"একটি ব্যস্ততম দিনের গল্প"

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

নমস্কার


কেমন আছেন বন্ধুরা? গরমে ভালো থাকাটা খুবই কঠিন, তারপরও আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মাঝে গরমে বেশ কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।প্রতিনিয়ত নিউজে সতর্কতা জারি করছে, বেলা 11 টার পর থেকে বিকেল 5 টা অবধি বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার জন্য।তবুও প্রয়োজনে তো ছুটতে হবেই রোদ্রের মধ্যে।তাই আমিও বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়লাম কলেজের উদ্দেশ্যে।তো কি উদ্দেশ্যে অসুস্থ শরীর নিয়েও বের হয়ে পড়লাম সেটাই তুলে ধরবো আপনাদের মাঝে।তো চলুন শুরু করা যাক---

IMG_20240501_092354.jpg

একটি ব্যস্ততম দিনের গল্প:

প্রতিনিয়ত আমাদের কলেজে এখন নানান রকম কাজ এসে পড়েছে।তার জন্য অবশ্য একটি নির্দিষ্ট কারনও রয়েছে।আসলে আমাদের বর্ধমান ইউনিভার্সিটির কোনো নিয়ম-ই ঠিক নেই।আমি তাদের দোষারোপ কিংবা নাম খারাপ করার কোনো চেষ্টাই করছি না।কারন এই বর্ধমান ইউনিভার্সিটির আন্ডারে আমাদের কলেজও পরিচালিত হয়।সুতরাং নিজের জেলার ইউনিভার্সিটির নাম খারাপ কেই বা করতে চায় বলুন? তবুও যেটা সত্য সেটা তো বলতেই হবে তাইনা!আমি শুধু এদের খারাপ দিক তুলে ধরছি।আমাদের প্রত্যেক সেমিস্টার 6 মাস করে হলেও সময়ের আগে আগে ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে।এটা খুবই ভালো দিক যে সময় মতো পরীক্ষা নিয়ে ফেলা কিন্তু রেজাল্ট দেওয়ার সময় গরমিল।যেমন ধরুন,5 সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে 6 সেমিস্টারের পরীক্ষা কিছুদিন পরেই শুরু হবে।অথচ 4 সেমিস্টারের রেজাল্ট হাতে পেলুম মাত্র কয়েকদিন আগে।

কারন আমাদের বর্ধমান ইউনিভার্সিটির ব্যাংক থেকে 2 কোটি টাকা চুরি হয়ে গিয়েছে।ভাবুন,সবকিছুতেই এখন চোরেদের বসবাস।আর তার জন্যই এই রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে।

IMG_20240501_093238.jpg

যাইহোক সবাই তো এই রেজাল্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল।কারণ সবাই স্কলারশিপের ফর্মফিলাপ করবে।এমনিতেই রেজাল্ট দিতে দিতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।তো ধর্ম হিসেবে আলাদা আলাদা নামে স্কলারশিপের সুবিধা রয়েছে এখানে।তবে কলেজ গুলিতে অনার্সেও 60% এর উপরে নাম্বার থাকতে হবে,তবেই ফর্মফিলাপ করা যাবে।তো একদিন ছিল এডমিশন ফি জমা দেওয়ার ডেট ,তো আরেকদিন ছিল রেজাল্ট নেওয়ার দিন।রেজাল্ট হাতে পেয়েই তো আমার কিছু বান্ধবীরা স্কলারশিপের ফর্মফিলাপ করতে ছুটলো সাইবারকাপে।কিন্তু আমার দাদা বাড়িতেই ফোন থেকে সবকিছু করে দেয় এইজন্য আমি সেদিন কোনো ডকুমেন্টও নিয়ে যায়নি।রেজাল্ট নিয়ে কি কি লাগতে পারে ওদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটালাম এমনি এমনিই।

IMG_20240501_105459.jpg

তারপর দাদা বাড়ি থেকে প্রথম কাজ করে দিলো, আমার শুধুমাত্র প্রিন্ট আউট করে বের করে স্যার ও প্রিন্সিপাল ম্যামের সিগনেচার করে আনা কাজ।তাই আবার পরের দিন কলেজ গিয়ে কিছু জেরক্স এর কাজ সেরে তারপর প্রিন্ট আউট বের করে নিলাম উপরের এই ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেটটি।মূলত এটাই আসল কারন এই একটি কাগজ অরিজিনাল দিতে হবে বাকি সব জেরক্স করে দিতে হবে।তাই এটি ফিলাপ করে একটি ক্লাস সেরে তারপর আবার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম সিগনেচার নেওয়ার আশায়।স্যার ও ম্যামের সিগনেচার শেষ করা হলে স্যার জানালেন ,বাকি অনলাইনে আপলোডের কাজ সেরে সোমবার জমা দিতে।কারন স্বাভাবিকভাবেই শনিবার ও রবিবার অফিসিয়াল কাজ তেমন একটা হয় না।

IMG_20240501_093154.jpg

বাড়ি ফিরে পরদিন যেহেতু ছুটি ছিল তাই দাদা অনলাইনে সবকিছু আপলোড করে দিলো।এখন আরো দুটি পেজ প্রিন্ট আউট করে নিয়ে বাকি কাগজগুলো যেমন-আধার কার্ডের জেরক্স,মার্কশিট,এডমিশন রিসিপ্ট ,ব্যাংকের বইয়ের জেরক্স ইত্যাদি সাজিয়ে নিলেই জমা দেওয়া যাবে।তাই সব ডকুমেন্ট নিয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে সোমবার সেই জেরক্স এর দোকানে গেলাম প্রিন্ট আউট করতে।কিন্তু গিয়েই দেখলাম প্রিন্ট আউট করার যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গেছে উনারা ঠিক করার চেষ্টা করছেন।জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম, কখন ঠিক হবে সেটা তাদেরও জানা নেই।তাই বাধ্য হয়ে ছুটলাম কলেজের বাইরে কিছুটা পথ হেটে একটি সাইবারকাপে।তারপর আমি রঙিন দুটি পেজ বের করে নিলাম 10 টাকা দিয়ে।যদিও অন্যরা সাদা-কালো পেজ বের করে নিয়েছে 5 টাকা দিয়ে।

এরপর অফিস রুমের সামনে এসে লাইন দিয়ে জানতে পারলাম যিনি জমা নেন সেই স্যার আজ আসবেন না।কিন্তু তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন অন্য একটি স্যারের কাছে।যেহেতু আমরা লাইনের সামনের দিকে ছিলাম তাই খুব একটা সময় লাগে নি।তো স্কলারশিপের ফর্ম জমা দিয়ে একটি ক্লাস করে বাড়ি ফিরে আসলাম।অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করেছি সেইদিন।


আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছে একটু ব্যতিক্রম লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

Thanks.

 2 months ago 

আপনার আজকের ব্যস্ত সময়ের দিন লিপি খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আপনার লেখায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের সেমিস্টার শেষ করতে যত তাড়া আছে কিন্ত রেজাল্ট দিতে তত তাড়া নেই। আশাকরি একদিন রেজাল্টও যথাসময়ে দিতে সক্ষম হবে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। অনেক যক্কি ঝামেলার পর শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে স্কলারশিপ ফর্ম জমা দিতে পেরেছেন যেনে ভালো লাগলো। লেখাটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপনার সুন্দর মতামত পড়ে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপু।

 2 months ago 

আসলে বাহিরে যতই গরম পড়ুক না কেন, কাজের ক্ষেত্রে তো বাহিরে বের হওয়া লাগবেই আমাদেরকে। সব মানুষ তো আর ঘরে বসে দিন কাটাতে পারবে না, কারণ তাদেরকে টাকা রুজি করতে হবে, না হলে কিভাবে খাবে। বিশেষ করে যারা দিনে দিনে খায় তাদেরকে বাহিরে তো অবশ্যই বের হতে হবে। কলেজের বিভিন্ন কারণে আপনারা বাহিরে এগিয়ে থাকেন এটা বুঝতেই পারতেছি। তবুও একটু সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন সব সময়। এত ব্যস্ততার মধ্যেও দিন কাটিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন এটা দেখে ভালো লেগেছে।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন, কাজের জন্য বাইরে তো যেতেই হবে।ধন্যবাদ ভাইয়া, সুন্দর পরামর্শ দেওয়ার জন্য।

 2 months ago 

আপনার ব্যস্ততম দিনের পোস্টটি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।সব কাগজপত্র প্রিন্ট আউট করতে গিয়ে দেখলেন প্রিন্ট আউটের যন্ত্রটি নষ্ট হয়েছে। তারপরেও অন্য জায়গায় গিয়ে আপনি কাজটা কমপ্লিট করতে পারলেন জেনে ভালো লাগলো। কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা নিতে যত তারা আছে কিন্তু রেজাল্ট দিতে অত তারা নেই আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম।প্রত্যেকেই আশা নিয়ে থাকে পরীক্ষার রেজাল্ট যেন তাড়াতাড়ি হয়।আশা করি আপনার রেজাল্ট যেন তাড়াতাড়ি দিয়ে দেয়। অনেক ঝামেলার পর ও স্কলারশিপ ফর্ম জমা দিতে পেরেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দারুন পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

হ্যাঁ আপু,স্কলারশিপ ফর্ম জমা দিতে পেরে ভালো লাগছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

শুধু বর্ধমান ইউনিভার্সিটি না বোন, কোন ইউনিভার্সিটির নিয়ম কানুনই ঠিক নেই। হা হা হা...🤭 আসলে একটা সময় আমরাও স্কলারশিপের জন্য এরকম দৌড়াদৌড়ি করেছি। তবে আমি কিন্তু সবসময় ফরম ফিলাপ নিজের ঘরে বসেই করতাম। সাইবার ক্যাফে কখনো যাইনি, শুধুমাত্র প্রিন্ট আউট করা ছাড়া। যাইহোক, তুমি এত দৌড়াদৌড়ি করে যে শেষ পর্যন্ত স্কলারশিপের ফর্মটা জমা দিয়ে আসতে পেরেছো, এটাই অনেক ভালো কথা।

 2 months ago 

ঠিক বলেছো দাদা,আমার দাদাও তো ফর্মফিলাপ নিজের ঘরে বসেই করে দিয়েছিল।আমি শুধু প্রিন্ট আউট বের করে নিয়েছি।তোমার সুন্দর মতামত পড়ে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

আপনার একটি ব্যস্ততম দিনের গল্প শেয়ার করলেন ভালো লাগলো পড়ে। যদিও নিজের এলাকার ভার্সিটি কিন্তু অনিয়ম হলে তো খারাপ বলতে হবে। যেটা খারাপ সেটাকে কেন ভালো বলবো শুধু শুধু। বাড়িয়ে বলা তাই না আপু? ৬ সেমিস্টার শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ফোর সেমিস্টারের রেজাল্ট হবে না এটা কোন ধরনের অনিয়ম। সেমিস্টার শেষ হয়ে যাবে সাথে সাথে রেজাল্ট দিয়ে দিতে হবে তাহলে ধারাবাহিকভাবে কাজটা হয়ে যাচ্ছে। যাক অবশেষে আপনার দাদার থেকে সবগুলো ফরম অনলাইনে করে নিয়ে ফরম প্রিন্ট আউট করে কলেজে জমা দিতে গেলেন। আপনার পুরো দিনের গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

আসলেই অনিয়ম হলে ভালো লাগে না, নিয়ম ঠিক থাকলে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।ধন্যবাদ আপু।

 2 months ago 

এই গরমের সময় আমার তো এমনিতেই ইচ্ছে করে না বাহিরে বের হতে। আর আমার বাহিরে তেমন কোন কাজ নেই, যার কারণে আমি এখন বাহিরে বের হই না। যদি কোথাও যাওয়ার থাকে, তবে বের হয়ে থাকি। এই গরমে ঘর থেকে বের হলেই যেন দম বন্ধ হয়ে আসে। এই গরমের সময় আমাদের সবারই উচিত সাবধানতা অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু সবাই তো আর পারবে না। কারণ সবাইকে ছুটে চলতে হবে প্রতিনিয়ত। আপনার দিনটা তো দেখছি বেশ ভালোই ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে। যাইহোক পুরো পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো দিদি।

 2 months ago 

আসলেই আপু, গরমে দম বন্ধ হয়ে আসে।ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 57491.44
ETH 3031.27
USDT 1.00
SBD 2.38