স্বস্তির জয় বাংলার
10-11-2023
২৬ কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো আজকে চলে এলাম খেলা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। আপনারা জানেন যে ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলছে। এরই মাঝে দুটি দল অলরেডি সেমিফাইনালে চলে গেছে। এদিকে অস্ট্রেলিয়াও সেমিফাইনালে চলে গেছে। বাকি রইল এক টিম। বাংলাদেশের আশা আগেই বাদ দিতে হলো। বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হলেও পরের ম্যাচগুলো হেরেছে। কিন্তু আমরা বাঙালীরা একটু আবেগপ্রবণ বেশি। বাংলাদেশ খারাপভাবে হারলেও আমরা ঠিকই খেলা দেখি। ডাচদের কাছে হারার পর ভাবছিলাম আর খেলাই দেখবো না। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে হলে বাংলাদেশকে শ্রীলংকার সাথে জয় ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বলতে বাচাঁমরার লড়াই ছিল বাংলাদেশের। হেরে গেলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাদ!
গত ৬ই নভেম্বর, বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকার মধ্যকার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। সেদিন বাংলাদেশের একাদশে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়! মোস্তাফিজকে বসিয়ে দলে নেয়া হয় তানজিম সাকিবকে। রাইট হ্যান্ডেড এ বোলার ভালোই বোলিং করেছিল এর আগে। খেলা শুরুতেই প্রথমে বল করতে আসে শরিফুল ইসলাম । শরিফুল ইসলাম প্রথম ওভারে ই উইকেটের দেখা পায় কুশল পেরেরা রাখে আউট করে প্যাভিলিয়ন পাঠায় । ইনিংসের শুরুটা ভালোভাবেই করে বাংলাদেশ । তারপর মাঠে এসে কুশল ম্যান্ডিজ । কুশল ম্যান্ডিজ ও পাথুম নিশাঙ্কা দুজনেই দেখে শুনেই তারা ব্যাটিং করতে থাকে । প্রথম দশ ওভারে আর কোন উইকেট হারায়নি শ্রীলঙ্কা । ম্যাচের ১২ তম ওভারে সাকিব যখন বল করতে আসে তখন কুশল মেন্ডিসকে আউট করে সাজঘরে ফেরায় । এবারে বিশ্বকাপে কুশল ম্যান্ডিস দারুন ছন্দে ছিল । কুশল ম্যান্ডিস আউট হওয়ার পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা । তারপর নিসাঙ্কাও আউট হয়ে যায় ।
মাঠে তখন দুজনই নতুন প্লেয়ার । সামারাবিক্রমা এবং আসালঙ্কা দুজনই মিলে দেখে শুনে খেলতে থাকে । তারা একটি ভাল পার্টনারশিপ গড়ে তোলে । কিন্তু শ্রীলংকার দলীয় সংগ্রহ যখন ১৩৫ রান তখন সামারাবিক্রমা আউট হয়ে সাজঘরে ফেরে। তারপরে মাঠে আসে ম্যাথিউস কিন্তু তিনি টাইমড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরে। আসলে ১৪৬ বছরের ইতিহাসে ম্যাথিউস প্রথম প্লেয়ার যে কিনা টাইমড আউট হয়েছে । এটা নিয়ে অবশ্য অনেক বিতর্ক হয় । তারপরে মাঠে আসে ডি সিলভা । তারপর আসালাম্কা ও ডি সিলভা মিলে আরেকটি পার্টনারশীপ গড়ে তোলে । কিন্তু সেই পার্টনারশিপ ভাঙ্গে ২১৩ রানের মাথায় । তারপর মোটামুটি আসালাঙ্কাই খেলাটাকে চালিয়ে যায় । তার ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি করে ফেলে এবং শেষ অবধি শ্রীলংকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০ ওভার শেষে ২৭৯ রানের ।
তো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ব্যাটিং পারফরম্যান্স বিবেচনায় আমি ধরে নিয়েছিলাম যে হয়তো বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার সাথে এত রান টার্গেটটা চেঞ্জ করতে পারবেনা । তো বাংলাদেশ ব্যাটিং করতে নামে । শুরুতে দেখেশুনে খেলতে থাকে বাংলাদেশ কিন্তু তানজিদ হাসান আউট হয়ে বসে। আসলে তানজিদ হাসান এর উপর আমাদের যে আস্থাটা ছিল সেটি এ বিশ্বকাপের সে রাখতে পারেনি । তামিমের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সে ভালো খেলতে পারেনি কোন ম্যাচ । তামিম থাকলে হয়তো ওপেনিং পার্টনারশিপ টা ভালই হতো । এদিকে লিটন ও স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে শুরু করে । তারপর মাঠে আসে শান্ত । এবারের বিশ্বকাপে আসলে শান্ত তেমন জ্বলে উঠতে পারেনি। এখন পর্যন্ত তো আমি ভেবেছিলাম হয়তো শান্ত আজকে ভালো কিছু করতে পারবে । তো ম্যাচের শুরুতেই দেখছিলাম শান্ত ভালোভাবেই শুরু করেছিল । কিন্তু লিটন বেশিক্ষণ থাকতে পারলো না মাঠে । ২২ রান করে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরে লিটন । তারপর মাঠে আসে সাকিব আল হাসান ।
সাকিব আর শান্ত দুজনই দেখে শুনে খেলতে থাকে । তারা ১৬৯ রানের একটি দারুণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলে । আসলে এমন মোমেন্ট এ এত বড় রানের পার্টনারশিপ এটাই মূলত বাংলাদেশকে জয়ের দিকে অনেক এগিয়ে দেয় । দলীয় সংগ্রহ যখন ২১০ রান তখন ম্যাথিউসের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরে সাকিব আল হাসান । তারপর মাঠে আসে মাহমুদুল্লাহ । কিন্তু সাকিব আউট হওয়ার টিক পরের ওভারে শান্ত আউট হয়ে যায় । তবে তারা দুজনে মিলে ভালো একটি পজিশনে এসে দাঁড় করিয়ে দিয়ে যায় বাংলাদেশকে । মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক দেখে শুনে খেলতে থাকে । কিন্তু মুশফিকের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেনি । দলীয় সংগ্রহ যখন ২৪৯ রান তখন মুশফিকুর রহিম আউট হয় । তারপর মাঠে আসে মিরাজ । তারপর কিছুক্ষণ পরই মাহমুদুল্লাহ আউট হয়ে যায় । তবে বাংলাদেশের রান রেট যেহেতু ভালো ছিল । আমি ধরে নিয়েছিলাম জিতে যাবে । কিন্তু বাংলাদেশ আসলে এমন অবস্থা হয় মাঝে মাঝে কয়েক রানের ভিতরে বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বসে । ৩ উইকেট বাকি রেখে ৪১.১ ওভারে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় । এই জয়ের ফলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আসাটা বাঁচিয়ে রেখেছে ।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই জয়টা বাংলাদেশের খুবই দরকার ছিল। কারণ ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি খেলতে হলে এই জয়টার গুরুত্ব অপরিসীম ছিল। যদিও বাংলাদেশ ডমিনেট করে খেলেছে এই ম্যাচটা। বিশেষ করে সাকিব ও শান্তর খেলাটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার ম্যাচটার রিভিউ দেওয়ার জন্য।
একদম ভাইয়া, সাকিব আর শান্তর জুটির জন্যই জয়টা সহজ হয়েছে।
শেষের দিকে হলেও বাংলাদেশ যে অবশেষে জয়লাভ করেছে বিষয়টা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। যদি বাংলাদেশে এই জয়টা লাভ না করতো তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নিতে পারত না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য এই জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এটা অবশ্য ঠিক বলেছেন ভাই, বাংলাদেশ যে জিততে পেরেছে এটাই অনেক।