বাস্তব ঘটনা: "বজ্রপাতে মৃত্যু"

in আমার বাংলা ব্লগ23 days ago

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।কিন্তু আমি ভালো নেই।কয়েকদিন ধরে সর্দি,জ্বর আর শরীরে ব্যথা অনুভব করছি।😤🤒তার উপরে প্রচন্ড গরম, বৃষ্টির দেখা নেই।তাই মাঝে দুইদিন ধরে পোষ্টও করতে পারিনি।আজ আমি একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।

বাস্তব ঘটনা: "বজ্রপাতে মৃত্যু"

pexels-photo-6029507.jpeg
সোর্স

বন্ধুরা,প্রতিনিয়ত আমি ভিন্ন ভিন্ন পোষ্ট করতে ও লিখতে ভালোবাসি।তাই আজ আমি আপনাদের সামনে আবারো উপস্থিত হয়েছি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে জীবনের একটি বাস্তব ঘটনা সম্পর্কে আমার নিজস্ব অনুভূতি শেয়ার করবো।আসলে জীবন কত অদ্ভুত!যখন সুসময় আসে তখনই পরপারে চলে যেতে হয়।এক্ষেত্রে কারো কারো মত ভিন্ন হতে পারে তবে আমি শুধুমাত্র আমার নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছি।আশা করি অনুভূতিটি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে।যাইহোক তো চলুন শুরু করা যাক----

জীবন কত অদ্ভুত তাইনা! চোখেই নিমিষেই এই ছোট্ট প্রানখানি অজানা পথে পা বাড়িয়ে চলে চিরদিনের জন্য।অবশ্য সেটা বলা মুশকিল কখন মানুষের জীবন ফুড়ুৎ করে চড়ুই পাখির মতো উড়াল দেবে আর কখনোই বা আকস্মিক ঘটনা ঘটে যাবে।যেখানে সতর্কতার প্রশ্ন নেই, অবসর নেওয়ার মতো সুযোগটুকু নেই,নেই কোনো বিধাতার বিধান খন্ডন করার স্পর্ধতা আর নেই সামান্যতম মূল্যবান সময়টুকু।

এইতো সেদিনের কথা।গণেশ মামার বড় ছেলে জেঠুর মাধ্যমেই চাকরি পেল হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষা বিভাগে।অবশ্য সেই হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আমার মেজো জেঠুই।কারন 30 বছর একটানা চেয়ারম্যান থাকার কারণে তিনি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন সেটা স্বীকার করতেই হয়।তিনি অনেকগুলো প্রাইমারি ও হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ,একটি মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও তার সরকারীকরন,রাস্তাঘাট,মন্দির ও মসজিদ নির্মাণ ইত্যাদি ইত্যাদি।যাইহোক এখন আপনারা ভাবছেন এই গণেশ আবার কে?

আসলে গণেশ হচ্ছে আমার মামার বাড়ির সম্পর্কে আমার মামা।আবার অন্যদিক থেকে অর্থাৎ আমার বাবার দিক থেকে আমাদের দাদু সম্পর্ক।যাইহোক যে সম্পর্ক-ই বলি না কেন উনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন।ছোটবেলা থেকেই কঠোর পরিশ্রম করতেন অন্যের বাড়িতে বাড়িতে।বাড়ির বিভিন্ন ধরনের কাজ,মাঠে জমিজমার কাজ তিনি আমার মামাদের বাড়িতেও করতেন।গণেশ মামাকে আমার দিদিমা একজন মেয়ে দেখেই বিয়ে দিয়েছিলেন।এইজন্য আমার দিদিমাদের সঙ্গে তাদের ভালোই সম্পর্ক রয়েছে।এইভাবে অনেক বছর পরিশ্রম করে ,অনেক কষ্টে তার দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন গণেশ মামা।দুই ছেলেও টিউশন পড়িয়ে নিজেদের খরচ চালিয়েছে অনেক কষ্টে।

এখন দুই ছেলেই বিবাহিত এবং দুজনেই মাস্টারের চাকরিতে নিযুক্ত।মাঠের এককোণে গণেশ মামা তার বসতবাড়ি করেছে বড় করে আর কিছুটা জমিও কিনেছে।তার এখন দুঃখের দিন শেষ হয়ে সুখের দিন ঘনিয়ে এসেছে বলাই যায়।একবার যখন আমরা মামাবাড়ি গিয়েছিলাম, তখন তীব্র বৃষ্টির সময়ে বারেবারে বজ্রপাত হচ্ছিলো।হঠাৎ করেই কাছে বাজে পড়ার তীব্র শব্দ-----যেহেতু সকলের গরু তখন মাঠে চড়ছিলো।তাই সবাই সেদিকে ছুটে গেল,তখন গণেশ মামা মাঠে গিয়ে দেখলো যে টুনি দিদির গরুর গায়ে বাজ পড়েছে।কিন্তু সেই গরুর 10 হাতেক দূরে ছিল তাদের গরু তাই বজ্রের আঁচ লেগে তাদের গরুও মারা গেছে।একটা পোষ্য মারা গেলে যে কতটা যন্ত্রণার তা হয়তো তারাই বোঝে।

ঈশ্বরের কি নির্মম পরিহাস দেখুন!কয়েক দিন আগের কথা, ফেইসবুক ঘাটতে ঘাটতে দেখলাম গণেশ মামার মৃত দেহখানি।আর তার পাশে জড়ো অনেক চেনা মুখ হাউ হাউ করে কাঁদছে।গণেশ মামার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।যদিও শেষ কিছুদিন গণেশ মামার মনে একটু অহংকারবোধের ছোঁয়া দেখা গিয়েছিল।তারপরও যখন তার অবসরে একটু আরামে সময় কাটানোর সময়, তখন সে বজ্রপাতে প্রাণ হারালো।😢😢এটা আমার ও আমার পরিবারকে খুবই ব্যথিত করেছে,তিনি আমাদেরকে খুবই ভালোবাসতেন।মানুষের যখন জীবনে সুসময় আসে তখনই পরপারে চলে যেতে হয়।এটাই বাস্তবতা, এটাই পৃথিবীর চিরাচরিত নিয়ম।।


আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছেই ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 23 days ago 

Thanks.

 23 days ago 

গল্পটা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো আপনার গণেশ মামার দুঃখের দিন শেষ সবে সুখের আভাস পাচ্ছিল আর সেই মুহূর্তে বজ্রপাতে প্রাণ হারালো।

 23 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া, পোষ্টটি সময় নিয়ে পড়ার জন্য।

 23 days ago 

নিজের পালিত পশুর মৃত্যু অনেক বেদনা দেয়।যে পশু পালন করে সেই শুহু এই বেদনা বুঝতে পারে দিদি।খুব খারাপ লাগলো আসলেই এটাই হয়তক জগতের নিয়ম যখন সুখের সময় আসে তখন দুনিয়ে ছেরে চলে যেতে হয়।

 23 days ago 

ঠিক বলেছেন, উনার গরুও বজ্রপাতে মারা গেল আর উনিও।বাস্তব বড়ই নির্মম,ধন্যবাদ আপনাকে।

 23 days ago 

বর্তমানে বজ্রপাত সাক্ষাৎ যম।খুব দুঃখজনক ঘটনা টি দিদি।আসলে মানুষের নিশ্বাসের বিশ্বাস নাই এবং বিপদ ও মরন কখন কি ভাবে আসবে তা কেউ বলতে পারে না।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 23 days ago (edited)

একেবারেই তাই!নিশ্বাসের বিশ্বাস নাই ,দারুণ বলেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

 23 days ago 

মানুষের ভাগ্যটাই এরকম। যারা চির দুঃখী তাদের জীবনে সুখের সময় এলেই আয়ু ফুরিয়ে যায়।গনেশ মামার বজ্রপাতে প্রাণ হারানোর গল্পটি পড়ে খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 23 days ago 

আসলেই আপু,মানুষের জীবন খুবই স্বল্প।ধন্যবাদ আপনাকে।

 21 days ago 

কিছু কিছু মানুষের কপালে সুখ একেবারেই সহ্য হয় না। তাইতো গণেশ মামা সারাজীবন কষ্ট করার পর, একটু সুখের মুখ দেখা মাত্রই বজ্রপাতে নিজের প্রাণ হারালো। বেশ খারাপ লাগলো উনার জন্য। মানুষের জীবনটা আসলে কিছুই না। গতকালকে আমাদের এখানকার একটি ছেলে মাত্র ২৫ বছর বয়সে মারা গেলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 19 days ago 

আপনাদের ওখানের ছেলেটিও নিশ্চয়ই বজ্রপাতে মারা গিয়েছে, এটা বেশ দুঃখজনক।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 17 days ago 

না আপু সেই ছেলেটার পিত্তথলি তে পাথর হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অকালে জীবনটা শেষ হয়ে গেলো সজীব নামের সেই ছেলেটার।

 16 days ago 

ও আচ্ছা, খুবই করুণ একটা বিষয় ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65359.95
ETH 3492.90
USDT 1.00
SBD 2.51