বাস্তব জীবনের গল্প :-( সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল || পর্ব- ০৩

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বাস্তব জীবনের গল্প :-(
সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল
পর্ব- ০৩

female-4983032_640.jpg

সংগ্রহশালা

🍄 সুত্রপাত 🍄

বাস্তব জীবনের গল্পের তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সামনে। এ গল্পটি আমার এক আত্মীয়ের জীবনে ঘটেছে যার অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং অধিক লোভের ফলে তার জীবনে ভয়াবহ কষ্ট নেমে আসে। যেখানে টিকটক একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আপনারা চাইলে আমার গল্পের প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্ব দেখে আসতে পারেন। যাক তৃতীয় পর্ব শুরু করছি।



সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল

সুইটি কাজ সবেমাত্র শুরু করেছে সুদানি মহিলার বাসায়। সেখানে পৌঁছানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঐ গর্ভবতী ফিলিপাইনের কাজের মহিলাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সুইটি আরো ঘাবড়ে গেলো কারন সব কাজ তাকে একা হাতে করতে হবে এখন। ঐ বাসায় মোট দশজন মানুষের পনেরোটা বেডরুম এবং প্রতিটির সাথে সংযুক্ত বাথরুম এবং সুবিশাল ডাইনিং স্পেস সবকিছু ঝকঝকে তকতকে করে পরিষ্কার করতে হবে। তারপর রান্নার কাজ, তাদের কাপড় ধোয়া এবং আয়রন করা সব একা হাতে করতে হবে তাকে। এসব চিন্তা করেই তার দু'চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। শুধু কি তাই সুদানি মহিলার এক ভাই রয়েছে তার আচরন তার কাছে মোটেও সুবিধার লাগলো না। সবমিলিয়ে সে শুধু উপর ওয়ালাকে ডাকতে শুরু করলো। এদিকে আকাশ পাতাল চিন্তা করতে করতেই সুদানী মহিলার কর্কশ গলা শুনতে পেলো। একেতো সে কাতারের ভাষা তেমন বোঝেনা তারপর আবার চিৎকার দিয়ে কথা বলার কারনে সে কিছুই বুঝতে পারেনা। রাগী মহিলা কাছে এসে দুহাত শক্ত করে ধরে জোরে একটা ঝাটকি মারলো। সুইটির মনে হলো দুহাত ছিড়ে গেছে 🥺 আবার গলা টিপে দেবে আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি কাজ করতে বললো। সুইটি ভয়ের চোটে কাজ শুরু করে দিল যতটুকু সে বুঝতে পারে।

face-5450354_640.jpg

সংগ্রহশালা

প্রথমদিন কাজ করতে গিয়ে হাত হাতে আয়রনের ছেকা লেগে হাত পুরে যায় এবং অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে তার শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা আর জ্বর অনুভব হতে থাকে। দ্বিতীয় দিন ভীষণ কষ্টের সাথে সে কাজ করতে থাকে কিন্তু সেই ম্যাডামের ভাই তার দিকে কুনজরে তাকাতে থাকে আর এদিকে ম্যাডামে অত্যাচার তো আছেই। সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে এভাবে তারপক্ষে কাজ করা সম্ভব নয় সে দেশে ফিরতে চায়। সে প্রথমে লুকিয়ে খুব কষ্টে সোলায়মানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ইমুতে। সোলাইমান সাফ জানিয়ে দেয়‌ তাকে সে দেশে ফেরত পাঠাতে পারবে না কারন তার উপর ম্যাডাম অনেক টাকা ইনভেস্ট করেছেন। সুইটি মুর্ছা যাবে এমন অবস্থা। যে মানুষটি তার সাথে দিনরাত মিষ্টি কথা বলতো সে আজ অচেনা হয়ে গেছে। সে অঝরে কাঁদতে থাকে। দেশে সবাই মানা করা সত্বেও সে চলে এসেছে এখানে তার আরো ভালো থাকার আশায় কিন্তু হায় একি হলো তার 🥺। তখন সে সিদ্ধান্ত নিল তার বোন জামাই ইমন এবং তার বোন নিপুর সহযোগিতা নেবে। কিন্তু বিদেশে আসার সময় ইমন বারবার নিষেধ করেছিল তাই সুইটি শেষ পর্যন্ত ইমনকে অপমান করেছিল কিন্তু এখন ইমনকেই ফোন করতে হবে। সে ইমনকে ফোন করে সব খুলে বলে এবং সহযোগীতা চায়।

" চলবে "

Sort:  
 2 years ago 

আপনার এই টিকটক এর প্রথম গল্পটি পড়েছিলাম। ২য় পর্ব পড়া হয়নি দেখে আজ অতটা বুঝলাম না। ঐ পর্ব পড়ে নতুন করে এটি পড়তে হবে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি গল্প পর্ব আকারে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই।।
যদি সম্ভব হয় দ্বিতীয় পর্ব পড়বেন আশাকরি।
দোয়া রইল আপনার জন্য 💌

 2 years ago 

আপনার বাস্তব জীবনের আগের গল্পগুলো আমার পড়া হয়নি ভাইয়া তবে আজ গল্পটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। আমাদের দেশে যে সকল বোনেরা প্রবাসে জীবনযাপন করেন অর্থাৎ কর্মের জন্য দেশের বাইরে চলে যান তাদের কষ্টের জীবনের কথা আমরা এর আগে অনেক শুনেছি। তারা কি পরিমান নির্যাতনের শিকার হয়তো আমরা সবাই জানি। জীবন ও জীবিকার তাগিদে তাদের দেশ ছেড়ে সন্তান বাবা-মা ছেড়ে যেতে হয় এটি যে কতটা কষ্টের তা হয়তো আমরা কখনই বুঝব না ।শুধুমাত্র যারা ভুক্তভোগী তারা ছাড়া। একজন মেয়ে হয়ে বিদেশের মাটিতে অচেনা এক জায়গায় বসবাস করা সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেক কষ্টের। তার পরেও যদি ঠিকমত মজুরি পাইত তাহলে কথা ছিল। সেটাও পায় না। আপনি খুব সুন্দর একটি বাস্তব জীবনের গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ।আমার খুবই ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

আমার গল্পটার প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব পড়লে হয়তো আর একটু ভালো বুঝতে পারতেন পুরো ঘটনাটা কি ঘটেছে।
ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀

 2 years ago 

বাস্তব জীবনের গল্প গুলো থেকে প্রতিনিয়ত শিক্ষা নিচ্ছি আমরা। স্যার আপনার এই গল্প এখন কার সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ লিমন।
আসলে এগুলো বাস্তব জীবনের গল্প এবং শেখার আছে অনেক কিছু।।
দোয়া রইল লিমন।

 2 years ago 

মহিলাটি সত্যিই অনেক বিপদে পড়ে গেছে এরকম আমরা অনেক ঘটনা শুনেছি মেয়েদেরকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে বিদেশে পাচার করে দেয়, চমৎকার লিখেছেন ভাই।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই।
সে লোভের বশবর্তী হয়ে নিজের ফাঁদে নিজেই পড়েছে। বেশ বিপদ রয়েছে পরবর্তী পর্বে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74