শৈশব জীবনের স্বাদের স্মৃতি || জীবনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টায় নিজেকে আরো বেশি গতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। কারন প্রকৃতি ও পরিবেশ যেভাবে তার নতুন রূপ দেখানোর চেষ্টা করছেন, সেভাবে আরো কিছু দিন চলতে থাকলে হয়তো আমাদের রূপ পাল্টানোর ম্যাজিক বাক্স বিউটি পার্লারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, হি হি হি। কারন এতো গরম ও উষ্ণ পরিবেশে কে যাবে নতুন করে রিস্ক নিতে পার্লারে, অবশ্য দুই একজন সব সময় ব্যতিক্রম থাকে, তাদের নিয়ে কোন মন্তব্য নেই হি হি হি।

একটু মজা করলাম আরকি, ইয়ার্কি তো খুব একটা করার সুযোগ পাই না। তবে ভেতরের দুষ্টভাবটা এখনো রয়ে গেছে সেই স্কুল জীবনের মতো করে। শীত কিংবা গ্রীস্ম, ঠান্ডা কিংবা উষ্ণতা কোন কিছুই কিন্তু আমাদের থামাতে পারতো না। শীতের সময়ও স্কুল ফাঁকি দিয়ে যেমন পুকুরে ঝাঁপ দিতাম, ঠিক তেমনি গরমের উষ্ণতার মাঝেও এটা মিস হতো না কোনভাবে। বরং মাঝে মাঝে আমরা আগ হতেই প্লান করে রাখতাম, আগামীকাল কিভাবে স্কুল ফাঁকি দিবো, আমাদের বইগুলো কার কাছে বা কার দায়িত্বে থাকবে ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তব জীবনের রোবটিক জীবনে প্রবেশ করে সেই দিনগুলোকে আরো বেশি পরিমাণে মিস করছি, কতটা আনন্দের ছিলো সেই দিনগুলো।

বিশেষ করে গ্রীষ্মের গরমের উষ্ণতার ছোঁয়ায় আমগুলো যখন মুকুল ছাড়িয়ে বড় হওয়ার কৌশলে উৎসাহী হয়ে উঠতো ঠিক তখনই আমরা প্লান কষতে শুরু করতাম, এলাকায় কার বাড়ীর গাছে আমগুলো একটু সাইজ মতো হয়েছে। আবার কোন বাড়ীর কাঁঠাল গাছের মুচিগুলো একটু বড় সাইজের আছে। এরপর দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হতো, কে তেতুঁল, কে লবন, কে শুকনা মরিচ নিয়ে আসবে আর কোথায় বসে সেগুলো উপভোগ করা হবে। কি আপনারা এমন করেছেন কখনো? কখনো এভাবে কাঁঠালের মুচি খেয়েছেন? এটাতো অবশ্যই খেয়েছেন, ছোট ছোট কাঁচা আম লবন দিয়ে মাখিয়ে বেশ কায়দা করে খাওয়া। সেই দিনগুলো সত্যি দারুণভাবে মিস করছি, দারুণ অনুভূতিগুলো এখনো দারুণভাবে চঞ্চল রয়েছে হৃদয়ের মাঝে।

children-5833685_1280.jpg

আমরা প্রায় বলে থাকি, কিছু স্মৃতি কিংবা কিছু অনুভূতি কখনো হৃদয় হতে মুছা যায় না। আমাদের স্কুল জীবনের স্মৃতি ও অনুভূতিগুলো সত্যি ঠিক তেমন। চাইলেই সেগুলোকে মুছে ফেলতে পারি না কিন্তু বর্তমান বাস্তব জীবনের ব্যস্ততাও সেগুলোকে ভুলিয়ে রাখতে পারে না। ভবিষ্যতেও পারবে না, কারন এগুলো শুধু স্মৃতি কিংবা অনুভূতি নয় বরং শৈশব জীবনের সেরা কিছু। অবশ্য বর্তমান প্রজন্ম এগুলো কখনোই অনুভব করতে পারবেন না এবং বুঝতেও পারবেন না। কাঁঠালের মুচি কি জিনিষ সেটাই তারা জানেন না, কলার থোরের ভর্তার কি স্বাদ সেটা কোনদিনও তারা পাবেন না। কারন তাদের দৃষ্টিতে এগুলো অখাদ্য, তারা বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন করে এগুলো মানুষ খায় নাকি?

এটাই পার্থক্য তাদের সাথে আর আমাদের মানসিকতার সাথে। তারা ভাবে গেম খেলার মাঝে প্রকৃত শান্তি, মোবাইল নিয়ে যতটা সময় গেম খেলতে পারবে ততটা আনন্দের সাথে সময় উপভোগ করতে পারবে। আর আমাদের সময় আমরা সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করতাম ইনডোর গেম, ইনডোর গেম এর কথা শুনলেই আমরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠতাম এবং বো দৌড় দিতাম। খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতাম এসবের মাঝে আমরা নেই। কারন জীবনের উচ্ছ্বাস কিংবা প্রশান্তি কেবল আউটডোর গেমের মাঝেই আছে, এটা যেমন আমরা বিশ্বাস করতাম এবং ঠিক তেমনি সেটা বাস্তবায়ন করেও দেখাতাম। হয়তো সেই সময়টা আর ফিরে আসবে না, হয়তো বর্তমান প্রজন্ম সেই স্বাদটা আর পাবেন না।

কারন ইনডোর এর মাঝে তারা অলিখিতভাবে বন্দি, এ যেন অলিখিত একটা চুক্তি। আমাদের সময় একশ জনের মাঝে ৯৯ জনই সাঁতার জানতেন। যে সাঁতার জানতো না তাকে নানাভাবে আমরা পঁচানোর চেষ্টা করতাম। আর এখন হয়তো একশ জনের মাঝে ৯৫ জনই সাঁতার জানেন না। এর কারন অবশ্য আমাদের মানসিকতা, কারন এখন অতো পুকুর যেমন নেই ঠিক তেমনি নদীর সুন্দর পরিবেশও নেই। পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুর, কিন্তু পরিবর্তন হয়নি আমাদের শৈশব স্মৃতিগুলোর। গ্রীস্মকালের উষ্ণময় পরিবেশে মনে পড়ছে সেই স্মৃতিগুলোর কথা, কত কিছু হারিয়ে গেছে জীবন হতে কিন্তু স্মৃতিগুলো আজ জাগ্রত হৃদয়ের মাঝে। শৈশব জীবনের গল্পের ইতি এখানেই টানছি আজকে, অন্য কোন দিন অন্য কোন বিষয় নিয়ে ঠিক ফিরে আসবো আবার।

Image taken from Pixabay Source

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

এই শৈশব এর সৃতিগুলো এখনো আমরা খুজে বেড়ায় এখনো এগুলো করি সুযোগ পেলেই।এইতো কিছুদিন আগে এক পুকুরে গেছিলাম পানি কম তবুও ইচ্ছা মতো ডুবানি দিছি ঠান্ডাও লেগে গেছে।কয়েকদিন আগে একজনের গাছের মিষ্টি কাচা আম কেল্লাফতে। হাহাহা এগুলো আসলে আমাদের জীবমে অমর হয়ে থাকবে দারুন লিখেছেন ভাইয়া।

 2 months ago 

ভাই গরমের তীব্রতা যতই বাড়ুক না কেনো, কিছু কিছু মেয়েরা তবুও পার্লারে যাওয়া বন্ধ করবে না। যাইহোক আপনার শৈশবের স্মৃতি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। ছোটবেলায় আমরাও একসাথে দলবদ্ধ হয়ে বসে, কাঁঠালের মুচি খেতাম লবণ আর মরিচের গুঁড়া মিক্সড করে। তাছাড়া চুরি করে কাঁচা আম খেতে যে কি ভালো লাগতো,সেটা বলে বুঝানো যাবে না। সেই দিনগুলো আসলেই খুব মিস করি। এককথায় বলতে গেলে শৈশব হচ্ছে আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। এখনকার ছেলেমেয়েরা এসবকিছু থেকে একেবারেই বঞ্চিত। তারা এখন মোবাইল কিংবা বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল। যাইহোক শৈশবের মজার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

 2 months ago 

ছেলেবেলার এমন দূরন্তপানার কথা পড়তে পড়তে আমিও চলে গিয়েছিলাম সেই ছেলে বেলায়। আমার কাছে তো দারুন লেগেছে আপনার সেই ছেলেবেলার কথা পড়তে পড়তে ছেলেবেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.030
BTC 60843.73
ETH 3406.11
USDT 1.00
SBD 2.57