গল্প: ভৌতিক সাইকেল। (পর্ব -৪) || Story: Ghost Cycle.
চড়কা ঘুরতে ঘুরতে নীলকন্ঠ হীরা বেরিয়ে এসেছে, আমি আর আমার স্ত্রী নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমরা যখন উপহারটা হাতে পেলাম তখন চারিদিকে কেমন একটা হৈ হৈ রব উঠে গেছে। মানুষজন ক্রমশ আমাদের চারপাশে ভিড় করতে লাগলো, খবরটা চারিদিকে বাতাসের গতিতে ছড়িয়ে পরতে লাগলো। আর এতো দামী আর মূল্যবান উপহার পেয়েছি তাহলে সবাই আগ্রহ দেখাবে না কেন। হঠাৎ করেই ঝড়ের গতিতে আইসক্রিম কোম্পানির মালিক চলে এসেছে, তিনি আমাদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলতে শুরু করলেন এটা অনেক মূল্যবান একটি পাথর, যা বর্তমানে আপনাদের সম্পদ। আশাকরি এরজন্য আপনি অনেক বেশি টাকা পাবেন।
লোকটি আমাকে পাশে ডেকে নিয়ে বলে এই পাথরের জন্য আপনাকে কত টাকা দিতে হবে? সে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বলে, এটা রাখুন পাথরটি আমাকে দিয়ে দেন। আমার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়, এই মূল্যবান পাথর কমপক্ষে দশ লক্ষ টাকা দাম রয়েছে। আর তাছাড়াও আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে হলে নূন্যতম পাঁচ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। আমি লোকটার প্রস্তাব অস্বীকার করলাম, সে আমার উপর অনেটা রাগ নিয়ে বললো এই মূল্যবান পাথর আমার ব্যাবসার লক্ষী। এটা দেখিয়ে আমি লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছি, কিন্তু এটা কিভাবে তোমার ভাগ্যে লেগে গেছে জানি না। যাইহোক আশাকরি তুমি এটা এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাকে দেবে। আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সেখান থেকে আমার সাইকেল আর স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। তবে লোকটা আমাদের দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে।
মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলাম এবং পরিকল্পনা করতে লাগলাম দূরে কোথাও এই নীলকন্ঠ হীরা বিক্রি করে অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারবো। আমার স্ত্রী আর আমি বেশ খুশি মনে বাড়ি ফিরছিলাম, আর আমাদের সাইকেলটাও মনে হয় আমাদের সুখের ব্যাপারটা আন্তাজ করতে পেরেছে। কারন সে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলছে। কিন্তু আমরা কেউ বুঝতে পারিনি সামনে আমাদের কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
ডব্লিং শহর থেকে যখন হরবলি বনের দিকে ঢুকলাম তখন আমার মনে কেমন একটা খটকা লাগলো কারন হয়তো মূল্যবান জিনিসটা সাথে রয়েছে। যাইহোক বারবার সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করছিলাম। একটু ভেতরের দিকে পৌঁছাতে সুচাং দস্যুর দল পথ আগলে দাঁড়িয়েছে , সূচালো তীর ধনুক আর খন্জর নিয়ে। ভয়ে আমার বুক কেঁপে উঠলো, বুঝতে বাকি রইলো না কোম্পানির মালিক ওদের কাছে খবর পাঠিয়েছে এই নীলকন্ঠ হীরা উদ্ধার করার জন্য।
আমি দ্রুত সাইকেলটা ঘুরিয়ে পেছনের দিকে ছোটাতে চেষ্টা করলাম। মূহুর্তেই একটি তীর এসে আমার স্ত্রীর বুক ভেদ করে ঢুকে গেছে। আমি সাইকেল দাড় করাতেই আর একটা তীর আমার বুকে বিঁধে যায় কিন্তু তখনও আমার জ্ঞান ছিল। ওরা ছুটে এসে আমার স্ত্রীর বুকে খন্জর চালিয়ে তাকে আরো রক্তাক্ত করতে থাকে। রক্তে আমার সাইকেলটা ভিজতে থাকে। আমি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ওদের আঘাত করতে গেলাম তখন আর একটা খন্জর এসে আমাকে ক্ষত বিক্ষত করতে থাকে। আমার চোখের পানি আর রক্ত সাইকেলটাকে ভেজাতে থাকে। আমার আত্মা ছটফট করতে করতে এই সাইকেলটার ভেতরে ঢুকে যায়। ওরা মূল্যবান পাথরটা নিয়ে সেই মালিকের কাছে দিয়ে দেয় আর আমাদের লাশ জঙ্গলের মধ্যে হায়নার দল ছিঁড়ে খেয়েছে। সাক্ষী আমার এই সাইকেল আর আমার অতৃপ্ত আত্মা। আমি ওদের ছাড়বো না, ছাড়বো না 😡
সাইকেলটা ভীষণ গর্জন করতে থাকে। চারিদিক থেকে কেমন একটা ভয়ানক শব্দ আসতে থাকে, রুবিউক এতোক্ষণ সব শুনছিল। কিন্তু এখন তার আবারো ভয় লাগতে শুরু করে। 😥
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1759257260214391144?t=lTuZg9vleZ8xdaMXDV5f5w&s=19
দেখতে দেখতে ভৌতিক সাইকেল পর্ব -৪ চলে এসেছে। এই গল্পটির মধ্যে অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করে। মূল্যবান পাথরের জন্য তাদের জীবন দিতে হয়েছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে পরের পর্ব আরো বেশি দুর্দান্ত হতে চলেছে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ লিমন গল্পটা পড়ার জন্য।
পরে পর্ব হয়তো আরো ভালো লাগবে।
গল্পের শেষের অংশটা অনেক বেশি বেদনাদায়ক ছিল। দুজনকে এভাবে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার বিবরণ করে অনেক খারাপ লাগলো। পরবর্তী পর্ব টা পড়ার আগ্রহটা আরো বেড়ে গেল অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
ধন্যবাদ ভাই গল্পটা পড়ার জন্য।
হ্যা শেষের দিকটা ভীষণ বেদনাদায়ক, আসলে তারা নৃশংসভাবে খুন হয়।।
আশাকরি পরবর্তী পর্ব পড়বেন।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে ভৌতিক সাইকেল পর্ব -৪ উপহার দিলেন। আপনার উপস্থাপনা খুবই ভালো ছিল। এই ধরনের পোস্ট পড়তে আমার অনেক ভাল লাগে। রুবিউক এর আবারো ভয় লাগতে শুরু করে। তার বাকি পর্ব গুলো পড়তে প্রবল ইচ্ছে জেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ নাজমুল গল্পটা পড়ার জন্য।
গল্পের পরের পর্ব আরো দারুন কিছু পড়তে পারবে।