আপনি নিরাপদে আছেন তো?

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

flame-1363003_1280.webp

copyright free image from pixabay

সকাল সকাল ঘুমটা ভেঙে গেল! ফোনটা হাতে নিয়ে সোস্যাল মিডিয়া ওপেন করতেই চোখে পড়লো আগুনে দাউ দাউ করা একটা ট্রেনের ছবি। ঠিক তখন খেয়াল করলাম একজন আগুনে দগ্ধ হয়েই ট্রেনের ভিতরেই মারা গিয়েছে, হাত একটা বাহিরে বের হওয়া! বুঝার বাকি রইল না, লোকটা শেষ চেষ্টা হয়তো করেছিল বাচাঁর জন্য! বিস্তারিত জানতে ইউটিউব এ কিছুক্ষণ নিউজ দেখলাম! যে ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা সেটি বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন। ভারত ফেরত এ ট্রেন ঢাকার গোপীবাগ আসতেই ট্রেনের চ বগীতে আগুনের বহৃিশিখা দেখতে পায়। স্থানীয়দের মতে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারীরা এ কাজটি করেছে! এখন আমার প্রশ্ন হলো আপনার সামনে একজনকে আগুনে পুড়তে দেখলে আপনি কি করতেন?

ট্রেনের ঠিক চ বগীতেই বসা ছিল একটি পরিবারের সবাই! মা বাবা আর তাদের সন্তান। ট্রেনে আগুন লাগার পরেই চিৎকার করতে থাকে ভদ্রলোক তাদেরকে বাচাঁনোর জন্য। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। আগুনে পুড়ে প্রথমে শিশুসহ তার মা মারা যায়। ঠিক তার পাশে তার বাবা চাইলেই বের হয়ে আসতে পারতো ট্রেন থেকে! কিন্তু আপনজনরা যেখানে নেই সেখানে থেকেই বা কি হবে! ভদ্রলোকও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেলেন! এখন আমার কথা হচ্ছে এই তরতাজা তিনটা প্রাণ চলে গেল এর দ্বায় কে নিবে?

আসলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার নামে যেভাবে জ্বালাও পোড়াও হয় সেটা আর কোনো দেশে হয় কি না সন্দেহ আছে! রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ভুগতে হয় আমাদের মতো সাধারণ জনগণের! দিনের পর দিন যখন সহিংসতা বাড়তে থাকে তখন সেটা সহ্যের সীমাও ছাড়িয়ে যায়! জ্বালাও পোড়াও এর নামে যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে সেখানে একজন মানুষ নির্বিঘ্নে চলাফেরাটাই এখন রিস্কি হয়ে পরছে। হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে সাধারণ জনগণই কেন বারবার ভোগতে হবে!

ট্রেনে করে হয়তো সবাই বাড়ির দিকেই ফিরছিল। কিন্তু কে জানতো তাদের বাড়ি ফেরা হবে না। দুষ্কৃতিকারীদের অগ্নিকান্ডে মৃত্যুবরণ করতে হবে তাদের! আসলে আমি রাজনীতি তেমন পছন্দ করি না! আর বাংলাদেশের রাজনীতির কথা নাই বললাম।
মাঝে মাঝে মনে হয় স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এসে মনে হয় এখনও স্বাধীন হতে পারেনি। পরাধীনই থেকে গেলাম। যেখানে দূর্নীতি, রাহাজানি, সহিংসতা বেড়েই চলেছে সেখানে বাংলাদেশ স্বাধীন হলো কই! অথচ আমাদের বর্তমান প্রজন্ম মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে না। ধারণ করে না তাদের অসামান্য আত্মত্যাগের কথা! তাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ পেয়েছি সেটা হয়তো অনেকের কাছেই অজানা!

জ্বালাও-পোড়াও এর নামে যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে সেটার শেষ কোথায়! আমরা চাই শান্তি-সম্প্রতি। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে কারো প্রাণ যেন নিভে না যাক। আসলে এমন ঘটনা দেখলে যে কারো খারাপ লাগবে। আপনার সামনে আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে অথচ আপনি কিছুই করতে পারছেন না এর চেয়ে খারাপ অনুভূতির্ আর কি হতে পারে! নিউজটা দেখার কিছুক্ষণের জন্য থমকে গিয়েছিলাম! জলজ্যান্ত মানুষকে আগুন পুড়িয়ে ফেলেছে! প্রশ্ন জাগে মনে, রাস্তায় চলাফেরা আমাদের জন্য নিরাপদ তো?

আপনি আমিও কিন্তু দুষ্কৃতিকারীদের চরম ভয়াবহতার শিকা হতে পারি। এজন্য আমি বলবো নিজের নিরাপত্তা আপনাকে নিজেই দিতে হবে। আসলে রাষ্ট্র কখনোই আপনাকে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত নয়! দুষ্কৃতিকারীদের মুখোশ উন্মোচন হোক এবং তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক! যারা এমন জঘন্য কাজের মাধ্যমে জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তাদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক! সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি 🌼

Sort:  
 6 months ago 

আসলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটার কথা আমি নিজেও শুনেছি। আর যখন এই ঘটনাটার কথা আমি শুনেছিলাম তখন অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল আমার কাছে। আসলে আমরা কেউই নিরাপদে নেই। রাজনীতি বিষয়টাই আমার কাছে জঘন্য মনে হয়। আসলে এই দেশটাতে এখন এইসব কিছু অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। ওই নিরীহ মানুষরা নিজেদের প্রাণটাই হারালো। তাদের তো কোন দোষ ছিল না। তাদের তো অধিকার ছিল এই পৃথিবীতে ভালোভাবে বেঁচে থাকার। কিন্তু এভাবে যে তাদেরকে মারা যেতে হবে, কেউই তো ভাবতে পারেনি।

 6 months ago 

জি আপু! রাজনীতি ব্যাপারটা আমার কাছেও মোটেও পছন্দ নয়

 6 months ago 

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই। ট্রেনে কারা আগুন দিল কেন দিন এসবের কিছুই হয়তো জানা যাবে না। বেনাপোল ট্রেনে আমি নিজেও বেশ কয়েকবার যাতায়াত করেছি। আজ এই জায়গা আমিও থাকতে পারতাম। সত্যি আমাদের প্রাণের দাম কোথায়। আর ট্রেনটা ভারত ফেরত না ভাই। এটা যশোর বেনাপোল হতে ঢাকা চলাচল করে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ওহ তাহলে আমি ভুল বলেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে 🌼

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

গতকাল থেকেই এই হৃদয়বিদারক ঘটনার দৃশ্য চেখে ভাষছে।আমরা কোথায় বসবাস করি যেখানে জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই।চোখের সামনে একটা মানুষ জ্বলে পুড়ে মারা যাচ্ছে এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে গেছি।রাজনৈতিক আক্রোশ এর স্বীকার হয়ে তরতাজা তিন তিনটা প্রাণ জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেলো এই দায় কার!জাতী হিসেবে আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত, যে এই ঘৃণিত কাজে নিজেকে সমর্পণ করলো তার কি লাভ হলো!ভগবান এদের কঠিন বিচারের ব্যবস্থা করুণ এটা বলা ছাড়া আরো কোনো ভাষা নেই।😥

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

জি আপু, আমিও চাই যারা এমন কাজ করেছে তাদেরকে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক

 6 months ago 

আমরা কেউ নিরাপদ নই।আমাদের তো কোন নিরাপত্তা নাই। কি যে বীভৎস নিউজ দাদা। আমি খবর দেখা বন্ধ করে দিয়েছি।খবরের বীভৎস নিউজ দেখলে আমার মানসিক সমস্যা হয়ে যায়।কাল এই নিউজ শোনার পর থেকে একটাই কথা মাথায় আসছে কি দোষ ছিলো এই নিরপরাধ মানুষদের।বাংলাদেশ জন্ম নেয়াটাই কি পাপ।

 6 months ago 

আসলেই আপু এমন নিউজ দেখলে হৃদয়টা যেন আতকে উঠে! মাঝে মাঝে মনে হয় এ দেশে জন্মগ্রহণ করাটা পাপের

 6 months ago 

যখন আমাদের দেশে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসে তখন থেকে জ্বালাও পোড়াও শুরু হয়ে যায়। আসলে এগুলো আর ভালো লাগে না এমন পরিস্থিতি। আমরা সবাই চাই সুস্থ একটি পরিবেশ। যেখানে থাকবে না কোন জ্বালাও পোড়াও। গতকালকের ভিডিওটি দেখে খুব খারাপ লাগছিল। যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রবেশ করেছিলাম তখন সবেমাত্র ট্রেনের মধ্যে আগুন ধরা শুরু করেছিল। কিন্তু এরপরে যে এত ভয়াবহতা রূপ ধারণ করবে তা আমার জানা ছিল না। ভীষণ মর্মাহত একটি ঘটনা।

 6 months ago 

জি আপু, আমরা চাই স্বাভাবিক পরিবেশ। যেখানে এসব জ্বালাও পোড়াও থাকবে না

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57839.82
ETH 3132.70
USDT 1.00
SBD 2.43