বিকালবেলা মেঘনা নদীর পাড়ে
25-10-2022
০৯ কার্তিক ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভালোই আছেন 🌼। আজকে সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ছিল। সাথে ঠান্ডা বাতাস। জানালার পাশ দিয়ে ঠান্ডা বাতাস এসে যেন শরীর টান্ডা করে দিচ্ছিল। খুব সকাল সকাল ঘুমটাও ভেঙে গিয়েছিল। ঠান্ডা ওয়েদার পেয়ে আরও কিছুক্ষণ কাতা গায়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে নিলাম। সকাল নয়টায় ট্রেনিং সেশন শুরু হবে। যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। তাই নিশ্চিন্তে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিয়েছিলাম। আমার আবার অভ্যাস হলো একবার ঘুম ভেঙে গেলে আর বেশিক্ষন ঘুমাতে পারি না। সাড়ে আটটায় ঘুম ভেঙেও গিয়েছিল। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে পড়লাম। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিকে সাথে নিয়েই চলে গেলাম প্লান্টে। সেখানে গিয়ে দেখি তেমন কোনো কাজ নেই আজ। আর আমাদের বাকি সদস্যরাও আসেনি। আমরা চারজন গিয়েছিলাম। বেসিক কিছু কাজ দেখে আজ তাড়াতাড়ি বাসায় চলে এসেছিলাম।
ট্রেনিং সেশন শেষ করে বাসায় তেমন কাজ থাকে না। শুয়ে বসে দিন পার করতে হয়। মাঝে মাঝে ডিস্কর্ডে আড্ডা দেয়া হয়। তবে বিকালে প্লেন ছিল ঘুমানোর কিন্তু ঘুম তো আর আসলো না! বাহিরে দেখলাম রোদ। জানালার কাচ ভেদ করে রোদের উজ্জল আলো এসে পড়ছে রুমের দেয়ালে। আসরের আযান দিয়ে দিয়েছে। আমার রুমমেট রমজান। আমার পাশেই নাক ডেকে আরামছে ঘুৃমাচ্ছে। সকাল থেকেই নেটওয়ার্ক নেই! বেচারা না হয় ফোন ইউজ করতো। আমাদের জেলাতেই রমজানের বাড়ি। একসাথে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করছি। গভীর ঘুমে রমজান মগ্ন। ফোনের ওয়াইফাই মনে হয় অন ছিল, হঠাৎ টুং করে তার ফোনের সাউন্ড। আমি ডাক দিয়ে তুললাম রমজানকে। আসরের পরে ঘুমানোর অভ্যাস অবশ্য আমার নেই। রমজানকে বললাম চলো বাহির থেকে ঘুরে আসি। আদো আদো ঘুমের চোখে বললো ঠিক আছে।
আমি যে জায়গায় থাকি ঠিক তার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনা নদীর অববাহিকা। দুদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় পানির উচ্চতাও হয়তো বেড়েছে। বাসায় যেদিন উঠেছিলাম সেদিন একবার মেঘনা নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম। এর পরে আর যাওয়া হয়নি। আমি আর আমার বন্ধু রমজানকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম মেঘনার পাড়ে। এটি মূলত ফেরী ঘাট। আলকাসমিরের পাথরের ঘাট নামেই চিনে মানুষ। যেতেই লক্ষ্য করলাম সাড়ি সাড়ি লঞ্চ দাড়ঁ করানো। সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। আকাশে কালো মেঘ একপাশে। নদীতে মোটামোটি ঢেউ আছে। তবে পাড় থেকে দেখতে পেলাম নদীর ঠিক মাঝে চর জেগে উঠেছে। সেখানে অনেকেই ঘুরতে যায়। শুনেছি সেখানে একটি রেস্টুরেন্ট আছে, সে রেস্টুরেন্ট এ খেতেও যায়। তবে সবথেকে ভালো লাগার বিষয় হলো চরে কাশফুল ফুটেছে। অনেক মেয়েরাই সেখানে গিয়ে ছবি তুলছে। পাড় থেকে বেশি স্পষ্ট দেখাও যায়নি। তবে ইচ্ছে ছিল লঞ্চে করে সেই চরে যাওয়ার। কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, সময়ও বেশি নেই।
আমি আর রমজান পাড়ের সাথে ঘেষে থাকা একটি লঞ্চে উঠে বসলাম। উঠে অবশ্য নদীর সৌন্দর্য কিছুক্ষণের জন্য উপভোগ করার চেষ্টা করলাম। নদীর সৌন্দর্যের কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম তখন। একটা বিষয় খেয়াল করলাম সেটা হচ্ছে, এই লঞ্চেই অনেকে বসবাস করে। তাদের দিন পার হয় লঞ্চে বাস করেই। নদীর মতোই বুঝি ওদেরও জীবন পরিবর্তন হয়। লঞ্চ নিয়ে যেতে হয় একেক সময় একেক জায়গায়। লঞ্চে করে আনা নেয়া হয় সিমেন্ট, বালু ইত্যাদি। এখান থেকে সুনামগঞ্জ খুব সহজেই যাওয়া যায়। আর নদী পাড় হলেই ভৈরব! আশুগঞ্জ থেকে ভৈরবের দূরত্ব শুধুৃমাত্র একটি নদীর ব্যবধান। লঞ্চের ভিতরে দেখলাম থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনেকেই নদীতে গোসল করে আবার তাদের বাসস্থান, লঞ্চে চলে আসছে। এখানে প্রত্যেকটা মানুষের জীবন ও জীবিকা যেন এ নদীকে কেন্দ্র করেই। নদীকে কেন্দ্র করেই তাদের কতো স্বপ্ন কত আশা! এখানে আবার সিডিউল করে লঞ্চ ছেড়ে যায় এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায়। পানির উচ্চতা যেহেতু বেড়েছে লঞ্চের চাহিদাও বেড়েছে। দূর দূরান্তে মালপত্র লঞ্চে করেই নিয়ে যাওয়া হয়। লঞ্চগুলো আবার নোঙর দিয়ে আটকানো, অনেকগুলো আবার মোটা রশ্মি পাড়ে থাকা বাঁশের সাথে আটকানো।
আমি আর রমজান লঞ্চে অনেক্ষন বসে থেকেছিলাম। নদী, সমুদ্র ও পাহাড় এই তিনটার সৌন্দর্য আমাকে ভীষণভাবে টানে। বিকালের সময়টায় প্লেন করি এখানে বসে থাকবো এসে প্রতিদিন। সূর্যাস্তের সাথে নদীর সৌন্দর্য ও উপভোগ করা যাবে। তারপর আর দেরি করেনি, সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল! রমজান অবশ্য আসতে চায়নি, আর কিছুক্ষন বসতে চেয়েছিল। কিন্তু বাজার করতে হবে। এজন্য তাড়াতাড়ি চলে আসি।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Date | 25 October, 2022 |
আশা করি বিকালের মুহুর্তটা আপনাদের কাছেও ভালো লেগেছে। কিছুটা হলে অনুভব করতে পেরেছেন বিকালের মুহূর্তটা কিভাবে কেটেছে। এমন ওয়েদারে নদীর পাড়ে সময় কাটাতে পারলে আপনাদেরও ভালো লাগবে। যায়হোক, আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Link
কিছুদিন একটু বৃষ্টি হচ্ছে. তবে আজকে রোদের দেখা মিলেছে, ওয়েদার টা বেশ ভালো ঘুরে বেড়ানোর মতো উপভোগ করার মত একটি পরিবেশ। বন্ধু রমজানের সাথে বেশ ভালই ঘুরাঘুরি হয়েছে নদীর পাড়ে দেখা যাচ্ছে। ছবিগুলো খুবই চমৎকার ছিল ওয়েদার টা সত্যিই চমৎকার।
হুম ভাই এরকম ওয়েদারে নদীর পাড়ে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে মন্দ হয়না। ধন্যবাদ আপনাকে 😁🌼
পড়ন্ত বিকেলে মেঘনা নদীর পাড়ে খুব চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। নিশ্চয়ই বিকেল বেলা নদীর পাড়ে সুন্দর পরিবেশ চমৎকার সময় পার করেছেন। সূর্য অস্তের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য 🌺🌼
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দেখে মনে হচ্ছে মেঘনা নদীর পাড়ে গিয়ে খুবই ভালো এবং সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। নদীর পাড়ে ঘোরাঘুরি করতে আমি একটু বেশি পছন্দ করি। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এবং পোস্ট পড়ে আমার খুবই ঘুরাঘুরি করতে ইচ্ছে করতেছে। সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল আপনার আজকের এই ঘোরাঘুরির পোস্ট।
জি আপু বিকেলবেলা সময়টা উপভোগ করতে পেরেছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ 🌼
নদীর পাড় মানেই মনের ভিতরে শান্তির পরশ পাওয়া। কিছু মুহূর্ত থাকে যে সময়গুলো পার করতে অনেক ভালো লাগে। সেরকম একটি সময় বিকেল বেলা মেঘনা নদীর পাড়ে সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছেন। আমার কাছে প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি খুব ভালোলেগেছে।বিকাল বেলার মেঘনা নদীর পাড়ের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
জি আপু 🌼। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করলেন
আপনি মেঘনা নদীর পাড়ে খুবই সুন্দর একটি সময় পার করেছেন। ঠিকই বলেছেন সব সময় ঘরে শুয়ে বসে থাকতে ভালো লাগে না মাঝে মাঝে এমন ঘুরতে বেরোলে মন্দ হয় না। আপনি পুরো গল্পটি খুবই সুন্দর গুছিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন এবং ফটোগ্রাফিগুলাও দারুন ছিল।
হুম ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন। মাঝে মাঝে রুমের বাইরের জগতটাকেও উপভোগ করার দরকার হয়
আসলে এখন সকাল বেলা একটু শীতের আবহাওয়া অনুভব করা যায় যার কারণে সকালবেলার ঘুমটা খুবই ভালো হয়। সকালবেলায় ঘুম থেকে যেন উঠতেই মন চায় না তবুও আপনি উঠে ট্রেনিং করতে গিয়েছেন এবং সেখান থেকে অল্প কিছু কাজ করেই চলে এসেছেন। আসলে বর্তমান সময়টা এমন হয়ে গিয়েছে যে যতক্ষণ পর্যন্ত ফোনে চার্জ এবং এমবি থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ফোন টিপাটিপি করে। যখনই দুটোর একটা উধাও হয়ে যায় তখন সবাই ক্লান্ত মন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে আপনার রুমমেট এর ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে হাহাহা। যাই হোক আপনার ঘুরাঘুরির মুহূর্তটা দেখে খুবই ভালো লাগলো সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন।
হাহাহা ভাই! আপনি একদম ঠিক ধরেছেন। ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলেও সমস্যা আবার এম্বি থাকলেও
বৃষ্টির দিনে ঘুমিয়ে মজা।তবে একবার ঘুম ভেঙ্গে গেলে সত্যিই আর ঘুম আসে না।আপনারা দুইজন দারুন সময় কাটিয়েছেন মেঘনা নদীর পাড়ে।নদীর পাড়ে কাটাতে আমারও খুবই ভালো লাগে।লঞ্চ এর ছবিগুলো ভালো ছিল, ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি দিদি এমন বৃষ্টিমুখর ওয়েদারের পর বাহিরে গেলে একটু সময়টা উপভোগ করা যায়। আপনাকে ধন্যবাদ দিদি 🌼