গল্প: ভৌতিক সাইকেল। (পর্ব -৩) || Story: Ghost Cycle.
সাইকেলটা বেশ কিছু সময় আর্তনাদ করার পর থেমে গেছে, গোটা পরিবেশটা কেমন যেন ভারি হয়ে উঠেছে। রুবিউকের গলা কাঁপছে ভয়ে, তবুও ভাঙ্গা গলায় বললো কি হয়েছিল তোমাদের সাথে? সাইকেলটা ঝংকার মেরে চিৎকার করে উঠলো শুনতে চাও কি হয়েছিল সেদিন?
তবে শোন, দিনটি ছিল আমার স্ত্রীর জন্মদিন। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, কারন আমার স্ত্রীকে দেয়ার মতো আমার কাছে তেমন কিছু ছিল না। তবে তার একটা জিনিস খুব প্রিয় ছিল তা হলো আইসক্রিম। তাই চিন্তা করলাম তাকে নিয়ে আইসক্রিম খেতে যাবো ডব্লিং শহরে। শুনেছি ওখানে নাকি খুব সুস্বাদু আইসক্রিম পাওয়া যায় আর এটার আরো একটা মহত্ব হলো এর সাথে লাকি লটারি জেতার সুযোগ। মানে আইসক্রিম কিনে বড় কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই আইসক্রিম কোম্পানিটা হঠাৎ করেই নাম ডাক করে ফেলেছে, আর করবেই না কেনো। যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি দেখতেও লোভনীয়, আর লটারি জেতার সুযোগ থাকায় তাদের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে।
আমার স্ত্রীর বড়লোক হওয়ার তেমন ইচ্ছে নেই, আর আমার চিন্তা শুধু একটাই যদি কিছু পাই তবে আমার স্ত্রীর ভালো চিকিৎসা করাতে পারবো। তার পা গুলো যদি অন্তত ঠিক হয় তাহলে আমার থেকে সুখি মানুষ হয়তো আর কেউ হবে না। যাইহোক আমাদের আপাতত ইচ্ছে ভালভাবে জন্মদিনের সন্ধ্যাটা উপভোগ করা। আমার স্ত্রী তার মন মতো সেজেছে, না আজ তাকে মানা করিনি। অপূর্ব দেখাচ্ছিল তাকে, তাকে নিয়ে বিকেলের দিকে বেরিয়ে পড়লাম। আজ কেন যেন মন ভীষণ ফুরফুরে লাগছিল, আর সাইকেলটা মনে হয় ঝড়ের গতিতে ছুটছিল। অবশেষে দুঘন্টা সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যাই ডব্লিং শহরে।
কি চমৎকার সাজানো গোছানো একটা শহর। এই শহরটা নাকি কখনো ঘুমায় না, বিভিন্ন রং বেরঙের আলোকসজ্জা আর চমৎকার সব রেস্তোরাঁয় ভরপুর এই শহর। শহরে প্রবেশ করেই প্রথমে সেই বিখ্যাত আইসক্রিমের রেস্তোরাটা খুঁজছিলাম। খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলাম, তবে মানুষের ভিড় ঠেলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে এক কোনার ছোট্ট টেবিলে বসার সিদ্ধান্ত নিলাম। সবাই আমাদের দিকে কেমন যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখছিল। কারনটা হয়তো আমাদের খুব সাধারণ বেশভুষা। যাইহোক আলো ছায়ায় মাঝে বেশ রোমান্টিক একটা পরিবেশ এটা।
এখানে বিভিন্ন দামের আইসক্রিম রয়েছে সবথেকে দামী যে আইসক্রিম রয়েছে ওটার স্বাদ নাকি অসাধারণ। যে একবার খায় সে বারবার খেতে চায়। আর ওটাতে নাকি দামী উপহারের লটারি লাগার সুযোগ বেশি। আমাদের সাধ্য নেই ওটা কিনে খাওয়ার। ওয়েটার যখন আইসক্রিমের অর্ডার নিতে এসেছে তখন আমার স্ত্রী মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছিল। কারন সে আমার সামর্থ্য জানে, সে আমার হাত চেপে ধরে ওয়েটারকে মোটামুটি দামের আইসক্রিমের অর্ডার দিল। আমি তার প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম কারন তার মতো স্ত্রী পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
আইসক্রিম যতক্ষনে তৈরি করে নিয়ে আসছিল ততক্ষণে আমি ছুটে গিয়ে একটা ফুলের দোকান থেকে কিছু ফুল কিনে আনলাম। এবার হাঁটু গেড়ে বসে আমার স্ত্রীকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালাম আর তার হাতে চুমু খেলাম। এরপর আমরা সেই সুস্বাদু আইসক্রিম খেতে শুরু করলাম। এতো সুস্বাদু আইসক্রিম খেয়ে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম, এগুলোর সাথে যে দুটো লটারি দিয়েছে তার কথা বেমালুম ভুলে গেলাম। একটু পরেই হঠাৎ মনে পড়লো এগুলোর কথা। যাইহোক দুটো লটারির মধ্যে দু'টো সংখ্যার কোড দেয়া ছিল আর কিচ্ছু নেই। এবার ওদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এই সংখ্যার কোডের সাথে একটি ম্যাজিক চড়কার যে কোড মিলবে তাই হয়ে যাবে আমাদের। প্রথমে আমার সংখ্যার কোড দিয়ে ম্যাজিক চড়কা ঘুরলাম, কিন্তু তেমন আশানুরূপ কোন কিছু বুঝতে পারলাম না।
এবার আমার স্ত্রীকে একটা হুইল চেয়ারে বসিয়ে চড়কার কাছে আনলাম।
ওর হাতে কি জাদু রয়েছে বুঝলাম না ঐ কোড দিয়ে চড়কা ঘুরানোর সাথে সাথেই একটা কোড আরেকটা কোডের সাথে মিলতে শুরু করেছে। আমাদের অবাক করে দিয়ে এমন একটা উপহার আমাদের সামনে হাজির হয়েছে যা দেখে আমাদের চোখ কপালে উঠে গেছে 😲
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভৌতিক সাইকেল এর গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব আমি পরেছি। তবে তৃতীয় পর্ব পরে মনে হচ্ছে চতুর্থ পর্বে আরো বেশি মজা হতে চলেছে। লোকটি তার স্ত্রী কে অনেক বেশি ভালোবাসতো। তার স্ত্রীচড়কা ঘুরানোর সাথে সাথে কোর্ড মিলে যায় বিষয় টি এক কথায় দারুন ছিলো। সব মিলিয়ে আজকের পর্বটি অনেক বেশি ভালো লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
আকর্ষণ তো বাকি রয়ে গেল ভাই, চরকায় কোড মিলে যাওয়ার পরে কি হয়েছিল সেই গল্পটা জানতে ইচ্ছে করছে। তাছাড়া মজার বিষয় হচ্ছে আইসক্রিম খাওয়ার পাশাপাশি একটি কোড মিলিয়ে বড় গিফট পাওয়া যাবে যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পটা এমন জায়গায় এসে শেষ করলেন। পরবর্তী পর্ব জানার আগ্রহ তৈরী হয়েছে। ভৌতিক সাইকেল এর গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব আমি পরেছি। আমার কাছে খুবই ভালো লাগেছে। এই পর্বে আপনি আমাদের মাঝে সুন্দর গল্প উপহার দিয়েছেন। আপনার উপস্থাপনা সুন্দর ছিল। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।