আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ বাস্তবতার শিক্ষা ]

in আমার বাংলা ব্লগlast year

sunset-gbbcb8dbbb_1920.jpg

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং ভালো থাকার চেষ্টায় নিজেকে আরো বেশী গতিশীল রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছেন। সত্যি বলতে আমরা চেষ্টা করি, সেখানেই আমাদের শতভাগ চেষ্টা থাকে যেখানে আমাদের স্বার্থের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত থাকে। আর না হলে আমরা সেখানে থাকি না এবং আমাদের কোন চিন্তা ভাবনাও সেখানে থাকে না। আর যেকানে স্বার্থ থাকে, শত ব্যস্ততা থাকলেও আমরা মুহুর্তের মাঝে সেখানে হাজির হয়ে যাই। বড়ই অদ্ভুত চরিত্রের অধিকারী আমরা। আজকে পুনরায় আরো কিছু কথা বলবো বাস্তবতার মাঝ হতে আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে, যথারীতি আশা করছি কথাগুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

আমরা যত উন্নত হচ্ছি আমাদের চিন্তা চেতনা ততো বেশী উন্নত হচ্ছে, কারন আমাদের ভাবনাগুলোর সাথে বাস্তব জীবনের গভীর একটা সংযোগ রয়েছে, যার কারনে আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের পরিবর্তন করছি, নিজেদের চিন্তা ভাবনাগুলোকে উন্নত করার চেষ্টা করছি। কারণ ঐ যে আমাদের স্বার্থ, যার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের পরিবর্তন করছি। প্রসঙ্গক্রমে একটা কথা মনে পড়ে গেলো, সেটা আগে বলে নিচ্ছি তারপর মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসছি। আগে মানুষের বয়স দেখে সম্মান করা হতো, সম্মানীদের যথাযথ সম্মান দেয়ার চেষ্টা করা হতো। কিন্তু এখন আর সেই বিষয়টি নেই কারন এখন স্বার্থের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়, তাই মানুষের অবস্থান বা বয়স অথবা অভিজ্ঞতা দেখে না বরং দেখে তার কাছে কত সম্পদ কিংবা ক্ষমতা আছে। যার যত সম্পদ কিংবা ক্ষমতা আছে তাকে ততো বেশী সম্মান করা হচ্ছে।

এটাই হলো স্বার্থের খেলা, কারণ আপনার যদি সম্পদ কিংবা ক্ষমতা না থাকে তাহলে আপনাকে সম্মান করে আমার কি লাভ? যার কারনে যার কাছে অর্থ আছে এবং যার কাছে ক্ষমতা আছে তাকে সবাই সম্মান করার চেষ্টা করে যাতে নিজের স্বার্থটা ঠিক থাকে। আচ্ছা একটা ঘটনা বলি, আমি অফিসে যাতায়াতে নির্দিষ্ট একটা বাস ব্যবহার করি না, বরং একাধিক বাস ব্যবহার করি। অফিসে যাওয়ার সময় এক কোম্পানীর বাস ব্যবহার করি আর ফেরার সময় অন্য কোম্পানীর বাস ব্যবহার করি। তো ঢাকা ছাড়ছি মেলা দিন হয়ে গেছে। বাসগুলোর লাইনম্যানও বুঝে গেছেন আমি নিয়মিত যাতায়াত করছি। সেদিন অফিসে আসার সময় দেখি বাসস্ট্যান্ডে কোন বাস নেই, আমি আসার জাস্ট একটু আগে একটা বাস ছেড়ে গেছে এবং আমাকে দেখার সাথে সাথে লাইনম্যান চিৎকার করে উঠলেন সেই বাসের হেলপারকে বললেন বাস থামাতে। লাইনম্যানের ডাক শুনে হেলপার সাথে সাথে বাস থামালেন, লাইনম্যান আমাকে বললেন ভাই যান দৌড় দিয়ে যান এটাই শেষ বাস।

man-g224b702d2_1920.jpg

আমি অনেকটা দৌড়ে সেদিন বাসে উঠেছিলাম, বাসের সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, বাস ছেড়ে অনেকটা আসারপরও আমার সেটা থামানো হয়েছিলো বলে। যদিও আমাদের দেশে এটা তেমন বড় কোন ব্যাপার না, কারন বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও কেউ যদি সড়কের উপর দাঁড়িয়ে হাত উপরের দিকে উঠায় তাহলেই বাস থেমে যায়, যাত্রীর জন্য আমাদের বাস ড্রাইভারগুলো যা তা করতে দ্বিধাবোধ করেন না। কিন্তু লাইনম্যানরা সাধারণত এটা করেন না, উনি কেন করলেন? কারন উনার পার্মানেন্ট যাত্রী দরকার, সেটা হতে পারে সুন্দর ব্যবহার এবং এই রকম কোন সুযোগ এর সঠিক ব্যবহার এর মাধ্যমে। বিষয়টি একটু চিন্তা করে দেখুন, কি দারুণ কৌশল। সুন্দর ব্যবহার করা হলো, আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো এবং আমার উপকারও করা হলো। এখন সেই বাসস্ট্যান্ড দিয়ে যদি আমি কখনো যাতায়াত করি এবং সেই লাইনম্যান যদি বাসস্ট্যান্ডে থাকেন, তাহলে আমি কি অন্য কোন বাসে উঠতে পারবো?

না, সেটা কিন্তু কোন ভাবেই আমার পক্ষে আর সম্ভব হবে না, কারন তার ব্যবহার এবং উপকার এর বিষয়টি আমি অস্বীকার করতে পারবো না, কিংবা চক্ষু লজ্জা বলে একটা বিষয় আছে সেটার কারনেও আমি এটা করতে পারবো না। আসলে সবাই কম বেশী কৌশলী এখন, কারন স্বার্থ রক্ষায় সবাই বেশ সচেতন। স্বার্থের মায়ায় আমরা ভালো ব্যবহার করি, স্বার্থের মায়ায় আমরা সুন্দর সম্পর্ক গড়ি আর সেটা ভেঙ্গে দিতেও দিধাবোধ করি না। প্রতিটি ক্ষেত্রে এই রকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে, মানুষ আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, আপনার সাথে ভালো ব্যবহার করবে এবং নিজের স্বার্থ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। চাই আপনি সেটা করতে পারেন আর নাই করতে পারেন।

কিন্তু আমরা এই রকম ছিলাম না, আমাদের মানসিকতা এই রকম ছিলো না। আমাদের সমাজ এবং অবস্থান একটা সময় ভিন্ন ছিলো, আমাদের ব্যবহার এবং মানসিকতা ভিন্ন ছিলো, বয়স ও অবস্থান দেখে মানুষের উপকার করা হতো, স্বার্থের বিষয় না দেখে অন্যের উপকারের চেষ্টা করা হতো। আমরা সত্যি পাল্টে গেছি, স্বার্থের মায়া কিংবা লোভ আমাদের অন্ধ করে দিয়েছে, আমাদের ভিন্ন পথে নিয়ে গেছে। ভাবুন একটু, পরিবর্তন দরকার, আমাদের এবং আমাদের মানসিকতার।


Image taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। খুব সুন্দর লিখেন আপনি।বাস্তবতা তুলে ধরেন যা বেশ ভালো লাগে।স্বার্থপরের এই দুনিয়ায় সবাই স্বার্থের পেছনে ছোটে।লোভ আর স্বার্থপরতা মানুষকে অনেক নীচে নামিয়ে ফেলে।আমাদের পরিবর্তন দরকার ঠিকই। কিন্তু মানুষ এতোটাই লোভী হয়ে গেছে আজকাল।তার পরিবর্তন সে নিজেই করবে না।শুধুমাত্র স্বার্থ হাসিলের জন্য। খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই বাস্তবতা সমৃদ্ধ আবোল- তাবোল জীবনের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাইয়া আমি যতই আপনার লেখাগুলো পড়ি ততই মুগ্ধ হয়ে যাই। মুগ্ধ হয়ে যাই আপনার লেখা গুলো পড়ে। আপনি অনেক বাস্তবতার আলোকে লেখার চেষ্টা করেন। স্বার্থের এই দুনিয়ায় কেউ স্বার্থ ছাড়া কাছে আসে না বা আমরাও স্বার্থ ছাড়া কারো কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি না। আর এই জন্যই আমাদের পরিবর্তনের প্রয়োজন। প্রয়োজন নিজেকে নতুন করে বদরে নেওয়া। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 87260.43
ETH 3288.09
USDT 1.00
SBD 2.95