গল্প: তৃষ্ণার্ত পৃথিবী ৪৪৪৪ সাল (ষষ্ঠ পর্ব) || Story: Thirsty Earth 4444.
(ষষ্ঠ পর্ব) |
---|
লুবেন বাবার দেয়া বাক্সটি খুলে ভীষণ আফসোস করতে থাকে, আর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে থাকে বোন রোজেলার মৃত্যু শোকে। কুইনি লুবেনকে শান্তনা দিতে থাকে, কিন্তু লুবেন কিছুতেই শান্ত হচ্ছিলো না। অবশেষে কুইনি তার হাতে জোড়ে চাপ দিয়ে বলে তুমি কি তোমার পিতা-মাতা আর বোনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ঐ শয়তানটাকে শাস্তি দেবে না? এবার লুবেন থমকে গেছে, কিছুক্ষণ স্থির থাকার পর সে কুইনিকে বলে এখন আমাদের কি করা উচিত? কুইনি বলে প্রথমেই আমাদের একটি আশ্রয় দরকার। আমাদের কাছে দুদিনের পানির সঞ্চয় রয়েছে, এই দুদিনের মধ্যেই যা করার আমাদের করতে হবে।
খুব সাবধানে চারিদিকে খেয়াল করতে করতে এগিয়ে যায় তিনজনের ছোট্ট দলটি।
প্রায় আধ কিলোমিটার এগিয়ে আসার পর তারা কিছুটা নির্জন জায়গায় চলে আসে, হঠাৎ দেখতে পায় পরিত্যক্ত একটি বাড়ি। বাড়িটি দেখতে বেশ সুন্দর কিন্তু মানুষ রয়েছে কিনা ভালোভাবে দেখতে হবে। রোবট অবলী তার বিশেষ একটি চাবি ব্যাবহার করে দরজা খুলে ফেলেছে। একি সোফার উপর দুজন মানুষের কঙ্কাল রয়েছে, তারা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে পানির অভাবে তারা মারা গেছে। বাড়িটি ঘুরে দেখে কুইনির পছন্দ হয়েছে তবে পানির পাম্পটি খারাপ হয়ে পরে আছে। সেটাও বিষয় নয় তাদের কাছে অন্তত দুদিনের পানি জমা রয়েছে, আর এই সময়ের মধ্যেই তারা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে এভোনাকের উপর আক্রমণ করবে।
এবার লুবেন আর অবলী সম্মানের সাথে লাশগুলো সৎকার করেছে। এরপর কুইনি আর লুবেন আলোচনায় বসেছে কিভাবে এভোনাকের উপর আক্রমণ করা যায়। এতো দিন সত্যিই লুবেন ভিরু হয়ে তার বোনের জন্য বেঁচে রয়েছে, কিন্তু এবার সে এভোনাকের সাথে মোকাবেলা করতে চায়। এদিকে কুইনির মনেও একই আগুন জ্বলছে। লুবেন আর অবলী বাক্সটি আবার খুলেছে, সেখানে বিভিন্ন রকম ভারী অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে কিন্তু অধিকাংশ অস্ত্র কিভাবে কাজ করে লুবেন জানেনা। তবে অবাক করে দিয়ে কুইনি সবগুলো নাড়াচাড়া করে দেখে নিচ্ছে, যেন সে এগুলোর সাথে পরিচিত। লুবেন বুঝলো কুইনি কোন সাধারণ মেয়ে নয়, তার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। ঠিক তার নিচেই আরো একটি বাক্স দেখতে পেলো কুইনি।
অবাক হয়ে লুবেন তাকিয়ে রইল, পুরো অবলীর মতো একটি রোবটের শরীরের অংশ। তাছাড়াও একটি কৃত্রিম অনুভূতি হৃদয় রয়েছে, যা ছোট্ট নীল আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। এবার প্রথমেই লুবেন এবং কুইনি অবলীর সাহায্য নিয়ে আরো একটি অবলী তৈরি করে ফেলেছে তারা। অবশেষে কৃত্রিম অনুভূতি হৃদয়ের বিশেষ সুইচে চাপ দিয়ে চালু করা হলো অবলী দুই কে। এই কৃত্রিম অনুভূতি হৃদয় একটি অসাধারণ জিনিস যার মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি এই অস্ত্র গুলোর কাজ করার কৌশল খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিয়েছে অবলী এক এবং দুই। অবলী এক এবং দুই কে কিছুটা দূরে পাহারায় পাঠিয়ে দিয়েছে। এবার লুবেন এবং কুইনি অস্ত্র প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করেছে। অদ্ভুত ব্যাপার কুইনি সবগুলো অস্ত্র ভীষণ নিখুঁত চালাতে পারছে তবে লুবেনের বেশ সময় লাগলো। পুরো আধাবেলা প্রশিক্ষণের পর এবার লুবেন সিগন্যাল পাঠিয়ে অবলী এক এবং দুই কে ফিরিয়ে এনেছে।
এবার কৌটাজাত কিছু খাবার খেয়ে কুইনি আর লুবেন পরিকল্পনায় বসেছে। লুবেনের বাবার মাধ্যমে সে এভোনাকের আস্তানার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছিল। লুবেন বলতে থাকে ওর আস্তানায় তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী রয়েছে। বাইরের দিকে পাহারায় রয়েছে পাঁচজন, ভেতরে আরো পাঁচজন এবং সর্বশেষে একটি বিচক্ষণ রোবট রিবলী আর এভোনাক। এবার কুইনি সবকিছু জানার পর বলে আচ্ছা এই দশজন পাহারাদারকে আমরা দেখে নেবো আর সর্বশেষে আমাদের দুই অবলীকে ছেড়ে দেবো রিবলীকে সামলানোর জন্য। আর আক্রমনটা হবে ঠিক গভীর রাতে। এভোনাকের শেষ দেখে ছাড়বো আমরা।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1619367398230093824?t=pzC9vH9TNlnKVcczcys9Ww&s=19