লাস্ট স্টেজ
23-01-2024
১০ মাঘ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
ক্যান্সার সম্পর্কে জেনেছিলাম ২০১২ সালে। এটা মরণব্যধি একটা রোগ। কিন্তু এ রোগের নিরাময় হয় আবার হয় না। আর হইলেও সেটা লাকের উপরে ডিপেন্ড করে। আপুর যখন ক্যান্সার ধরা পরেছিল একদম শেষ স্টেইজে! পুরো ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়েছিল ক্যান্সার। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে ক্যান্সার নামটা শুনলেই বুক কেপেঁ উঠে! এক দশক আগে হারানো আপুর কথা এখনও ভুলতে পারি না ।
আজকে সকাল সকাল মনটা খারাপ হয়ে গেল! আমার খালামনির হাসবেন্ড মানে আমার খালুর ক্যান্সার ধরা পরেছে। বোন ক্যান্সার ধরা পরেছে শরীরে! আমার জীবনে বেশ কয়েকজন ভালো মানুষের সঙ্গোপনে যেতে পেরেছি তার মাঝে আমার খালু একজন! খালুর বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকেই কাছে। ছোটবেলায় সাইকেল চালিয়েই চলে যেতাম। খালুদের বাড়িতে গেলে সবসময় একটা কথাই বলতো আমাকে," বাবা, জীবনে যায় করো নামাজ ছেড়ো না! " খালু দেখতাম সেই ফজরে উঠে নামাজ আদায় করতো। আর নামাজ শেষে উনার দোয়া অনেক দীর্ঘ ছিল। কমপক্ষে ৪০ মিনিটের উপরে দোয়া করতো। আর নামাজ আদায় করে চলে যেত জমিতে। কাধেঁ কোদাল নিয়ে ঠান্ডার মাঝেই দেখতাম ধানের জমিতে আইল নেয়ার কাজ করতো।
চার ছেলে মেয়ের সবাই বলতে গেলে ভালো অবস্থায় আছে। বড় ভাই সেনাবাহিনীতে চাকরি করে, তার পরের জন মেয়ে উনাকেও ভালো জায়গায় বিয়ে দেয়া হয়েছে। আর আমার সমবয়সী খালাতো ভাই জিহাদ। সেও ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে। আর ছোট বোনটা এইস এস সি তে পড়াশোনা করছে। বলতে গেলে সবাই ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই সব এলোমেলো হয়ে গেল। খালুর খুব ইচ্ছে ছিল জিহাদের কর্মজীবনটা দেখে যাওয়ার। খালাতো ভাই জিহাদ পড়াশোনা করেছে ঠিকই কিন্তু খালু তাকে আদর শাসন্ দুটোই করেছে।
কিছুদিন আগে ঢাকার সিএমএইস হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তা ররা বলে খালুর শরীরে বোন ক্যান্সার ধরা পরেছে এবং সেটি সারা শরীরে ছড়িয়ে পরছে। আমি দেখেছি আসলে ক্যান্সার হলে একজন রোগীকে দেখে বুঝার উপায় নেই তার শরীরে যে ক্যান্সার আছে। আমার আপুর বেলায়ও তাই দেখেছিলাম। কিন্তু ভিতরে ভিতরে যে শেষ হয়ে যাচ্ছিল কে জানতো! আসলে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয়টাও বেশি! ক্যান্সারের শেষ চিকিৎসা বলতে গেলে কেমোথেরাপি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু একেকটা কেমোথেরাপির মূল্য অনেক। খালুর ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করলেও প্রতি সপ্তাহে কেমোথেরাপি দেয়ায় সম্ভব না!
খালাতো ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, ক্যান্সার টা এখন লাস্ট স্টেইজে আছে। যেকোন সময় কিছু হয়ে যেতে পারে। তবে তাদের চেষ্টা যেটুকু করার তারা করছে, বাকিটা আল্লাহ তায়ালার উপর। আসলে খালাতো ভাইকে সান্তনা দেয়ার ভাষাও আমার নেই। এই অবস্থায় তাদের পক্ষে কিছুই করার নেই। ডাক্তাররা বলে দিয়েছে কেমোথেরাপি দিলেও কাজ হবে না। তিন বা চার মাসের মধ্যে কিছু হয়ে যাবে। সংবাদটা শোনার পর মনটাই ভীষণ খারাপ হয়ে গেল!
খালুর ক্যান্সার হওয়ার পর থেকে এখন শুধু আপুর কথা মনে পরছে। আপুকেও তো হারালাম। তবে বাংলাদেশে ক্যান্সার যেন বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ৬০ ভাগ রোগী পাচঁ বছরের মাঝেই ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আসলে ক্যান্সার নিরাময়ের মহৌষধ প্রয়োজন! বিজ্ঞানী ও গবেষকরা কবে সেই মহৌষধ আবিষ্কার করবে! হয়তো অনেক স্বপ্ন জীবিত থেকে যেত যদি প্রাণগুলো না হারিয়ে যেত। তবে খালুর জন্য দোয়া রইল। আল্লাহ তায়ালা উনাদের পরিবারের সবাইকে ধৈর্যধারণ করার তৌফিক দান করুক!
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
twitter share
ক্যান্সার শব্দ টি শুনলেই বুকের ভীতরে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।ঢাকা সিএমএইসে আমিও আমার শ্বশুড়িকে নিয়ে কেমোথেরাপি দিয়েছিলাম দুটো থেরাপির পর আর ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি থেরাপি সহ্য করতে পারেন নি।খুব কাছ থেকে ক্যান্সার রুগির মৃত্য দেখেছি আমি।ক্যান্সার নাম শুনলেই আমার খুব কষ্ট হয়।ঠিক বলেছেন ভাইয়া ক্যান্সার বাড়ছে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত।
আপনার শ্বাশুরির কথা জানতে পেরে খারাপ লাগছে আপু! কেমোথেরাপি আসলে সহ্য করা কঠিন! শরীরের চুল সহ লোম পরে যায়।