'তুমি, আমি আর অথৈ ' নাটক রিভিউ

রিলেশনের এক বছর হয়েছে আদনান আর দিহানের। রিলেশনের শুরুতে দিহান খুব সিরিয়াস ছিল। কিন্তু রিলেশন যত পুরানো হতে থাকে তত যেন গুরুত্ব কমতে থাকে। আর আদনান সেটা খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারে। আদনান চেয়েছিল দিহানের সাথে সারাটা জীবন পার করে দিবে। কিন্তু দিহানের সে ইচ্ছে নেই। সে এখন ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছে। আদনান দিহানকে বিয়ে পর্যন্ত করতে চাইলো কিন্তুু দিহান না করে দিল। সে এখন বিয়ে করতে পারবে না এবং এটাও বলে দিল যে তার সাথে রিলেশনটা আর কন্টিনিউ করতে পারবে না। কারণ আদনানের প্রতি তার এখন কোনো ইমোশন কাজ করে না। যেখানে ইমোশনের কোনো ভেল্যু নেই সেখানে একটি সম্পর্কেরও কোনো ভিত্তি নেই!

এদিকে অথৈ এর বিয়ে ঠিক হয়েছে! পারিবারিকভাবেই বিয়ে ঠিক হয়েছে। দিহানের ফ্রেন্ড অথৈ। সেই ভার্সিটি লাইফ থেকে একসাথে পড়াশোনা করছে। দিহানের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু অথৈ জানে দিহান একটু বেশি মডার্ন মেয়ে। শহরের হাওয়া বাতাস খেয়ে বড় হয়েছে। রিলেশন এর আগেও কয়েকটা ভেঙেছে! দিহানের কাছে রিলেশনের তেমন একটা ভেল্যু নেই, অথৈ তা ভালো করেই জানে। অথচ দিহানই আদনানের সাথে রিলেশন করিয়ে দেয়ার কথা বলেছিল অথৈকে। অথৈ আবার আদনানকে চিনে! ক্লাস টেনে অথৈকে বাসায় এসে প্রাইভেট পড়াতো আদনান! গ্রামের ছেলে হওয়ায় কিছুটা সহজ সরল! আদনানের সাথে পরিচয় হয় রেস্টুরেন্ট এ দিহানের। সেখান থেকেই ভালো লাগা শুরু। দিহান যে আদনানকে ভালো লাগে সেটা ঠিকই বুঝতে পারে অথৈ। কিন্তু অথৈ দিহানকে আগেই বলেছিল, আদনান একটু উইক, কারো কষ্ট সহ্য করতে পারে না!

তারপরও রিলেশন করিয়ে দেয় অথৈ! শুরুতে এক বছর ভালোই চলছিল। এখন তাদের মাঝে আর রিলেশন নেই। দিহান আদনানকে ছেড়ে চলে গেছে। আর আদনান দিহানের চলে যাওয়া মোটেও সহ্য করতে পারিনি। খুবই কষ্টে দিন পার করতে থাকে! পাশে এসে দাড়াঁয় অথৈ! অথৈ আদনানকে সেই দশম শ্রেণী থেকে ভালোবাসতো। কিন্তু কখনো সাহস করে বলতে পারিনি! আর আদনানও বলার সুযোগ দেয়নি! অথৈ এর বিয়ে ঠিক হয়েছে অনিকের সাথে। অনিকের সাথে অবশ্য সব কিছু শেয়ার করেছে আদনান ভাইয়ের ব্যাপারে! আদনানকে যে অথৈ পছন্দ করে সেটা অনিক ভালো করেই বুঝতে পারে। এজন্য অনিক চাই তাদের বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়ে যাক। কিন্তু অথৈ আরও কয়েকদিন সময় চেয়ে নিয়ে নেয়। কারণ সে বিয়ের জন্য প্রিপেয়ারড না!

একদিন আদনানকে অথৈ তার মনের সব কথা বলে দেয়! আদনানের অথৈ এর প্রতি তখনও এতো ভালো লাগা কাজ করেনি। কারণ সে জানতো অথৈ যে তাকে পছন্দ করে। কিছুদন পর দিহান আবার ফিরে আসে আদনানের লাইফে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে! আদনান এখন অথৈকে পছন্দ করে। দিহান সব জানতে পারে। অবশেষে দিহান অথৈকে অবিশ্বাস করে। তাদের ফ্রেন্ডশিপটা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু অথৈ সেটা চায়নি! দিহান চলে যাচ্ছে। যাওয়ার সময় একটি মেসেজ দিয়ে যায় অথৈ ও আদনানের ফোনে। তাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে দিহান। এজন্য সে ক্ষমা চায়। তাদের সম্পর্কটা যেন ভালো হয় সেটা কামনা করে দিহান। ফাইনালি অথৈ ও আদনানের মিলনের মাধ্যমে নাটকের সমাপ্তি ঘটে।

নাটকের টাইটেল দেখে মনে হয়েছিল গল্পটা ভিন্ন রকম হবে! তবে ভালোই ছিল গল্পটা। ফ্রেন্ড সার্কেলের সম্পর্ক সেই সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক খুব সুন্দর করে উঠে এসেছে নাটকটিতে। জোভান ও তাসনুভা তিশা অসাধারণ অভিনয় করেছে। স্পর্শিয়ার অভিনয়ও দেখার মতো ছিল। নাটকটি অনেক আগের হলেও দেখে উপভোগ করতে পারলাম। সবমিলিয়ে নাটকটি দেখার মতো!