আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ আইন ও আমরা ]
আজ আবার ফিরে আসলাম সেই পুরনো সিরিজ আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে তবে এবারের বিষয়টি একটু ভিন্ন। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে কিঞ্চিত আলোচনা করেছিলাম। আসলে আজকের বিষয়টি হলো আইন নিয়ে কারন এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় আমার মাঝে একটা খটকা লাগে আর সেটা হলো, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাকি আইন আমাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল?
কারন আমাদের অবস্থান এবং আইন অমান্য করার অভ্যেস এগুলো দেখে আমি বেশ প্যাঁচ খেয়ে যাই, কে কার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মাঝে মাঝে তো মনেই হয় আইন আমাদের প্রতি বেশী শ্রদ্ধাশীল কারন আইন তো মানিই না বরং মাঝে মাঝে আইনকে নিজেদের যুক্তির প্যাঁচে এমনভাবে আটকে দেই, আইন নিজেই বলে উঠে ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাঁচি হা হা হা হা। না না না আপনারা আমার মতো এভাবে হাসি দিয়ে পুরো বিষয়টিকে উড়িয়ে দিবেন না বরং একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন, আমি কোন ভুল বকলাম কিনা?
এই তো সেদিন চলে গেলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, খুব আনন্দ নিয়ে কিছু অঞ্চলে প্রভাত ফেরি হলো, শহীদ মিনার সমূহকে ধুয়ে মুছে বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হলো এবং সেখানে নানা আয়োজনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলো কিন্তু তারপরের দৃশ্যগুলো খুবই চেনা এবং বেশ অস্বস্তিকর আমাদের জন্য। কিন্তু কেন? এখানে কি আইনের কোন প্রয়োজন আছে? নাকি প্রয়োজন শুধু ভালোবাসার? কারন আইন তৈরী করলেই হয়ে যায় না বরং সেটা মানার মানুষ থাকতে হয় এবং তার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা থাকতে হয়। না হলে আইন আইনের জায়গায় ঠিক থেকে যায় কিন্তু ফলাফলটা শূণ্যই থাকে সব সময়।
আচ্ছা এই উদাহরণটা বাদ দিয়ে অন্য একটা উদাহরণ দেই। আমাদের দেশে মোটরসাইকেলের আরোহী দুইজন কিংবা তার বেশী হলেই সকলের মাথায় হেলমেট পড়াটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন বহু মানুষ সেই আইনটি অমান্য করছেন। আবার প্রায় দেখি ট্রাফিক সার্জেন্ট তাদের গতিরোধ করে এবং জরিমানা করে ছেড়ে দেন। কিন্তু তাতে কি কাজ হচ্ছে? হচ্ছে না কিন্তু কেন? কারন আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল না বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনকে আমরা বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখানোর চেষ্টা করি এবং করছি।
আবার মাঝে মাঝে দেখি অনেকেই পুরো পরিবারকে মোটরসাইকেল চড়িয়ে নিয়ে যান। হেলমেট ছাড়াই শিশুদেরকে সামনের তেলের ট্যাংকির উপর বসিয়ে দেন। আচ্ছা তারা কি বিষয়টি বুঝেন না? এটা ঠিক না কিংবা আইনসিদ্ধ না? নাকি তারা এ সংক্রান্ত আইনগুলো সম্পর্কে অবহিত না? সত্যি বলতে তারা সবই জানেন কিন্তু ঐ যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। যার কারনে আইনই আমাদেরকে দেখে ভয় পান এবং শ্রদ্ধা করে শান্তিতে থাকতে চান। কারন আমাদের উপর আইন ফলাতে গিয়ে বেচারা নিজেই বেশ কাহিল হয়ে যাচ্ছেন।
আসলে আমাদের চিন্তা ভাবনাগুলো হলো অনেকটা এই রকম আইন হোক তাকে কি? আইনতো হয় ভিআইপিদের রক্ষা করার জন্য আর গরীবদের আটকানোর জন্য, যার কারনে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাতো দূরের কথা তার কোন তোয়াক্কাই করি না। আবার উন্নত দেশগুলোর দিকে দেখুন তাদের জনগনের ভাবনাগুলো এই রকম আইন আমাদের জন্য, আমাদের শহরের মাঝে শৃংখলা বজায় রাখার জন্য, তাই আইনগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাটা আমাদের জন্য আবশ্যক। তাই তারা পারত পক্ষে কখনো আইনের বাহিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন না। আর আমরা কখনো আইনের মাঝে আসতে চাই না। সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান আমাদের।
যাইহোক, সবচেয়ে বড় কথা একটাই আইন মানাটা আমাদের জন্য ভালো এবং আইন না মানাটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। আইন মানলে পরিবেশ আমাদের জন্য নিরাপদ থাকবে আর আইনের প্রতি তোয়ক্কা না করলে পরিবেশ আমাদের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠবে। তাই আসুন একটু ভিন্নভাবে সব কিছু চিন্তা করতে শিখি এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার চেষ্টা করি।
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
অস্বস্তিকর সমাজে, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো, সমাজের যেন একটা রিতি হয়ে গেছে। আগে বলা হতো,মুর্খ মানুষ আইনের কি বুঝে! আসলে কুশিক্ষিত ফেমাস'রাই, আইনের তোয়াক্কা করেনা। তার উপর ঘুষ দিয়ে সরকারিতে চাকুরী গ্রহণে, চেইন অফ কমান্ডের বালাই একেবারে নাই। বস,কেরানি, পিয়ন টাকা ছাড়া কারই চাকরি হয়নাই।
বর্তমানে, লেখা পড়া না জানা মানুষরাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বেশি।
আপনার লেখা হোক, সমাজ সংস্করণের হাতিয়ার, এই কামনা করি।
ভাই খুবই সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।এই বিষয়ে আমাদের প্রায় সময় অনীহা প্রকাশ করতে দেখা যায়।বেশিরভাগ সময় আমরা আইন না মেনে বরং অন্যায় করে তা থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের মতো করে আইন বানায়। আর একটি কথা বেশ ভালই লেগেছে সেটা হলো আইন গুলো নিজেদের উপর চাপিয়ে দেওয়া না মনে করে সমগ্র দেশের উন্নয়নের জন্য চিন্তা করা উচিত।
আমরা বাঙালীরা কেন জানি সব সময় নিজের দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতো কুণ্ঠাবোধ করি, হয়তো আমাদের মানসিকতা কিংবা পরিবেশ এর জন্য দায়ী।
আমরা ছোট থেকে চারপাশের পরিবেশ দেখে বড় হচ্ছি।যার ফলে আশেপাশের লোকজনের নিয়ম ভঙ্গ করা দেখে আমরাও সেগুলো করি। গোড়ায় গলদ ছিল।এখন থেকে আইন ভঙ্গের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলে, পরবর্তীতে মানুষ আর আইনগুলো ভঙ্গ করবে না।
পরিবর্তনটা নিজের থেকে শুরু করতে হবে, আইন মানা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়েই নতুনভাবে সব শুরু করতে হবে। ধন্যবাদ
আমরা বাঙালীরা কেন জানি সব সময় নিজের দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতো কুণ্ঠাবোধ করি, হয়তো আমাদের মানসিকতা কিংবা পরিবেশ এর জন্য দায়ী।
জনগণের সুরক্ষার জন্য এবং জনগণের কথা চিন্তা করেই আইনগুলো তৈরি করা হয়েছে। আসলে আমরা নিজেরাই আমাদের ক্ষতির কারণ। আইন অমান্য করলে আমাদেরই ক্ষতি। কারণ আইন অমান্য করলে আমাদের চারপাশের পরিবেশ নষ্ট হয়। আর অন্যদিকে মোটরসাইকেল আরোহীরা তাদের পরিবারের প্রিয়জনদের নিয়ে হেলমেট ছাড়া চলাফেরা করলে এতে ট্রাফিক পুলিশের কিছু যায় আসে না। শুধুমাত্র জরিমানাই করতে পারে। কিন্তু এই অবস্থায় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা কিন্তু আমাদের প্রিয়জনদের হারাবো। আইনের কিছু যায় আসবে না। আমার মনে হয় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকলকে আইন মেনে চলা উচিত। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা তুলে ধরেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
জ্বী সত্য হলেও আমরা এটা বিশ্বাস করতে চাই না যে আইনগুলো আমাদের ভালো ও সুরক্ষার জন্য তৈরী হয়েছে, আর সমস্যাটা এখান হতেই তৈরী হয়।
ভাইয়া আপনার লেখা আজকের বিষয়বস্তু খুবই সুন্দর ছিল। আইন আমাদের জন্যই তৈরি। আমরা যদি নিজেকে আইনের গন্ডির ভেতরে রেখে চলাফেরা করি তাহলে আমাদের জীবন সুন্দর হবে। আর আমরা যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হই তাহলে আমাদের জন্যই অনেক ক্ষতি হবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রত্যেকটি মানুষের কর্তব্য। সকলের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই এই আইন তৈরি করা হয়েছে। আর আমরা যদি আইন অমান্য করি তাহলে আমাদের ক্ষতি তো হবেই বরং সমাজের অনেক ক্ষতি হবে। আপনার লেখা পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো তুলে ধরেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
একদমই ঠিক বলেছেন আইনের মাঝে থাকাটাই আমাদের সকলের জন্য ভালো কিন্তু কথা হলো আমরা সব সময় উল্টোটা করতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
হাফিজ ভাই কোন জায়গায় কমেন্টস করব বুঝতে পারছি না। সবই আপনি বলে ফেলেছেন। আসলে আমার মনে হয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা বা আইন প্রয়োগে গাফিলতি কোনটাই দায়ী নয়। দায়ী হচ্ছে আমাদের পরিবেশ। পরিবেশগত সমস্যার কারণে আমরা কেউই আইন মানি না হাহাহা। এদেশের মানুষ গুলোই সিঙ্গাপুর, জাপান বা উন্নত দেশে গিয়ে ঠিকই আইন মেনে চলে কিন্তু নিজের দেশে আইনের কোনো তোয়াক্কা করে না। উপরের লোক যদি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় নিচের লোকগুলি তাহলে কি শিখবে তাদের কাছ থেকে আপনিই বলেন।
জ্বী এটাও অন্যতম একটা কারন, কারন ছোট হতেই আমরা চারপাশের মানুষগুলোকে আইনভঙ্গ করতে দেখি এবং একটা সময় আইন ভঙ্গ করাটা আমাদের কাছে নিয়মে পরিনত হয়ে যায়।
ভাই আজকে আপনার পোস্ট পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। আসলে আমরা প্রত্যেকেই যদি আইন ঠিকভাবে পালন করি। তাহলে আমাদের নিজেদের ভালো। আসলে আইন আমরা ঠিকভাবে পালন করি না। আমরা যখন চলার পথে মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। তখন আমরা হেলমেট ব্যবহার করতে চাই না। কিন্তু এই হেলমেট আমাদের নিজেদেরকে সুরক্ষা করে। এটা আমরা বুঝি কিন্তু আইন অমান্য করি। এই আইন অমান্য করার কারণে আমাদের নিজেদের ক্ষতি। আমরা কিছুদিন আগে মাতৃভাষা দিবস পালন করলাম। সেখানে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার অনেক পরিষ্কার করলাম। এটা আমাদের মানবতা আইন পালন করলাম।আমরা পরবর্তীতে সেখানে আবার আগের মতন অবস্থায় করেছি। এটা আমাদের মানবিক থেকে আমরা মানছি না। শুধু একদিনের জন্য পালন করছি। এটা আসলে ঠিক নয়। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে আমরা প্রত্যেকে যদি আইন মেনে চলি, তাহলে আমাদের সমাজে অনেক শান্তিময় হবে এবং আমাদের নিজেদের অনেক ভাল হবে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা। আমাদের জন্য এত সুন্দর একটি শিক্ষামূলক শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
সমস্যাটা সম্পূর্ণ আমাদের মধ্যেই।আমরা যে শ্রদ্ধাশীল নই তাই যতই আইন,শাসন,জরিমানা হোক না কেনো আমরা শুধরাবোই না।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.