পরিস্থিতি অনেক শেখায় আমাদের || জীবনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। সুস্থ্যতা আল্লাহর তায়ালার অনেক বড় একটা নেয়ামত, সত্যি এটা যে বড় নেয়ামত সেটা অসুস্থ্য না হলে কেউ বুঝতে পারে না বা উপলব্ধি করতে পারে না। আমাদের মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন দরুণ আপনার সুন্দর দাঁত সমূহ, আপনি হয়তো এটার গুরুত্বপূর্ণ বুঝতে পারছেন না এবং সঠিকভাবে সেগুলোর যত্ন নিচ্ছেন না। কিন্তু কোন অনাকাংখিতকারনে আমরা দাঁতগুলো যখন নষ্ট হয়ে যাবে এবং ডাক্তার বলবে যে দাঁতগুলো ফেলে দিতে হবে, তখন আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন এগুলো আপনার জন্য কতটা নেয়ামত ছিলো এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, কতটা ভুল আপনি করেছেন এগুলো যত্ন না নিয়ে।

ঠিক একইভাবে যদি আমরা একটু চিন্তা করি, আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিটি সুবিধার আমরা কতটা যত্ন নিচ্ছি বা নেয়ার চেষ্টা করছি। যখন এগুলোর কোন ক্ষতি হয়ে যায় তখন কেবল আমরা উপলব্ধি করতে পারি কতটা ভুল আমরা করেছি। আসলে আমরা মানুষরা এই ক্ষেত্রে খুবই অগ্রগামী, এমনিতে মানে ফ্রিতে পাওয়া জিনিষগুলোর প্রতি খুব একটা গুরুত্ব কিংবা যত্নশীল থাকি না। কিন্তু সেগুলো যখন নষ্ট হয়ে যায় বা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায় তখন শুধু আফসোস করতে থাকি, যদিও কখন আর কিছুই করার থাকে না আমাদের। বাস্তবতা আমাদের সত্যি একটা কঠিন মুহুর্তের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়, তখন নিজেদের খুবই অসহায় মনে হয়।

medical-5459654_1280.png

আজকে আসলে চোখ নিয়ে মূল প্রসঙ্গে যেতে চাই, কারন এটাও আল্লাহ তায়ারা কর্তৃক প্রদত্ত অন্যতম একটা নেয়ামত যা আমরা জন্ম হতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যবহার করি। যারা যত্নশীল থাকে তারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেটার সুন্দর ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে কিন্তু যারা যত্নশীল থাকে না তারা অল্প বয়সেই অন্য কিছুর সহযোগিতা মানে চশমার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। কিন্তু এখানে কি শান্তি আছে কিংবা আগের মতো পুরো সুবিধা ভোগ করতে পারে? মোটেও না । যারা চশমা বা অন্য কিছুর ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন, তারাই কেবল এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন।

কিছু দিন আগে আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলাম ডাক্তার এর কাছে, বার বার শুধু মাথা ব্যথার কথা বলে। তাই চোখের ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার সব কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন তার চোখের অবস্থা খুব একটা ভালো না, একটু দূরের জিনিষ খুব একটা দেখতে পারেন না। তারপর ৪.২৬ পাওয়ার এর চশমা দিলেন সাথে কিছু ঔষধের বোঝা চাপিয়ে দিলেন আর বলে দিলেন তিন মাস পর পর চেকাপ করানোর জন্য যাতে পাওয়ার এ্যাডজাষ্ট করা সহজ হয়। আসলে বর্তমান প্রজন্ম কোন কিছুর ব্যাপারেই যত্নশীল না, সকল ক্ষেত্রে বা বিষয়ে তাদের উদাসীনতা এবং তারপর কষ্টভোগ। কিন্তু আমাদের সময় এমনটা ছিলো না, আমরা সকল বিষয়ে মুরব্বিদের কথা শুনতাম এবং যত্নশীল থাকতাম।

ehr-1476525_1280.png

হ্যা, আগের মানুষরা হয়তো একটু কম শিক্ষিত ছিলো, কিন্তু তারা সকল ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলো, আমরা ভাগ্যবান যে তাদের পেয়েছিলাম এবং তাদের কথা শুনে নিজেদের সুস্থ্য রাখতে পেরেছিলাম। তাইতো আমি প্রায় ১৭ বছর যাবত কম্পিউটারে টানা কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে চশমা ব্যবহার করতে হয় নাই মানে পাওয়ার এ্যাডজাষ্ট করে চশমা ব্যবহার। আসলে প্রতিটি বিষয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য একটা সীমা রেখা ধরে কাজ করতে হয় এর বাহিরে গেলে সেটা আমাদের জন্য ক্ষতিরকারণ হয় আর ভেতরে থাকলে লাভজনক। এই বিষয়টি বর্তমান প্রজন্ম একদমই বুঝতে চায় না, যার ফলাফল এই রকম যেমনটা আমার ছেলের হয়েছে।

জীবনের যে ক্ষেত্রে আপনি যতটা সীমা বজায় রেখে চলবেন এবং নিয়মের মাঝে থাকবেন আপনার ভবিষ্যৎ ততোটা সুন্দর এবং সুখকর হবে। মাঝে মাঝে আমরা আগের প্রজন্ম অর্থাৎ মুরব্বীদের নানা কথা শুনাতাম কিন্তু এখন এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের দেখে বুঝতেছি তারা কতটা সঠিক ছিলেন, তাদের কথাগুলো ‍শুনা আমাদের জন্য কতটা জরুব্বী ছিলো। আজ তাহলে এখানেই শেষ করলাম জীবনের গল্প নামের সিরিজে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে আবার কথা বলার আশা রেখে শেষ করলাম।

Image taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

আসলে ভাইয়া বর্তমান প্রজন্ম এরকমই নিজেদের প্রতি যত্নশীল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেন চোখের প্রবলেমটা বেশি হচ্ছে।বেশির ভাগ মানুষের এখন পাওয়ার ওলা চশমা ব্যবহার করছে, কিন্তু আগেরকার মানুষের এরকম প্রবলেম হতো না। বাবা-মা যদি যথেষ্ট পরিমাণ শিক্ষিত ছিল না তারপরেও আমাদের বিষয়ে অনেকটাই যত্নশীল ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম মোবাইল বেশি ব্যবহার করার কারণে হয়তোবা এই প্রবলেমগুলো বেশি দেখা দিচ্ছে। আপনার ছেলের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আশা করছি সে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আসলে তারা অশিক্ষিত ছিলো অর্থাৎ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলো না কিন্তু তাদের মাঝে নৈতিক শিক্ষাটা খুব বেশী ছিলো, যার কারনে তারা ভালো মন্দ বিচার করতে পারতো। ধন্যবাদ

 last year 

দারুন লিখেছেন ভাইয়া। আসলে আমরা কিন্তু দাঁত থাকতে দাতেঁ মর্মতা বুঝি না। আমরা যদি আগে থেকে নিজেদের প্রতি একটু যত্নশীল হতে পারতাম, যদি আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের শুকুর গোজার করতে পারতাম তাহলে আমারে অর্ধেক অসুখ ভালো হয়ে যেত। আমরা থাকতে কোন কিছুর মজা বুঝি না। হারিয়ে গেলে আমরা কান্নাকাটি শুরু করে দেই।

 last year 

একদমই, দাঁত পড়ে যাওয়ার পর টাকা খরচা করে আলগা দাঁতের পিছনে দৌড়াই হা হা হা। অনেক ধন্যবাদ

 last year 

আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি বলেছেন ভাইয়া আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা উনাদের মত মুরুব্বী পেয়েছিলাম।আসলে ভাইয়া এখনকার বাচ্চারা কথা শুনতে চায় না।সত্যি ভাইয়া সহজে পাওয়া জিনিসগুলোর মর্ম আমর বুঝি না। ধন্যবাদ আপনাকে ।

 last year 

বাস্তব জীবনের গল্পগুলো সত্যি পড়তে ভালো লাগে কিন্তু এর ভেতরে থাকা শিক্ষনীয় বিষয়গুলো আমাদের দৃষ্টি আকর্ষন করে না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনার পোস্ট পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারি ও জ্ঞান অর্জন করতে পারি। ভাইয়া আমি অসুস্থ ছিলাম তখন বুঝতে পারছিলাম যে সুস্থতা কত বড় নেয়ামত কিন্তু যদি সুস্থ হয়ে যায় আমরা শুকরিয়া আদায় করতে পারি না। সবকিছু ভুলে যায়। আপনি দাঁতের মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে উদাহরণ দিয়েছেন যে সুস্থতা কত বড় নেয়ামত।সৃষ্টিকর্তা প্রতিটা জিনিস এমনি এমনি সৃষ্টি করেন নাই একটি ছাড়া আরেকটি চলা অসম্ভব। প্রতিটি জিনিসের প্রতি আমাদের যত্নবান হতে হবে। জি চোখের যত্ন না নেয়ার কারণে অনেকেই চশমার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। জি ভাইয়া বর্তমান প্রজন্ম সব কিছুর প্রতি উদাসীনতা এবং এর ফলে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়। আমরা নিজেদের যত্ন নিতে ভুলে যায় কিন্তু আমাদের উচিত নিজের শরীরে যত্ন নেওয়া। কারন নিজের শরীর ঠিক থাকলে আমরা ঠিক থাকবো। আপনাদের সময় আসলেই অনেক সুন্দর ছিল পরিবেশটা এবং নিজেদের প্রতি যত্নশীল ছিলেন কিন্তু এখনকার সময় যত্নশীল নাই বলতেই চলে। অনেক সুন্দর একটি মেসেজ দিয়েছেন আমাদের নিয়মের মাঝে থাকতে হবে এবং ভবিষ্যৎটাও সুন্দর ও সুখকর হবে।

 last year 

ভাই আমি খুব কম সমজেই কল্পনা নিয়ে লিখি বরং বেশীর ভাগ সময় আমি নিজের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করি, আপনাদের কাছে ভালো লাগে এটাই আমার স্বার্থকতা। ধন্যবাদ

 last year 

আসলেই ভাই অসুস্থ হলে বুঝা যায়, সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার কতো বড় নেয়ামত। বর্তমানে অনেকেই দাঁত এবং চোখের সমস্যায় ভুগছে। বিশেষ করে চোখের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। কারণ ছোট থেকেই বাচ্চারা মোবাইল এবং ট্যাব এর প্রতি আসক্ত হয়ে যায়। মূলত বর্তমানে এগুলোই হচ্ছে তাদের বিনোদনের উৎস। কিন্তু আমরা ছোটবেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতাম এবং খুব আনন্দ করতাম। আমাদের মুরুব্বিরা যা-ই বলতো, প্রতিটি কথা ঠিক বলতো। একটা সময় হয়তো আমরা তাদের কথা বুঝতাম না, কিন্তু এখন আসলেই খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি সেটা। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

মূল্যবান লেখা গুলো শেয়ার করলেন আপনি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। প্রতিনিয়ত বলি আপনার লেখা গুলোর মাধ্যমে অনেক কিছু অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকি। তাছাড়া অনেক শিক্ষনীয় মূল্যবান কথা গুলো আপনি সবার উদ্দেশ্যে শেয়ার করেন। আসলে আগেকার ছেলে মেয়ে এবং এখনকার ছেলে মেয়েদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যেহেতু ডিজিটাল যুগে বসবাস করতেছে তাই তারা বিভিন্ন ডিভাইসে আসক্ত। যার কারণেই চোখের সমস্যা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু আগের ছেলে মেয়েদের ডিজিটাল পদ্ধতি ছিল না। তাই এত সমস্যাও তেমন ছিল না। যাক আপনার ছেলের সুস্থতা কামনা করছি। সেই সাথে আসলে সব কিছুর মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রেখে চলা আমাদের সকলের জন্য ভাল। ধন্যবাদ অনেক ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.039
BTC 90343.33
ETH 3214.39
USDT 1.00
SBD 2.84