প্রকৃতি এবং বৃষ্টির অনুভূতি || Original Photography by @hafizullah
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন এবং সীমাহীন বৃষ্টির অনুভূতি বেশ ভালোভাবে উপভোগ করছেন। সীমাহীন এই জন্য বললাম যে, ছুটির দিনগুলোতে সবাই বাড়িতে ছিলাম এবং বেশ কঠিনভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম কি পরিমাণ বৃষ্টি এবার হয়েছে। দেখুন অন্যান্য সময় আমরা হয়তো নানা কাজে ব্যস্ত থাকি, অফিসের অন্য সকল কাজে ব্যস্ত থাকার দরুণ এটা ঠিকভাবে বুঝতে পারি না যে বাহিরে কি পরিমান বৃষ্টি হচ্ছে এবং তার প্রভাব কতটা আমাদের জীবনের উপর পতিত হচ্ছে। কিন্তু এবারের ঈদের ছুটির দিনগুলোতে যেহেতু কোন কাজে ব্যস্ত ছিলাম না এবং মোটামোটি সারাদিনই বাড়িতে অলস সময় ব্যয় করেছি, সেহেতু খুব কাছ হতে সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি।
দেখুন পরিবেশ পরিবর্তন হচ্ছে এবং সেটা যে দিন দিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে সেটা কিন্তু আমরা এবার বেশ ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছি। এটা তো হবারই কথা তাই না? একটু পত্রিকা খোলে দেখুন কোন খবরগুলোকে সেখানে প্রধান্য দেয়া হচ্ছে। কিছু দিন আগের প্রধান নিউজগুলো এমন ছিলো- আরো বাড়তে পারে বৃষ্টির প্রবণতা- ভয় দেখানো হচ্ছে আমাদের। কবে থামতে পারে বৃষ্টি- কিছুটা আশাও জাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা- জিনিষ পত্রের দাম আরো একবার বাড়ানোর পায়তারা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রবল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি ফসলের- মানে ব্যবসায়ীদের আগাম বার্তা দেয়া হচ্ছে পণ্য মজুত করার জন্য। ঈদের ছুটিতে ঘরবন্দি মানুষ, বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই - সেই পুরনো গল্প নতুনভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরার প্রচেষ্টা।
এসব শুধু পত্রিকার নিউজ নয় বরং শংকা বৃদ্ধি করার একটা দিক নির্দেশনা। আমরা হয়তো সেটা ঠিক মতো বুঝতে পারছি না কিন্তু বাস্তবতা হলো এই অবস্থার জন্য দায়ী আমরা নিজেরাই এবং আমাদের মানসিকতা। কারন আমরা প্রতিনিয়ত সবুজ প্রকৃতি ধ্বংস করছি এবং সবুজের পরিমান হ্রাস করছি। যার প্রভাবে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং নিজেকে রক্ষা করার জন্য আরো বেশী আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে। কারণ প্রকৃতিকে আমরা বাধ্য করছি এই রকম হতে, প্রকৃতির এই পরিবর্তন আমাদের কারণেই হয়েছে এবং আজকের বৃষ্টির এই সীমহীন যন্ত্রনা আমাদের প্রাপ্য ছিলো। আমরা যতই প্রকৃতিকে দোষারূপ করি না কেন, আসলেই এর পিছনে আমাদের কর্মই প্রকৃত দায়ী। হয়তো আমরা সেটা বুঝেও না বুঝার ভান করছি এবং নিজেদের দোষগুলোকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছি।
একটু চিন্তা করে দেখুন যদি ঘন্টায় ১০ মিলিমিটারের বেশী বৃষ্টিপাত হয় এবং সেটা যদি ক্রমাগতভাবে হতে থাকে তাহলে পরিবেশ এবং পরিস্থিতি কতটা নাজুক হতে পারে। সেটা বাদ দিন বরং একটা চিন্তা করুন ভবিষ্যতে যখন প্রতি ঘন্টায় ২০ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত হবে তখন আমাদের অবস্থা কতটা নাজুক হবে? একটু চিন্তা করুন, একটু ভাবুন, তখন ঢাকা শহরের পরিস্থিতিটা কতটা ভয়াভহ হবে। গত কয়েক দিনের পত্রিকার খবর এবং তাদের দেখানো ফটোগ্রাফিগুলোর দৃশ্য বেশ ভয় সৃষ্টি করেছে মনের মাঝে। প্রতিটি সড়ক পানির নিচে এবং এলাকাবেদে কোথায় কোথায় হাঁটু অবদি পানি। বাড়ির নিচতলা পানির নিচে, সড়কে মাঝে কোথায় ড্রেন এবং কোথায় ভাঙ্গা সেটা বুঝার কোন উপায় নেই।
আসলে আমরা যে হারে নিজেদের উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছি, যে হারে আমরা প্রকৃতির বারোটা বাজাচ্ছি সেই ভাবে তো প্রকৃতিও আমাদের বারোটা বাজানোর চেষ্টা করতে পারে। হয়তো এভাবে কখনো আমরা চিন্তা করি নাই, প্রকৃতি এভাবে আমাদের আটকে দিতে পারে, ছুটির দিনগুলোকে এভাবে নষ্ট করে দিতে পারে এবং চার দেয়ালের মাঝে বন্দি জীবন যাপন করে প্রকৃত বিষয়টি উপলব্ধি করার সুযোগ তৈরী করতে পারে। আসলে চিন্তা করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায় কিন্তু চিন্তা না করলে কোন কিছুই সঠিকভাবে উপলব্ধি করা যায় না। প্রকৃতিকে তার মতো করে রাখতে চাইলে প্রকৃতির ভারসাম্য নিয়ে চিন্তা করতে হবে, চিন্তা করতে হবে প্রকৃতি সবুজ পরিবেশ নিয়ে এবং বনাঞ্চলগুলোকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করতে হবে।
তারিখঃ জুন ২৭, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কি যে অবস্থা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে তা আমরা নিজেরাই জানিনা। আমরা আমাদের নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছি। গাছ আর সবুজ অরণ্য কেটে আমরা আগামীর বিপদ ঢেকে আনছি। আপনার পোস্ট গুলো পড়ে কিন্তু অনেক অনুপ্রেরণা পাই। বেশ সুন্দর সুন্দর কিছু কথা আমাদের কে উপহার দিয়েছেন।
আসলেই ভয়াবহ একটা মুহূর্ত আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, যেটা হয়তো আমাদের কল্পনার বাহিরে।
১০ মিলিমিটার বা ২০ মিলিমিটার বলে কথা না হাফিজ ভাই আমাদের কলকাতায় তো সামান্য বৃষ্টি হলেই কিছু কিছু জায়গা জলের নিচে চলে যায়। আসলে এই সবকিছুর জন্যই আমরা দায়ী এবং বাজারের যে সিন্ডিকেটের কথা বলছেন সেটার জন্যই মূলত আমরা দায়ী। সব মিলিয়ে যেটা বলতে হয়, সেটা হচ্ছে যে এই এত কিছু ঘটছে, এত পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে এর সবগুলোর পিছনেই মানুষের হাত রয়েছে। আমরা যতদিন না পর্যন্ত সচেতন হব এগুলো থেকে আমাদের পরিত্রান নেই। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো বেশ ভালো লাগছিল হাফিজ ভাই।
একদমই সত্য, সব কিছুর মূলে আমরা নিজেরাই আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই তো সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
ভাইয়া খুব সুন্দর কথা বলেছেন।কথাগুলো বাস্তব সম্মত।আমরা নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছি।পরের প্রজন্মের কথা কেউ ভাবছি না।ভুল করছি সবাই।প্রকৃতির খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। চোখ জুড়িয়ে গেলো আর মনটাও ভরে গেলো।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া, এবার ঈদ হলো বর্ষা ঋতুতে। আর বর্ষা ঋতুতে যদি বৃষ্টির দেখা নাই পাওয়া যায় তাহলে তো বর্ষা ঋতুর মান সম্মান আর থাকবে না। যাহোক এটা সত্য যে, আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য প্রকৃতির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছি। তবে বর্ষা ঋতুতে দিন-রাত বৃষ্টি হলেও সেটা প্রকৃতির বিরুপ আচরণ বলা যায় না। তবে এটা সত্য যে, বৃষ্টির কারণে এবার ঈদের অনেক আনন্দের দিন নষ্ট হয়েছে। তবে বৃষ্টির দিনে ঘর বন্দী না থেকে যারা ছাতা ব্যবহার করে বাইরের পরিবেশ উপভোগ করতে পেরেছে তারাই দিনশেষে ঈদের সার্থক আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে।