মানবিকতার অন্ধকারাচ্ছন্ন দৃশ্য || জীবনের গল্প
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। তবে ভালো থাকতে পারলেও মানসিক দিক হতে কতটা সুস্থ্য আছেন সেটা হয়তো বলতে পারছি না। কারন উপরের দিকটা হয়তো সবাই দেখে বা দেখার সুযোগ পায় কিন্তু ভেতরের দিকটা কেউ দেখতে পায় না বা দেখার সুযোগ পায় না। তাই উপরের অভিনয়টা হয়তো সবাই বুঝতে কিংবা সন্দেহ করতে পারে কিন্তু ভেতরের বিষয়টির ক্ষেত্রে সেই সুযোগটিও নেই। তবে হ্যা, মাঝে মাঝে কারো কারো ব্যবহারে আমরা অনুমান করতে পারি, তার বা তাদের মানসিকতা কতটা ভালো কিংবা মন্দ। আর তাই দেখেই আমরা অনেক সময় ভালো-মন্দ বিষয়টি বিবেচনা করে থাকি।
এইতো সেদিন আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে কিছু মানুষ দেখিয়ে দিলেন তাদের মানসিকতা কতটা ভালো কিংবা কতটা খারাপ। একটা বিষয় তো আমি নিজেই টিভি সাক্ষাতকারের মাধ্যমে দেখেছি এবং সেই মানুষটিকে আন্তরিকভাবে মানে হৃদয় হতে ধন্যবাদ জানিয়েছি। কারন মানবতা সব সময় সকল ক্ষেত্রে জাগ্রত থাকে না বরং ভিন্ন মানসিকতায় কেউ কেউ হয়তো সুবিধা নেয়ায় ব্যস্ত থাকে। বেইলি রোডের সেই বিল্ডিংটিতে আগুন লাগার পর অনেকেই যেমন ছুটে গেছেন মানবিক সহযোগিতা করার মানসিকতা নিয়ে ঠিক তেমনি আমার অনেকেই ছুটে গেছেন ভিন্ন মানসিকতায় কিছু বাড়তি ইনকাম করার সুযোগ গ্রহণ করার জন্য। ধন্যবাদ সেই সকল মানুষদের যারা অন্যের বিপদে পিছনে থাকতে পারেন না, ধিক্কার সেই সকল মানুষদের যারা বিপদের মাঝেও ভিন্ন মানসিকতার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
আমরা নানা সিনেমায় কিংবা টিভি সিরিয়ালে যেমন দেখতে পাই, ঠিক তেমনি নানা ধরনের সাহিত্য কিংবা গল্পের বাইয়ের মাধ্যমেও জানতে পারি, যে কোন সমস্যা কিংবা বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সবাই চেষ্টা করেন শিশুদের আগে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কিংবা তাদের বিষয়টি আগে বিবেচনা করার। কিন্তু বেইলি রোডের আগুন আমাদের আবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আমরা বড় বড় ডিগ্রী ঠিকই অর্জন করছি কিন্তু বাস্তবে কিছুই শিখতে পারছি না বা নিজের চরিত্রের উন্নতি ঘটাতে পারছি না। সত্যি বলতে বিষয়টি নিয়ে আমাকে বেশ আঘাত করেছে। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিবিন্ন ব্যক্তি কর্তৃক যতগুলো ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে তার সবগুলো প্রায় আমি দেখার চেষ্টা করেছি।
দৃশ্যগুলো দেখে বার বার হতবাক হয়েছি। আমরা কতটা নির্মম এবং কতটা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছি বার বার। শিশু এবং নারীদের আড়ালে রেখে নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করছি, কারন আমাদের বিবেক আমাদের হৃদয়কে জাগ্রত করছে না বরং আমাদের স্বার্থ আমাদের বিবেককে অন্ধকারে ঢেকে রাখছে। একদম স্পষ্টভাবে আমি দেখেছি, আগুন যখন শুধুমাত্র নিচতলায় ছিলো তখন দুই তলার বেলকনি দিয়ে কিছু মানুষ বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করছেন। ভেতর হতে একজন মহিলা তার শিশু সন্তানকে সেখান দিয়ে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কিন্তু পাশে দিয়ে বেরিয়ে আসা মানুষগুলো ভুলেও সেই শিশুকে সহযোগিতা করছেন না, কি নি দারুণ দৃশ্য!
ঠিক আছে মানবতার বিষয়টি না হলে বাদই দিলাম, আমরা নামে মাত্র শিক্ষিত যার কারনে আমাদের হৃদয়টা আলোকিত নয়। আমরা বাঁচার তাগিতে মানবতার বিষয়টিকে ভুলে গেছি। কিন্তু দায়িত্ববোধ বলেও তো একটা কথা আছে। চলার পথে কিংবা যে কোন সমস্যায় দায়িত্বশীল পরিচয় দেয়াটাও তো বুদ্ধিমানের কাজ নাকি সেটাও আমাদের অজানা? নাকি সেই বিষয়টিও আমাদের মাঝে নেই, নাকি শিশুদের প্রতি আমাদের অমানবিক মানসিকতার সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত এটা? আমি জানি না, এখানে কোন সঠিকভাবে প্রযোজ্য কিংবা কোন ভাষা এখানে প্রকাশ করা উচিত! শেষ কথায় শুধু এতটুকু বলবো, দায়িত্ববোধ হতে মানবিকতা কিংবা বিবেক তাড়িত হয়ে মানবতা, যেটাই হোক জাগ্রত হোক আমাদের হৃদয়ে। আলোর মুখ দেখুক ফের মানবতা, সুবাসিত হোক ফের ফুলের স্নিগ্ধতা। তবেই সার্থক এবং সফল হবে মানব জীবন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বিশ্বাস করবেন ভাই সেদিনেই সেই দৃশ্য গুলো আমি নিজেও ভিডিও ফুটেজে দেখেছি। কিন্তু নির্মমতার এই ইতিহাস সহ্য করতে না পেরে নিজেকে নিজেই ধিক্কার দিয়েছি। ভেবেছি তাহলে শিক্ষা কে কেন জাতির মেরুদন্ড বলা হয়। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে সত্য কিছু বিষয় আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরেছেন ভাইয়া। সকলের মাঝে সত্যিকারের মানবিকতা জাগ্রত হোক এমনটাই কামনা করি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
জ্বী ভাইয়া চলার পথে দায়িত্ববোধ ও হতে হবে আমাদের। নিজেও বাঁচতে হবে অন্য কেউ বাঁচাতে সাহায্য করতে হবে, তবে প্রকৃত মানুষ হতে পারব আমরা। কিন্তু আস্তে আস্তে আমাদের ভিতর থেকে মনুষত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে, আমরা ভিডিও করা নিয়ে ব্যস্ত ও ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত। প্রথমে যখন অল্প আগুন ধরেছিল তখন মানুষ ভিডিও করছিল। প্রতিটা মানুষ যদি একটু পানি দিয়ে নিভিয়ে দিত তাহলে কিন্তু সবকিছুই ঠিক হয়ে যেত। গ্রাম অঞ্চলে হলে প্রতিটা মানুষ মানুষের বিপদে আসে।
আসলে ভাই কি বলবো আমি বলার মত ভাষা খুজে পাচ্ছি না। আচ্ছা যখন একজন মানুষ নিরীহ শিশুর দিকে তাকায় তখন তো এমনি তার মনে মায়া সৃষ্টি হওয়ার কথা। ভাই প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝে থেকে যেন মানবিকতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
আসলে ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন এই গল্পটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম, যেন বাস্তবতার সাথে মিলে গেছে। আমাদের মধ্যে থেকে মানবিকতা হারিয়ে গেছে আসলে আমরা যখন বিপদ দেখলে কিছু লোক এগিয়ে আসি আবার কিছু লোক থাকে এই বিপদের সুযোগে বাড়তি ইনকাম করার এবং বাড়তি কিছু আসার। আসলে এই বাড়তি কিছু আসার লোক গুলোর কারণেই যেন আমাদের বিপদে আরো বেশি হয়ে যায়। আমাদের সমাজে মানবিকতা বলতে আর কিছু নেই, তেমনি আমাদের সমাজে শিশুদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল নেই। কেন জানি মানব অধিকার আজ ধীরে ধীরে অন্ধকার যুগে পার হচ্ছে। এটা আমাদের মন মানসিকতা এবং আমাদের বাড়তি ইনকাম ও অর্থের কারণেই হচ্ছে। কারণ আমরা সকলেই যেন নিচেরটা ভালো বুঝব।কিভাবে নিজেকে অর্থ ইনকাম করবো নিজেকে উপরে তুলবো এই নেশায় থাকি। কিন্তু মানব সেবায় আমরা নিজেকে অনেক দূরে রাখি, কিন্তু যারা এই মানবসেবাই দূরে না রেখে মানব সেবা নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারাই শ্রেষ্ঠ সন্তান বলে আমি মনে করি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শারীরিক ও মানসিক দুভাবেই বলতে গেলে অসুস্থ। শরীর ভালো তো মন ভালো না, মন ভালো তো শরীর ভালো না। এই হলো অবস্থা। তবুও অভিনয় করে যেতে হবে। আসলেই আমরা নামে মাত্র শিক্ষিত! বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করে নিজেকে অনেক শিক্ষিত বলে ফেলি অথচ মানবিকতার বালাই নেই আমাদের মাঝে। বেইলি রোডের সেই দৃশ্যগুলো আমিও দেখছিলাম কিছু ভিডিও! মানুষগুলো চাইলেই শিশুটাকে বের করতে পারতো। সবাই ব্যস্ত ছিল নিজেকে নিয়ে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আমাদের দেশে অসংখ্য শিক্ষিত মানুষ রয়েছে, কিন্তু সুশিক্ষিত মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সুশিক্ষিত মানুষের গুণ অন্য রকম। তারা অবশ্যই দায়িত্বশীল এবং তাদের মধ্যে মানবিকতা রয়েছে। যাইহোক আমাদের মধ্য থেকে মানবিকতা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। বলতে গেলে বিবেকহীন পশুর মতো হয়ে গিয়েছি আমরা। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও গুলো দেখলে কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। আর সুযোগ সন্ধানী মানুষদের নিয়ে কিছুই বলার নেই। তারা শুধু এমন সুযোগের অপেক্ষায় থাকে সবসময়। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বেশ দারুণ ও শিক্ষামূলক একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো।
শিক্ষিত মানুষ আমাদের দেশে প্রচুর রয়েছে। তবে শিক্ষিত হলে যে মানুষের মধ্যে মানবতা কাজ করে সবার তা কিন্তু নয়।আসলে মানুষের ভেতর থেকে মানবিকতা দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। সেদিন ফেসবুকে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওগুলো দেখে এতটা খারাপ লেগেছে যেন কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে।আসলে যে, যেখানে অবস্থান করে সেই শুধুমাত্র বুঝতে পারে কষ্টটা কেমন। এখনকার মানুষের অন্যের কষ্টের অনুভূতি অনুভব বোঝা তো দূরের কথা বিপদ দেখলে আরো দূরে চলে যায়।