আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ সম্পর্ক ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। সত্যি বলতে আমরা হয়তো অভিনয়ে ভালো আছি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে যার যার অবস্থান হতে কেউ ভালো নেই। আসলে দিন দিন আমরা যদি উন্নত হচ্ছি এবং আধুনিক সভ্যতায় প্রবেশ করছি মানসিকভাবে আমরা ততো বেশী দুর্বল হয়ে যাচ্ছি, সম্পর্কের বন্ধনগুলো আলগা হয়ে যাচ্ছে এবং আমরা আরো বেশী নিঃসঙ্গতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এই কথা আমরা স্বীকার করি কিংবা নাই করি বাস্তবতা কিন্তু সেটাকে ঠিক সময়মতো প্রমান করে দিচ্ছে। আসলে আমরা মানুষ এবং স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হলো নতুনত্বের পিছনে ছুটে চলা, নতুন কিছুর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া এবং পুরনো বিষয়গুলোকে অবলীলায় অস্বীকার করা, কিন্তু তাই বলে নিজের শেকড় এবং অস্তিত্বকেও অস্বীকার করবো?
আসলে মানুষ যখন নতুন কিছুর স্বপ্নে অস্থির হয়ে উঠে, মানুষ যখন নতুন কিছুর প্রাপ্তির নেশায় বুধ হয়ে যায় তখন প্রকৃত বিষয়টি তার কাছে অস্পষ্ট হয়ে উঠে, ভালো বিষয়টি তার কাছে কঠিন হয়ে যায় এবং সত্যিটাকে আর স্বীকার করতে চায় না। মানুষগুলো কেমন জানি পাল্টে যায়, মিথ্যাকে আঁকড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায়। কিন্তু সত্যটা চিরদিন সত্যই থেকে যায় আর মিথ্যটা চিরকালের মতো আড়ালে চলে যায়। বালুর বাধ সেটা কখনো স্থায়ী হয় না, পানির জোয়ার আসলে সেটা ঠিক ভেসে যায় এবং নিজের প্রকৃত ঠিকানায় নিজেকে বিলীন করে দেয়। এই প্রকৃত বাস্তবতাটা আমরা যেমন দেখে, শুনে, বুঝেও অবুঝ হওয়ার ভান করি, ঠিক তেমনি প্রকৃত ও সত্য সম্পর্কগুলোকে মুহুর্তের মাঝে ভেঙ্গে ফেলি।
সত্যটাকে অস্বীকার করি আর মিথ্যাটাকে আঁকড়ে ধরে লড়াই করতে শুরু করি। জীবনের মোহ কিংবা অদৃশ্যের এক অভিন্ন মায়া আমাদের সংগ্রামী করে তোলে, কিন্তু সেটা থাকে সত্যের বিপক্ষে এবং নিজের শেকড়কে ছিন্ন করার এক নির্মম অধ্যায়ের সূচনা করে। সত্যি আধুনিক সভ্যতায় মানুষ এক হাস্যকর প্রাণী হিসেবে বার বার নিজেদের প্রমান করছে এবং নিজের শ্রেষ্ঠত্বকে যেন তেন ভাবে ছোট করছে। মানুষ অবলীলায় সত্যকে ছুড়ে ফেলছে এবং মিথ্যাকে আপন হিসেবে গ্রহণ করছে। তারপর দিন শেষে ফলাফলটা সেই শুণ্যের মতো ভেসে থাকে। কিন্তু ততোদিনে যা হওয়ার হয়ে গেছে, নিজের শেকড় হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনে প্রকৃত পরিচয়টি নষ্ট হয়ে গেছে।
তাই চাইলেও আর আপন ঠিকানায় ফিরে আসার সুযোগ থাকে না, ইচ্ছে করলেই আবার আপন ঠিকানা আঁকড়ে ধরা সম্ভব হয় না, কারন যে নিজের ইচ্ছায় নিজের শেকড় হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার আর প্রকৃত অবস্থায় ফিরে আসার সুযোগ থাকে না। কতটা অধৈর্য্য আর লোভী হয়ে গেছি আমরা, উন্নতির দোহাই দিয়ে নিজেকে ভিন্নভাবে এবং ভিন্ন সমাজের সাথে সংযুক্ত করার লোভে আপন মানুষগুলোকে মুহুর্তের মাঝে ভুলে যেতে দ্বিধাবোধ করছি না, ঠুনকো অজুহাতে সম্পর্কগুলোকে ধুমরে মুচরে কাগজের মতো ছুড়ে ফেলতে কুণ্ঠিত হচ্ছি না। অদৃশ্যের এক মিথ্যে মায়ায় নিজেকে আচ্ছন্ন করে বিজয়ী ভাবতে শুরু করি তখন। কিন্তু আফসোস, শেকড় ছাড়া গাছ যেমন বেশী দিন টিকে থাকতে পারে না ঠিক তেমনি মিথ্যে মায়ায় অদৃশ্য জাদুও বেশী দিন আপন করে ধরে রাখা যায় না।
দিন শেষে আমরা সেই নীড় ছাড়া পাখির মতো হয়ে যাই, শুণ্যের মাঝে ভাসতে ভাসতে দূর অজানায় মিলিয়ে যাই। সত্যি বলতে সেই মানুষগুলোকে যন্ত্রনায় ভাসিয়ে নিজেকে ভিন্নভাবে সুখী করার চেষ্টা করেছিলাম, সেই মানুষগুলোর অভিশাপ আমাদের কখনোই সুখী হতে দেয় না। বুঝ আর অবুঝ এই দুয়ের মাঝে একটা পার্থক্য আমরা স্কুল জীবন হতেই শিখে আমি, মূর্খ আর শিক্ষিত এই দুইয়ের ব্যবধানটাও আমরা বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু বাস্তব জীবনে প্রবেশ করার সাথে সাথে আমরা এক নতুন উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে যাওয়ার আশা কিংবা লোভে পড়ে সবটাকে ভুলে যাই, ভুলে যাই আপন পরের মাঝে বিস্তর ব্যবধানের বিষয়টিকেও। আর তারপরই অন্ধ বিশ্বাসে মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরে নিজের শেকড়কে অস্বীকার করতে শুরু করি। এটাই হলো নির্মম বাস্তবতা।
আজকের লেখাগুলো আপনারা কতটা উপলব্ধি করতে পারবেন কিংবা কতটা বুঝতে পারবেন আমি জানি না, অবশ্য না পারারই কথা। কারন কথাগুলো অনেকটা কষ্ট নিয়ে ভেতরে জমা থাকা যন্ত্রনাগুলোকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। নিজের একান্ত কিছু কষ্ট থাকে যা কেউই প্রকৃত পক্ষে বুঝতে পারে না, এটাই বাস্তবতা। তবুও নিজেকে কিছুটা হালকা করার নিমিত্তে, অস্পষ্ট করে কিছু যন্ত্রনা প্রকাশ করলাম।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
প্রথমেই বলবো আপনার লেখাগুলো পড়লে কেমন যেন হয়ে যাই। হারিয়ে যাই কোন অচিন শহরে। এত সুন্দর করে আপনি কি করে লেখেন ভাইয়া। প্রতিটি কথায় কেমন যেন বাস্তবতার ছোঁয়া খুঁজে পাই। ঠিক বলেনছেন ভাই আজকাল কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবনের গল্পগুলো। আমরা যেন কোন অজানা আকর্ষণের পিছে ছুটে বেড়াচ্ছি। ভুলে যাচ্ছি নিজের শেকড় কে। এক কথায় আজকের টপিক্স ছিল অসাধারন।
আবোল তাবোল জীবনের গল্পে আজ সম্পর্ক নিয়ে খুব সুন্দর লিখলেন।আপনার পোস্ট পড়লাম।কাল একটা নাটক দেখেছি ঠিক আপনার পোস্টে লেখা কথাগুলোর সাথে মিলে গেলো।অধিক সুখের আশায় নিজের পুরোনো মানুষটিকে ছেড়ে যায়।সেখানেও সে গিয়ে বঞ্চিত হয়।শেষে পুরোনো জায়গাতেও ঠাই মিলেনি।এটা ঠিক শিকড়কে অস্বীকার করে বেশি দূর যাওয়া যায় না।নিজের মনের কিছু কথা তুলে ধরেছেন। এজন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। বাস্তবতাকে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যিই আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমরা নিজেদের এত বেশি সময় দিয়ে ফেলি যে সম্পর্কের বন্ধনগুলি অনেকটাই মাটি চাপা দিয়ে।দিন দিন মানুষের মধ্যে লোভ ও মিথ্যাকে আপন করে নেওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।কিন্তু এতে কখনোই সফল হওয়া যায় না।আপনার লেখা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ।ধন্যবাদ ভাইয়া।