অনুভূতির গল্প- হৃদয়ের টানে কোলকাতা (পর্ব-০৮)
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ্য আছেন। অনুভূতির গল্প-হৃদয়ের টানে কোলকাতা বেশ কয়েকটি পর্ব ইতিমধ্যে শেয়ার করেছি, এখনো বিশাল সংখ্যার ফটোগ্রাফি রয়ে গেছে কিন্তু। কারন হৃদয়ের তৃষ্ণা খুব সহজে মেটে না, তাই আমরা যতটা সুযাগ ও সময় পেয়েছি নানা স্পট যেমন ঘুরে ঘুরে দেখেছি ঠিক তেমনি নানা কিছুর স্বাদ এবং ফটোগ্রাফি করেছি। যদিও আমরা অতোটা ভালো ফটোগ্রাফার না কিন্তু ঐ যে এ যুগে যার হাতে স্মার্টফোন থাকে সেই অলিখিতভাবে ফটোগ্রাফার হয়ে যায়, হা হা হা। আমরা সেই সূত্রে ফটোগ্রাফার আরকি হি হি হি।
গত পর্বে যেখানে শেষ করেছিলাম, বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে আমরা হাঁটতেছিলাম, চারপাশের দৃশ্যগুলো দেখছি আর ফটোগ্রাফি করছি। কিন্তু কিংপ্রস ভাই কি বলছেন বা কি দেখাচ্ছেন সেদিন আমার মোটেও ভ্রুক্ষেপ ছিলো না, আসলে আমি এই রকমই যা করি খুব বেশী মনোযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি। যার কারনে যে বা যারা আমার সাথে থাকেন তারা মাঝে মাঝে বেশ হতাশ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন, হা হা হা বলেন তো এটাই বা কম কিসে, কয়জন পারে এভাবে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে হা হা হা। না মজা করে বললেও এটাই সত্য, আমার একাগ্রতা একটু ভিন্ন ধরনের, না সেটা অন্য লেভেলে পড়ে না।
আমরা আরো কিছুটা সময় হাঁটলাম এবং তারপর চাররাস্তার মোড় পেলাম একটা, সেখানে কিছুটা সময় দাঁড়ানোর পরই বাস চলে আসলো। একটা বিষয় বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে, যাত্রী উঠার সাথে সাথে বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে, এক সেকেন্ডের জন্যও তারা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকছে না। আবার যাত্রী না থাকলেও তারা বাস থামাচ্ছে না যদিনা কোন যাত্রী সেখানে নামছেন। দেখুন জ্যাম না লাগার এটা অন্যতম একটা বিশেষ কারন। আমাদের দেশের সড়কগুলোর কথা একটু চিন্তা করুন, এবং বাসস্ট্যান্ডগুলো একটু কল্পনা করুন, ঘন্টার পর ঘন্টা বাস দাঁড়িয়ে থাকে কোন কারণ ছাড়াই, যাত্রী থাকুক বা না থাকুক সড়ক বন্ধ করে, অনাকাংখিত জ্যাম লাগিয়ে বারোটা বাজানোই যেন তাদের মূল দায়িত্ব।
আমরা বাসে উঠার সাথে সাথে বাস ছেড়ে দিলো। বেশ খুশি হলাম মনে মনে ভাবলাম এইবার একটু শান্তি পাবো, বাস হতে নেমেই খাবার খাবো তারপর আরো কিছু সুন্দর মুহুর্ত উপভোগ করবো। কিন্তু হায়, কি ভাবলাম আর কি হলো? বাস খুব দ্রুত কাংখিত স্থানে চলে আসলো। আমরা দ্রুত নেমে গেলাম, কারন পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে যে বাসগুলো খুব বেশী সময় এখানে থামবে না। আরেকটা বিষয় আমরা বাসে উঠে যথারীতি সীট পেলাম যদিও আমাদের দেশে এটা অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার আজকাল। যেভাবে যাত্রী উঠায়, পারলে তারা বাসের ছাদেও যাত্রী উঠাতো। কিছু সময় পরই হেলপার আসলো এবং ভাড়া নিয়ে টিকেট দিয়ে দিলো। টিকেটগুলো দেখেতো আমি বেশ অবাক, এতো দারুণ বুদ্ধি। টিকেট দেয়া হলো আবার সুন্দরভাবে খরচও বাঁচানো হলো। খুব সুন্দর আইডিয়া, এক ঢিলে দুই পাখি শিকার।
বাস হতে যেখানে নামলাম সেই জায়গাটাও দারুণ সুন্দর, সেখানে আমরা প্রচুর মানুষ দেখলাম। তাই ভাবলাম এটাই বুঝি আমাদের কাংখিত স্থান। দ্রুত মোবাইল ফোন বের করে ক্যামেরা অন করলাম ফটোগ্রাফির জন্য প্রস্তুতি নিলাম। শুরুতেই অবশ্যই টিকেটগুলোর ফটো তুলেছি আপনাদের দেখানোর জন্য। আমরা যেখানে নামলাম তার কাছেই একটা সুন্দর চার্চ ছিলো। পরে বুঝলাম সবাই এখানে এটা দেখার জন্যই আসছেন। আমরা কিছুটা সময় সেখানে দাঁড়ালাম তারপর চারপাশের দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় বন্দি করলাম, চার্চটার ভেতরে প্রবেশ করলাম। ভেতরে মানে টিকেট ছাড়া ফ্রিতে যতটা ভিতরে যাওয়া যায় ঠিক ততোটা। কারন টিকেটের বেশ দাম ছিলো আর এটা দেখার অতো বেশী সময়ও আমাদের হাতে ছিলো না। তাই কিংপ্রস ভাই বললেন পরে সময় হলে আমরা এর ভিতরে প্রবেশ করবো। তাই বাহির হতে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে আমরা ফিরে আসলাম।
এরপর সুন্দর পরিবেশে আবার হাঁটা শুরু করলাম। সত্যি সেই পরিবেশটা দারুণ মুগ্ধকর এবং সজীব ছিলো। বেশী ভালো লেগেছে আমার কাছে সড়কটির অবস্থান, সড়কেই দুই পাশে সুন্দর হাঁটার জন্য ফুটপাত এবং সুন্দর সবুজ প্রকৃতি। যতটা সময় আমি সেই সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটেছি শুধুই ফটোগ্রাফি করেছি। আরিফ ভাইতো বলে ফেললেন হাফিজ ভাই সবকিছু মোবাইলে করে নিয়ে যাবে আজ, হা হা হা। ঠিক সেই সময়ে সেখান দিয়ে এক ভিআইপি যাচ্ছিলেন, অল্প সময়ের জন্য সড়কটি বন্ধ করা হলো এবং তারপর দ্রুত আবার খোলে দেয়া হলো। চিন্তায় পড়ে গেলাম আমাদের দেশে হলে নির্ঘাত আধঘন্টা হতে একঘন্টা এখানেই বসে থাকতো হতো নিরাপত্তার নির্মম অজুহাতে!
তারিখঃ মার্চ ২৬, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ কোলকাতা শহরের বিভিন্ন স্পট।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাংলাদেশের বাস সার্ভিস আর কলকাতার বাস সার্ভিস একেবারেই আলাদা। বাংলাদেশের বাস সার্ভিস কখনোই ভালো হবে না। আর জ্যামের কথা নাইবা বললাম। যাইহোক ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
সম্পূর্ণ আলাদা আপু, সত্যি বলতে আইন মানার প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল আর আমরা ভাঙ্গার ক্ষেত্রে হি হি হি।
ভাইয়া আমার তো মনে হয় কলকাতা ভ্রমন নিয়ে যে কয়েক পর্ব গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাতে করে সেই পোস্ট গুলো ভালো করে দেখলে আর কলকাতা শহরে যাওয়ার দরকার হবে না। হি হি হি। বাপরে বাপ বাংলাদেশের জ্যাম আর বলিয়েন না। একবার বাসে উঠে বসলে দেড় দুই ঘন্টার কথা মাথায় রাখা দরকার। ততক্ষনে ২০-৩০ টা কমেন্টও করা হয়ে যেতে পারে। আর কলিকাতার সাথে বাংলাদেশের বাসের তুলনা করার দুঃসাহস তো আমার নেই।
হুম, তাহলে তো আপনাদের আর পাসপোর্ট করা লাগবে না, বাকি পর্বগুলো পড়লেই কোলকাতা ভ্রমন সম্পন্ন হয়ে যাবে।
সেটাও কিন্তু মন্দ হয় না ভাইয়া। হি হি হি
বাংলাদেশের জ্যাম বিশেষ করে ঢাকায় জ্যামের যা অবস্থা সেটা আর বলে লাভ নেই। কোলকাতা সহ ইন্ডিয়ার বিভিন্ন স্টেট এ বাস চলাচল ব্যবস্থা খুব ভালো। কোলকাতার রাস্তায় সবচেয়ে উপভোগ্য হচ্ছে ট্রাম। আমাদের দেশে ভি আই পি যাওয়ার সময় দু একজন এম্বুলেন্সের মধ্যেই মুমূর্ষ হয়ে যায়। যাই হোক ভালো লেগেছে আপনার আজকের পোস্ট পড়ে। ছবিগুলো কিন্তু খুব ভালো হয়েছে ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
হুম জ্যাম বলে কথা, জেলীর চেয়েও বেশী দামী হা হা হা। আমরা পরিস্থিতির স্বীকার বেশী কিছু বলা যাবে না।
যাক আপনারা বাসে সিট পেয়েছিলেন তাহলে,
বাংলাদেশে তো যাত্রীদের ছাদে উঠতে পারলেই ভালো হয় চালকদের।অনেক সুন্দর ভিউ ছিল চার্চ এর।আপনাদের হাতে বেশি সময় না থাকায় টিকিট না কেটে যতটা দেখা গিয়েছিল জায়গাটির ততটাই দেখেছিলেন।নিরিবিলি পরিবেশ ছিল তাই,ফটোগ্রাফি গুলোও চমৎকার লাগছে।হৃদয়ের টানে কোলকাতা পর্ব-৮ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হুম, ছোট বেলায় দেখতাম তো যাত্রীরা বাসের ছাদে উঠতো। যদিও শেষ র্পর্যন্ত চার্চটির ভেতরে প্রবেশ করা হয় নাই।
আসলে ভাইয়া যাত্রী উঠার সাথে সাথে বাসগুলো ছেড়ে যাওয়ার কারণে যেমন জ্যাম লাগছে না। ঠিক তেমনি তাদের সময়ও বেঁচে যাচ্ছে। আর এমনটাই সর্বক্ষেত্রেই হওয়া উচিত। যাহোক ভাইয়া,হৃদয়ের টানে কোলকাতা যাওয়ার অষ্টম পর্বটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ভাইয়া পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।