একদিন রাতে ঘটে যাওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা।
হ্যালো সবাইকে
কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। একদিন রাতে ঘটে যাওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।
আজকে আর একটি নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। গল্প পড়তে এবং গল্প লিখতে দুটোই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে গল্প পড়তেই অনেক ভালো লাগে। সবাই খুবই সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করে থাকে যেগুলো আমি পড়ে থাকি এবং আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে গল্পের মধ্যে সবথেকে বেশি ভালো লাগে ভূতের গল্প। আপনাদের মাঝে আমি অনেক ভূতের গল্প শেয়ার করেছি আগে তা ছাড়া অন্য গল্প গুলো শেয়ার করেছি। আজকে আরেকটি নতুন গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের একদিন রাতে ঘটে যাওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা শেয়ার করব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের গল্পটি।
এই ঘটনাটি বেশ অনেক দিন আগেই বলতে গেলে কয়েক বছর আগের ঘটনা। বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনায় আমি তখন অনেকটাই ছোট ছিলাম। আমি স্কুলে পড়তাম। আমার বাবা তখন বাড়িতেই ছিল মানে নিজের দেশেই ছিল কাজকর্ম করত। বাড়িতে আমি ছিলাম আমার মা ছিল আর ছোট্ট দুইটা ভাই ছিল। তখন ওদের বয়স অনেক কম ছিল এক থেকে দুই বছর হবে ওদের বয়স এরকম। তো আমাদের রান্না-বান্না করার জন্য প্রতিদিনই আমার বাবা বাজার থেকে বাজার করে পাঠিয়ে দিত সকাল বেলা। যেহেতু বাবা কাজে থাকত আসতে পারতো না সেজন্য একটা গাড়িতে করে পাঠিয়ে দিত বাজারগুলো। তো সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিদিনের মতো আজকেও আমার মা অপেক্ষা করছিল সকালে কখন বাবা বাজার পাঠাবে কখন রান্নাবান্না করবে আমাদের জন্য।
তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আর আমাদের একটাই মোবাইল ছিল সেটা আমার বাবার কাছেই ছিল। মায়ের কাছে কোন মোবাইল ছিল না। মা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে শেষে যখন বাজার আর এল না রান্নার জন্য তখন অন্য কিছু রান্না করার ব্যবস্থা করছিল আর মনে মনে চিন্তা করছিল কি হল আজকে কেন রান্না করার জন্য বাজার পাঠাইনি। হয়তো ভুলে গিয়েছে বা হয়তো আজকে বেশি ব্যস্ত কাজে সে জন্যই পাঠাইনি। মোবাইল ছিল না সেজন্য খবর নিতে পারেনি। মা কোনরকম রান্না করে আমাদেরকে দুপুরে খেতে দিল। বাবাও আর দুপুরে বাড়িতে খেতে আসে না একেবারে রাতেই আসে।
দুপুরে ডাল আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে কোনভাবে কাটিয়ে দিলাম। আমার মেজো ভাইটা ছোট ছিল তবে সে অনেক বেশি সিঙ্গারা খেতে পছন্দ করত। যেহেতু দুই থেকে তিন বছর বয়স ছিল টুকটাক জিনিসপত্র খেতে পারতো। তার সিঙ্গারা অনেক বেশি প্রিয় ছিল সেজন্য বাবা বাজারে সাথে প্রতিদিনই আমাদের জন্য ভাইয়ের জন্য সিঙ্গারা পাঠাতো। আজকে ভাই সিঙ্গারা খাইনি ছোট মানুষ খুবই কান্নাকাটি করছিল যে বাবা পাঠায়নি কেন। এই করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। হঠাৎ সন্ধ্যায় একটা গাড়ি এলো বাড়িতে গাড়ি থেকে লোকটা নেমে হঠাৎ বাজার দিল মায়ের হাতে। আমরা তো অবাক কিরে আজকে সকালে বাজার পাঠানোর কথা ছিল সব সময় সকালে পাঠায় কিন্তু আজকে বাজার সন্ধ্যায় পাঠালো কেন।
তখন লোকটা নিজ থেকে বলছিল যে আমার ভুল হয়ে গিয়েছিল। তিনি বাজার সকালবেলায় পাঠিয়েছিলেন আমি গাড়িতে রেখেছিলাম কিন্তু ভুলে গিয়েছি আপনাদেরকে দিতে।আপনারা কিছু মনে করবেন না আর আমার বাবাকেও বলতে নিষেধ করছিল তিনি আর যদি জানতে পারি সকালের বাজার আমাদেরকে সন্ধ্যায় এনে দিয়েছে তাহলে অনেক বকাবকি করবে। তো কি আর করার সময় যেহেতু বাজারে এসেছে তার সাথে আবার সিঙ্গারা আরও অনেক কিছু কিনে দিয়েছিল সেজন্য মা আবার সন্ধ্যাবেলা রান্না শুরু করলো। মাছ দিয়েছিল সিঙ্গারা দিয়েছিল মাছ রান্না করলো এবং সিঙ্গারা গুলোকে তেলের মধ্যে আবার ভেজে গরম করে নিল।
এরপর সন্ধ্যায় খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি পড়তে বসে গেলাম। এদিকে মা সারাদিন কাজকর্ম করে দুই ভাইকে সামলে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সেজন্য আমাকে পড়তে বসতে বলে সে ভাইদের কে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে নিজেও ঘুমিয়ে গিয়েছেন। আমি পড়ছিলাম হঠাৎ করে পুরো ঘরটাকে কেঁপে উঠল আমি যেদিকে পড়ছিলাম আমাদের টিনের ঘর। অনেক জোরে জোরে আওয়াজ করছিল আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছি। ভয় পেয়ে আমার মাকে ডাকছিলাম বলছিলাম মা ঘরের আশেপাশে কেমন যেন করছে অনেক আওয়াজ হচ্ছে। মা তো অনেক ক্লান্ত ঘুমের ঘোরে বলছিল যে আরে ভয় পাস না আমি আছি পড়তে বস না পড়ার জন্য এরকম করছিস। এরপর মায়ের কথা শুনে আমি আবার পড়তে শুরু করলাম।
এরপর আবারো একইভাবে ঘরের আশেপাশে অনেক শব্দের আওয়াজ। টিনের মধ্যে ঘরের মধ্যে কেউ যেন অনেক জোরে জোরে লাঠি দিয়ে বাড়ি মারছে। এইরকম করছিল আম্মু অনেক কথা বলল যে কেউ আছেন নাকি কেউবা কেন কেউ কেন এরকম করছেন। কোন সারা শব্দ নেই আবার হঠাৎ হঠাৎ পায়ের শব্দই সব শোনা যায়। তখন মা বুঝতে পারল যে সন্ধ্যা বেলায় যে মাছ আর খাবার গুলো এনে দিয়েছিল লোকটা। সেই লোকটাকে আমার মা আবার আগে থেকে চিনে সে লোকটার বাড়িতে ছিল একটা বাঁশ বাগানের মধ্যে। রিকশাওয়ালা ছিল সেরকম কোন ভাবে ঘর বাড়ি ছিল না গ্রামের মানুষ একটা বাগানের মধ্যে তাকে বাড়ি করার জায়গা দিয়েছে তার বাড়ির মধ্যে বাঁশ বাগান ছিল। তখন বুঝতে পারল যে এই খাবারগুলোর সাথে হয়তো অলৌকিক কোন শক্তি চলে এসেছে আমাদের বাড়িতে।
খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমরা কিন্তু আমার মা অনেক সাহসী ছিল তিনি ভয় পায়নি। পরবর্তী তো অনেকক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের আওয়াজ করতে থাকে আমরা কোন রকম ভয় না পেয়ে চুপচাপ বসে রইলাম। বসে বসে শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম যেন আমাদের কোনো ক্ষতি না হয় দোয়া পড়ছিলাম এবং আবার বাবাও তখন চলে আসলো। আর বাবা আসার পর আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যায় খুবই অদ্ভুত ছিল। সেই রাতটা অনেক ভয় পেয়েছিলাম প্রথমে। যাই হোক আশা করি আপনাদের কাছে আমার আজকের এই ঘটনাটি ভালো লাগবে ধন্যবাদ।
শ্রেণী | জেনারেল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @fasoniya |
ডিভাইস | Vivo Y15s |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।
https://twitter.com/APatwary88409/status/1782756196245709210?t=pZm2m0qoPEdz6hssCn1Idw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি আপু এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটলে ভয় লাগারি কথা। আসলে বিপদে ধৈর্য্য ধরা উচিত। আপনার মায়ের সাহস ছিল জেনে অনেক ভালো লাগলো। যাইহোক অবশেষে সবকিছু ঠিক হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু ঠিক বলেছেন ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে সবসময় বিপদ থেকে বাঁচা যায়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায় যেগুলো প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে আরো মানুষ জানতে পারে। কখনকার পরিস্থিতি বিপদের সম্মুখীন হয়ে আসে কেউ জানে না। তবে বিপদে ধৈর্য ধারণ করাটাই বেটার। মহান সৃষ্টিকর্তা সব সময় পাশে থাকেন। এক সময় ভালো রাখবে আবার মাঝেমধ্যে পরীক্ষা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনার এই বিস্তারিত অলৌকিক ঘটনাগুলো জানতে পারলাম পোস্ট পড়ে। আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি একদমই ঠিক বলেছেন বিপদে ধৈর্য ধারণ করলে খুবই ভালো হয়। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের অলৌকিক ঘটনা অনেক বেশি দেখা যায় আপু। আপনার মা অনেক সাহসী ছিলেন, এজন্য হয়তো আপনারা সবাই বেঁচে গেছিলেন। যদিও সকালের বাজার এত দেরি করে বাড়িতে দেওয়ার কোন কারণ আমি খুঁজে পেলাম না। তবে গল্পটা আমার কাছে অনেক বেশি ভয়ের মনে হয়েছে আপু।
আপনি আমার আজকের এই গল্পটা পড়েছেন এবং আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুবই খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।