"আজ সারাদিন কাটানোর অনুভূতি"

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।গরমের তীব্রতা যা বেড়েছে তাতে ভালো থাকাই কঠিন।তারপরও আমি ভালো আছি।আজ আমি একটি অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।আশা করি অনুভূতিটি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে।

আজ সারাদিন কাটানোর অনুভূতি:

IMG_20240520_123324.jpg

বন্ধুরা, আজ সারাদিন কিভাবে কাটালাম সেটাই শেয়ার করবো আপনাদের সঙ্গে।ভোর শুরু হতে না হতেই সকলের পরিবারেই ব্যস্ততার গল্প।কেউবা স্কুলে বের হবে,কেউবা অফিসের কাজে,আবার কেউবা অন্যান্য নানান কাজে।

মানুষের জীবন মানেই ছুটন্ত
ব্যস্ততা সেখানে অফুরন্ত,
আর কাজেরা সেখানে বাসা বেঁধেছে
হিসেবগুলি বড্ড নগন্যে।।

ছোট্ট একটি ছন্দ তৈরি করে ফেললাম ঘরে ঘরের ব্যস্ততাকে কেন্দ্র করে।আজ কলেজ হয়ে গরমের লম্বা ছুটি পড়ে যাবে।তারপর অনার্সের ফাইনাল ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু।তাই আজ ছিল সেই এক্সামের ফর্মফিলাপের কাজ সঙ্গে লাইব্রেরি জমা দেওয়ার কাজ।কিন্তু আমার কাজ ছিল আরো অনেকগুলো,যেমন-স্কলারশিপের ফর্ম জমা আর একটি ফটো জমা দেওয়ার কাজ আমাদের ডিপার্টমেন্টে।তাই বাড়ি থেকে কিছুটা অর্থাৎ হাফ কিলোমিটার হেঁটে একটি টোটো ধরলাম।তারপর স্টেশনে গিয়ে দেখলাম, টিকিট কাউন্টারে নতুন একটি লোক রয়েছেন।যিনি নন-বাঙালি,আমার সামনের জন রিটার্ন টিকিট কাটতে চাইলে উনি সিঙ্গেল টিকিট কেটে ধরিয়ে দিয়েছেন।

IMG_20240520_123301.jpg

মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি যে লোকেশনের টিকিট চেয়েছি উনি সেটা না দিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা লোকেশনের টিকিট ধরিয়ে দিলেন।অন্য দিন টিকিট চেক করলেও আজ আর চেক করিনি তাড়াহুড়োতে।কিন্তু প্লাটফর্ম এ বসে কি যেন মনে হলো আমার তাই টিকিট বের করে চেক করতেই দেখলাম সম্পূর্ণ বিপরীত দিকের টিকিট আমার।তখনও বর্ধমানের গাড়ি আসতে 5-7 মিনিট ছিল, তাই আবার দৌড়ে টিকিট কাউন্টারে গিয়ে সেই স্যারকে বললাম, তারপর উনি ঠিকভাবে পুনরায় টিকিট দিলেন।তারপর ঠিক সময়ে ট্রেন আসলে তাতে চড়ে পৌঁছে গেলাম বর্ধমান স্টেশন।আমাদের ক্লাসের দুই বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল তারপর সিঁড়ি বেয়ে নামতেই টি টি আমায় ধরলো।বললো টিকিট দেখাতে, আমিও টিকিট বের করে দেখালাম।তারপর উনি টিকিট দেখে আমায় দিয়ে দিলেন ততক্ষনে আমার বান্ধবীরা ওখান থেকে উধাও।কারন ওরা টিকিট কাটে না সবসময় এরপর আমরা টোটো ধরে কলেজ পৌছালাম।এবারে আমরা ফর্ম ফিলাপের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।কিন্তু কেউ কেউ বললো লাইব্রেরি ক্লিয়ারেন্স করা না হলে ফর্মফিলাপ হবে না।তাই এখানে লাইন ধরে রেখে লাইব্রেরি রুমের সামনে দাঁড়িয়ে লাইন দিলাম।

IMG_20240520_123313.jpg

IMG_20240520_123335.jpg

সকল কাজ 11 টার পর থেকে শুরু হবে তাই অপেক্ষা করলাম।আমি একটু পর গেলেও আমার একজন বান্ধবী আমাকে লাইনের প্রথমে দ্বার করিয়ে দিলো।লাইনের প্রথম থাকার সুবাদে দ্রুত লাইব্রেরি কার্ড জমা দিয়ে চলে গেলাম পূর্বের সেই ফর্মফিলাপের কাজ চলছে সেখানে।কিছুদিন আগে আমাদের এডমিশনের জন্য 2660 টাকা নিলেও এখন আবার এক্সামের ফর্ম ফিলাপের জন্য 365 টাকা নিয়ে নিল।এখানে 5-7 জনের পর এসে লাইন দেওয়াতে দ্রুত কাজ হয়ে যায়।অন্যদিকে ডিপার্টমেন্ট এ একটি ছবি জমা দেওয়ার কাজ ছিল কিন্তু ডিপার্টমেন্টের গেটে তালা ঝুলছে তাই আর দেওয়া হলো না।সবশেষে বাকি রইলো আমার স্কলারশিপের ফর্মগুলি জমা দেওয়ার কাজ।যেটা আমি আগেও একদিন জমা দিতে গিয়েছিলাম কিন্তু উনারা আরো কিছু কাগজ চাইছিলেন,যেগুলো গতবছর দেওয়া সত্ত্বেও উনারা ফেরত দিয়েছিলেন।কিন্তু এই বছর আবার চাইছেন তাই ফেরত এসে সব কাগজ রেডি করে আজই নিয়ে গেলাম।এখন মুশকিল হলো যিনি আমাদের স্কলারশিপের ফর্ম জমা নেবেন তিনি আবার ফর্মফিলাপের ক্যাশ কাউন্টারে রয়েছেন।তাই 11.20 টা থেকে 1.20 পর্যন্ত 2 ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো।

IMG_20240520_123404.jpg

যেহেতু অপেক্ষা করতে হলো তাই উপরের তলায় ক্যান্টিনে চলে গেলাম আমি আর অন্য একজন।তারপর গরম গরম চাউমিন বানানোর অর্ডার দিলাম এক প্লেট।এরপর খোলা করিডোর থেকে কিছু ছবি তুললাম, এখানে মূলত স্যার ও ম্যামেরা বসে হাওয়া খান।কারন এটা অফিস রুমের পিছন সাইড, এখন কলেজ ছুটি পড়ে গিয়েছে তাই উনারা আসেননি।ফলে ওখানে ফ্যান চালিয়ে আমরা বসে বসে খাবার খেলাম।তারপর উনি এসে কাগজ জমা নিলেন,সব কাজ মিটিয়ে এরপর 1.20 তে টোটো ধরলাম 1.40 এর ট্রেন ধরবো বলে।কারন আগে 2 টি ট্রেনে এই একটি কাগজ জমা দেওয়ার চক্করে যাওয়া হয় নি।তো শেষমেষ ট্রেনটি ধরে বাড়ি পৌঁছালাম।এটাই হয়তো কলেজ জীবনের শেষ একটি অনুভূতি,কারন যখন কলেজ খুলবে তার 10 দিন পর থেকেই ফাইনাল এক্সাম শুরু হবে।যাইহোক আজ সারাদিন এভাবেই কাটলো।

IMG_20240520_123345.jpg


আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছেই ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

Thanks.

 4 months ago 

আপনার এই সারাদিনের অনুভূতিগুলো পোস্টে পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো আপু। মানুষের জীবন মানে ছুটন্ত আর ব্যস্ততা অফুরন্ত সত্যি কথাগুলো একদম ঠিক খুব সুন্দর করে গুছিয়ে আপনি আপনার অনুভূতিমূলক পোস্ট শেয়ার করেছেন ,এবং অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছেন । ক্যান্টিনে চাউমিনে খেতে খেতে বাইরে করিডোর থেকে ফটোগ্রাফি টা করার আমার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে। ধন্যবাদ এমন একটি অনুভূতিমূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আপনার সুন্দর মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

অনেক ব্যস্ততম একটি সময় কাটালেন তাহলে। আর টিকেট কাউন্টারের লোকটা তো বেশ ঝামেলা করে দিয়েছিল আপনাকে। ভাগ্যিস আগে চেক করে নিলেন না হয় আপনি বিপদে পড়ে যেতেন। নতুন লোক বসলে এমনই সব কাজের মধ্যে একটু গোলমাল হয়ে যায়। আর চাউমিন এর প্লেট টা তো বেশ ভালোই লাগলো। যদি এক প্লেট পাঠিয়ে দিতেন আপু।

 4 months ago 

হি হি,যদি আপনাকে পাঠিয়ে দিতে পারতাম বেশ ভালো লাগতো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

আমার সাথে একবার টিকিট নিয়ে এরকম সমস্যা হয়েছিল। এক জায়গার টিকিট কাটার কথা বলেছিলাম আর কেটে দিয়েছিল তার উল্টোদিকে যাওয়ার টিকিট। তবে আজ পর্যন্ত টিটি আমাকে কোনদিন ধরেনি। তাছাড়া আমরা যখন কলেজে ছিলাম, তখন স্কলারশিপের ফরম জমা দেওয়া নিয়ে অনেক সমস্যা হতো। যাইহোক, সব মিলিয়ে তোমার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম যে, অনেকটা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছো আজকে।

 4 months ago 

দাদা,এই নিয়ে টিটি আমাকে তিনবার ধরলো।তবে আমি টিকিট কেটে যাই তাই বাঁচা।আসলেই বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় স্কলারশিপ নিয়ে।

 4 months ago 

আমি তো মাঝে মাঝে টিকিট কাটি না বোন, টিটি যদি আমাকে ধরে আমি তো বিপদে পড়ে যাব। হেহেহে..🤭🤭

 4 months ago 

হি হি,এটা তো আমিও করি।তবে যাওয়ার সময় নয়,আসার সময় কাটি না☺️☺️.

 4 months ago 

আমি যেদিন টিকিট কাটি না, সেদিন যাওয়ার সময়ও কাটি না আবার আসার সময়ও কাটি না । টিকিট না কেটে কুড়ি টাকা সেভ করে, লস্যি খেতে খেতে বাড়ি ফিরি সেদিন।

 4 months ago 

ধরলেই কয়েক গ্লাস লস্যির দাম কেটে রেখে দেবে দাদা।

 4 months ago 

টিটিতে ধরলে কয়েক গ্লাস লস্যির দাম কেটে রাখবে না বোন, সারা বছরের লস্যি খাওয়ার টাকা একবারেই কেটে নিয়ে যাবে। হিহি.. 😂😂😂 একবার বিনা টিকিটে টিটির কাছে ধরা পড়লে, সেই বছর লস্যি খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। 😁😁

 4 months ago 

হি হি,মিনিমাম 500 টাকা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60250.23
ETH 2335.37
USDT 1.00
SBD 2.52