নতুন অভিজ্ঞতা -"মকড্রিল প্রদর্শনী "

---

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি বলতে পারেন। আপনারা সবাই জানেন যে সারা বিশ্বে এখন ফুটবল উন্মাদনা চলছে। ৯০ মিনিটের এই খেলাটাকে মানুষজন এতো ভালোবাসে তা চোখ মেললেই দেখা যায়। এইতো গতকাল! ব্রাজিল বনাম সুইজারল্যান্ড এর ম্যাচে ব্রাজিলের সমর্থকরা উল্লাসে মেতে উঠে। যখন ব্রাজিলে জিতে যায় তখন রাস্তা দিয়ে দেখি মিছিল বের হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ কোনো খেলা জেতাতে মিছিল করতে তেমন দেখি না! আমরা বাঙালিরা তাহলে এমনি! যাক আজ এসব বিষয়ে কথা বলবো না

আজ সকাল থেকেই কুয়াশা! অনেকদিন পর মনে হয় আশুগঞ্জ এ সকাল সকাল কুয়াশা দেখলাম। কিছুটা শীত অনুভূত হয়েছিল। সকাল নয়টা থেকে প্লান্টে যেতে হবে। আজ প্লান্টে বিশেষ কাজ আছে। আগের দিন স্যার অবশ্য আমাদের সব বলে দিয়েছিল। স্যারের কথা অনুযায়ী আমরা যারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং এ ছিলাম সবাই সকাল নয়টার দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরই ইমার্জেন্সি এলার্ম বেজে উঠলো! আমরা কিছুটা বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ এলার্ম বাজার সাথে সাথে প্লান্টের সকল স্যার দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। আমাদেরকেও বলা হলো স্যারেদের সাথে আসতে। আমরা সবাই স্যারদের সাথে মেকানিক্যাল স্টোর রুমের সামনে এসে দাড়াঁয়। তারপরে শুনতে পারি আসল ঘটনা।

মাসে শেষ সপ্তাহে মকড্রিল প্রদর্শনী হয়ে থাকে প্লান্টে। প্লান্টের প্রধান সেফটি স্যারের তত্ত্বাবধানে মকড্রিল প্রদর্শনী করা হয়! মকড্রিল প্রদর্শনী আসলে কি? সে ব্যাপারে আমার তেমন কোনো আইডিয়া ছিল না। পরে স্যারের কাছ থেকে জানতে পারি। প্লান্টের কোথাও আগুন লাগলে অথবা কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে কিভাবে তা মোকাবেলা করবে সে ব্যাপারে প্র্যাকটিক্যালি প্রদর্শনী করে দেখানো হয়। অনুষ্ঠান প্রদর্শনী শুরু করার আগে আমরা সবাই পিএম স্যারের জন্য অপেক্ষা করি। স্যার আসতেই অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও অপারেশনের প্রধান স্যারেরা।

আমাদের সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে বলে। আমরা সবাই লাইনে যে যার মতো দাঁড়িয়ে পড়ি। ঠিক তখন সেফটি স্যার কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমেই একটি গ্রুপ তৈরি করতে বলে। একটি গ্রুপে পাচঁজন সদস্য থাকবে। তিন বিভাগ থেকে পাচঁজন সদস্য নিয়ে গ্রুপ তৈরি করা হয়। তারপর তাদের কাজ হলো, বার্জে আগুন লেগেছে এখন সেটাকে নেভাতে। তাই পাইপের নজেলস ভালব খুলে কিভাবে তা নেভানো হবে তা প্রদর্শন করে দেখাতে হবে। গ্রুপের পাচঁজন সদস্য চলে যায় গার্ডেনে। মোটামোটি সেখানে খোলা মাঠের মতোই!

পিএম স্যার সহ আমরাও চলে যায় সেখানে। সেফটি স্যার নির্দেশ দিতেই পাইপের নজেলস খুলে দেয়া হয়। পাইপ ধরে দাড়িয়েছিল বাকি চারজন! পাইপগুলো অনেক মোটা ছিল। ফায়ার সার্ভিস অফিসে সেইম পাইপ দেখেছিলাম। তারপর পানির স্পিড বাড়িয়ে দেয়া হলো। প্রথমে চারজন মিলেও পানির বেগ কন্ট্রোল করতে পারছিল না। তারপর সেফটি স্যার বলে দেয় কিভাবে ধরতে হবে! এ পাইপগুলো সঠিকভাবে ধরতে না পারলে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। কারণ পিছনে একটা ব্যাক প্রেসার কাজ করে। অনেক স্পিডে পানি উপরে দেয়া হয়েছিল। মূলত এটা ছিল আগুন নেভানোর পূর্বপ্রস্ততিস্বরূপ একটি কার্যক্রম! আমার মনে হয় এ মকড্রিল কার্যক্রম প্রতি মাসে হওয়ায় ভালো হয়েছে। কারণ গ্যাস পাওয়ার প্লান্টগুলো সবসময় হাই টেম্পারেচারে রানিং এ থাকে। কখন অধিক গরমে পুড়ে যেতে বাড়ে বলা তো যায় না। যদিও পুড়ার কোনো চান্স নেই বা খুব কম! যথেষ্ট প্রটেকটিভ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ।

Device	Oppo A12
Photographer	@haideremtiaz
Location	w3w
Date	29 November, 2022

যাক, এটা এক রকম নতুন অভিজ্ঞতা হলো। কিছু একটা অন্তত শিখতে পারলাম। আর সেটা আপনাদের সাথেও শেয়ার করে নিলাম। আপনাদের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি! আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋।

---

---

10% beneficary for @shyfox ❤️

ধন্যবাদ সবাইকে

---

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

^{আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।}