অর্থচিন্তা থেকে কাজ করা জরুরি!
4-03-2024
১০ চৈত্র , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১৪ রমাদান, ১৪৪৫ হিজরি
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
ক্লাস দশম শ্রেণীতে আমাদের বাংলা ১ম পত্র বই ছিল। ১ম পত্রে বইয়ে কাজী মোতাহের হোসেন চৌধুরীর একটা গল্প ছিল। সেটাকে গল্পও বলা যায় না। কারণ সেখানে শিক্ষার সাথে মনুষ্যত্বের বিষয়টি তিনি দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই ' শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে কাজী মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, " আমরা অর্থচিন্তার নিগড়ে সকলে বন্দী অর্থাৎ অন্নচিন্তায় মগ্ন! ' বাস্তবিক অর্থেও কিন্তু তাই। বলতে গেলে আমাদের পড়াশোনার উদ্দেশ্যটা হয়ে যাচ্ছে অর্থকেন্দ্রিক। মানে হচ্ছে আপনি দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর পড়াশোনা করলেন। কিন্তু কোনো টাকা উপার্জন করতে পারলেন না। তার মানে আপনার শিক্ষার কোনো দাম নেই! এই যে মানুষের মাঝে এমন একটা অদ্ভূত চিন্তা চলে আসছে, সেটার জন্য আবার আমরাই দায়ী! ঐ যে আমরাই যে অন্নচিন্তায় মগ্ন। অর্থচিন্তাই যদি আমাদের মাঝে থাকে তাহলে পড়াশোনার উদ্দেশ্যই বৃথা!
এবার একটু বাস্তবে যদি আসি তাহলে বলতে হবে পড়াশোনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে অর্থচিন্তা! এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনি যদি বিবেক দিয়ে চিন্তা করেন তাহলে দেখবেন এম এ, মাস্টার্স পাশ করে কোনো ব্যক্তি যদি টাকা আয় করতে না পারে তাহলে সমাজে তার যেন কোনো ভেল্যু নেই। আবার দেখেন যে কি না ক্লাস ফাইভ পাশ করে টাকা আয় করছে তারই ভেল্যু বেশি। অথচ আমাদের উচিত কি ছিল? আমাদের উচিত হলো যে মাস্টার্স পাশ করেছে তাকে বেশি কদর করা, সম্মান করা। কিন্তু আমরা করি উল্টোটা। তাকে সম্মান না করে করি যে লাখ লাখ টাকা আয় করছে তাকে। কারণ আপনার মাথায় অলরেডি সেট হয়ে আছে যে টাকায় সব। টাকা ছাড়া দুনিয়া অন্ধ। হ্যা এটা ঠিক, টাকা লাগবেই জীবনে। এটা অবশ্যই দরকার আছে। তবে অর্থচিন্তার ফলে আমরা নিজেরাই যে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছি সে খেয়াল নেই আমাদের।
অর্থচিন্তার কারণেই জীবনের সব জায়গায় প্রতিযোগিতা করছি। কে কার থেকে এগিয়ে থাকবে সেটা নিয়েই পরে আছি। অথচ আমাদের উচিত অর্থচিন্তা না করে কাজ করা। আপনি কাজই করেন না তাহলে অর্থের চিন্তা কিভাবে করবেন! আপনাকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। কারণ কাজের মাধ্যমেই আপনি নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারবেন। আর আপনি যদি দক্ষ হয়ে যেতে পারেন তাহলে আপনার ভেল্যু আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। আপনাকে কোনো কিছু বের করতে হবে না। উল্টো যার দরকার তারাই আপনাকে খুজেঁ বের করতে হবে। এজন্য আমাদের অর্থের চিন্তা না করে নতুন কিছু জানা অর্থাৎ জ্ঞান সাধনা করা জরুরি। লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা যেন অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দী হয়ে না যায়। মনে রাখবেন অর্থেরও কিন্তু কু-প্রভাব আছে। আপনার কাছে লাখ টাকা থাকলেই আপনি সুখী হতে পারবেন না। সবসময় আপনার মাঝে টাকাগুলো নিয়ে টেনশন কাজ করবে!
এটাকে সোজা বাংলায় বলে অর্থের কু-প্রভাব। যেটা মানুষকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়। শান্তির ঘুমকে হারাম করে দেয়। যারা অসাধুপায়ে টাকা উপার্জন করে তারা দেখবেন ভালো থাকতে পারে না! কোনো না কোনোভাবে টাকা খরচ হয়ে যায়। যারা টাকা যতবেশি তার চাহিদাও তত বেশি। আসলে অর্থচিন্তা আমাদের যে করতে হবে না, এমনটাও না! জীবনে চলার পথে টাকার দরকার অবশ্য আছে। তবে আপনাকে আগে কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে। ছোট হোক বড় হোক যেকোন কাজে লেগে পরতে হবে। আগে আপনাকে দক্ষ হতে হবে, শিখতে হবে। আপনি বাড়িতে বসেই যদি পাচঁতলা বিল্ডিং বানানোর স্বপ্ন দেখেন এটা হাস্যকর কথা ছাড়া আর কি হতে পারে। সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের জীবনে টাকার খুব প্রয়োজন কিন্তু তারা কাজ করতে আগ্রহী না! তাদের কথা হলো টাকা একদিন ধরা দিবেই! আদৌ কি টাকা ধরা দিবে তাদের কাছে।
আগে তো কাজ করতে হবে তারপর টাকা! এটা বলতে গেলে সমানুপাতিক সম্পর্ক। যে যতবেশি কাজ করতে পারে তার ভেল্যু তত বেশি দিনশেষে সে টাকাও আয় করে ভালো। প্রাইভেট কোম্পানি গুলোতে এমন কর্মীই চাই। যে কর্মী কাজ করতে আগ্রহী। তো আজকের মূল কথা কিন্তু একটাই, " টাকার চিন্তা না করে কাজ করতে হবে আমাদের! " জীবনে ভালো থাকতে হলে কাজের কোনো বিকল্প নেই। মানুষের কাজের বয়সেরও একটা লিমিট থাকে। একটা সময় আপনার কাজ করা সামর্থ্যও থাকবে না। এজন্য ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে হলেও কাজ করতে হবে। জীবনের শেষ সময়ে কিছু অর্থও সঞ্চয় করে রাখতে হবে। এজন্য যে বয়সটা পরিশ্রম করার, সে সময়টাতে প্রচুর কাজ করাই ভালো বলে মনে করি।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
twitter share
অর্থ যেন সকল সুখের মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে। আপনি যতই শিক্ষিত হোক না কেন আপনি যদি কোন ভাল অর্থ উপার্জন না করতে পারেন। তাহলে আপনার কোন দাম থাকবে না এই সমাজে। সমাজে যার টাকা রয়েছে দাম রয়েছে। তাছাড়া টাকা রয়েছে দাম নেই। যার কারণে আমরা যে পড়াশোনা করেছে কি অর্থের কারণে আসলেই ঠিক পড়াশোনা করতাছি এই অর্থের কারণে, কিন্তু পড়াশোনা করে যদি আমরা অর্থ কামাই করতে না পারি তাহলে সেই পড়াশোনা করলে দাম নেই এই সমাজে।
আসলেই ভাই, পড়ালেখা করে অর্থ উপার্জন করতে না পারলে সমাজ পরিবার সবার কাছে যেন হতে হয় মূল্যহীন বস্তু! কি এক অবস্থা 😐
আসলে এখন বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষিতদের সম্মান দেয় না। বরং যারা বেশি টাকা পয়সা আয় করে অল্প পড়াশোনা করেও, তাদেরকেই বেশি সম্মান দেওয়া হয় সমাজে। যে মানুষের টাকা বেশি সেই মানুষ সম্মান পায় বেশি তার কদর বেশি সমাজে। এখন মানুষ শিক্ষা দেখে না টাকা দেখে। কিন্তু যারা শিক্ষিত তাদেরকে কেউ কদর করেনা সম্মান দেয় না তেমনভাবে। আপনি যে কথাগুলো এখানে উল্লেখ করেছেন কথাগুলো একেবারে ঠিক বলেছেন। আমাদেরকে প্রতিনিয়তই কাজ করে চলতে হবে। আর সেই কাজটা অবশ্যই সৎভাবে করতে হবে। পরিশ্রম প্রতিনিয়তই করে যেতে হবে আমাদের।
আসলেই আপু, মানুষ এখন শিক্ষাটা তেমনভাবে মূল্যায়ন করে না। যার টাকা আছে তারই প্রাধান্যহয়। গ্রামের দিকে এর প্রভাবটাও বেশি
আগের মানুষজন পড়ালেখা কিসের জন্য করেছে সেটা জানিনা। তবে আমি যখন থেকে পড়ালেখা শুরু করেছি তখন থেকে আমার মাথায় একটা চিন্তা থাকতো। সেই চিন্তা টা হচ্ছে যে পড়ালেখা করে একটি ভালো পজিশনে যাব। ভালোভাবে টাকা ইনকাম করব এবং ভালোভাবে দিন যাপন করব। আসলে এই জ্ঞান অর্জনের দিক বিবেচনা করলে অর্থের বিষয় আসেনা। প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। যদিও আমরা পড়ালেখা করি ঠিক আছে যে পড়ালেখায় মনুষত্বের দিক পরিবর্তন হয় না সেই পড়ালেখা আমাদের জন্য কলঙ্কিত। কিন্তু এখন সেই কলঙ্কিত দিক বিবেচনা করা হয় না। এখন প্রধান চিন্তা হচ্ছে পড়ালেখা করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়া।
এটা একদম বাস্তব কথা বলেছেন আপু। এখন পড়ালেখার উদ্দেশ্যই টাকা উপার্জন।