প্রকৃতিরও নিজস্ব স্বার্থ আছে || Original Photography by @hafizullah

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। যদিও ভালো থাকাটা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আসলে আমরা যতটা কঠিনভাবে প্রকৃতি ও পরিবেশকে পরিবর্তন করছি, প্রকৃতিও ঠিক ততোটা কঠিনভাবে আমাদের জীবনকে কঠিন করে তুলছে বা তুলতে থাকবে। একটা কথা কিন্তু ছোট বেলা হতেই আমরা শুনে আসছি। আর সেটা হলো ইট মারলে পাটকেল খেতে। এই পাটকেল জিনিষটা আমি এখনো বুঝতে পারি নাই, জিনিষটা আদৌ খাওয়া যায় না কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। আচ্ছা আপনারা কেউ খেয়ে থাকলে এর স্বাদটা কেমন আমার সাথে একটু শেয়ার করিয়েন, হি হি হি।

আসলে বিষয়টির একটা গুরুত্ব আছে, তুমি যা করবে তার চেয়ে বড় কিছুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে, এটাই প্রকৃত সত্য এবং বাস্তব। কথাটি আমরা যেভাবেই বুঝে থাকি না কেন? এটা ঘটবে সেটাই সত্য। তাই প্রকৃতি ও পরিবেশ আমরা যতটা নির্মমভাবে ধ্বংস করছি এবং উন্নয়নের স্বপ্নে সেগুলোর গুরুত্ব অস্বীকার করার চেষ্টা করছি, ঠিক ততোটা দ্রুত প্রকৃতি তার আগ্রাসন আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে এবং দিতে থাকবে। বস্তুতঃ এটা একটা সহজ সমীকরণ! উপরের সেই কথাটির মতো, আশা করছি আর পেঁচিয়ে বলার প্রয়োজন নেই, সবাই ঠিক বুঝতে পেরেছেন।

প্রকৃতি নিয়ে হয়তো আমি একটু বেশী কথা বলি, হয়তো বেশী লেখার চেষ্টা করি কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা যতটা প্রকৃতি নষ্ট করছি তার তুলনায় কিছুই বলছি না এবং করছি না। আমরা যে কোন কাজে বা ক্ষেত্রে হিসেব করার বা রাখার চেষ্টা করি, কতটা লাভ বা ক্ষতি হলো। নিজের স্বার্থের হিসেবটা আমরা খুব ভালোই বুঝি এবং করতে পারি। যে কোন কিছুর বিনিময়ে নিজের স্বার্থটা ঠিক রাখার চেষ্টা করি। একটু লক্ষ্য করে দেখুন, এর ঠিক উল্টোটা করি শুধুমাত্র প্রকৃতি ও পরিবেশের যত্নের সময়। কারন আমরা ধারণা বা বিশ্বাস প্রকৃতি তার নিজের মতোই বেড়ে উঠবে, তার পিছনে আবার সময় কেন ব্যয় করতে হবে।

কথায় বলে না, স্বার্থের বিষয়টি সবাই ঠিক মতো কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেয় কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব দেরী করার চেষ্টা করে। এটা শুধু প্রকৃতির ক্ষেত্রে না বরং আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখতে পাবেন, জাস্ট একটু ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে শুধু। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? আমরা যতটা নিজের ব্যাপারে এবং স্বার্থের ক্ষেত্রে সচেতন কিংবা আগ্রহী, প্রকৃতিও তার নিজের জন্য এই রকম করতে পারে, তার স্বার্থের বিষয়টি কেন এতোটা গুরুত্ব পাবে না? একটু ভেবে দেখুন, একটু গভীরভাবে চিন্তা করুন। আপনি বা আপনার দ্বারা প্রকৃতির কতটা ক্ষতিসাধন হয়েছে এই পর্যন্ত? তার কতটা ক্ষতিপূরণ আপনি দিতে পারবেন বা দিতে সক্ষম?

হয়তো আমরা এভাবে কোনদিন চিন্তা করি নাই, হয়তো এভাবে আমাদের মাথায় কিছু আসে নাই। আপনি যদি কারো ক্ষতিসাধন করেন, আর সে যখন কোন সুযোগ পাবে আপনার নিকট হতে ক্ষতিপূরণ আদায় করার, তখন কি সে আপনাকে ছেড়ে দিবে? ক্ষতিপূরণটা একটু বেশী আদায় করার চেষ্টা করবে না? অবশ্যই করবে এবং এই জন্যই প্রকৃতি ধীরে ধীরে তার রূপ পরিবর্তন করছে এবং আগ্রাসী হয়ে উঠছে, সুযোগ পেলেই সে তার ক্ষতিপূরণ আদায় করার চেষ্টা করছে। কারণ প্রকৃতি তার হিসেবটা ঠিক কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নিচ্ছে, আমরা বুঝি না নাই বুঝি, সে কিন্তু তার দিক হতে একদমই ঠিক অবস্থানে আছে।