আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ চাহিদার নিয়ন্ত্রণ ]

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। যদিও সকলের মাঝে একটা অন্য রকম আতংক বিড়াজ করছে সেটা না বললেও বুঝতে পারছি । কারন একই অবস্থা আমার মাঝেও রয়েছে। আমরা যারা ঢাকা শহরের বাহির হতে প্রতিদিন নানাভাবে শহরের ভিতরে প্রবেশ করি এবং সারাদিন শেষে পুনরায় আবার নিজ বাড়িতে ফিরে আসার চেষ্টা করি, তাদের পরিবারের সকলের মাঝেই এই আতংকটা এখন স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করে দিয়েছে। গতকালের অনাকাংখিত ট্রেন দূর্ঘটনা সেটাকে দ্বিগুন করে দিয়েছে।

আসলে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সব কিছু এগিয়ে যাচ্ছে, তার সাথে সাথে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের মতো নোংরা মানসিকতার রাজনীতি। না আমি রাজনীতি নিয়ে কিছু বলতে যাচ্ছি না এবং বলার ইচ্ছেও নেই। কারন আমরা বাংলা ব্লগে রাজনৈতিক কিছু লেখা বা প্রকাশ করা নিষিদ্ধ রয়েছে। আমরা বাঙালী, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় এবং বাংলা সংস্কৃতি লালন করেই এগিয়ে যেতে চাই। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা কি আমাদের সেটা করতে দিচ্ছে বা দিবে? সমস্যাটা আমাদের বার বার এখানে আটকে রাখছে এবং আমরা বার বার সেখানে হোঁচট খাচ্ছি।

যাইহোক, আজকেও আমি পুনরায় নিজের কিছু অনুভূতি শেয়ার করবো আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে। যদিও অনেক দিন হয়ে গেলো এই সিরিজে কোন কিছু লেখা হচ্ছে না। না একদম লিখছি সেটা ঠিক না, কারন জীবনের গল্পের নতুন সিরিজ শুরু করার পর অধিকাংশ সময় সেটা নিয়েই লিখছি। আসলে সত্যি বলতে লেখার খুব একটা সময় পাচ্ছি না, কারন এগুলো হুট করেই লেখা যায় না কিছুটা সময় নিতে হয় এবং পুরো বিয়ষটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করতে হয়। অন্যান্য যে কোন বিষয় নিয়ে যতটা সহজে একটা পোষ্ট সাজানো যায়, জীবনের গল্প কিংবা আবোল তাবোল কিছু নিয়ে ততোটা সহজে লিখা যায় না।

বর্তমান যে পরিস্থিতির মাঝে আমরা আতংকে ঢুবে যাচ্ছি তার একমাত্র কারণ হলো চাহিদা, আমরা যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের চাহিদাগুলোকে পরিবর্তন কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম তাহলে হয়তো এমন পরিস্থিতির মাঝে আমাদের ফিরে আসতে হতো না। একটু লক্ষ্য করে দেখুন, একজন সাধারণ মানুষ যেমন হঠাৎ করেই অসাধারণ হয়ে উঠে শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে যায়, একজন সাধারণ সরকারি চাকুরীজীবী যেমন হঠাৎ করেই সরকারি সাদামাটা কোয়ার্টার ছেড়ে শহরের মাঝে পাঁচতলা বাড়ীর মালিক হয়ে যায়, একজন সাধারণ পিকেটার হতে পুচকে নেতা যখন এমপি বনে যায়, তখন বুঝতে হবে তাদের মাঝে বিশেষ চাহিদা বা লোভ নিদারুণভাবে রাজত্ব করছে এবং তাদেরকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করছে।

এখানে তাদের সাথে সাথে আমাদের সাধারণ জনগনেরও কিছু অনিয়ন্ত্রিত লোভ কাজ করে, যার কারনে আমরাও বিপদগামী হয়ে তাদেরকে ভিন্নভাবে সহযোগিতা করি এবং তারা আমাদের সেই সহযোগিতা বা পূর্ণ সমর্থন নিয়ে দ্রুত কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। কিন্তু তারপরের ঘটানাটি আমাদের সবাইকে হতাশ করে দেয়, কারন তাদের সহযোগিতা করে আমরা ক্ষমতার শীর্ষে বসিয়েছি বা সুবিধার আসনে বুসিয়েছি, তারাই একটা সময় আমাদের সেই সহযোগিতা অস্বীকার করে আমাদের উপরই নির্যাতন শুরু করে দেয়। সুতরাং ভিন্নভাবে ভিন্ন কিছুর লোভে আক্রান্ত হয়ে আমরা যেমন নিজেদের চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিয়ন্ত্রণহীন কিছু মানুষের সহযোগি হয়ে অন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছি, ঠিক তেমনি তারাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে আমাদের সঠিক জবাব দিচ্ছে।

যার যার অবস্থান হতে আমরা যদি নিজেদের চাহিদাগুলোকে নিয়ন্ত্রন করতে পারতাম, পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা যেমন নিজেদের আরো বেশী সক্ষম করে তুলতে পারতাম ঠিক তেমনি আমাদের জীবনের কঠিন মুহুর্তগুলোতে আমরা সুন্দরভাবে নিজেদের সঠিক অবস্থানে ধরে রাখতে পারতাম। হয়তো ভাবতে পারেন এগুলো শুধুই কথার কথা কিন্তু বাস্তবে মোটেও সম্ভব না। আসলে সেটা একদমই না, আপনি আপনার অবস্থান হতে একটু চিন্তা করে দেখুন, গভীর ভাবে চিন্তা করে দেখুন এই রকম অনেক পরিস্থিতিতে আপনি চাইলেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন, কিন্তু আপনি সেই চেষ্টাটা কখনোই করেন নাই। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতায় এবং চিন্তায়।