আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ তিক্ত অভিজ্ঞতা ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন অথবা ভালো থাকার চেষ্টা করছেন, যেমনটা আমি সর্বদা করে থাকি। মন্দ থাকার মাঝেও ভালো থাকার সূত্র খুঁজতে থাকি, বলাতো যায় না কখন কোন সূত্র পেয়ে যাই। ঐ যে ছোট বেলায় একটা সারাংশ পড়েছিলাম, “যেখানে দেখিবে ছাই ...................... পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন” সেই রতনের খুঁজে খুঁজে বুড়ো হয়ে গেলাম, দেখা পাবো কিনা জানি না। কিন্তু আশাতো রাখতে পারি নাকি? এতো সহজে নিরাশ হওয়ার পাত্র অন্তত পক্ষে আমি নই সেটা নিশ্চয় বুঝে গেছেন এতো দিনে। না বুঝতেও ক্ষতি নেই, সময়ে অসময়ে আমি সেটা আপনাদের বুঝিয়ে যাবো, নিজ দায়িত্ব থেকে।

আমি আবার দায়িত্ব সম্পর্কে সর্বদা সজাগ থাকি, হ্যা ফাঁকিবাজির মনোভাব আমার মাঝেও রয়েছে, মাঝে মাঝে আমিও চেষ্টা করি ফাঁকিবাজি করার কারন সেটা না করলে আমি যে বাঙালি সেটা হয়তো ভুলে যাবো। তাইতো বাঙালির পরিচয়টা ধরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সর্বদা চলমান রাখার চেষ্টা করি। তবে সে যাইহোক না কেন, দিন শেষে বাঙালি হিসেবে গর্ব করি সেটা কিন্তু নির্দ্বিধায়, কারন নিজের অস্তিত্বকে কখনো অস্বীকার করা যায় না। যদিও আজকাল অনেকেই সেটা নানা ভাবে করে থাকে, একটু পয়সার মুখ দেখলেই নিজেকে অবাঙালি কিংবা ইংজেরী সাজানোর চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে যায়। আসলে যারা নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার চেষ্টা করে, তাদের শিকড় নিয়ে সর্বদা আমাদের মাঝে সন্দেহ থেকে যায়। বাকিটা আপনারা বুঝে নিন।

IMG_20221023_103717.jpg

আজকে আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে নিজের ভেতরের কিছু অনুভূতি প্রকাশ করবো, যেটা সর্বদা করে থাকি। এই একটা সিরিজ যেখানে নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতা কিংবা আবেগের বহিঃপ্রকাশ উল্টা পাল্টাভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করি, আর এই কারনেই এর নাম দিয়েছি আবোল তাবোল হি হি হি। আবোল তাবোল বলে যা খুশি চালানো যায়, কি বলেন আপনারা? বুদ্ধি আছে না আমার হি হি হি। আচ্ছা বাদ দেন, যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো সেটা হলো ভিন্ন মানসিকতা কিংবা ব্যবসায়িক মনোভাব। আমরা নানাভাবে সেবার অন্তরালে নিজেদের ব্যবসায়িক মনোভাব কিংবা চরিতার্থ হাসিল করার চেষ্টা করে থাকি। এই এরকম ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা গত মাসে বেশ নিমর্মভাবে অর্জন করেছিলাম আমি। কিছুটা হয়তো আপনারা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন, আমার ল্যাপটপ নিয়ে হঠাৎ করেই একটু সমস্যায় পড়েছিলাম, তারপর সেটা নিয় দুইদিন অফিস কামাই করে মাল্টিপ্লান এ ছুটেছিলাম।

সমস্যা খুব বেশী ছিলো না, কিছুটা আপগ্রেড করার জন্য নতুন র‌্যাম সংযুক্ত করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম। কারন কাজের প্রেসার বেড়ে যাওয়ার ল্যাপটপের উপর কিছুটা চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিলো, আর কাজের গতিটাকে ধরে রাখার জন্য র‌্যাম বৃদ্ধি করার প্রয়োজন ছিলো। অবশ্য আরো একটা সমস্যা ছিলো, এন্টিভাইরাস আপডেট নিচ্ছিলো না, ইউন্ডোজ এ কিছুটা সমস্যা হচ্ছিলো। সার্ভিস সেন্টারে আলোচনা করলে তারা চোখ বন্ধ করে সমাধান দিয়ে দেন আর সেটা হলো নতুন ইউন্ডোজ দেয়া। এটা সত্যি খুবই সুন্দর সমাধান, কি বলেন আপনারা? আসলে আমরা কখনো সমস্যার মূলে যেতে চাই না, যাওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা সেটা নিয়ে সব সময়ই প্রশ্ন থেকে যায়। আমি যখন কম্পিউটার কোর্স করে ইর্ন্টানি করেছিলাম, তখন যে কোন সমস্যা নিয়ে কেউ তাদের পিসি নিয়ে আসলে, আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া থাকবো সেটা খুলে পরিস্কার করে তারপর চোখ বন্ধ করে নতুন ইউন্ডোজ সেটাপ করার। কি দারুণ বুদ্ধি, বাঙালি বুদ্ধি বলে কথা! সমস্যা খোঁজার দরকার কি? অতো সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই, সহজ সমাধান নতুন সেট-আপ।

IMG_20221022_140727.jpg

যেহেতু এই বিষয়টি আমি আগ হতেই জানি তাই কথা না বাড়িয়ে মাল্টিপ্লানে চলে যাই, নতুন র‌্যাম দিয়ে ইউন্ডোজ সেট-আপ করা হয় কিন্তু সমস্যার সমাধান আসে না। সেটার কারন ছিলো অন্য জায়গায়, টাকা ঠিক মতো নিলেও র‌্যাম দেয়া হয়েছিলো চায়নীজ কোম্পানীর, যেটা আবার বেশ পুরনো ছিলো। পরবর্তীতে সেখানকার একজন স্টাফ এর সাথে খাতির দিয়ে জানতে পারি সেটা বিক্রি হচ্ছিল না বলে আমাকে গছিয়ে দেয়া হয়েছিলো। কি দারুণ সেবার মানসিকতা! সত্যি মাঝে মাঝে হতবাক হয়ে যাই, ব্যবসাকে আমাদের দেশে কোথায় নিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে। সেবার নামে কাষ্টমারদের ভোগান্তি বৃদ্ধি করা হয়, অকেজো কিংবা পড়ে থাকা পন্যকে কৌশলে বিক্রি করে দেয়া হয় কিন্তু যে মানুষটা টাকা দিয়ে পন্যটা বা সেবাটা ক্রয় করলো তার দিকটা কখনোই বিবেচনা করা হয় না।

IMG_20221022_151029.jpg

যথারীতি সেই সমস্যা নিয়ে পরের দিন আবার খুব ভোরে মানে তখনো দোকান খোলা হয় নাই আমি চলে যাই এবং তাদের স্টাফদের সাথে কিছুটা খাতির দিয়ে সমস্যার বিষয়টি পুনরায় উত্থাপন করি, তারপর ভিতরের আসল কিছু তথ্য জানতে পারি এবং পুনরায় আরো এক হাজার টাকা বাড়িয়ে নতুন ও ভালো র‌্যাম ক্রয় করে সেটার সংযুক্ত করে এবং নতুন করে আবার ইউন্ডোজ সেট-আপ করে বাড়িতে ফিরে আসি। অভিজ্ঞতার সাথে কিছু তিক্ততা আবার অর্জন করার সুযোগ পাই কিন্তু এই অবিজ্ঞতা হয়তো আর কাজে লাগানো যাবে না কারন পরবর্তীতে হয়তো সেই দোকানদার কিংবা ব্যবসায়ী নতুন কোন ফন্দিতে আবারও আমাদের ঠিক ফাঁদে ফেলে তার ব্যবসায়ীক স্বার্থ হাসিল করে নিবেন। বাস্তবতা হলো যত দিন তাদের এই মানসিকতার পরিবর্তন না ঘটবে, ততোদিন হয়তো আমাদের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জনের পথ বন্ধ হবে না।

যার কারনে আমার দুইটি কর্ম দিবস নষ্ট করতে হয়েছে এবং তার সাথে ভোগান্তি ছিলো সম্পূর্ণ ফ্রি। কি করবেন? কাদের উপর ভরসা করবেন? দিন শেষে আমরা সবাই কোন না কোনভাবে সেবা নামক ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পা দিচ্ছি এবং নতুন ভোগান্তির অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করছি। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতায়, সেটা ব্যবসায়ীক হোক কিংবা ভোক্তা হিসেবে হোক। আজ তাহলে এখানেই শেষ করলাম, পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার দেখা সাক্ষাত হওয়ার আগ্রহ রেখে আজ বিদায় নিচ্ছি।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই আশা রাখবেন।ইনশাল্লাহ একদিন না একদিন রতনের দেখা পাবেন।

ঘটনাটা জেনে যেমন আপনার জন্য খারাপ লাগলো তেমনই কিছু মানুষের উপর ঘৃণাও এসেছে।আমার সাথেও এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে।কি করবেন বলেন?আপনার আমার কথায় এগুলো পাল্টানোর নয়।তাদের কাছে ব্যবসা মানেই লোক ঠকানো।

 2 years ago 

আসলেই সত্য বলেছেন, আমাদের কথায় কিছুই আসে যায় না, কারন তাদের মানসিকতা কখনো পাল্টাবে না, ব্যবসাটাই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ

 2 years ago 

কি করবেন? কাদের উপর ভরসা করবেন?

সত্যি ভাইয়া কারো উপর ভরসা করতে নেই। আসলে বড় বড় নামিদামি শোরুম সবগুলো কিংবা কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস গুলো যদি আমাদের সাথে প্রতারণা করে তাহলে এই কষ্ট কাউকে বলে বোঝানো যায় না। সামান্য কয়েকটি টাকার জন্য মানুষকে কতটা ভোগান্তির মধ্যে ফেলে তারা। হয়তো একদিনেই আপনার কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করা যেত। কিন্তু তারা তাদের অকেজো কিংবা পুরনো পণ্যটি আপনাকে চালিয়ে দিয়েছিল বলেই হয়তো আপনাকে দুই দিন অফিস কামাই দিয়ে সেখানে যেতে হয়েছে। আসলে বাঙালি বলে কথা। এরা কখনোই শোধরাবেনা। কারণ এরা যদি শুধরে যায় তাহলে তো তারা বাঙালি বলে নিজের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে না। 😅😅

 2 years ago 

আমরা যত উন্নতি হচ্ছি, ভরসার জায়গা ততো বেশী হালকা হচ্ছে, এটাই নির্মম সত্য তবে মানতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।

 2 years ago 

সারাংশে কিন্তু উল্লেখ করাই আছে, পাইলেও পাইতে পারেন অমূল্য রতন। এতে বুড়ো হয়েও কোন লাভ নেই, এখনো সেই কথার রেস থেকে গেছে। যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত এই কথাই থেকে যাবে, পাইলেও পাইতে পারেন। অতএব চেষ্টা চালিয়ে যান, রতনের দেখা পাইলেও পাইতে পারেন। যাইহোক ভাইয়া, আপনার মত এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতা আমিও অর্জন করেছি। আর এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন যখন হই, তখন নিজেকে খুব বেশি অসহায় মনে হয়। মনে হয় এই ব্যবসায়িকদের হাতের পুতুল হয়ে গেছি আমরা। আমাদের টাকাও যায় আবার প্রচুর সময় নষ্ট হয়, সেই সাথে ভোগান্তি ফ্রি। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি, এই অসাধু ব্যবসায়িকদের মানসিকতার পরিবর্তন হোক, আর আপনার ও আমার মত সকলের যেন তিক্ত অভিজ্ঞতা বন্ধ হোক।

 2 years ago 

আসলেই ভাই সেদিন খুবই অসহায় মনে হয়েছিলো, অথচ আমাকে আগে বললেই আমি একটু বেশী দাম দিয়েই ভালোটা নিতে পারতাম, কি নির্মম মানসিকতা তাদের!

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

 2 years ago 

এখন তো আমি ছাই পাই না উড়ায়া দেখার জন্য😜😜।আপনার মাথায় অনেক বুদ্ধি। আচ্ছা আবোল তাবোল গল্পে কি আবোল তাবোল কমেন্ট করবো?হা হা😜।যাই হোক আমি ও বেশ কিছুদিন আগে মাল্টিপ্লানে গিয়েছিলাম,পিসি তে উইন্ডোজ সেট আপ দেওয়ার জন্য।যাই হোক আপনি তো বেশ খাতির করতে পারেন😂,পেটের ভিতর থেকে সব কথা নিয়া আসছেন😂😂।

 2 years ago 

আমাদের বাড়ীতে চলে আসুন লাড়কি দিয়ে রান্না হয় মেলা ছাই রয়েছে, চাইলে কিছু শরীরেও মাখতে পারবেন, হা হা হা। হুম একটু খাতির যত্ন না করলে কি ভিতরের খবর জানা যায়?

 2 years ago 

ছাইয়ের গাদায় যদি রতন খুঁজে নাও পাওয়া যায় তবুও খুঁজতে থাকতে হবে। যদি খোঁজা ছেড়ে দিতেন তাহলে কি দোকানের সেই একটু "ভালো কর্মচারী" টিকে পাওয়া যেতো।

আমাদের দিকের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে খারাপ দিক এইটাই। দু টাকা ঠগিয়ে নেবে কিন্তু অপরদিকের মানুষ টির কথা ভাববে না, যে কিনা আরো দুটো ভবিষ্যত খদ্দেরকে দোকানে আসতে বাধা দেবে।

 2 years ago 

হয়তো এই বিষয়গুলোতে আপনার জ্ঞান আছে, তাই আপনি সহজেই বুঝতে পেরেছেন যে সমস্যা টা ঠিক কোথায় আর কতটুকুতেই প্রতিকার হবে। তা স্বত্ত্বেও আপনাকে অনেক কথাই মেনে নিতে হয়েছে নিজের আর্জেন্সির জন্য। এরা কেন এভাবে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নেয় বুঝি না। আমরা হলে মনে হয় আরো বেশীই নিয়ে নিতো।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68152.98
ETH 3536.22
USDT 1.00
SBD 2.86