শীতের হলুদ প্রকৃতি || Original Photography by @hafizullah

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ্য আছেন। আমি বেশ আছি শীতের প্রকৃতির সাথে নিজেকে আরো বেশী চঞ্চল রাখার চেষ্টা করছি। শীতের প্রকৃতি মানে গ্রামের মুগ্ধকর দৃশ্যাবলী, বিশেষ করে আপনি যদি শীতের মাঝে গ্রামীন পরিবেশে যাওয়ার সুযোগ পান তাহলে নির্মল প্রকৃতির ভিন্ন রকম দৃশ্যাবলী আপনাকে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। শীতের প্রকৃতি বলতে, ভোর সকালে কুয়াশাময় অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে মাটির সড়কে হাঁটার অনুভুতি এবং শীতল কুয়াশার স্নিগ্ধকর পরশের ছোঁয়া।

গত বছর আমাদের একটা জাতীয় পত্রিকায় পড়েছিলাম, শীতের সকালের শিশিরের শীতল স্পর্শ আমাদের শারীরিক সক্ষমতা দারুণভাবে বৃদ্ধি করে এবং অনেকগুলো বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা হয়তো আমি শুধু লেখায় বা মুখে বলেই প্রকাশ করছি। কিন্তু আপনি যদি এই বিষয়টি গ্রামীন পরিবেশে গিয়ে যাচাই করতে পারেন, তাহলে আপনার অনুভূতির সাথে সাথে মানসিকতারও পরিবর্তন ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস। কারন আমি এই বিষয়টি বহুবার প্রমান করেছি এবং এখনো সুযোগ পেলে সেটা করার চেষ্টা করি। আমরা শিহরণ এর বিষয়টি নানাভাবে নানা ক্ষেত্রে পড়ে থাকি এবং বলে থাকি, এর যথার্থ অনুভূতি আপনি কেবল তখনই অনুভব করতে পারবেন, যখন শীতের ভোরে খালি পায়ে মাটির সড়কে হাঁটার চেষ্টা করবেন।

আসলে শীত ভালোবাসার অসংখ্য কারণ রয়েছে, আমি প্রায় সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে থাকি। আরো একটা কারণ হলো শীতের শষ্য ক্ষেত সমূহের সুন্দর দৃশ্য এবং তার সাথে সাথে মনোরম একটা ঘ্রাণ। আপনি শীতের সিজনে যদি গ্রামীন পরিবেশে শষ্য খেতগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে যান, তাহলে দারুণ মুগ্ধকর কিছু ঘ্রান পাবেন এবং সেগুলোর দ্বারাই আপনি বুঝতে পারবেন, এটা কোন সবজির খেত। অবশ্য নাও হতে পারে সেটা, যদি আপনি সবজি সঠিকভাবে না চিনেন। আমার কাছে সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে, ধনিয়া ক্ষেত, সরিষা ক্ষেত এবং গাজর ক্ষেত। আমাদের গ্রামের বাড়ির ঠিক চারপাশের ক্ষেতগুলোতেই এগুলো চাষ করা হয়। বাড়ীতে বসেই দারুণ একটা পরিবেশ উপভোগ করতে পারি।

আজকের অনুভূতির সাথে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে, এগুলো সরিষা খেতের দৃশ্য। গ্রামের কৃষি জমির বিলের যে দিকে যতদূর চোক আপনার চোখ যাবে, সবটুকু এবং সব কিছুই শুধু হলুদ আর হলুদ, এ যেন হলুদের মেলা। সষিরা খেতের কারনে চারপাশের পরিবেশটাও দারুণ মুগ্ধকর হয়ে উঠে, হলুদে হলুদে একটা অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি করে। অবশ্য মাঝে মাঝে একটু ব্যতিক্রম থাকে, দুই একটা ধনিয়া অথবা গাজরের খেতের কারনে। সেগুলো আবার একদম সবুজ এবং সাদা সাদা হয়ে থাকে। এর মাঝে ধনিয়া খেতের ফুলের দৃশ্যগুলো বেশ সুন্দর লাগে।

আবার সরিষা খেতের মাঝেও একটু গ্যাপ থাকে, কারণ মধু চাষীরা এই সময়ে দারুণ ব্যস্ত হয়ে পড়ের সরিষা খেত ঘিরে। যদিও এটা আগে এতো বেশী পরিমাণে ছিলো না এখন যতটা বেশী দেখা যায়। এরও একটা কারণ আছে, আগে বাড়ীর আশে পাশে মৌচাক দেখা যেতো এখন আর সেগুলো দেখা যায় না। শীতের সিজনে মধু চাষীরা এখন সরিষা, কালোজিরা এবং ধনিয়া চাষের সময় তার পাশেই তাদের বক্সগুলো বিশেষ কায়দায় বসিয়ে দেন এবং পরবর্তীতে সেখান হতে মধু সংগ্রহ করেন। এই দৃশ্যগুলোও আমার কাছে দারুণ লাগে এবং এই মধুগুলোও আমাদের দেশে এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।