ্য হয়ে এতোগুলো কল দিয়েছি!
-আমি কে? আমার সাথে কথা বলাটা কি এতোই জরুরি!
-জি! আপনি আমার কাছে স্পেশাল একজন!
-কেন?
-কোনো কারণ নেই! আচ্ছা, আপনি বাড়িতে যাবেন কবে?
-কেন??
-না এমনি! কিছুদিন পর পরীক্ষার বন্ধ তো পাবেন!
-দেখি কি করা যায়! রাখছি, ফোন দিবেন না এতো!
-কেন??
শাওনের মেসেজ দেখেছে লিপা কিন্তু উত্তর সে দিবে না। কথা বললেই যে শুধু কনভার্সেশন বড় হবে! আস্তে আস্তে ভালো লাগার অনুভূতিটাও যে তৈরি হয়ে যাবে! ভালো লাগার অনুভূতিটা লিপার কাছে নীল আকাশের মতো! নীল বর্ণে রাঙায়! মেঘেরে শেষের নীলের আকাশ। ভালোলাগাটা হবে একজনের জন্য, ভালোবাসাটাও! সহজে কোনো জিনিস পেয়ে গেলে সেটার মূল্যও যে থাকে না!
চলবে......
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল আসলে লিপা শাওনের প্রতি একটু হলেও ভালোবাসা আছে।তা না হলে শিলা পুলিশ দিয়ে ধরিয়া দেওয়ার কথা বললে লিপা বলল এটা সে না বললে পারতো।যাইহোক সহজে কোন কিছু পেলে আসলে মর্যদা থাকে না। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি আপু । আপনি গল্পটি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে
লিপার মাথায় অনেক বড় চাপ সৃষ্টি হয়েছে এখন। তার বাবা মা এখানে বিয়ের কথা বলছে অন্য দিকে শাওন তাকে বারবার মেসেজ এবং কল দিয়ে ডিস্টার্ব করতেছে। সবকিছুই ওকে সামলাতে হবে। জানিনা পরে কি হবে। এমনিতে লিপাল গল্পটির যত পড়েছি ততই ভালো লাগছে আমার কাছে। এক এক করে সপ্তম পর্ব পর্যন্ত চলে এসেছেন অষ্টম পর্বে কি আসবে তারই অপেক্ষায় আছি। আশা করছি পরবর্তী পর্ব খুবই তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন। অপেক্ষায় থাকলাম।
জি আপু! পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই পাবলিশ করা হবে
লিপার এই গল্পটি আমি যত পড়ছি ততই যেন আমার কাছে ভালো লাগছে। আমি তো ভাবছি লিপা এবং শাওনের ভালোবাসাটা কবে হবে। অন্যদিকে তার বাবা-মা তার বিয়ের কথা ভাবছে এবং তাকে বলেছে। শিলা কিন্তু শাওনকে বেশ বড়ই ভয় দেখিয়েছে। পুলিশের ভয় দেখানোর কারণে একটু বেশি ভয় পেয়েছিল কিন্তু ভয় পেয়ে ফোন এবং মেসেজ না দেওয়ার মতো ছেলে তো শাওন না। পরবর্তী পর্বে কি আসবে তার কথা ভাবছি শুধু। আজকের পূর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই আমার লেখা স্বার্থক ভাইয়া! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ 🌼🦋