ক্ষমতার বড়াই!
26-05-2024
১২ জৈষ্ঠ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
অহংকার পতনের মূল এ কথাটি আমরা সবাই জানি। কিন্তু সমাজের দিকে তাকালেই চোখে পরে বেশ কিছু অহংকারী ব্যক্তিদের! তাদের স্বভাব, আচরণ দেখেই বুঝা যায় কতটা দাম্ভিকতা নিয়ে সমাজে বসবাস করছে। মানুষ তিন জিনিস নিয়ে বেশি অহংকার করে! টাকা-পয়সা, সুন্দর চেহারা, সম্পদ! অথচ এই তিনটির একটিও কিন্তু ক্ষণস্থায়ী নয়! আপনার অনেক টাকা পয়সা, সম্পদ থাকতেই পারে। এটা দোষেরও কিছু নয়। তবে সেগুলো নিয়ে অহংকার করার মাঝে তেমন বীরত্ব আমি দেখছি না! টাকা পয়সা বলেন সম্পদ বলেন আজ আছে কাল নেই! আপনি যে দশতলা বিল্ডিং নিয়ে গর্ববোধ করছেন হতে পারে সেটি কাল নাও থাকতে পারে! মাটির সাথে মিশে যেতেও পারে। কিছুদিন আগে ইরাকে ভূমিকম্পে সবকিছু যেন মাটির সাথে মিশে গেল! কত বড় বড় অট্রালিকা নিমিষেই ভেঙে গেল! অথচ আমরা সেগুলো থেকে শিক্ষা নেয় না!
পড়াশোনার সুবাধে বেশ কিছু জায়গায় থাকার সৌভাগ্য হয়েছে! যেহেতু আমি একজন ছাত্র মেসে থেকেই পড়াশোনা করতে হয়। আমি আসলে একজন এডমিশন ক্যান্ডিডেট ও। আমি যে বাসায় থাকি সেটা আমাদের কোচিং এর সাথে চুক্তিবদ্ধ করে নেয়া বাসার মালিকের সাথে। আমরা বাসা ভাড়া দেয় কোচিংকে আর কোচিং দেয় বাসার মালিককে । এডমিশন মেসগুলোতে হয় কি এডমিশনের আগ পর্যন্ত কনটাক্ট করা থাকে যে সেখানে প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট থাকতে পারবে। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই নোটিশ দেয়া হয়েছে যে আমাদের সবাইকে পহেলা জুন থেকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে হবে। আমরা আসলে ব্যাপারটা কোচিং কর্তৃপক্ষকে জানায়! তারা আমাদের জানায় যে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টা ক্লিয়ার করবে! তো গতকাল কোচিং কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানায় যে বাসায় থাকা যাবে না। অন্য বাসা ঠিক করতে হবে। বাসার মালিক নাকি অন্য একটা কোচিংকে বাসাটা দিয়ে দিয়েছে!
অথচ মেস ছাড়ার নোটিশ দিতে হয় অন্তত এক মাস আগে! মালিক পক্ষ নাকি আর পি আর কোচিং কে দিয়ে লস করেছে বিল্ডিং! কিন্তু আর পি আর কোচিং কর্তৃপক্ষ জুলাই এর এক তারিখ অবধি বাসার টাকা এডভান্স করে রেখেছে! মালিকপক্ষ কোনো ভাবেই আমাদের থাকতে দিবে না। তারউপর মালিকপক্ষ আমাদেরকে এসে বলছে যে এখন নাকি পানি বিলও দিতে হবে! তাছাড়া কোচিং কর্তৃপক্ষের লোকদের সাথেও আজেবাজে কথা বলেছে! তারা কোনো সুষ্ঠু সমাধান দেয়নি। বরং আমাদের উপর বিষয়টা চাপিয়ে দিয়েছে। এমন অবস্থায় আমাদের মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে! সামনে এডমিশনের আর দুই মাস বাকি। এই টাইমে ছাত্ররা কোথায় যাবে! আসলে ক্ষমতার দাপট আজ আছে কাল নেই!
আপনি কাউকে বিপদে ফেলে নিজে কখনোই ভালো থাকতে পারবেন না! প্রকৃতি কখনো কাউকে ছাড় দেয় না। কতদূর দূরান্ত থেকে আমাদের মতো ছাত্ররা এখানে পড়ালেখা করতে আসে! বাসার মালিকদের এমন ব্যবহার মোটেও কাম্য নয়। হতে পারে তার অঢেল টাকা। কিন্তু টাকা থাকলেই কি মানুষ হওয়া যায়! এই যে, এতোগুলো ছাত্রদের সাথে এমনটা করলো মালিকপক্ষ কি কখনো ভালো থাকতে পারবে! ঘুম ভাঙলে সকাল আর না ভাঙলে পরকাল! অহেতুক এতো দাপট কেন? মালিকপক্ষ কিন্তু চাইলেই পারতো দুইটা মাস আমাদের সবার দিকে তাকিয়ে সবকিছু সেক্রিফাইস করার! আসলে সম্পদ নিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখানো ব্যক্তিরাই প্রকৃত অর্থে বোকা! তারা জানেও না, এ সম্পদ কাল নাও থাকতে পারে। মানবিকতা যেন ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে! মানুষের মাঝেই তৈরি হচ্ছে ভেদাভেদ! আর আছে সে আরও চাই।
দিনশেষে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আপনি হয়তো সাময়িক সুখ পেতে পারেন কিন্তু কাউকে কষ্ট দিয়ে কখনোই আপনি ভালো থাকতে পারবেন না! তাই ক্ষমতার দাপট দেখানোর আগে আমাদের ভাবা উচিত, কোথায় আমাদের অবস্থান ছিল আর এখন আমরা কোথায় এলাম! ক্ষমতার দাপট দেখানো মানুষগুলোর সুবুদ্ধির উদয় হোক! মানবিক যেন হতে পারে সেটাই কামনা করছি।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
টাকা পয়সা মানুষকে এতটা নিচে নামিয়ে দিয়েছে যে মানবতা ন্যায়-নীতি সবকিছু তাদের কাছে মূল্যহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ঘটনাটি আপনাদের সাথে ঘটেছে সত্যিই দুঃখজনক। ক্ষমতা টাকা পয়সা সবকিছু এই পৃথিবীতে অসহায় করে তুলেছে। যেটা অন্যান্য ক্ষেত্রেও দেখতে পাই খুবই খারাপ লাগলো।
খুব খারাপ ই লাগলো বাড়ির মালিকের আচরনে।অন্তত এক মাস আগে তো জানানো উচিত।ঢাকায় তো প্রায় দুই মাস আগে জানাতে হয়।দূর দূরান্ত থেকে ছাত্ররা এসে বিপাকেই পরেছে।নূনতম মানবতা বোধটুকু থাকা উচিত।টাকা আছে বলে দাপট দেখিয়ে লাভ নেই।মানুষ কে বিপদে ফেললে নিজের ও বিপদে পরতে হবে এটা ভুলে গেলে চলবে না।