মোঘল কাবাব হাউজের স্পেশাল লাচ্ছি ও নতুন অভিজ্ঞতা

18-10-2022

০৩ কার্তিক ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় অনেক ভালো আছেন আপনারা 🌼। আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি। নতুন পরিবেশে এসেছি কিছুদিন হলো। নতুন পরিবেশে এসে নিজেকে সেই পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সব থেকে ভালো লাগার বিষয় হলো নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারতেছি। আশুগঞ্জ এ না আসলে হয়তো কখনোই শিখতে পারতাম না। যাক, সামনে হয়তো আরও নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবো।

IMG20221004100913.jpg

এইতো কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম ঢাকা পল্টনে। এর পিছনে অবশ্য কারণ রয়েছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এর জন্য সেফটি জুতার কথা কিনতে বলা হয়েছিল। আমার সেফটি জুতা কেনা হয়নি। আমার ফ্রেন্ডরা অবশ্য আগেই সেফটি জুতা কিনে ফেলেছিল। আমার সাদা একজোড়া শো জুতা ছিল। ভেবেছিলাম এটা দিয়েই চালিয়ে দেয়া যাবে। কিন্তু তার আর হলো না। আমাদের আশুগঞ্জ ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্যার সরাসরি বলে দিয়েছে নরম জুতা পরে ট্রেনিং করা যাবে না। অবশ্যই কালো সেফটি শো পরে আসতে হবে। এটা অবশ্য আমার ভালোর জন্যই বলেছে। কারণ বিদ্যুৎ এর কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সেফটি জিনিসটা আগে মাথায় রাখতে হবে। আগের নিজের সেফটি তারপর কাজ। এজন্য জুতা কিনতে যেতে হলো ঢাকা। আশুগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে বেশিক্ষণ লাগেও না। যেহেতু টিকেট পাবো না। তাই স্ট্যান্ডিং টিকেট সংগ্রহ করেই যেতে হবে। গত বৃহস্পতিবার এগারো সিন্ধু এক্সপ্রেস দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। ভৈরব থেকে বিকাল তিনটার দিকে রওনা দিয়েছিল। সেখান থেকে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। প্রায় দেড় ঘন্টার লাগে ঢাকা পৌছাঁতে। ট্রেন দিয়ে সোজা চলে যায় কমলাপুর স্টেশনে। সেখান থেকে পল্টন অবশ্য কাছেই। তবে আমি এর আগে কখনো যায়নি।

স্যার আমাকে বলে দিয়েছিল পল্টন ফলওয়ে সুপার মার্কেটে প্রটেকটিভ জুতা জোড়া পাওয়া যায়। গোগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে কমলাপুর স্টেশন থেকে সোজা চলে আসি পল্টনে। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে চলে আসি ফলওয়ে সুপার মার্কেটের কাছে। এসেই পড়ে যায় আরেক ঝামেলায়। রিকশা ভাড়া ত্রিশ টাকা। কিন্তু আমার মানিব্যাগে একটি পাচঁশত টাকার নোট ছাড়া আর কোনো টাকাই নেই। আশেপাশের কয়েকটি দোকানে খোজাঁখুজিঁ করে পেলাম না। তারপর একটি রেস্টুরেন্ট এর দেখা পেলাম। রেস্টুরেন্ট এর নাম মোঘল কাবাব রেস্টুরেন্ট। দেখে ভালোই মনে হলো। ভিতরে প্রবেশ করেই ঠান্ডাজাতীয় কিছু অর্ডার দিলাম। সকাল সকাল লাচ্ছি পাওয়া যায়। সেটাও আবার স্পেশাল লাচ্ছি। কোনো কিছু না ভেবে অর্ডার দিয়ে দিলাম। কিন্তু কথা হলো লাচ্ছি খেয়ে টাকা দিতে হবে। আমার এখন খুচরা টাকা দরকার, বাহিরে রিকশা দাড়িঁয়ে আছে। ক্যাশকাউন্টারে কথা বলে ম্যানেজ করে নিলাম। তারপর রিকশা মামাকে ত্রিশ টাকা দিয়ে আবার রেস্টুরেন্ট এ চলে আসলাম।

IMG20221004100841.jpg

IMG20221004101147.jpg

প্রচন্ড রোদে শরীর ঘামে একদম ভিজে গিয়েছিল। তারপর রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে প্রবেশ করে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। এসি ভিতরে অন করা। নিমিষেই শরীর টান্ডা হয়ে গেল। তারপর আমাকে দেয়া অর্ডার করা স্পেশাল লাচ্ছি। এই স্পেশাল লাচ্ছি ১৭০ টাকা রেখেছিল! আমি তো পুরা বোকা হয়ে গিয়েছিলাম। না জেনে অর্ডার দিলে যায় হয় আরকি। নরমালি ৮০ টাকা দিয়ে লাচ্ছি খাওয়া হয়। কিন্তু একটু স্পেশাল হওয়ায় লাচ্ছির দামও বেশি নিয়েছে। যাক, লাচ্ছি খেয়ে ভালোই লাগল। অন্য লাচ্ছির থেকে এটার স্বাদ সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। খালি পেটে বের হয়েছিলাম। লাচ্ছি খেয়ে পেট যেন ঠান্ডা হয়ে গেল হাহাহা! তবে সব থেকে ভালো লেগেছিল রেস্টুরেন্ট এর ভিতরের ডেকোরেশন। যে কাউকে মুগ্ধ করাবে ভিতরের ডেকোরেশন। ভিতরে যথেষ্ট নীট এন্ড ক্লিন। রেস্টুরেন্ট এ কর্মরত কর্মীরাও যথেষ্ট হেল্পফুল ছিল। সবাই একই ড্রেস পরে আছে। যারা এখানে খেতে আসে সবার সাথে ফ্রেন্ডলি এবং নম্রভাবে কথা বলে থাকে আমার যা মনে হলো। এদিকে আমার লাচ্ছি খাওয়া শেষ। টাকা আগেই দিয়ে দিয়েছিলাম তাই আর ক্যাশ কাউন্টারে যাওয়া হয়নি।

IMG20221004101215.jpg

IMG20221004101221.jpg

তারপর যে কাজের জন্য এসেছিলাম সে কাজের জন্য ফলওয়েন সুপার মার্কেটে চলে যায়। প্রথমবার গিয়েছি এজন্য দোকানও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একেবারে পাচঁ তলা পর্যন্ত সবগুলো দোকান চেক করা হয়েছিল। তারপর কয়েকজন লোকের কাছে জিজ্ঞেস করায় তারা বলেছিল একেবারের নিচের তলায় প্রটেকটিভ শো এর দোকান পাওয়া যাবে। এখানে ডিফেন্স এর সব জুতা পাওয়া যায়। এছাড়াও ড্রেস পাওয়া যায়। যাক, ফাইনালি দোকানটা খুঁজে পেলাম এবং ৫৫০ টাকা দিয়ে জুতা জোড়া কিনে নিলাম। আমাকে অবশ্য আগেই জুতার প্রাইজ সম্পর্কে অবগত করা হয়েছিল। এজন্য বেশি দামাদামি করার প্রয়োজন হয়নি। জুতা কিনে অবশ্য ঐদিন ব্যাক করি।

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w
Date13 October, 2022

যায়হোক, স্পেশাল লাচ্ছি ও জুতা কেনার অঅভিজ্ঞতাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করা হলো। আশা করি কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছেন আমার অভিজ্ঞতা কেমন হয়েছিল! আর বেশি কথা বাড়ালাম না। আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

 2 years ago 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আপনার জুতা কিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়া এবং রেস্টুরেন্টে যে লাচ্ছি খাওয়াটা বেশ ভাল ছিল। আসলে গরমের সময় এই লাচ্ছি খেলে শরীরটা বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। স্পেশাল লাচ্ছি হওয়ার কারণে দামটা একটু বেশি নিয়েছে। এজন্য কোন কিছু খাওয়ার আগে দেখে নিলে মনে হয় ভালো হয়। অবশেষে আপনার কাঙ্খিত জুতা টি কিনতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি আপু গরমের মধ্যে লাচ্ছি খেয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। আর খেতেও ভালো লেগেছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ 🌼

 2 years ago 

বাহ ভাই বেশ ভালো একটি জায়গাই ইন্ডাস্ট্রিয়ার অ‍্যাটাচমেন্ট নিয়েছেন। এবং এই ধরনের কাজে তো সেফটি ডিভাইস ব‍্যবহার করতেই হবে তাছাড়া উপায় নেই। জুতার দামটা খুব একটা বেশি না তবে লাচ্চির দামটা একটু বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে।

 2 years ago 

হুমম বাংলাদেশের সব থেকে বড় পাওয়ার প্লান্টের মধ্যে একটি। বেশ কাজ শিখিয়েছে। লাচ্ছির দামটা বেশি কি না জানিনা তবে না জেনে খেলে যায় হয় আরকি!

 2 years ago 

তাহলে ফাইনালি ৫৫০ টাকা দিয়ে জুতা জোড়া পি নিয়ে ফেললেন আসলে রেস্টুরেন্টে খাবার আপনার কোন প্ল্যান না থাকলেও কপালে ছিল ওই জন্য খেতে হল 😜, কাজের ক্ষেত্রে প্রথমে সেফটিই ফাস্ট অনেক সুন্দর একটি কাজ করেছেন। আপনার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের সেফটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে ঠিক বলেছেন জীবনের প্রথম সেফটির দরকার। জুতা কিনতে ঢাকায় নিয়েছেন বেশ ভালই লাগলো। কিন্তু জুতা কিনতে গিয়ে একটি খুব সুন্দর রেস্টুরেন্টে গেলেন। আবার দেখলাম একদম একটা লাচ্ছি খেলেন। আসলে আমি মনে করি নতুন কোন জায়গায় গেলে কোন কিছুর দাম না জেনে অর্ডার করা ঠিক নয়। তেমনি ভাবে নিজের এলাকায় ৮০ টাকা লাগছে কিন্তু সেখানে গিয়ে ১৭০ টাকা। বলতে গেলে ডাবল এর চেয়ে বেশি। দেখা যায় যে সব সময় আমাদের কাছে বাড়তি টাকা নাও থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত ৫৫০ টাকা দিয়ে জুতা টা কিনেই ফেলেছেন। বেশ ভালই লাগলো।

 2 years ago 

জি আপু জীবনের সেফটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। রেস্টুরেন্ট টি ভালোই ছিল। তবে রিকশা ভাড়া দেয়ার জন্য টাকা ভাংতি ছিল না এজন্য গিয়েছিলাম 🌼

 2 years ago 

নিজেকে সুরক্ষা রাখার জন্য অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী। ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় একটা কথা আছে সেফটি ফাস্ট ওয়ার্ক লাস্ট। আগে নিজের শরীরের সেফটি প্রয়োজন তারপরে কাজ আপনার স্যার আপনার ভালোর জন্যই এই কথাটা বলেছে। জুতা কিনতে গিয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আসলে বর্তমান সময়ে খুবই গরম পড়ছে যার কারণে বাহিরে গেলে শরীর দিয়ে অঝরে পানি বের হয়। যাই হোক খুব ক্লান্ত মুহূর্তে রেস্টুরেন্ট এর ভেতরে গিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি অনুভব করেছেন। সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে চমৎকারভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই। আগে নিজের সেফটি, তারপর কাজ! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 🌼

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64333.84
ETH 2760.35
USDT 1.00
SBD 2.65