আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। যদিও আমরা সবাই একটা কঠিন সময় পার করছি, সম্পর্ক এবং সামাজিক বন্ধন আরো বেশী সুন্দর ও মজবুত করার চেষ্টা করছি। সময়ের পরিবর্তনে আমরা বেশ কঠিনভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিলাম। সভ্যতার উৎকর্ষতার মাঝেও আমরা মানসিকভাবে দিন দিন অসভ্য হয়ে উঠতেছিলাম। সামাজিক জীব হয়েও আমরা কেমন জানি প্রতিনিয়ত বিচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছিলাম, যা মোটেও আমাদের জন্য সুখকর কিছু ছিলো না। কারণ যখনই আমরা সামাজিকতা হতে বের হয়ে গিয়েছি, যখনই আমরা পারস্পরিক বিচ্ছিন্ন হয়েছি, তখনই আমরা কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়েছি। এটা বাস্তব সত্য, অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।

অতীতের দিনগুলোর সাথে একটু মিলিয়ে দেখুন, একটা সময় আমরা মানুষ খুবই সামাজিক এবং আন্তরিক ছিলাম কিন্তু এখন জানি আমরা কেমন পাল্টে গিয়েছি এবং সবাই ব্যক্তিক্রেন্দিক হয়ে গেছি। না না এখনকার মানুষ যে আন্তরিক না কিংবা অসামাজিক সেটা আমি বলছি না, আমার ঘাড়ে একটা মাথা তাই এই কথা বলার সাহসও নেই আমার, হি হি হি। তবে কি আগের মতো মানুষের মাঝে অতো মিল খোঁজে পাওয়া যায় না। আগে মানুষের সাথে মানুষের অনেক বেশী আন্তরিকতা কিংবা সামাজিকতা ছিলো। যে কোন বিষয়ে পাশের বাড়ির ভাই কিংবা ভাবির সাথে আলোচনা করা, বাড়ির কোন অনুষ্ঠানে প্রতিবেশীদের ডাকা এবং প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে তাদের খোঁজ খবর নেয়া, এগুলো একদমই উঠে গেছে। এসব বিষয়কে মানুষ এখনো বাড়তি ঝামেলা মনে করে, কি দরকার আছে আগ বাড়িয়ে অন্যের খোঁজ নেয়া।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নানা ইস্যুতে আমাদের মাঝে সেই সুযোগটা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে, আমরা প্রয়োজনে অন্যের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি শুধুমাত্র মানবতার খাতিরে, ধর্ম কিংবা বর্ণ এখানে মুখ্য কিংবা বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না। নিঃসন্দেহে একটা দারুণ সুযোগ আমাদের সকলের জন্য, পারস্পরিক সোহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে নিজেদের সম্পর্কগুলোকে পুনরায় ঠিক করে নেয়ার, সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে পাশের মানুষগুলোর সাথে দাঁড়ানোর। দেখুন আমরা মানুষ, আমরা জাতে বাঙালি, এটাই হোক আমাদের প্রথম এবং শেষ পরিচয়। যে কোন প্রয়োজনে একে অন্যের পাশে দাঁড়াবো এটাই হোক আমাদের প্রথম নীতি। একটা সময় কিন্তু এমনই ছিলো, খুব বেশী দূরের স্মৃতি না এটা।

ai-generated-8766728_1280.jpg

আমি শৈশবে খুব কাছ হতে দেখেছি, সেই স্মৃতিগুলো এখনো হৃদয়ে ভেসে উঠে। তখন আমাদের সমাজে দারুণ সহঅবস্থান ছিলো, ছিলো না হৃদয়ের মাঝে কোন প্রশ্ন কিংবা অনাকাংখিত কোন ইস্যু। কিন্তু আজ নানা বিষয়ে এব নানা ইস্যুতে আমরা ভাগ করে গেছি, আমাদের সামাজিক অবস্থান নষ্ট হয়ে গেছে, আমরা একে অন্যকে সন্দেহের চোখে দেখি আবার নানা বিষয়ে ভীত হয়ে থাকি। কেন মানবতার দাবী নিয়ে আমরা পুনরায় এক হতে পারি না? কেন আমরা বাঙালি পরিচয়ে সেই সম্পর্কে ফিরে যেতে পারি না? 'সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই' এখান হতে আমরা সরে গেছি বরং ভাবছি সবার ‍উপর টাকা সত্য তাহার উপর নাই, টাকা ছাড়া কোথায় কিছু নাই।

এর জন্য অবশ্য আমরাই দায়ী, নানাভাবে এই বিষয়টিকে আমরাই প্রতিষ্ঠিত করেছি। হোক সেটা নিজ বাড়িতে মা-বাবাকে দূরে ঠেলে দিয়ে, হোক সেটা টাকার গরিমায় বউকে বেশী ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে, হোক সেটা অসৎ পথে টাকা পাহাড় গড়ে নিজের অবস্থান সবার উপরে রাখতে গিয়ে, এটা করেছি আমরা। সুতরাং আমাদেরকেই এখন ভাবতে হবে, এটা পরিবর্তন করতে হবে কারন টাকাই সব টা এই বাস্তব সত্যটা এখন দিবালোকের মতো সত্য হিসেবে নতুনভাবে ফিরে এসেছে আমাদের কাছে। সাম্প্রদায়িতক সম্প্রীতির নতুন চেতনায়, বাঙালি পরিচয়ের নতুন প্রেরণায়, চলুনভাবে সম্প্রীতির নতুন সূচনা করি, নিজেদের জন্য-আগামীর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 days ago 

এখন কি মানুষের আর সময় আছে নাকি একে অপরের খোঁজ নেওয়ার জন্য। এখন তো সবাই নিজেদেরকে নিয়েই প্রচুর ব্যস্ত থাকে। কোথায় আর অন্যদের খোঁজখবর নেবে। এখন আর আগের মত মানুষের একে অপরের প্রতি আন্তরিকতা দেখা যায় না। এখন আমাদের সামাজিক অবস্থান আসলেই নষ্ট হয়ে গেছে। অসৎ পথে টাকার পাহাড় তৈরি না করে, সৎ পথে সবাইকে নিয়ে একবেলা খেলেও ভালো বলে আমি মনে করি। সুন্দর একটা সমাজ গড়ে তোলার জন্য একে অপরের প্রতি সবার আন্তরিকতা থাকা দরকার। আপনার লেখা পোস্টটি অনেক সুন্দর ছিল ভাইয়া।

 8 days ago 

মানুষ নিজের চিন্তা করতেই সময় পায়না, কোথায় করবে অন্যের চিন্তা। এখন বাস্তবতা ঠিক এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়জনের মধ্যেই বা রয়েছে আন্তরিকতা, আশেপাশের প্রতিবেশীদের খোঁজ নেওয়ার জন্য। আসলেই এখন টাকার উপরেই সব কিছু। মানুষের মধ্যে এখন আর আগের মত আন্তরিকতা নেই। আগের মত সুন্দর সুসম্পর্ক নেই। হ্যাঁ এটা অবশ্যই মানি এইসব কিছুর জন্য আমরাই দায়ী। কিন্তু এসব কিছু আবার আমরাই ঠিক করতে পারি। তবে কেউ ঠিক করবে না। কারণ সবাই নিজেদেরকে নিয়েই তো ব্যস্ত।

 8 days ago 

একে অন্যের খোঁজ নেয়া,আন্তরিকতা এটা আমি খুব মিস করি।মানুষ এখন যান্ত্রিক হয়ে গেছে।নিজেকে ছাড়া আজকাল মানুষ অন্যের কথা খুব কমই ভাবে।আমাদের ছোটবেলাটা কেটেছে সব মানুষের মধ্যে থেকে।কিন্তু আজকাল মানুষ এতোটা রিজার্ভ ভাবে থাকে যা মোটেও ভালো লাগে না।তবে বাঙালিরা কোনকিছু হলে একসাথে ঝাঁপিয়ে পরে এটা খুব ভালো লাগা একটি বিষয়। সম্প্রীতি,সৌহার্দ্য নিয়ে এগিয়ে যাব সবাই মিলে এই কামনাই করি।

 8 days ago 

এখনকার বেশিরভাগ মানুষ খুব বেশি স্বার্থপর হয়ে গিয়েছে। তাইতো কারো খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করে না। কিন্তু নিজের প্রয়োজনে ঠিকই অন্যের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। আসলে মানুষের মন থেকে মায়া-মমতা দিনদিন একেবারেই কমে যাচ্ছে। সামনে যে কি হবে, সেটাই ভাবছি। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 8 days ago 

যে কোন বিষয়ে পাশের বাড়ির ভাই কিংবা ভাবির সাথে আলোচনা করা, বাড়ির কোন অনুষ্ঠানে প্রতিবেশীদের ডাকা এবং প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে তাদের খোঁজ খবর নেয়া, এগুলো একদমই উঠে গেছে। এসব বিষয়কে মানুষ এখনো বাড়তি ঝামেলা মনে করে, কি দরকার আছে আগ বাড়িয়ে অন্যের খোঁজ নেয়া।

এই বিষয়গুলো আমাকে খুব ভাবায়।কারণ আগে মানুষ যৌথ ফ্যামিলিতে কত সুন্দরভাবে বসবাস করতো।আশেপাশের সবাইকে নিয়ে কত সুন্দরভাবে সময়গুলো পার করা হতো।আর এখন তো সবাই চায় একা থাকতে।আমার কাছে এই বিষয়গুলো ভালো লাগে না।একা খাওয়া বা থাকার চেয়ে সবাই মিলে একত্রে থাকার মহত্ব অনেক। যাইহোক কথাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।তবে ফ্রাইডে স্পেশাল দেখে ভেবেছিলাম কোনো রেসিপি বা ভিন্ন কিছুর আয়োজন হলো নাকি।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64373.04
ETH 2775.53
USDT 1.00
SBD 2.66