ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে একদিন
03-11-2023
১৯ কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। বরাবরই বলি ভালো থাকাটাই সবচেয়ে বড় কথা। কারণ ভালো থাকলে আপনি সবকিছুই করতে পারবেন। এই যে আমি বেশ কয়েকমাস ধরে ব্যাথায় কাতর থাকি! বলতে গেলে জার্নি করা আমার জন্য রিস্কি হয়ে গিয়েছিল। এজন্য কোথাও যাওয়া হয় না। অনেকদিন হলো কিশোরগঞ্জ ও যাওয়া হয় না। দুই মামার বাসা কিশোরগঞ্জ শহরে। তিনটা বছর শহরটাতে কাটিয়েছি। সে হিসেবে শহরের অনেক কিছুই আমার চেনাজানা। কিশোরগঞ্জ থাকতে প্রায়ই নামাজ আদায় করা হতো ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে। তো অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম পাগলা মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাবো। কিন্তু ঐ যে ব্যাথা আমার পিছু ছাড়ে না। মাঝে মাঝে প্রচন্ড রকমের ব্যাথা অনুভব হয়ে যায়।
কয়েকদিন ধরে ভালোই হাটাঁ চলা করতে পারি বলা যায়। তবে সেটাও সাবধানে করতে হয়। গত শুক্রবারে প্লেন করেছিলাম পাগলা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করবো কিন্তু আর যাওয়া হয়নি। তবে আপনারা পাগলা মসজিদের নাম শুনেছেন তো!! বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ শহরের মানুষের কাছে সুপরিচিত একটি মসজিদের নাম হলো পাগলা মসজিদ। যতদূর জানি কতিপয় এক পাগলবেশী সাধক মাদুরে করে উড়ে এসে সাধন করেছ। তারপর সাধক সেখানেই অবস্থান করেন এবং উনার মৃত্যুর পর সেখানে ছোট্র একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকে সেই ছোট্র মসজিদ বড় আকার নিয়েছে আজ। পাগলা মসজিদের বিশেষত্ব হলো মানুষের মনের বাসনা পূরণ করার লক্ষ্যে দান-খয়রাত করে থাকে। মানুষের বিশ্বাস দান-খয়রাতের মাধ্যমে হয়তো তাদের মনের বাসনা আল্লাহ তায়ালা পূরণ করে দিবেন।
পাগলা মসজিদে অনেক দান-খয়রাত করা হয়। যার জন্য সেখান থেকে টাকা এতিম খানা, মাদ্রাসায় দেয়া হয়। প্রতি তিনমাস অন্তর টাকার বাক্সগুলা খোলা হয়ে থাকে। কিছুদূর আগেও শুনেছিলাম দানবক্স থেকে দুই কোটি টাকা ও সোনা গয়না পেয়েছে। বলতে গেলে অনেক টাকাই। পাগলা মসজিদ দিনকে দিন অনেক উন্নত হয়েছে। উপরে তিনটি বড় বড় মিনার রয়েছে। পাগলা মসজিদটি নরসুন্দা নদীর পাশেই অবস্থিত। তবে নদীর সৌন্দর্য অনেকটা হারিয়ে গিয়েছে। তবে নদীর সেই আগের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার জন্য মসজিদের কতৃপক্ষ কাজ করছে। কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সুন্দর নিদর্শনের মধ্যে হলো এই পাগলা মসজিদ। পাচঁওয়াক্ত নামাজে সবসময় অনেক মানুষ হয়। এছাড়া বাংলাদেশের অনেক দূর দূরান্ত থেকে এখানে মানুষ আসে, তাদের মনের বাসনা পূরণ করার জন্য মানত করে থাকে। তাদের বিশ্বাস আল্লাহর ঘরের উসিলায় হলেও তাদের মনের বাসনা পূরণ হবে।
আপনারা যারা পাগলা মসজিদে আসতে চান তাহলে খুব সহজেই আসতে পারেন। ঢাকা থেকে ট্রেনে করেও আসতে পারবেন। এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস, ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস দিয়ে আসতে পারেন। সকালের ট্রেনে আসলে সময়ও বেশি পাবেন। এছাড়া বাসে করেও আসতে পারবেন ঢাকা থেকে। মহাখালী থেকে অন্যান্য সুপার দিয়ে ও অন্যান্য ক্লাসিক বাস দিয়ে আসতে পারবেন। আপনার কোনো মনের আশা পূরণ করার মানত করে থাকলে আসতে পারেন। আসলে এখানে অনেকজনই অনেক সমস্যার সমাধানের উসিলায় দান করে থাকে। আমিও আজ গেলাম। আল্লাহ তায়ালার কাছে মনের কথাগুলো বলার চেষ্টা করলাম। অনেকদিন পর পাগলা মসজিদে এসে চিত্রটা অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম আসলে। আগের থেকে এখন অনেক মানুষ। শুক্রবার জুম্মার দিন যেহেতু মানুষ জনও বেশি।
মসজিদটি এখন তিনতলা করা হয়েছে। আগে মনে হয় দুতলা দেখছিলাম। মসল্লির সংখ্যা যেহেতু বাড়ছে এজন্য তিনতলা করা হয়েছে। বাহিরেও নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে পাটির মধ্যে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মসজিদের বামপাশে মহিলাদের জন্যও নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক মা-বোনরা আসেন নামাজ আদায় করার জন্য। শুক্রবারেও দেখলাম অনেকেই আসছে। পাগলা মসজিদের সামনে শুরুতেই আপনার চোখের সামনে পরবে অনেক মানুষ ভিক্ষার জন্য থালা নিয়ো বসে আছে। অনেকের হাত নেই, অনেকের পা, কেউ বা অন্ধ! কত ধরনের মানুষ যে এখানে আসে। আপনার জায়গা থেকে হয়তো ভাববেন আপনি ভালো আছেন। যাক, অনেকদিন পর নামাজ আদায় করে ভালো লাগল। নামাজ আদায় করে তারপর সোজা অটোরিকশা করে বাড়ি চলে এলাম।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photogrpher | @haideremtiaz |
Location | w3w |
আজ এই পর্যন্তই। আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🦋🍀
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তো। পাগলা মসজিদ এটা আবার কোথায়? মানুষ তার মনের ইচেছ পূরণে করার উদ্দেশ্যে এখানে যায়। মহিলা পুরুষ সবাই যায়। আপনিও গেলেন আপনার মনের আশা পূরণ করার জন্য। আসলে আল্লাহর ঘরে গেলে কিন্তু এমনিতেই মনে শান্তি চলে আসে। দোয়া রইল আপনার জন্য আল্লাহ যেন আপনার মনের সব আশা গুলো পূরণ করে দেন।
আপু আপনি মনে হয় পোস্টটি ভালো করে পড়েননি! আমি কিন্তু বলেছি পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জ জেলায় হারুয়ায় অবস্থিত! বাংলাদেশের অনেক জায়গা থেকে এখানে মানুষ আসে
পাগলা মসজিদের অনেক নাম শুনেছি অনেক ভিডিও দেখেছি ফেসবুকে ইউটিউবে।
আজ আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেকগুলো ফটোগ্রাফি এবং আপনার কথাগুলো জানতে পারলাম।
তবে ভ্রমণ করার ইচ্ছা নাই কেননা পৃথিবীতে দুইটা মসজিদ বাদে অন্য কোন মসজিদ সওয়াবের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা জায়েজ না।
নিশ্চয়ই আপনি অনেক ভাল সময় পার করেছেন ইবাদতের মধ্যে।
এটা অবশ্য ঠিক বলেছেন ভাই। দুটি মসজিদই পৃথিবীতে অন্যতম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🍀
এই পাগলা মসজিদের দানবাক্সের নিউজ বেশ কয়েকবার দেখেছি। মোটামুটি কোটির উপর টাকা থাকে এদের দানবাক্সে। আপনি এখানে যাওয়ার ট্রেন সম্পর্কেও বলে দিয়েছেন। এবং এখানে দেখছি অসংখ্য মানুষ নামাজ পড়তে আসে। পাশাপাশি মসজিদের পরিবেশ টাও বেশ চমৎকার লাগছে। পাগলা মসজিদে আপনার নামাজ আদায় করার পোস্ট টা বেশ ভালো লাগল।
হুমম ভাই,,,, দানবক্সগুলা থেকে অনেক টাকা পায়। আপনাকে ধন্যবাদ 🍀