গল্প: ভৌতিক সাইকেল। || Story: Ghost Cycle.

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago
গল্প: ভৌতিক সাইকেল

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করতো এক গরিব সাইকেল মিস্ত্রী। মূলত তিনি সাইকেল তৈরির একটি কারখানায় চাকরি করতেন। কারখানার কাজের পর তিনি অবসর সময়টাতে, সাইকেল মেরামতের কাজ করতেন। বাবার এই কঠোর পরিশ্রম দেখে ছেলে রুবিউক তাকে সাহায্য করার জন্য ছুটে আসতো। তবে তিনি বারবার তাকে মানা করতেন কারন তার আশা ছিল রুবিউক লেখাপড়া করে অনেক বড় মাপের একজন মানুষ হবে।

তবে রুবিউক বারবার তার বাবার চারপাশে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করতো কারন তার বাবা একটা অদ্ভুত দেখতে সাইকেল কিনেছিলেন একটি লোকের কাছ থেকে। আর মূলত এই সাইকেলটাই রুবিউকের দূর্বলতার জায়গা। কিন্তু একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো তার বাবা সাইকেলটা কেমন যেন লুকিয়ে রাখতে চাইতেন। এমনকি তিনি নিজেও এটা চালাতেন না।

রুবিউক যখন কলেজে ভর্তি হয়, তখন হঠাৎ করেই তার বাবা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোন একটা অজ্ঞাত রোগ তাকে আক্রমণ করেছে। তিনি রুবিউককে ডেকে বললেন আমি হয়তো আমার অন্তিম কিছু সময় পার করছি, আমি তোমাকে বারবার সাবধান করছি তুমি ঐ সাইকেলটার কাছে যাবে না। আর আমি আশা করি তুমি লেখাপড়া করে একটা ভালো চাকরি করবে, আমি চাইনা তুমি আমার মতো সাইকেল মিস্ত্রীর কাজ করে। কথাগুলো বলে শেষ করার পর ছেলে রুবিউককে জড়িয়ে ধরলেন।

তার পরদিন রুবিউকের বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রুবিউক বাবাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে যায়, কারন মা হারা ছেলেটির একমাত্র বাবাই ছিল সব। বাবার সৎকার কাজ শেষ করার পর সে যখন বাড়িতে ফিরছিল তখন তার বাবার সাইকেল গ্যারেজের দিকে চোখ পরলো। বাবা তাকে বারবার নিষেধ করলেও তার ভেতর প্রবল কৌতুহল জেগে উঠলো। সে ধীরে ধীরে গ্যারেজের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো, কিন্তু সে অবাক হলো। তার বাবা সাইকেলটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতেন কিন্তু আজ এটা একদমই উন্মুক অবস্থায় তার সামনে রয়েছে। তবে দেখতে এটা বেশ অদ্ভুত ডিজাইনের, এটাকে সুন্দর বলা যাবেনা। বাবাকে হারিয়ে এমনিতেই রুবিউকের মন ভীষণ খারাপ, আর বাবা বারবার নিষেধ করে গিয়েছেন এটাতে হাত দিতে।

রুবিউক আজকে কোনমতে নিজের কৌতুহল পুষে রেখে বাড়ির দিকে ছুটতে ছুটতে বাড়ির দিকে গেলো। যাবার সময় খুব ভালো করে গ্যারেজের দরজা লাগিয়ে যায়।
রাতে অনেক চিন্তায় পরে যায়, সে কিভাবে নিজের জীবন এগিয়ে নিয়ে যাবে। এরপর তার ভেতর থেকেই সিদ্ধান্ত নিলো, সে তার বাবার কাজটা এগিয়ে নিয়ে যাবে।
পরদিন সকাল বেলায় গ্যারেজে এসে সে যা দেখতে পেলো তা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।

সাইকেলটা যে জায়গায় দেখেছিল, সেটা এখন অন্য জায়গায় এবং চাকা গুলোতে কাঁদা লেগে রয়েছে। তাহলে কি কেউ তাদের সাইকেল চালিয়ে বেরিয়েছে? 😳



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

যেহেতু তার বাবা তাকে সাইকেলটার কাছে যেতে বারণ করেছিল আর সে সিদ্ধান্ত নেয় তার বাবার পোষাটাকেই ভবিষ্যৎ হিসেবে নিবে। সবকিছু শেষে পরদিন সকালবেলায় গ্যারেজে গিয়ে কি হয়েছিল সেটা জানার ইচ্ছা রয়ে গেল।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

সাইকেল মিস্ত্রীর গল্পটি ভালোই লাগছে।সাইকেল মিস্তিরি আচরণ গুলো কেমন জানি অদ্ভুত রকমের। রুবিউক ওনার একমাত্র ছেলে। সাইকেল মিস্তিরি অজ্ঞাত রোগে মৃত্যুর আগে ছেলেকে পড়াশুনা করতে বলে গেছেন। ছেলে চায় বাবার ব্যাবসা কন্টিনিউ করতে এবং অদ্ভুত সাইকেলটি দেখতে পায়।পরদিন গিয়ে সাইকেল অন্য জায়গায় এবং কাঁদা মাখানো মনে হয় কেউ চালিয়েছে ভীষণ রহস্যময় গল্পটি ভাইয়া। বেশ ভালো লাগলো গল্পটি।ধন্যবাদ সুন্দর একটি রহস্যময় গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ে যথাযত মন্তব্যের জন্য। আশাকরি সামনের পর্বগুলো পড়বেন।

 6 months ago 

আমার তো মনে হচ্ছে পরের পর্বে ভীষণ মজা পাবো। এক জায়গায় সাইকেল দেখে সে আসে। এর পরের দিন গিয়ে দেখে সাইকেল অন্য জায়গায় এবং সাইকেল এর চাকায় কাদা রয়েছে। আসলেই মনে হচ্ছে অদ্ভুত সাইকেল। আশাকরি পরের পর্বে ভালো ভাবে বোঝা যাবে। চমৎকার একটি পোস্ট উপহার দিয়েছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

হ্যা গল্পটার সামনের পর্বে দারুন আকর্ষণ রয়েছে।
ধন্যবাদ তোমাকে গল্পটি পড়ার জন্য।

 6 months ago 

ভাই আপনি গল্পটা এমন জায়গায় এসে শেষ করে দিয়েছেন যে মনের ভিতর একটা অপূর্ণতা থেকে গেল। রুবিউক পরের দিন সকালে এসে সাইকেল গ্যারেজে কি দেখতে পেল এটা জানার আগ্রহ অত্যন্ত পরিমাণে রয়ে গেল। তাছাড়া তার বাবার এরকম হঠাৎ করে মরে যাওয়ার যে ব্যাপারটা, সেটাও খোলাসা হলো না। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত একটা কৌতূহল রয়ে গেল। আশা করি, পরবর্তী পর্বে এই ব্যাপারটা রিলিজ করবেন ভাই। তবে গল্পটা কিন্তু অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে, এটা স্বীকার করতেই হয়।

 5 months ago 

আগামী দুই পর্বে গল্পটার কাহিনী পরিষ্কার হবে। হ্যা এমন জায়গায় শেষ করলাম যেখানে পাঠক বেশ টানটান উত্তেজনা অনুভব করবে ☺️

 5 months ago 

এখনো দুটি পর্ব ভাই!🤔 ঠিক আছে, অপেক্ষায় থাকলাম ভাই গল্পটার কাহিনী বোঝার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57305.83
ETH 3076.79
USDT 1.00
SBD 2.40