মেয়েদের জীবন (শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। মেয়েদের জীবন গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

1000030137.jpg

আজকে আর একটি নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। গল্প পড়তে এবং গল্প লিখতে দুটোই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে গল্প পড়তেই অনেক ভালো লাগে। সবাই খুবই সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করে থাকে যেগুলো আমি পড়ে থাকি এবং আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে গল্পের মধ্যে সবথেকে বেশি ভালো লাগে ভূতের গল্প। আপনাদের মাঝে আমি অনেক ভূতের গল্প শেয়ার করেছি আগে তা ছাড়া অন্য গল্প গুলো শেয়ার করেছি। আজকে আরেকটি নতুন গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের গল্পটি নাম হলো গরিবের মেয়েদের জীবন । তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের গল্পটি।

এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমি গত সপ্তাহে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আজকে গল্পটির বাকি অংশ আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য চলে এসেছি। গত পর্বে আমি গল্পটি শেষ করেছিলাম যে মেয়েটির অবশেষে তার ভাই এবং পরিবারের ইচ্ছায় বিয়ে করেছে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায় এবং সেখানে তার সংসার চলতে থাকে। তার স্বামী খুবই ভালো ছিল তাকে অনেক ভালবাসতে। কিন্তু তার শাশুড়ি আর জা অনেক জ্বালাচ্ছিল মেয়েটিকে অনেক বেশি জ্বালাতন করতো। সে বাড়িতে যাওয়ার পর সে পড়াশোনা করা নিজের ইচ্ছে গুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার সেরকম কোন সময় পেত না সব সময় সে সংসারের কাজ করতে ব্যস্ত থাকতো।

তারা স্বামী তাকে কথা দিয়েছিল যে বিয়ের পরেও তাকে লেখাপড়া করাবে। তার কথা সে রেখেছে কিন্তু সে অফিস চলে যাওয়ার পর থেকে সারাদিন মেয়েটি আর কোন ধরনের সময় পায় না পড়াশোনা করার জন্য। কারণ তার শাশুড়ি তাকে দিয়ে সংসারে সব কাজই করিয়ে থাকে। কাজকর্ম সেরে এসে অনেক বেশি ক্লান্ত থাকে আর পড়াশোনা করতেও পারে না। পড়াশোনা করার সেরকম সময় বের করতে পারে না আর যখন একটু সময় বের করে তখনই তার শাশুড়ি তাকে কাজের জন্য বলে এবং সেই পড়াশোনা ফেলে রেখে কাজ করতে চলে যায় এভাবেই তার দিন কাটছিল।

শাশুড়ি ইচ্ছে করেই তাকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়ে থাকে যাতে সেই লেখাপড়া করতে না পারে। কারণ শাশুড়ি চায়না সে লেখাপড়া করুক। শাশুড়ি বলে আমাদের সংসারের বউ কখনো বাইরে গিয়ে চাকরি করে না। ছেলেরাই চাকরি করে বাড়ির বউদের কাজ হচ্ছে সংসার সামলানো বাচ্চা-কাচ্চা সামলানো। আর তার স্বপ্ন রয়েছে সে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কিন্তু শাশুড়ি আর জা এর এরকম অত্যাচারের কারণে সে নিজেও অনেক হীনমন্যতায় ভুগে। এবং তার উপর পড়াশোনার প্রতি আগ্রহটা উঠে গেছে কারণ এরকম অত্যাচারের মধ্যে ঠিক ভাবে নিজের স্বপ্নগুলোকে পূরণ করার সাহস সে হারিয়ে ফেলেছে।

তার স্বামী তাকে ভিতরে ভিতরে সাপোর্ট করলেও মা-বাবার সামনে আর ভাইয়ের বউয়ের সামনে কিছুই জোর গলায় বলতে পারেনা। শেষমেষ ভিতরে ভিতরে স্বামীর সাপোর্টে কিছু পড়াশোনা করলেও পরীক্ষার দিন শাশুড়ি আর জা মিলে প্লানিং করে তাকে পরীক্ষাটা দিতে দেয়নি। সেদিন তার পরীক্ষা ছিল আর সেদিনই তার জায়ের বাপের বাড়ি থেকে অনেক লোকজন এসেছে। তাদেরকে দাওয়াত করেছে আর শাশুড়ি বলেছে তার জায়ের বাপের বাড়ির লোকদেরকে সবাইকে রান্না করে তাকে নিজ হাতে খাওয়াতে হবে। তা না হলে তার শাশুড়ির মান সম্মান হারিয়ে যাবে। ছেলের বউ বিয়ে করে নিয়ে এসেছে সে রান্নাবান্না করতে পারেনা তাদের বদনাম হবে এই বলে শাশুড়ি। শাশুড়ি চাপে পড়ে সে সারাদিনই রান্না বান্না করেছে পরীক্ষা দিতে যেতে পারিনি আর তখন সে খুবই কষ্ট পায় এবং নিজের স্বপ্ন পূরণ এর আশা এখানেই চিরতরে শেষ করে দেয়। এরকম হাজারো মানুষ হয়েছে হাজারো মেয়ে রয়েছে যাদের স্বপ্ন এভাবে সংসারে আর রান্না ঘরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। হাজারো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাদের স্বপ্নগুলো তারা পূরণ করতে পারে না।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আপনার এই গল্পের প্রথম পার্টটা আমার পড়া হয়েছিল।আজ এই শেষ পর্ব পড়লাম।সত্যি ই আপু আমাদের সমাজে মেয়েদের স্বপ্ন গুলো বেশীর ভাগ ই পূরণ হয়না।আর এই পূরণ না হওয়ার পেছনে কোন না কোন নারীই দায়ী থাকে।গল্পটি একদম বাস্তবতা সমৃদ্ধ লেগেছে আমার কাছে।ধন্যবাদ আপু চমৎকার এই গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

এই গল্পের প্রথম পর্ব এবং শেষ পর্ব দুটোই আপনি পড়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 5 months ago 

এই গল্পের প্রথম পর্বটা যদিও আমার পড়া হয়নি তবে শেষ পর্বটা পড়ে অনেক খারাপ লেগেছে। আসলে মেয়েদের জীবন এরকমটাই। এরকম অনেক মেয়ে রয়েছে তাদের স্বপ্ন তারা পূরণ করতে পারে না শুধুমাত্র এই কারণগুলোর জন্য। কিছু কিছু মেয়ের ক্ষেত্রে হয়তো এরকমটা হয় না। তবে বেশিরভাগ মেয়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। ঘরের কাজ বাচ্চা সামলানো এসব কিছু করতে গিয়েই তাদের দিন কেটে যায়। তাদের সব স্বপ্নগুলো তাদের মধ্যেই থেকে যায়। অনেক সুন্দর করে আপনি পুরো গল্পটা লিখেছেন আর শেয়ার করেছেন সবার মাঝে। গল্পটার মধ্যে বাস্তবতা ফুটে উঠেছে অনেক সুন্দর ভাবে।

 5 months ago 

গল্পের শেষ পর্ব টা পড়েছেন এবং সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন দেখে খুবই খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 5 months ago 

এরকম অনেক মেয়ে আছে বিয়ের পর তাদের পড়ালেখা স্বপ্নগুলো আর পূরণ হয় না। যদিও আপনার গল্পের মেয়েটির স্বামী ভালো। কিন্তু শাশুড়ি এর কারণে তার পড়ালেখা করতে অনেক সমস্যা হয়। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে পরীক্ষার দিন মেহমান আসার কারণে তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি। সত্যি তার পড়ালেখার স্বপ্নটিকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। আসলে এরকম গল্প গুলো পড়তে অনেক খারাপ লাগে। মেয়েরা যদি অন্য বাড়িতে যায় বিয়ের পর তাদেরকে শাশুড়িরা নিজের মেয়ের মত মনে করতে হবে। খুব সুন্দর করে গল্পের শেষ গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 5 months ago 

একদমই ঠিক বলেছেন আপু এরকম অনেক মেয়ে আছে যাদের সাথে সব সময় এরকম হয়ে থাকে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 5 months ago 

বেশিরভাগ মেয়ে নিজের স্বপ্নটা নিজের মধ্যেই রেখে দেয়। কিছু কিছু শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য তারা বিয়ের পর আর পারে না নিজের স্বপ্নটা পূরণ করতে। আর অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নিজের স্বামী চাইলেও কিছু করতে পারে না। সাপোর্ট মন থেকে করলেও, মা-বাবার সামনে কোন কিছু বলতে পারেনা। আর ঠিক এমনটা এই মেয়েটার সাথেও হয়েছে। শাশুড়ি এবং জা তার সাথে সত্যি অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে। আর তাদের জন্যই সে পারেনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে। আপনি গল্পটার মধ্যে বাস্তবতাকে সুন্দর করে তুলে ধরেছেন বলে বেশি ভালো লেগেছে পড়তে।

 5 months ago 

আপনার কমেন্ট দেখে বুঝতে পারছি পুরো গল্পটি আপনি পড়েছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 59162.63
ETH 2534.67
USDT 1.00
SBD 2.47