৯ম পর্বঃ লিপা

in আমার বাংলা ব্লগlast year

14-02-23

০১ ফাল্গুন ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন 🌼🦋। ভালো থাকারই তো কথা! আজ যে পহেলা ফাল্গুন। ফাল্গুনকে নিয়েই তো প্রমিকের যত কাব্য রচনা প্রেমিকার উদ্দেশ্য। ফাল্গুনের আবহাওয়াও যে মনে দোলা দেয়। যাক, দেখতে দেখতে গল্পের নবম পর্বে চলে এলাম।আশা করি এ পর্বটিও আপনারা উপভোগ করবেন!

book-3755514_1280.jpg

copyright free image from pixabay

৮ম পর্বের পর থেকে

সন্ধ্যার পর গ্রাম থেকে তার মায়ের ফোন! তার বাবার শরীরটা খারাপ করেছে! কদিন ধরে হঠাৎ করেই মাথা ঝিমিয়ে উঠে।
-কি বলো মা, বাবার কি লো প্রেসার
-হুমম, শরীর নিয়ে উঠতে পারেনা! সারাক্ষণ শুধু তোর টেনশনই করে!
-আমাকে নিয়ে এতো টেনশন কেন?
-ঐ যে তোর বাবা যে ছেলেটাকে দেখেছিল, ছেলেটা ভালোই, বংশ পরিচয়ও ভালো! তোর বাবারও ইচ্ছে সে ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার।
-কিন্তু মা, আমি তো না করিনি বিয়ে করবো না! ভার্সিটি পড়ালেখা আর এক একবছর আছে, তারপরে করা যাবে!
-কিন্তু তোর বাবা শুধু টেনশন করে!
-বাবাকে বলবে যেন এতো টেনশন না করে! আমার পড়ালেখার খরচ আমি নিজেই চালাবো! কয়টা টিউশন ম্যানেজ করে!
-টেনশন করবে না বললেই কি হয়! না করলেও চলে আসে! তোর বাবার সাথে কথা বলবি?
-হুমম, দাও!
-কিরে, মা! কেমন আছিস তুই?
-হ্যা,বাবা ভালো! আপনার শরীর এখন কেমন?
-এখন একটু ভালো। কদিন ধরে শরীর দূর্বল হয়ে যাচ্ছে!
-মা বললো আপনি নাকি টেনশন করেন! শুধু শুধু টেনশন করেন কেন? আমি সময় হলে ঠিকই বিয়ে করে নিবো। এতো টেনশের কিছু নেই।
-ঠিক আছে, মা! বাড়িতে আসবি কবে আবার?মনে হচ্ছে অনেকদিন হলো তোকে দেখি না!
-এইতো পরীক্ষা শেষ করে। আপনি মোটেও টেনশন করবেন না! বিশ্রামে থাকুন কয়েকদিন!
-ঠিক আছে, মা! তাহলে রাখি!
-জি, আসসালামুআলাইকুম! আল্লাহ হাফেজ।

বিদায় জানিয়েই ফোন কেটে দেয়! লিপার বাবার শরীরটা যে ভালো নেই বাবার গলার স্বর শুনেই বুঝা যাচ্ছিল! বাবা-মা ছাড়া দুনিয়াতে আপন বলতে কেউ নেই! বাবার কিছু হলে লিপা কিভাবে থাকবে! পাশের বাড়ির রূপার বাবাও নাকি মরে যাওয়ার আগে রপাকে দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু রূপা শ্বশুর বাড়ি থেকে আর আসতে পারিনি। রূপাকে দেখার আগেই রূপার বাবা মারা যায়! লিপার ভয় হচ্ছে! তার বাবারও কি এমন হচ্ছে। না না!! আমি বাবাকে হারাতে চাই না! লিপার শরীর কাপঁছে। প্রচন্ড টেনশন ফিল হচ্ছে। মাথা ভার হয়ে যাচ্ছে! বাবাকে লিপা বড্ড ভালোবাসে। কিছু হয়ে গেলে কি নিয়ে বাচঁবে! মাথার উপরে ছায়া হয়ে কে থাকবে! লিপার মামা-চাচাও নেই যে আগলে রাখবে। আত্নাীয়ের সম্পর্কগুলাতে অনেক গ্যাপ তৈরি হয়েছে! সবাই কর্ম নিয়ে ব্যস্ত!

লিপা ভাবছে গ্রাম থেকে একবার বাবাকে গিয়ে দেখে আসা যাক। মন যে কোনোভাবেই মানছে না। রূপার বাবার মতো বাবাকে সে হারাতে চাই না। কিন্তু বিধাতা যদি চাই তাহলে কিছু করার কি আছে! ভাবতেই যে লিপার গাঁ শিউরে উঠে! পাশের রুমে শিলা সেই বিকেল থেকে কথা বলছে! এখনও কথা বলা শেষ হয়নি। মানুষ প্রেমে পড়লে কি এতোটাই ফোনে মগ্ন হয়ে যায়! হ্যাপি মোমেন্টে কাউকে দুঃখের কথা শোনালেও এতোটা পাত্তা পায়না। লিপা সেটা ভালো করেই জানে! খারাপ সময়গুলো একাই পার করতে হয়! অন্যকে শুধু কষ্টের উপলব্ধিটা বুঝানো যায়!

শিলার সাথে সেই ক্যাম্পাসের শুরু থেকে পরিচয়! একসাথেই চলাফেরা, থাকা-খাওয়া! কিন্তু অভি ভাইয়ার সাথে রিলেশনে যাওয়ার পর সম্পর্কটা যেন কেমন হয়েছে। আগে সারাদিন দুজনে ঘুরে বেড়াতাম, আড্ডা দেয়া হতো রুমে বসে, এক সাথে গ্রুপ স্টাডি! এখন ফোন নিয়েই বিজি। আর লিপাও তেমন কিছু বলে না! প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলে সময় কাটাতে পারলেও ভালো লাগে। মনের ভিতর শান্তি কাজ করে! যেটা মানসিক শান্তি! আর মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্যই মনে হয় মানুষ প্রেমে পড়ে, ভালোবাসে একে অপরকে!

তবে যে শুধু মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। এমনটা কিন্তু নয়! সম্পর্কের মাঝে যখন তিক্ততা চলে আসে তখন কিন্তু তৈরি হয় দুজনের মাঝে বিস্তর ফারাক! তৈরি হয় মানসিক অশান্তি! যা থেকে চরম বিষাদগ্রস্ত হয়ে যায় দু পক্ষের দুটি মন! তবে ভালোবাসায় দুঃখ-কষ্ট থাকবে। কিন্তু একজন বিশ্বস্ত হাত থাকলে, বাকিটা জীবন পার করা যায়! অভি ভাইয়া হয়তো শিলার সেই বিশ্বস্ত হাত! লিপার মাথায় এখন তার বাবার কথায় ভাসছে। হটাৎ করে তার মা বাবা এভাবে অসুস্থ হয়ে গেল! বাবাকে না দেখা অবধি ভালোও লাগবে না! বাড়ি যাবে কিভাবে এখন তাহলে?
ট্রেনের টিকেও তো পাওয়া যাবে না! তিন-চারদিন আগে হলে পাওয়া যেত! বাস জার্নি বরাবরই বোরিং ব্যাপার! ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ই ফোনের স্ক্রিনের ডিসপ্লেটা অন হয়ে উঠলো! একটা মেসেজ! বুঝার বাকি রইল না যে শাওন মেসেজ দিয়েছে।

-কি করেন??
-কিছু না, আপনি।
-ওহ, আমি আপনার কথা ভাবছিলাম!
-ওহ!
-ডিস্টার্ব করলাম মেসেজ দিয়ে।
-না!
-মনে হচ্ছে ডিস্টার্ভ করেছি!
-ওহ
-আপনার মন কি ভালো নেই?
-কেন?
-আপনার মেসেজের রিপ্লাই তা বলে দিচ্ছে!
-ওহ
-কি হয়েছে? বলতে পারেন।
-আসলে বাবা হঠাৎ করেই অনেক অসুস্থ। এজন্য টেনশন হচ্ছে। বাড়িতে যাবো ভাবছি।
-তাহলে বাড়ি থেকে বাবাকে দেখে আসুন।
-তাই করতে হবে। কিন্তু ট্রেনের টিকেট পায়নি! আর পাওয়াও যাবে না!
-কোথা থেকে যাবেন?
-ঢাকা থেকেই যাবো।
-তাহলে স্ট্যান্ডিং এ যেতে পারবেন! এছাড়া টিকেট পাওয়া মুশকিল।
-দাড়িঁয়ে যাওয়া পসিবল না। দেখি কি করা যায়।
-ঠিক আছে। আপনাকে টিকেট পেলে জানাবো।

চলবে.....



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

হঠাৎ করে লিপার বাবার কি হয়েছে। এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কেন। এগুলো ভেবে লিপার টেনশন হওয়ারই কথা। অন্য দিকে শিলাও সারাক্ষণ অভি ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। লিপার কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার মতো ও কেও নেই। কিভাবে একবারের জন্য হলেও বাবাকে দেখে আসবে সে। খুবই খারাপ লাগলো। এখনতো অপেক্ষায় আছি পরের পর্বে কি আসবে তা দেখার জন্য। আশা করছি খুবই তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।

 last year 

জি ভাইয়া। পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসতেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🦋🌼

 last year 

লিপার বাবা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে লিপার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে লিপার টেনশন হওয়ার কথাই। লিপা রূপার বাবার ঘটনাটির কারণে একটু বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছে। লিপার এই গল্পটির পর্ব গুলো আমি যত পড়ছি ততই আমার কাছে ভালো লাগছে। আমি শুধু ভাবছি পরের পর্বে কি আসবে তা। অপেক্ষায় আছি শুধু পরের পর্ব দেখার জন্য। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।

 last year 

জি আপু। পরের পর্ব আরও ইন্টারেস্টিং কিছু থাকছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু 🌼🦋

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65826.04
ETH 3521.87
USDT 1.00
SBD 2.49