গল্প:) ভালোবাসার গোলক ধাঁধা ❣️ (পর্ব-০৩) || Story:) Love sphere puzzle.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
গল্প :) ভালোবাসার গোলক ধাঁধা ❣️ (পর্ব-০৩)

sunrise-2846882_640.webp

সংগ্রহশালা

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব

"দ্বিতীয় পর্বের পর"

অবশেষে অর্নবের বুদ্ধিতে আদ্রিতার সাথে অসীমের বন্ধুত্ব শুরু হলো। অসীম বেশ খুশি, বিকেলে খুশির চোটে অর্নবকে পেট ভরে নাস্তা খাইয়ে দিল। সবমিলিয়ে অর্নব বেশ খুশি কারণ অবশেষে অর্নব ওদের বন্ধুত্ব করিয়ে দিতে পেরেছে। আর অর্নব জানে এই বন্ধুত্ব এক সময় গভীর প্রেমে রুপ নেবে। কিন্তু আদ্রিতার মনে কি চলছে সেটা দুই বন্ধুর কেউ জানে না।

সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, প্রতিদিন অসীম সকাল বিকেল ফোন দিয়ে আদ্রিতার খবর নেয়। বলা যায় বেশ বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে দুজনের। কয়েকদিন হলো অর্নবের সাথে আদ্রিতার কথা হয়নি, সেই মধুর কন্ঠস্বরটা সে বেশ মনে হারাচ্ছে। কিভাবে বলবে অসীমকে সে তার বন্ধুর সাথে কথা বলতে চায় । এদিকে তার ফোন নাম্বার তার কাছে নেই। আদ্রিতা চিন্তা করলো এবার ফোন করলে কোন ভাবে অর্নবের সাথে কথা বলতেই হবে। বিকেলে অসীম ফোন করার সাথে সাথেই সে স্বাভাবিক কথা বলার মধ্যেই অর্নবের কথা জানতে চাইলো এবং কথা বলতে চাইলো। অসীম অর্নবকে ফোনটা দেয়ার সাথে সাথেই আদ্রিতা বলে উঠলো, কি মহাশয় মানুষ মানুষকে এভাবে ভুলে যায়। আবার অর্নবের মিষ্টি হাসি। আদ্রিতার মনে হলো মন প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। অর্নব বললো, আরে তোমাকে কি ভোলার উপায় আছে অসীম তো দিনরাত কান ঝালাপালা করে দেয়, তোমার কথা বলতে বলতে। তো কেমন চলছে দিনকাল তোমার। আদ্রিতা বললো বেশ ভালো ভাইয়া। আচ্ছা ধরুন হঠাৎ করে যদি আমি আপনাদের সামনে এসে হাজির হই তাহলে কেমন হবে বিষয়টি। অর্নব বললো কার কাছে কেমন লাগবে জানি না কিন্তু অসীমের তো আনন্দের সীমা থাকবেনা। আদ্রিতা হেসে বললো, ঠিক আছে তবে আপনাকেও আমার ভীষণ দেখার ইচ্ছে রয়েছে। অর্নবের আবার মিষ্টি হেসে বললো, ঠিক আছে কবে আসছো ? আদ্রিতা বললো আগামী শুক্রবার আপনাদের কলেজের পাশেই যে পিকনিক স্পট আছে ওখানে আমরা পিকনিকে আসছি। তো আপনারা তৈরি তো ? অর্নব অসীমকে বললো অসীম তৈরি হয়ে থাক আদ্রিতা আসছে। অসীমের খুশির সীমা নেই, বললো আমরা আসবো বলে দে। এদিকে আদ্রিতা বেশ খুশি কারণ অর্নবকে এই প্রথম দেখবে।

heart-732338_640.png

সংগ্রহশালা

শুক্রবার সকাল থেকেই অসীম বেশ ছটফট করছে কারন আজ আদ্রিতা আসছে দেখা করতে। অর্নবকে নিয়ে পিকনিক স্পটে হাজির। জায়গাটা বেশ সুন্দর আর পরিপাটি করে সাজানো, ভেতরে অসংখ্য ফুলের গাছ রয়েছে। খাবারের দোকানের অভাব নেই। তিনজন নিরিবিলি একটা জায়গায় বসলো, অসীমকে তো সে আগে থেকেই চেনে। এদিকে অর্নব বললো হ্যালো আদ্রিতা আমি অর্নব আর আসল নাম মাইনুল ইসলাম। আদ্রিতা অর্নবের সুদর্শন মুখের দিকে তাকিয়ে ওর কথা বলার ধরন দেখছে আর চোখে হারাচ্ছে। হঠাৎ সে বলে উঠলো আপনি মুসলমান ? আমি তো ভাবলাম আমাদের ধর্মের, না হলে অসীম দাদার সাথে এতো মিল কিভাবে সম্ভব। অর্নব আবারো হেসে বললো আমি মানুষ ভালোবাসি ধর্ম নয়, আর ভালোবাসা আমার কাছে সবথেকে বড় ধর্ম মনে হয়। ব্যাস আদ্রিতার বুঝতে বাকি রইলো না, অর্নবের মানুষকে ভালোবেসে কাছে টেনে নেয়ার অতিমানবীয় ক্ষমতা রয়েছে। আদ্রিতা বাকিটা সময় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। এদিকে অসীম বেচারা খাবার যোগাড় করে এনে এটা ওটা গল্প করতে লাগলো।

তিনজন বেশ খানিকক্ষণ পিকনিক স্পটের ভেতরে ঘুরেছে আর গল্প করেছে। তবে আদ্রিতার চোখ ছিল এই অতিমানবীয় মুসলমান ছেলেটার দিকে, মনে হচ্ছে যেন হৃদয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। বিদায় বেলায় আদ্রিতা কিছুটা কায়দা করে অর্নবের ফোন নাম্বার নিয়ে নিল।

রাতে আদ্রিতা আর ঘুমুতে পারছেনা, সারাক্ষণ শুধু সেই মিষ্টি হাসি আর মানুষটার কথা মনে পড়তে লাগলো। তাহলে কি সে সত্যিই অর্নবের প্রেমে পরে গেছে ? কিভাবে সম্ভব সে মুসলমান আর আমি হিন্দু ? তবে সে বলেছে ভালোবাসা তার কাছে বড় ধর্ম। তাহলে আমি তাকে ভালোবাসতেই পারি। না কিছুতেই আদ্রিতা আর নিজের ভেতর স্থির থাকতে পারছেনা। তাকে বলতেই হবে, আমি তাকে ভালবাসি। কিন্তু অসীম সে কি এটা ভালোভাবে নেবে? কিন্তু সে আর এতো কিছু চিন্তা করতে চাচ্ছেনা। সে মোবাইলটা হাতে নিয়ে অর্নবকে ফোন করলো। ওপাশ থেকে হ্যালো অর্নব বলছি। আদ্রিতা ভূমিকা না করেই বললো আমি আদ্রিতা। আপনার সাথে কিছু জরুরী কথা রয়েছে। অর্নব বললো কি বলো। আচ্ছা ধরুন কেউ যদি কাউকে মন প্রান উজাড় করে ভালোবেসে ফেলে তাহলে কি করা উচিত ? অর্নব হেসে বললো যদি সত্যিই ভালোবেসে ফেলে আর কোন উপায় না থাকে তাহলে মন খুলে বলে দেয়া উচিত, ভালোবাসি। আদ্রিতা বেশ ভয়ে ভয়ে বললো, অর্নব আমি আপনাকে ভালবাসি, আমাকে গ্রহণ করুন। অর্নব রিতিমত আকাশ থেকে পরলো।

" চলবে "

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...oir1T9XCqiGTh8bScur5DPK6L8ezK64pgqQkMoRLpnbMPpgM39QfD85m551fNjvVZABToby9FGtQTSDLritVkg3vFrE74djU36yesYz7VGsMpQkZ3P14kTotDL.png

banner-abbVD.png

Sort:  
 2 years ago 

ভালোবাসা তার কাছে বড় ধর্ম।

গল্পটি মতই পড়তেছি তত বেশি ভালো লাগতেছে। অর্নবের প্রেমে পরে গেছে মেয়েটি। অসীমের কি হবে দেখার অপেক্ষায় রইলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম খুব শিগগিরই পাবো।

 2 years ago 

হ্যা লিমন পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আসছে।
দেখা যাক অসীমের কি হয়।

 2 years ago 

গল্পটি পড়ে খুব মজা পেলাম।আবার কেন যেন একটা অশনি সংকেত ও মনের মধ্যে স্পর্শ করছে। ইতিমধ্যে অর্নবের প্রেমে পরে গেছে মেয়েটি। তবে, অসীমের কি হবে সেটা ভেবেই মনের ভিতর একটু কৌতূহল কাজ করছে।,,,♥♥

 2 years ago 

অসীমের ব্যাপারটি বুঝতে হলে পরের পর্ব পড়তে হবে।
ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

অবশ্যই পড়ব,,,

 2 years ago 

ওয়াও গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। মেয়ে টির প্রেমের প্রস্তাব ছেলেটি পেলো। তবে ছেলে কি বলবে তার অপেক্ষায় আছি। বাস্তবে মুসলিম হিন্দু সম্পর্কটা অনেক তফাৎ গড়ে দেই। আপনি খুব অসাধারণভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অনেক আপু আমার গল্পটি পড়ার জন্য।
আসলে ভালোবাসাই অনেক বড় ধর্ম এটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি আর এখানে একটি তৃমাত্রিক প্রেমের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।

 2 years ago 

দারুন লিখেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ফটো'র সোর্স লিঙ্ক টা ভুল আছে।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আমি সংশোধন করে নিচ্ছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59484.75
ETH 2614.53
USDT 1.00
SBD 2.41