জাগ্রত থাকুক মানবতা || জীবনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি যথারীতি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। যেমনই থাকুক না কেন নিজেকে সর্বদা এ্যাকটিভ রাখার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার পাশে কিংবা হৃদয়ে থাকা মানুষগুলোও ভালো থাকবে। যদিও সবাই হৃদয়ের খবর রাখার চেষ্টা করেন না, বরং উপরের বিষয়টিই শুধু দেখার চেষ্টা করেন। এটাই বাস্তবতা এবং এটাই আমাদের মেনে নিতে হবে। মানুষ পাশে থেকেও আজ বহু দূরে, কারণ পাশে আছে ঠিকই কিন্তু তার মন বা ভাবনা চলে গেছে বহু দূরে। যার কারনে আজকাল পাশাপাশি থাকলেও যেমন বন্ধুত্ব তৈরী হয় না, ঠিক তেমনি এক ছাদের নিচে থেকেও সম্পর্ক ঠিক থাকে না। মন ও মানসিকতা ঠিক না থাকলে কাছে থেকেও যেমন মানুষ অনেক দূরে চলে যায়, আবার দূরে থেকেও মনে হয় পাশেই আছে।

আমরা পরিবর্তন হয়ে গেছি এটা সত্য, হয়তো মাঝে মাঝে সেটা বুঝতে পারি আবার মাঝে মাঝে সেটা বুঝেও অস্বীকার করি। কারন পাশে থাকা মানুষটির মনে কষ্ট দিতে চাই না কিংবা সেটা তাকে জানাতে চাই না। হয়না মাঝে মাঝে আমরা ভিন্ন ভাবে অনেক কিছু লুকানোর চেষ্টা করি। আমার মাঝে মাঝে কিছু বুঝতে পেরেও সেটাকে আড়ালে রাখি। অনেকটা দায় সারাভাবে আজকাল আমরা পাশে থাকছি কিংবা সম্পর্কগুলোকে টিকিয়ে রাখছি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমরা সত্যি অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গেছি। আমাদের কাজ কর্ম কিংবা ব্যবহারে সেটা বার বার প্রমানীত হচ্ছে। অসময়ে অসময়ে আমরা পাশে থাকা মানুষগুলোর সাথে বিদ্রোহ করি এবং নিজের পরিবর্তনের কথা জানান দেই।

province-3344511_1280.jpg

জীবনের গল্পগুলো সত্যি এমন, সময়ের সাথে সাথে আমরা যেমন পাল্টে যাচ্ছি ঠিক তেমনি পাল্টে যাচ্ছে আমাদের ভাবনাগুলোও। আমি যাকে আপন ভেবে কাছে টানার চেষ্টা করছি, সে হয়তো ভেতরে ভেতরে অন্য কাউকে কল্পনা করছে। এ এক নির্মম বাস্তবতা আমাদের দিন দিন গ্রাস করে ফেলছে, আর আমরা দিন দিন আলো ভেবে অন্ধকারের ভেতর ছুটে চলছি। বাস্তবতা ছেড়ে আমরা আজ ভার্চুয়ালকে বেশী প্রাধান্য দিচ্ছি। কিন্তু দিন শেষে নিজের নীড়ে ফিরে এসে দেখি সব শেষ হয়ে গেছে। যখন বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছি তখন খুব বেশী দেরী হয়ে গেছে, তাই চাইলেও আর সবটা ফিরে পাবো না কিংবা আগের অবস্থানে যেতে পারবো না। সময় যখন শেষ হয়ে আছে, সম্পর্কগুলো যখন নিঃশেষ হয়ে যায়, তখন শুধু বাকি থাকে আফসোস।

একটা ঘটনা বলে আজকে শেষ করছি জীবনের গল্প। সেদিন অটোতে যাওয়ার সময় চোখে পড়লে সামনে গ্লাসে একটা কাগজ আঠা দিয়ে সেটে দেয়া হয়েছে। সাদা কাগজ বুঝে বেশ আকর্ষণ অনুভব করলাম এবং পরবর্তীতে নামার সময় সেটাতে কি লেখা আছে সেটা দেখার চেষ্টা করি। সেটা পড়ে বুঝতে পারলাম, অটো ড্রাইভার কিছুটা প্রতিবন্ধি টাইপের ছিলো। সেটা লেখার সাথে সাথে আরো একটা কথা লিখেছেন তিনি, প্রতিবন্ধিদের জন্য ভাড়া ফ্রি। এটা সত্যি আমাকে বেশ অবাক করেছে। একজন অসুস্থ্য ব্যক্তি যেমন অন্য দশজন অসুস্থ্য ব্যক্তির যন্ত্রনা অনুভব করতে পারেন। না এটা ভুল বললাম, অসুস্থ্য ব্যক্তি মানেই অসুস্থ্য ব্যক্তির সমস্যা বুঝেন না। আপনি যদি কখনো হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যান তাহলে দেখবেন, তুলনামুলক কম অসুস্থ্য ব্যক্তিরা নানাভাবে নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে সবার আগে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু তার চেয়ে বেশী অসুস্থ্য ব্যক্তি যে সিরিয়াল ধরে বসে আসেন সেটার তোয়াক্কা মোটেও করেন না বা করার চেষ্টা করেন না। নিজে অল্প অসুস্থ্য হওয়ার পরও তার চেয়ে বেশী অসুস্থ্য ব্যক্তির সমস্যা অনুধাবন করতে পারছেন না, এটা সত্যি মানুষ হিসেবে খুবই দুঃখজনক। বাকি মানবতার কথা না হয় পড়ে বললাম। এই রকম হাজারও উদাহরণ দেয়া সম্ভব যেখানে আমরা সমজাতীয় সমস্যায় সমজাতীয় মানুষগুলোকে মোটেও সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করি না। কিন্তু একজন প্রতিবন্ধি যার তেমন ইনকামের সুযোগ নেই কিন্তু তবুও নিজের সক্ষমতার কথা চিন্তা না করে বেশ উদার মনের পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি সত্যি আমাকে দারুণভাবে ন্যাড়া দেয় এবং নিজের দিকে কিংবা নিজের সমজাতীয় মানুষগুলোর দিকে তাকাতে বাধ্য করে। কি করার কথা ছিলো আমাদের আর কি করছি আমরা নিজেদের সুবিধার জন্য?

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

সত্যিই ভাই জীবনের গল্প গুলো আসলেই অন্যরকম। আমরা ও আমাদের ভাবনাগুলো পরিবর্তন হচ্ছে। বিভিন্ন রকমের বাস্তবতা আমাদের গ্রাস করছে আর এই বাস্তবতার ভিতরে ঢুকে আমরা অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছি। আসলে সব কিছু বোঝার জন্য চাই মন। যে মনটি ছিল অটো ড্রাইভার প্রতিবন্ধী ভাইটার। আর হাসপাতালে গেলে এরকম অনেক প্রমাণ মিলে যা দেখলে আসলেই কষ্ট লাগে। বেশ দারুণ লিখেছেন ভাই অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 7 months ago 

কথাগুলো একদম সত্য, প্রতিটা কথায় কিন্তু বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের লেখাগুলো পড়ে। আসলে আমরা একই ছাদের নিচে বসবাস করলেও অনেক সময় নিজেদের সম্পর্ক গুলোকে নামমাত্র ভাবে টিকিয়ে রাখি। ভালোবাসা না থাকলে কখনো কোনো সম্পর্ক ভালো থাকে না,এটা বাস্তব কথা। আর একজন অসুস্থ ব্যক্তি অন্যজনের কষ্ট বুঝবে এটাও কিন্তু সঠিক নয়। কারণটা তো আপনি একদম বিস্তারিতভাবেই বলেছেন, খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।

 7 months ago 

জীবনের বাস্তবতা নিয়ে অনেক সুন্দর কিছু লিখলেন। আপনার লেখা গুলো সব সময় বাস্তবতা নিয়ে লিখে থাকেন। একটা বিষয় সেটা হচ্ছে আসলে অনেক সময় এক ছাদের নিচে থেকেও সম্পর্ক ঠিক থাকে না। আবার অনেক সময় অনেক দূরে থেকেও মনে হয় অনেক কাছে আছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে হাসপাতালে যারা অনেক বেশি অসুস্থ রোগী তারাই বসে থাকেন। কিন্তু যারা একটু কম অসুস্থ তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন সেটা আপনি যথার্থ বললেন। এই জন্যই আপনার লেখা গুলো আমার কাছে সব সময় ভালো লাগে।

 7 months ago 

বাস্তব কথা গুলো খুব সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপন করতে পারেন।তাইতো এতো ভালো লাগে। আমরা কজনা ই বা পারি এই বাস্তব কথা গুলো সুন্দর করে তুলে ধরতে।আপনি পারেন তাইতো জীবনের গল্পগুলো আমাদের মাঝে জেগে আছে। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 7 months ago 

ভাই বর্তমান যুগে হৃদয়ের খবর রাখার মানুষ খুব কমই আছে। কতো কতো সম্পর্ক টিকে রয়েছে সমাজের মানুষদের ভয়ে। কিছু কিছু মানুষ ভালো না থেকেও, প্রতিনিয়ত ভালো থাকার অভিনয় করে যাচ্ছে। জীবনটা আসলেই অদ্ভুত। এই ছোট্ট জীবনে মানুষের সমস্যার কোনো শেষ নেই। আবার গভীরভাবে ভাবতে গেলে দেখা যায়,একেবারে নিজের মানুষ বলতে পৃথিবীতে কেউ নেই। কারণ স্বার্থের উপর আঘাত পরলেই আসল রূপ বের হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু ঘটনা দেখলে মনের মধ্যে দাগ কেটে যায়। যেমন প্রতিবন্ধী অটো ড্রাইভার যে কাজটা করছে, যদি সমাজের সামর্থ্যবান মানুষেরা এর ১০ ভাগের ১ ভাগ ও করতো,তাহলে অনেক মানুষের জীবন একেবারে পাল্টে যেতো। আসলে উপকার করার মাধ্যমে মনের মধ্যে অন্য রকম একটা শান্তি পাওয়া যায়। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57344.91
ETH 3100.39
USDT 1.00
SBD 2.42