ভূট্রা ক্ষেতে একদিন
25-03-2024
১১ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
শুভ সকাল সবাইকে 🌼। আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আজ সকাল সকাল চলে এলাম। সন্ধ্যারাতেই অবশ্য ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। অনেকেই হয়তো এখন ঘুমাচ্ছে। সেহরী করে সবাই ঘুমিয়েই যায় স্বাভাবিকভাবে । তো যায়হোক, কিছুদিন আগে বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেলাম আমাদের জমিতে ভূট্রার ভালো ফলন হয়েছে। ভূট্রাগুলো আরও আড়াইমাস আগে লাগিয়েছিলাম। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ওরকমভাবে বড় হয়নি। পরে আমার মা বললো যে ভূট্রাগুলো বড় হয়েছে। আমাদের পুকুরপাড়ে ছোট একটা জমি আছে। সাধারণত সেখানে ধান চাষ করা হয় না। ধান লাগানোর সিজনের শুরুতেই জমিতে ভূট্রা লাগিয়েছিলাম। মজার ব্যাপার হলো ভূট্রা যখন লাগিয়োছিলাম তার সাথে কলমি শাক ও লাল শাক লাগিয়েছিলাম বাবাকে নিয়ে। আসলে জমি চাষ মোটেও সহজ কাজ নয়। আপনি যদি এ কাজে অভ্যস্ত না হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কাছে খুবই কঠিন লাগবে। আমি অনেকদিন পরে জমিতে কাজ করলাম। বলতে গেলে জমিতে ধানের চারা কিভাবে লাগাতে হয় সেটাও ছোটবেলায় আয়ত্ত করেছি। মই দেয়া, হুইটার দেয়া থেকে শুরু করে সবই পারতাম।
কিন্তু ঐ যে গ্যাপ পরে গেল! আর বাড়িতেও থাকা হয় না। তাই জমিতেও যাওয়া হয় না। তো মাঘ মাসের দিকে নরমালি শুকনো মৌসমই থাকে বলতে গেলে। তখন ধানের চারাও লাগানো হয় না। বৃষ্টির অভাবে তখন ধানের জমিগুলো পরে থাকে। প্রথমে ভূট্রা লাগানোর জন্য জমিটা ভালো করে লাঙন দিয়ে দিলাম। যেটা অনেকটাই কঠিন ছিল। কয়েকদিনে লাঙন দেয়া শেষ করেছিলাম। বাবার বয়সটাও বেড়েছে। এজন্য আমি বাড়িতে গেলে বাবার কাজে ঠুকঠাক সাহায্য করে থাকি। তো মই দেয়ার পরে তিন ইঞ্চি গ্যাপ করে করে ভূট্রার বীজ রোপণ করে দিয়েছিলাম। ঠিক মাঝে কলমি শাক ও লাল শাক রোপণ করেছিলাম। লালশাক ও কলমি শাক দ্রুতই বড় হয়ে যায়। খোলা মাঠে কোনো কিছু চাষ করার বড় অসুবিধা হলো গরু ও মুরগীর বিড়ম্বনা সাথে মানুষের বিড়ম্বনাও আছে। ভূট্রা লাগানোর পর দেখি গ্রামের পিচ্চি পোলাপান সেগুলো সুন্দর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে! কি আর করার! সাইডে জালের বেড়া দেয়া হয়নি। তারপর আবার সে ফাকাঁ জায়গায় ভূট্রার চারা রোপণ করতে হয়েছিল।
তো কলমি শাক ও লাল শাক ২০ দিনেই বলতে গেলে অনেকটা বড় হয়ে যায়। সকাল বিকাল কয়েকবার পানি দেয়াতে দ্রুতই বেড়ে গিয়েছিল। আসলে নিজের জমির চাষকৃত টাটকা শাক সবজি খেতেও ভালো লাগে। এতে কোনো ভেজাল নেই। আর এটা একেবারে সতেজ থাকে। তো বাড়িতে থাকা অবস্থায় লাল শাক ও কলমি শাক খাওয়া হয়েছিল। কলমি শাক মাছ দিয়ে রান্না করে খেতে ভীষণ মজার হয়। আমি দুই মাস পরেই ঢাকায় চলে আসি। তখনও ভূট্রা অনেক ছোট ছিল। তো কিছুদিন আগে বাড়িতে গিয়ে দেখলাম ভূট্রাগুলো বড় হয়েছে। বলতে ভূট্রা ধরেছে গাছে। এখনও ভূট্রা বের হয়নি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই যে বের হবে সেটা বুঝা যাচ্ছিল। সবথেকে ভালো লাগলো শুধু আমাদের জমিটাতেই ভূট্রার চাষ হয়েছে বাকি সব জমিতে ধানের চাষ হচ্ছে। দূর থেকে দেখতেও ভালো লাগছে।
আমি সকালে হাটঁতে বের হয়েছিলাম। তখন ভূট্রার জমিতে গেলাম। সবকয়টা গাছ বড় হয়ে গিয়েছে। তবে আমাদের ভুল হয়েছে। কারণ বেশি ঘন হয়ে গিয়েছিল ভূট্রার গাছগুলো। আরেকটু গ্যাপ দিয়ে লাগানোর দরকার ছিল। প্রথমবার যেহেতু ভূট্রার চারা লাগানো হলো তাই এমনটা হলো। পরের বার থেকে হয়তো নতুনভাবে লাগাবে। তো আমি যখন ভূট্রার জমিতে গেলাম আমার কাছে খুবই ভালো লাগছিল। কারণ কয়েকদশক পরে মনে হয় ভূট্রার জমি দেখলাম। সেটাও আবার একদম কাছ থেকে। নিজের জমিতে ভূট্রার ফলন অনুভূতিটাই আসলে অন্যরকম। ভূট্রাগুলো ভেজে খেতে বেশ ভালো লাগে। আবার ভূট্রার পপকর্ণ পাওয়া যায়। সেটাও ভূট্রা থেকেই আসে। আমাদের জমিতে ভূট্রা লাগানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল হাসেঁর খাবারের জন্য। কারণ আমাদের বাড়িতে হাসেঁর ছোট একটা খামার রয়েছে। আর হাসঁকে ভূট্রা খাওয়ালে দ্রুত বাড়ে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Nandail,Mymensingh |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
এখন সকলেই ধান চাষ করে থাকে৷ তবে আপনারা ধান চাষ না করে ভুট্টা চাষ করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ আমাদের এদিকেও কেউ ভুট্টা চাষ করেন না এবং কিভাবে ভুট্টা চাষ করতে হয় এবং ভুট্টা চাষ করলে ভুট্টা কিরকম দেখতে হয় তাও জানা ছিল না৷ আজকে আপনার কাছ থেকে খুব সুন্দরভাবে এরকম কিছু মুহূর্ত দেখতে পারলাম৷ খুব সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনি আমাদের মাঝে এটি ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
আমার জনা ছিল না ভাই, প্রথমবার লাগালাম নিজেদের জমিতে। ভালোই ফলন হয়েছে ভূট্রার
দেখেই বুঝতে পারছি যে খুব ভালো ফলন হয়েছে।
এরকম উদ্যোগ গ্রহণ করা অনেক ভালো।
twitter share
আপনারা ধান চাষ না করে ভুট্টা চাষ করেছেন দেখে আমার ভালো লাগলো। আসলে ধানের থেকে ভুট্টা চাষে একটু বেশি লাভ। আপনার ভুট্টা ক্ষেতের ফটোগ্রাফী দেখে মনে হচ্ছে এবছর ভুট্টার ভালোই ফলন হয়েছে। বর্তমান সময়ে ঠিক ভাবে যে কোন জিনিস চাষ করতে পারলে লাভ আছে। এখন কৃষকদের তেমন একটা লস হয়না।
ভূট্রা হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। ভূট্রা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরি করা হয়। ভূট্রা পুরাপুরি হতে তিন মাস সময় লাগে। আপনি আগে জমিতে মাঝে মধ্যে কাজ করতেন জেনে খুশি হলাম। আমিও করতাম যখন গ্রামে ছিলাম। আপনার পোস্ট এর মধ্যে অনেক দিন পরে ভূট্রা ক্ষেত দেখতে পেলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ❣️
অনেকদিন পর দেখতে পেলেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। গ্রামের ছেলেরা একটু জমিতে কাজ করেই। আমি বাড়িতে গেলেই কাজ করি ৃ
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভুট্টা ক্ষেত আমি সামনাসামনি কখনো দেখিনি। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনারা ধান চাষ না করে এবার ভুট্টা চাষ করেছেন জেনে ভালো লাগলো। ভুট্টা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং এই ভুট্টা দিয়ে বিভিন্ন রকম খাবার তৈরি করা যায়। আপনার ভুট্টা ক্ষেতের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমিও বলতে গেলে অনেকদিন পর দেখেছি সেটাও আবার নিজেদের জমিতে। ভালো লাগছিল দেখতে। 🌼
ভুট্টা ক্ষেত থেকে দারুন ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপনি। খুবই ভালো লাগলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন ভুট্টো ক্ষেতের বিস্তারিত বিষয়গুলো। খুব সুন্দরভাবে বিস্তারিত আমাদের মাঝে আলোচনা করেছেন। আর এই থেকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া 🌼
বেশ ভালো একটি কাজ করেছেন। ধানের বদলে ভূট্রা। আসলে ভূট্রা হলো একটি শক্তিশালী খাবার। দেহের জন্য বেশ উপকারি এই ভূট্রা। যদিও কখনও আমার ভূট্রা ক্ষেত দেখা হয়নি। কিন্তু আজ আপনার পোস্ট থেকে ভূট্রা ক্ষেত দেখে বেশ ভালোই লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আসলেই আপু ভূট্রা কিন্তু আমাদের জন্য উপকারী। তবে এবারই প্রথম ভূট্রা লাগানো।
যখন ভূট্রা চাষ শুরু হয়ে গেছিল তখন আপনি শেয়ার করেছিলেন। কিভাবে ভূট্রা চাষ করা হয় জমি গুলো কিভাবে ভাঙ্গা হয় বিস্তারিত শেয়ার করেছিলেন। আজকে সেই ভূট্রা চাষের দৃশ্যগুলো আপনি শেয়ার করলেন। এত সুন্দর হয়েছে দেখতে মাশাল্লাহ বেশ ভালোই লেগেছে। অনেক সুন্দর ফলন হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভূট্রা ক্ষেতে যাওয়ার মুহূর্তটি আপনি আমাদের সাথে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরলেন।