১ম পর্বঃ লিপা
02-01-23
১৯ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
বাহিরে শীতল হাওয়া বইছে! উঠোনে জামা-কাপড় টাঙানো! সকাল থেকে রোদের দেখা নেই! শীতের সময়টাতে রোদের দেখাও পাওয়া যায় না। লিপা ঘর থেকে বেরিয়ে আসে! সব জামা কাপড় ধুয়ে দিয়েছে! কাল আবার যেতে হবে চেয়ারম্যান চাচার কাছে! জামা না শুকালে যাওয়া যাবে না! লিপার মা তখন লিপাকে বলে বাড়ির বাইরে বাদল কাকার আড়ে জামা কাপড়গুলো দিয়ে আসতে। ঐখানে একটু হলেও রোদের দেখা পাওয়া যায়! বিকালের আগে হয়তো শুকিয়ে যাবে। লিপা পরিবারের বড় মেয়ে! ছোট একটা বোন আছে! ফ্যামিলি এতোটাও স্বচ্ছল নয়! গ্রামে বাবার ফার্মেসী দোকান! কিন্তু তা দিয়ে কি আর সংসার চলে! লেখা-পড়ার খরচ, খাওয়ার খরচ সব মিলিয়ে বাবার ফার্মেসীতে উপার্জিত টাকা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে। ছোট পরিবার, তবে এতটুকুতেই খুশি!
গ্রামের একমাত্র মেধাবী মেয়ে লিপাকে বলা যায়! এইসএসসি তে লিপা জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়েছিল! গ্রামের একমাত্র মেয়ে লিপা যে কিনা জিপিএ ৫ পেয়েছিল! এ নিয়ে লিপার ভালো খ্যাতি গ্রামে! বাবার সুনামটুকু রেখেছে লিপা! এইসএসসি এর পর লিপা অনার্সে পড়াশোনা করছে! জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করছে। সেমিস্টার শেষ করে বাড়িতে চলে এসেছিল লিপা! গ্রামের চেয়ারম্যান মতিন ভূঁইয়া আবার লিপাকে খুব আদর করে! লিপার ভার্সিটি করোনা মহামারী বেড়ে যাওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন বন্ধ ঘোষণা করে! লিপা গ্রামের বাড়ি এসে জানতে পারে গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কিছু টিকাদারি লোক দরকার! চেয়ারম্যান কাকা লিপার নাম আগে থেকেই দিয়ে রেখেছিল! লিপার বাবা রহমান সাহেব অবশ্য চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে রেখেছিল।
লিপাদের গ্রামের মানুষজন এখনও অজ্ঞতার মধ্যে ডুবে আছে! করোনা মহামারী বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের মানুষজন টিকা দিতে যাচ্ছে না! তাদের শঙ্খা ইনজেকশন দিয়ে যদি করোনা ভাইরাস শরীরে ঢুকিয়ে দেয়! আল্লাহ যতদিন হায়াত রাখছে ততদিন বাচঁমো! এখন শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে মরতে চাইনা! লিপার কাছে এসে এসব বলতে থাকে পাশের বাড়ির রাহেলা আক্তার! করোনা ভাইরাসে টিকা দিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে! শরীরে নাকি প্রচন্ড রকমের জ্বর উঠে! রাহেলা আক্তারের মনে ভয়টাও সেখানেই! লিপা, রাহেলাকে আক্তারকে বুঝানোর চেষ্টা করে! কিন্তু কে শুনে কার কথা! রাহেলা আক্তারের এক কথা, না! সে না খেয়ে মারা যাবে কিন্তু করোনা ভাইরাসের টিকা দিবে না। গ্রামে কয়েকদিন করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করার মাইকিং চলছে। লিপা গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যায়! স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখতে পারে অনেক মানুষই আসছে স্বেচ্ছায় টিকা গ্রহণ করার জন্য।
চেয়ারম্যান চাচা লিপাকে আগেই বলে রেখেছিল! সে যেন সবকিছু লিপিবদ্ধ করে রাখে। লিপার দায়িত্ব, যারা টিকা গ্রহণ করছে তাদের নাম রেজিস্টার্ড করে দেয়া ফোনের মাধ্যমে! একে একে অনেককেই টিকা গ্রহণের রেজিস্টার্ড করে দেয়! লিপা যেখানে বসে টিকা গ্রহণের রেজিস্টার্ড করছিল! ঠিক সামনে একটি ছেলে বসে আছে! দেখতে সুদর্শন! লিপার দিকে কয়েকবার তাকিয়ে থাকে! লিপা ছেলেটির দিকে তাকাতেই চোখ সরিয়ে নেই! ছেলেটি যে জায়গায় বসেছিল, ঠিক সে জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে বসেছিল! লিপা বিষয়টা খুব ভালোভাবেই খেয়াল করছিল! ছেলেটি করোনার প্রথম ডোজ টিকা দিতেই এসেছে! হাতে ভোটার আইডি কার্ড! বেশ কিছুক্ষণ পর ছেলেটি লাইনে দাঁড়ালো টিকা গ্রহণ করার জন্য! সিরিয়াল আসলো ছেলেটির! নার্সের সামনে বসতেই ছেলেটির শরীর থরথর করে কাঁপছিল! ইনজেকশন দিতে যে ভয় পাচ্ছিল লিপা খুব ভালোভাবেই বুঝেছিল! লিপা ইচ্ছে করেই ছেলেটির কাছে যায়! তারপর অবশ্য ছেলেটি একটু সাহস পায়! কেমন যেন একটা ভালো লাগা তৈরি হয়!
ছেলেটি লিপার থেকে বয়সে বড়! ভোটার আইডি কার্ড দেখেই বুঝা গেল! যে ছেলে ইনজেকশন দিতে এতো ভয় পায় সে নিশ্চয় ভালো একজন ছেলে হবে! ছেলেটি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে এসেছিল! ঠিক তখন ছেলেটি টেবিলের উপরে রাখা একটি কলম নেয়। ভোটার আইডি কার্ডের ঠিক কোণায় লিখে দেয়! "আপনার ফোন নাম্বারটা কি দেয়া যাবে?" লিপার কাজ ভোটার আইডি কার্ড দেখে রেজিস্টার্ড করে দেয়া! লিপা তখন তার ফোন নাম্বারটি ভোটার আইডি কার্ডের উপর লিখে দেয়! হয়তো লিপাও ছেলেটিকে ভালো লেগে যায়! লিপার নাম্বার পেয়েও ছেলেটি ভীষন খুশি! তারপর থেকেই শুরু হয় তাদের মাঝে ভাবের আদান-প্রদানের!
চলবে....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমার করোনার সেকেন্ড টিকা দেওয়ার সময় নার্সের সাথে এরকম ইনসিডেন্স ঘটে যায়, তবে আমার ভাইয়া তো সাহস নেই কারো নাম্বার চাও, এত সহজেই একটা মেয়ের নাম্বার দিয়ে দেয়? গল্প জানো আরো ইন্টারেস্টিং হয়ে যাচ্ছে।
হাহাহা! ভাই গ্রামের মেয়ে তো! চরিত্রটি ভেবেছিলাম এভাবে ফুটিয়ে তুললে ভালো হবে!
আমার মনে হচ্ছে লিপা এবং ছেলেটির মধ্যে প্রেম হয়ে যাবে। না হলে কি ছেলেটি বলার সাথে সাথে লিপা তার ফোন নাম্বারটি দিয়ে দেয়। সত্যি ও খুবই মেধাবী স্টুডেন্ট। আমার মনে হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বে আরো বেশি জমজমাট হবে। ছেলেটির নাম তো এখনো বললেন না। অনেক প্রশ্ন মাথায় আসছে। আশা করছি পরের পর্বে সবকিছু ক্লিয়ার ভাবে তুলে ধরবেন। পরের পর্ব দেখার অপেক্ষায় অবশ্যই থাকলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি আপু পরের পর্বটি পড়লে বেটার আইডিয়া পাবেন! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু 🌼🦋
আমি গল্প পড়তে অনেক পছন্দ করি কারণ এরকম গল্প গুলোর থেকে অনেক বিষয় জানার থাকে এবং অনেক শিক্ষা নেওয়া যায়। এটা কিন্তু শিওর যে ওদের মধ্যে প্রেম হয়ে যাবে। যদিও ওই ছেলেটি টিকা দেওয়ার সময় ভয় পেয়েছিল কিন্তু লিপা, তার পাশে দাঁড়ানোর কারণে সব বল দূর হয়ে গিয়েছিল। এরকম গল্প গুলো একটু বেশি ভালো লাগে পড়তে। খুব ইন্টারেস্টিং ছিল আপনার গল্পটি। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাইয়া! আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই আমার গল্প লেখা স্বার্থক! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🌼🦋
লিপা নাম্বার দাওয়াতে বুঝা যাচ্ছে ছেলেটিকে পছন্দ হয়েছে তার। মনে হয় লিপা ছেলেটির সাথে মনের আধান প্রদান করে ফেলেন। মেয়েটি পড়ালেখা অনেক গেজুয়েট তবে ছেলেটির সম্পর্কে এখনো কিছু জানতে পারলাম না। মনে হয় আগামী পর্বে কিলিয়ার কিছু জানতে পারবো। আশাই রইলাম পরের পর্বে কি ঘটে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে আমাদের মাঝে গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
জি আপু! আগামী পর্বে জানতে পারবেন ছেলেটি সম্পর্কে! ধন্যবাদ আপু 🌼🦋
এই ধরনের গল্প গুলো প্রেমের গল্প হলেও, এর মধ্যে কিছু নীতি বাক্য থাকেই।যে কারণেই গল্পগুলো অন্যান্য গল্পের থেকে আলাদা হয়ে ওঠে।আমার মনে হয় ছেলেটি এবং মেয়েটি একে অপরের প্রতি একসময় আকৃষ্ট হবেই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
জি দিদি! আপনি একদম ঠিক ধরেছেন! সামনের পর্বটি পড়লে বিষয়টি আরও ক্লিয়ার হবে!