সময়ের সাথে পাল্টে যায় সব কিছু || Original Photography by @hafizullah
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন অথবা ভালো থাকার অভিনয় করছেন। সময় প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবর্তন করছে কিংবা পরিবর্তন হতে বাধ্য করছে। স্কুল জীবনে পড়েছিলাম সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পাল্টে যায়, সত্যি সব কিছু শুধু পাল্টে যায় না পাল্টে যেতেও বাধ্য করে। তাই ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক আমরা প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছি এবং মিথ্যে অভিনয়ে নিজেদের আড়াল করছি। আর এই বিষয়টি শুধু উপলব্ধি না বরং প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম শহরের জীবনের মাঝে। প্রতিটি মানুষ দারুণ ব্যস্ত, কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় নেই, সময়ের গতির সাথে সকলের মাঝে যেন এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলমান আছে, তাই সবাই সবার সাথে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
কিন্তু এই প্রতিযোগিতার মাঝেও লুকিয়ে থাকে নকল অভিনয়, ভালো থাকার এবং সুখি থাকার। উপরের মুখোশটা খুবই চাকচিক্য, দেখে বুঝার উপায় নেই প্রতিটি মানুষ দারুণ একাকিত্বে ভুগছে, প্রতিটি মানুষ নিরবে নিভৃতে নিজেকে লুকানোর দারুণ প্রচেষ্টা চালায়, প্রতিনিয়ত নকল অভিনয়ে নিজেকে দক্ষ করার প্রচেষ্টা চালায়। কেউ যেমন আড়ালে থেকে মিথ্যে অভিনয়ে নিজেকে সম্মুখে রাখতে পারে, ঠিক তেমনি কেউ কেউ আবার অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত হয়ে নিজেকে পেছনের কাতারে আড়াল করার প্রচেষ্টা চালায়। সত্যি এ এক নির্মম অনুভূতি, এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি, চাইলেও যেমন এটাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই ঠিক তেমনি চাইলেও এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
অনেক দিন পর সেদিন পরিচিত সেই জায়গায় গিয়েছিলাম, দীর্ঘ সময় চাকুরীর কারনে যেখানে প্রতিনিয়ত সময় ব্যয় করেছি। সত্যি চারপাশের মানুষগুলো কেমন জানি পাল্টে গেছে তার সাথে সাথে চারপাশের দৃশ্যপটও দারুণভাবে পরিবর্তন হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সব পাল্টে যায় না শুধু আড়ালও হয়ে যায়। যতটা সময় আমরা সম্মুখে থাকি চেনার একটা সুযোগ থাকে কিন্তু যখনই আপনি আড়াল হয়ে যাবেন মানুষগুলো তাৎক্ষনিকভাবে আপনাকে ভুলে যাবে এবং অতীত স্মৃতিগুলোকে অন্ধকারের কূপে নিক্ষেপ করবে। সত্যি আমরা কথার পীঠে যতটা কথা বলি বাস্তবতা তারচেয়ে বেশী নিষ্ঠুর এবং নির্মম। হয়তো আমরা কিছুটা প্রকাশ করতে পারি আবার হয়তো আমরা কিঞ্চিত উপস্থাপন করি, কারন অনুভূতির সবটা প্রকাশের সুযোগ সব সময় থাকে না কিংবা সবটা সবাই বুঝতে চায় না।
আপনি চেষ্টা করে দেখতে পারেন, হয়তো উল্টো নিজেই হতবাক হয়ে যাবেন। কারন আপনি চাইলেও নিজেকে স্রোতের বিপরীতে নিয়ে যেতে পারবেন না, আপনি চাইলেও নিজের আসল কিংবা প্রকৃত চেহারাটা উপস্থাপন করতে পারবেন না, কারন আপনার চারপাশের মানুষগুলো মিথ্য এবং মুখোশের মাঝে থাকতে থাকতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে, তাই প্রকৃত অবস্থা কিংবা মুখোশের বাহিরের বিষয়গুলো তাদের নিকট অস্পষ্ট এবং বোধগম্য না। এ এক অদৃশ্য শেকলে বন্ধি সবাই, চাইলেই যেমন সেটাকে দৃশ্যমান করা যায় না ঠিক তেমনি চাইলেও সেটাকে ভেঙ্গে ফেলা যায় না।
বাস্তবতার এ এক অলিখিত নিয়ম কিন্তু সবাই সেটাকে হৃদয়ের মাঝে লিখিত হিসেবে স্থান দিয়ে রেখেছে। যার কারনে কেউ সেটা অপেক্ষা করতে চায় না এবং সেই অলিখত নিয়মের বাহিরে আসতে চায় না। বাস্তবতা প্রতিনিয়ত আমাদের সেই নিয়মে আবব্ধ করে নিচ্ছে এবং দিন দিন মুখোশের মাঝে থাকতে বাধ্য করছে, আমরা সময়ের সেই নির্মম স্রোতের সাথে নিজেকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছি এবং অনাকাংখিতভাবে নিজেই সেই সকল মানুষদের কাতারে সামিল হয়ে যাচ্ছি। শহরের জীবনের মাঝে এ এক অনাকাংখিত দৃশ্য, যা দিন দিন মানুষগুলোকে আরো বেশী নির্মম ও নিষ্ঠুর করে তোলছে। যার কারনে কেউ বিপদে পড়লে এগিয়ে আসতে চায় না, কারো সমস্যা দেখলেও তাকে সহযোগিতা করতে চায় না বরং ভিন্নভাবে সেটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করে।
হয়তো চাকচিক্য আর আভিজাত্য ধরে রাখার জন্য আমরা সবটা মেনে নিচ্ছি, হয়তো সময়ের গতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য সবটা সহ্য করে নিচ্ছি। কারন আভিজাত্যের চরম আকাংখা আমাদের অন্ধ করে দিচ্ছে, সময়ের সাথে সাথে নিজের অবস্থান উর্ধ্বে রাখার মানসিকতা আমাদের শেকলে আবব্ধ করে দিচ্ছে। মিথ্যে মুখোশ আর নিষ্ঠুরতার এই আভিজাত্য দিয়ে কি হবে? ইট পাথরের সুউচ্চ দালানের মাঝে বসবাস করে কি হবে? যদি মানুষ হিসেবে মনুষ্যত্ব ধরে রাখতে ব্যর্থ হই? প্রশ্নটা রেখেই আজকের লেখা শেষ করছি, আশা করছি ব্যস্ত শহরের দৃশ্যগুলো আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।
তারিখঃ এপ্রিল ০১, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ রমনা এবং পান্থপথ।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
"ভালো থাকার অভিনয় করেছেন" লাইনটা দারুন ভাই। সত্যিই হয়তো আমরা সকলে ভালো থাকার অভিনয় করছি। সময়ের সাথে সত্যিই সব পাল্টে যায়। অনেকদিন পর আপনি আপনার দীর্ঘ দিনের পরিচিত সেই জায়গায় গিয়ে দেখলেন সবই পাল্টে গেছে চারিপাশের আর মানুষগুলোও,এটাই তো বাস্তবতা। কিছুই চিরস্থায়ী নয় সবই সময়ের সাথে পাল্টে যায়।
সময়টা সত্যি পাল্টে যাচ্ছে। আর সেই সাথে পাল্টে যাচ্ছি আমরা। আর আমাদের চিরচেনা জায়গাগুলো পাল্টে যাচ্ছে। হয়তো অনেকদিন পর পরিচিত কোন জায়গায় গেলে দেখতে পাওয়া যায় অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। হয়তো আমরা নিজেরাও হয়তো পাল্টে গেছি। হয়তো ভালো থাকার অভিনয় করছি। আসলে আমরা সবাই দক্ষ অভিনেতা। পৃথিবীর এই রঙ্গমঞ্চে সবাই অভিনয় করে বেঁচে আছি। হয়তো ভালো থাকার অভিনয়। কিংবা মিথ্যে ভালো থাকার অভিনয়। ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যিই ভালো লেগেছে। দারুন লিখেছেন আপনি।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে যাদেরকে দেখে মনে হয় খুব সুখী মানুষ। কিন্তু দিনশেষে সেই মানুষটি ভীষণ অসুখী। মানুষের সমালোচনার ভয়ে প্রতিনিয়ত অভিনয় করে যাচ্ছে এবং নিজের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কাছের মানুষ গুলোও দিন দিন অনেক স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে মায়া-মমতা এবং সাহায্য সহযোগিতা করার প্রবণতা একেবারেই কমে গিয়েছে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময়।
প্রশ্নটা খুব সহজ ভাষায় হলেও তার উত্তর দেওয়াটা খুব একটা সহজ নয়।কারণ,সত্যিই বেশিরভাগ মানুষ তো তা ই আজকাল।
বর্তমানে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের পরিবর্তনটা এমনিতেই হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন সবচাইতে বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা মানসিকভাবে খুবই উচ্চ আকাঙ্ক্ষী হয়ে যাচ্ছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অনায়াসেই সমস্ত কিছুই মেনে নিচ্ছি এবং যেকোনো পরিবেশের সাথে নিজেদেরকে খাপ খাওয়ায়ে নিচ্ছি। যাহোক ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। খুবই সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
দিন যত চলে যাচ্ছে তত আমাদের পরিবেশ চেঞ্জ হচ্ছে এবং তার সাথে নিজে চেঞ্জ হতে হচ্ছে। হয়তো চেঞ্জ হওয়ার মতো এবিলিটি না থাকা সত্ত্বেও অনেককে চেঞ্জ হতে হচ্ছে। হয়তো অভিনয় করতে হচ্ছে পরিবেশের সাথে নিজেকে খারাপ খাওয়ানোর জন্য। তবে আপনার এত সুন্দর সচেতনামূলক পোস্ট আমাকে জেনো গভীরভাবে ভাবালো চারপাশ নিয়ে। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে বিশেষ কিছু উপস্থাপন করার জন্য।
অনেক সুন্দর করে বাস্তব কিছু আলোচনার নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজিয়েছেন। আসলে দিন যতই যাচ্ছে ততই যেন পরিবেশ পরিস্থিতি আর সমসায়িক পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কাছের মানুষগুলো। স্বার্থপর হয়ে যাচেছ চারদিকের সব কাছের মানুষ। কিন্তু সব কিছুর পরও দিন শেষে আমাদের বাঁচতে হবে। আর এই পরিবেশ পরিস্থিতিকে সাথে নিয়েই।