প্রকৃতির সজীব অনুভূতি || Original Photography by @hafizullah
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। প্রকৃতির সাথে পরিবেশের সুন্দর একটা সুযোগ নিয়ে নিজেকে আরো বেশী চঞ্চল রাখার চেষ্টা করছেন। যদিও আমরা যারা শহরের মাঝে বসবাস করি তাদের সেই সুযোগটা খুবই কম থাকে। আমরা চাইলেও সেই সুযোগ কিংবা সংযোগ তৈরী করতে পারি না। কারন শহরের জীবনে হয়তো নানা ধরনের বিলাসিতার সুযোগ থাকে কিন্তু সেগুলোর মাধ্যমে নিজেকে আরো বেশী সতেজ ও সজীব রাখা সম্ভব হয় না। ঐ যে কথায় বলে না, যান্ত্রিক জিনিষগুলোর সহজ অবস্থান আমাদের জীবনের গতিকে আরো বেশী যান্ত্রিক করে দিচ্ছে। এটাই প্রকৃত বাস্তবতা, দিন দিন আমরা যেমন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি ঠিক তেমনি যন্ত্রগুলোর কাছে বন্দিও হয়ে যাচ্ছি।
কিছু বিষয় আমরা যেমন বুঝেও কিছু করতে পারি না, ঠিক তেমনি যান্ত্রিক জীবনের দুঃখ কিংবা দুর্দশাগুলো বুঝেও আমরা সেখান হতে বেরিয়ে আসতে পারি না। আর না পারার কারন হলো নিজেদের নাজুক অবস্থান এবং অভ্যেস। দেখুন শহরের একজন মানুষ চাইলেই গ্রামীন পরিবেশে গিয়ে দুই মাইল হাঁটতে পারবেন না, কারন এই অভ্যেসটা তার মাঝে নেই। শহরের বিলাসী জীবন তার মাঝ হতে সেটাকে কেড়ে নিয়েছে, তাই এখন সে সেই বিলাসী জীবনের বদ অভেস্যে অভ্যস্থ, অনেকটাই ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় বন্দি। এর জন্য দায়ী যতটা আমরা ঠিক ততটা আমাদের মানসিকতা, তাই চাইলেও আমরা এর থেকে খুব সহজে বেরিয়ে আসতো পারবো না।
তবে একটা বিষয় বেশ ভালোভাবেই আমরা করতে সক্ষম হয়েছি, সেটা হলো দুধের স্বাদ ঘোলের মাধ্যমে মেটানো। শহরের বড় বড় আবাসন কিংবা শপিং মলগুলোতে গেলেই সেটা বেশ ভালোভাবে দেখতে পাবেন। সেটা হলো সবুজ প্রকৃতির পরিবর্তে কৃত্রিম গাছপালা। বাড়ি কিংবা শপিং সেন্টার এর চারপাশগুলো কি সুন্দরভাবে সাজানো, আপনি বুঝতেই পারবেন না এগুলো সবটাই মুখোশে ঢাকা এবং কৃত্রিমভাবে গড়া। আমি নিজেও প্রথমবার যখন বসুন্ধরা শপিং সেন্টার এ গিয়েছিলাম, বিশাল সাইজের গাছগুলো দেখে খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তারপর সকলের মতো আমিও সেলফি তুলতে গিয়ে হতাশ হয়ে যাই। কারন এগুলো আসল নয় বরং কৃত্রিমভাবে তৈরী গাছ।
ঐ যে বললাম ভিন্ন মানসিকতা, এটাই হলো সেটার যথার্থ উদাহরণ। আমাদের মানসিকতার যদি এই রকম পরিবর্তন না হতো তাহলে হয়তো আমরা ইউনিক কিছু চিন্তা করতাম, সবুজ প্রকৃতির সুন্দর উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য আরো বেশী সচেষ্ট হতাম। এই রকমভাবে কৃত্রিম কিছু উপস্থাপন করে, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে কৃত্রিমত্তার উপস্থিতি না বাড়িয়ে বরং সবুজ প্রকৃতির সজীবতা ধরে রাখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু কি জানেন তো, অবুঝ মানুষকে আপনি চাইলেই কিছু জিনিষ ঠিক বুঝাতে পারবেন কিন্তু বুঝের মানুষ যখন অবুঝ সাজে, তখন আপনি শত চেষ্টা করলেও তাকে কিছু বুঝাতে পারবেন না, এটাই নির্মম ও নিষ্ঠুর বাস্তবতা।
শীতের এই সময়ে গ্রামীন পরিবেশের মানুষ যতটা সুন্দরভাবে প্রকৃতি উপভোগ করে, যতটা কাছ হতে প্রকৃতির সতেজতা মুগ্ধ হয়ে দেখে, তার কোনটাই দেখার বা উপভোগ করার সুযোগ থাকে না আমাদের। তবে আমি শহরের মাঝে থাকলেও বরাবরের মতো ছোটবেলা হতেই প্রকৃতির প্রতি একটা আকর্ষণ অনুভব করতাম, প্রকৃতির সতেজতার মাঝে নিজেকে বার বার খুঁজে পেতাম। তাই যখনই সুযোগ পেতাম বা সুযোগ আসতে সেটার পূর্ণ ব্যবহার করার জন্য প্রকৃতির মাঝে ছুটে যেতাম। এখনো আমি চেষ্টা করি প্রকৃতির মাঝে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার এবং প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিজেকে আরো বেশী সতেজ ও চঞ্চল রাখার।
কথায় বলে যে যার মূল্য বুঝে তাকে বেশী মূল্যায়ন করার চেষ্টা করে। ঠিক তেমনি যে যার গুরুত্ব বুঝে সেটার প্রতি তার আকর্ষণও বেশী থাকে। প্রকৃতির বিষয়টিও আমাদের ক্ষেত্রে তেমন। শহরের মানুষগুলো যেমন কৃত্রিমত্তার মাঝে বেশী সৌন্দর্য খুঁজে পায় এবং সেটাকে নিয়েই খুশি থাকতে চায়, তাইতো তারা প্রকৃতির নির্মল সতেজতা অনুভব করে না এবং প্রকৃতির মাঝে ছুটে যাওয়ার সুযোগ তৈরী করতে পারে না। বাস্তবতা সবাইকে যার যার অবস্থানে ভিন্নভাবে আটকে রাখছে এবং সেটায় তাকে অভ্যস্থ করে দিচ্ছে।
তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ ধামরাই, ঢাকা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সত্যিকারের গ্রামের প্রকৃতি আর কৃত্রিম প্রকৃতি কি এক হয় কখনও? যদিও দুধের স্বাদ ঘোলে মিটে। তাতে কি শহর তো শহর। আর গ্রাম তো গ্রামই। এমন শীতে গ্রামের নির্মল আবহাওয়া দেখে আমাদের মনের মধ্যে যেমন একটি আবেগ কাজ করে, সেই আবেগ তো আর অন্য কোথাও পাওয়ার কথা নয়। দারুন লিখেছেন ভাইয়া । প্রকৃতির সজীব অনুভূতি নিয়ে আজকে আপনার লেখা গুলো পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
সেটা অবশ্য ঠিক, সব কিছুর স্বাদ আবার কৃত্রিমত্তায় পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শহরের মাঝে থাকলে আর যাই হোক নিজেকে সতেজ করা কোনোভাবেই সম্ভব হয় না।আর কৃত্রিম গাছগুলো যতোই সুন্দর হোক না কেনো,আসল গাছের যে সৌন্দর্য তাকে কখনোই হার মানাতে পারেনা।
একদমই যথার্থ বলেছেন, কৃত্রিম দেখতে সুন্দর লাগে হয়তো কিন্তু হৃদয়ে সতেজ অনুভূতি তৈরী করতে পারে না। অনেক ধন্যবাদ
আমিও এখন গ্রামের সবুজ প্রকৃতির মাঝে।অনেক ভালো লাগছে এমন প্রকৃতির মাঝে থাকতে পেরে।এটা ঠিক দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না।আর্টিফিশিয়াল গাছ কখনও প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারেনা।প্রকৃতির সৌন্দর্যের সজীবতা সবুজের মাঝেই পাওয়া যায়। ফটোগ্রাফি গুলো দারুন হয়েছে ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।
আজকাল সবকিছু ইন্টারনেট ভিত্তিক হওয়ায় সবকিছু আসলেই মোবাইলের মধ্যে দেখা যায়। মানুষ ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের বিনোদন নিতে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এখন। তাই বাইরে তেমন একটা ঘোরাফেরা করেন না এখন অনেক মানুষ। যদিও আমার কাছে সব সময় প্রকৃতির জন্য একটা টান থাকে। নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য মনকে সুস্থ রাখার জন্য প্রকৃতির মাঝে ঘোরাঘুরি করা দরকার সবার জন্য। অনেক ধন্যবাদ প্রাকৃতিক ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য।
ভাই শহরের বেশিরভাগ মানুষ হচ্ছে আরামপ্রিয়। কষ্ট করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূরে না গিয়ে,শহরের মধ্যেই কৃত্রিম গাছপালার সৌন্দর্য উপভোগ করে। এককথায় দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো আর কি। তবে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে আমারও খুব ভালো লাগে। তাই মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলে প্রকৃতির একেবারে কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করি। শীতকালে প্রকৃতির সৌন্দর্য বেশ উপভোগ করা যায়। বিশেষ করে শীতের সকালে খুব ভালো লাগে প্রকৃতির মাঝে বিচরণ করতে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।