শিলাঙ্গন

---

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। সুস্থ্য থাকাটাই বড় কথা। তবে কাউকে শুনি না যে পুরোপুরি সুস্থ্য আছে। কোনো না কোনোভাবে অসুস্থ! আমিও অনেকদিন ধরেই অসুস্থ। তবে আগের থেকে অনেকটা উন্নতি হয়েছে আমার। ব্যাথাটা আগের থেকে কম। তো কিছুদিন আগে আমার ফুফু হঠাৎ করেই ফোন দিয়ে বললো শরীর এখন কেমন? আমি বললাম আগের থেকে ভালো! তারপর বলল উনার সাথে ময়মনসিংহ যেতে হবে! উনি ডাক্তার দেখাবে। যেহেতু মহিলা মানুষ একা যেতে পারবে না। আর উনার হাজবেন্ডও বাহিরের দেশে থাকে। আমি না করতে পারলাম না। বাড়িতে অনেকদিন ধরে থাকতে থাকতেও ভালো লাগছিল না। তাই ভাবলাম ময়মনসিংহ শহরটাকেও একটু ঘুরে দেখা যাক।

আমার ফুফু আগেও ময়মনসিংহ শহরে ডাক্তার দেখিয়েছে। যে ডায়াগনস্টিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখাবে সেখানে সিরিয়াল আগেই দিয়ে রেখেছিল। ফুফুর সিরিয়াল ছিল ২৯ নাম্বারে! ডাক্তার বসে বিকাল চারটা থেকে। সে হিসেবে ফুফুর সিরিয়াল পর্যন্ত আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে ধরেই নিয়েছিলাম। শিলাঙ্ন ডায়াগনস্টিক প্রাইভেট সেন্টারে এর আগেও দেখেছি। গাইনী বিশেষজ্ঞ প্রফেসর শিলা সেন বসে সেখানে। আমার ফুফুর গত দু মাস ধরে পেটের এক পাশে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করে। ঠিকমতো নরাচাড়া করতেও সমস্যা হয়। ডাক্তার বলেছিল তিনমাস পরে যেন এসে আবার দেখা করে। কিন্তু কয়েকদিন ধরেই সমস্যাটা আবার বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে ডাক্তারের কাছে আসতে হলো।

নান্দাইল থেকে ময়মনসিংহ যেতে দেড় ঘন্টার মতো লেগে যায়। এর আগেরদিন অবরোধ ছিল তো গত বৃহস্পতিবার আমরা যখন যাচ্ছিলাম তখন রাস্তা ক্লিয়ারই ছিল। নান্দাইল থেকে সিএনজি করে সোজা ময়মনসিংহ চলে এলাম। বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো দিয়ে চলে গেলাম চরপাড়া মোড়ে। কিন্তু অটো সামনে না আগানোর কারণে একটু পিছনে নেমে পরতে হলো। তারপর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পেছনের গেইট দিয়ে প্রবেশ করে সামনের গেইটে চলে আসলাম! আসলে আমি অনেক বছর পর ময়মনসিংহ শহরে আসছি মনে হচ্ছিল। ফুফু যেহেতু আগেও এসেছিল এজন্য উনি আগে থেকেই চিনতো। কিন্তু ফুফু প্যাথলজি সেন্টার চিনে না ভালো করে! আরেকবার আসছিল তবুও মনে নেই!

মনে না থাকারি কথা আসলে হসপাতালের সামনে এতো এতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার! শুধুমাত্র একটা হাসপাতালকে কেন্দ্র করে বিরাট বানিজ্য চলছে যেমনটা মনে হলো! ওভারব্রিজ পার হয়ে ডানপাশে যাওয়ার পর চোখের সামনে অনেক প্যাথলজি সেন্টার দেখলাম। কয়েকজন ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করতে করতে শিলাঙ্গন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে এলাম। নয়াপাড়া রোডের একটু ভিতরে পরেছে শিলাঙ্গন ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি! প্রফেসর শিলা সেনের নিজস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টার এটি। যতটুকু বুঝলাম উনি খুব ভালো মানের একজন ডাক্তার! দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসলে এখানে মানুষ আসে। উনি যেহেতু গাইনী বিশেষজ্ঞ তাই মহিলারাই বেশি আসে।

মানুষের শরীরে যে কত ধরনের সমস্যা থাকতে পারে এসব জায়গায় না গেলে বুঝা যায় না । একেকজন একেক সমস্যা নিয়ে এখানে এসেছে। তো আমি কিছুক্ষণ বসে রইলাম। ফুফুর সিরিয়াল আসলো মাগরিবের দিকে। ডাক্তার দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট দিল! আমি কিছুটা অবাক হলাম আসলে। দুদিন আগেও ফুফুর কাছে জানতে পেরেছিলাম উনি টেস্ট করেছে। এখানে এসে আবার করতে হবে! মানে হচ্ছে ছোট একটা সমস্য হলেই আপনাকে টেস্ট করতে দিবে! এতে করেও তারা কিছুটা বানিজ্য করতে পারে। কিছু টাকা তো পায় আসলে। প্রায় সাতটা টেস্ট দিয়েছিল ফুফুকে! টেস্টগুলো করানোর পর বলছিল ৭ তারিখে এসে নিয়ে যেতে! এই হলো আরেক সমস্যা। দুদিন পর ফুফু গিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসবে।

আসলে যা বুঝলাম, সব জায়গায় সিন্ডিকেট চলছে! কোনো জায়গাই বাদ নাই! মানুষের টাকা সব খাচ্ছে শহরের সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। মানুষকে তারা বোকা বানাচ্ছে। হয়তো এ ব্যবসা আজীবনই চলবে। মানুষের শরীরে যতদিন রোগ থাকবে ততদিন!

Device	Oppo A12
Photogrpher	@haideremtiaz
Location	w3w
Date	03 October,2023

---

10% beneficary for @shyfox ❤️

ধন্যবাদ সবাইকে

---

---

আমি কে?

^{আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।}