বাস্তব জীবনের গল্প :-( সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল || পর্ব- ০১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বাস্তব জীবনের গল্প :-( সর্বোনাশা টিকটক
" পর্ব- ০১ "


female-4983032_640.jpg

সংগ্রহশালা

🍄 সুত্রপাত 🍄

প্রথমেই নিজের মতো কয়েকটি লাইন লিখছি এরপর যাচ্ছি মূল গল্পে। এটা আমাদের একজন আত্মীয়ের জীবনের গল্প যা কিছুদিন আগেই ঘটে গেছে। আমাদের জীবনের কিছু অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ফলে বেশ কিছু ভয়ংকর গল্প তৈরি হয় যায়, যার জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত থাকি না।

" সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল "

নুরুন নাহার সুইটি মধ্যম বয়সের একজন সুদর্শন মহিলা। স্বামী কাতার প্রবাসী আজ বেশ কয়েক বছর ধরে। সুইটি তিন ছেলে নিয়ে কুমিল্লা জেলা শহরে বসবাস করে। বেশ ভালোই চলছিলো সবকিছু। সন্তানদের স্কুল এবং সংসারের কাজ নিয়ে তার দিন ভালোই কাটছিল। স্বামী শাহীনের সাথে ইমুতে বেশিরভাগ সময় যোগাযোগ হয়। শাহীন বেশ সহজ সরল মানুষ এবং কাতারে একটি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। সন্তান তিনজন তার কলিজার টুকরো। ইমুতে যখন কথা হয় তখন শাহীন ঘন্টার পর ঘন্টা সন্তানদের সাথে কথা বলতো। সুইটি মাঝে মাঝেই বিরক্ত হতো। যা এভাবেই চলছিলো সবকিছু। হঠাৎ ইমুতে কথা বলার সময় সুইটি টিকটকের একটি বিজ্ঞাপন দেখে খুব আকৃষ্ট হয়ে টিকটকে প্রবেশ করে। সে স্বভাবতই সাজগোজ করতে ভালোবাসে। একটু একটু করে টিকটকের সবকিছু শিখে নিয়ে ভিডিও আপলোড করতে শুরু করে। স্বামীর সাথে কথা বলার সময় কমতে থাকে কিন্তু টিকটকের ফলোয়ার বাড়তে থাকে। এদিকে স্বভাবতই শাহীনের মন খারাপ হতে থাকে। এভাবেই চলছে ছয় মাস। শাহীন মন খারাপ করে ইদানিং দুই তিনদিন পরপর সন্তানদের সাথে কথা বলে তবে স্ত্রীর সাথে বেশ মনমালিন্য চলছে। তবে শাহীনের মনে কেমন যেন কুডাক ডাকতে থাকে। সন্তানদের মুখে আস্তে আস্তে জানতে পারে তার মা কিভাবে টিকটকের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। শাহীন রাগের বশবর্তী হয়ে সংসার খরচ কমিয়ে পাঠাতে শুরু করে। এতে সে আরো বেপরোয়া হয়ে পরে এবং বিভিন্ন টিকটক গ্রুপের সাথে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সবাইকে জানায় তার স্বামী নেই এবং সে ডিভোর্স প্রাপ্ত। আসলে টিকটকে বিভিন্ন দালাল চক্র রয়েছে যারা মেয়েদের বিদেশে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে পাচার করে দেয় বিভিন্ন দেশে। মূলত টিকটক এবং ফেসবুকের মাধ্যমে এরা বন্ধুত্ব তৈরি করে মেয়েদের সাথে। তেমনি একটি দালাল সরদার সোলাইমানের নজরে পরে যায় সুইটি।

face-5450354_640.jpg

সংগ্রহশালা

সোলায়মান ধীরে ধীরে সুইটির সাথে ঘনিষ্ঠ হতে থাকে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা পাঠাতে থাকে। এভাবেই ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে সোলায়মান। একটি সময় পর সোলায়মান সুযোগ বুঝে তাকে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বসে। আভিজাত্য এবং অর্থের লোভে সুইটি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। এদিকে সোলায়মান আসলে কাতার প্রবাসী একজন আদম ব্যাপারী। সে কাতারের ভিসার ব্যবস্থা করে, যেখানে সুইটির জন্য অপেক্ষা করছে সীমাহীন কষ্ট এবং লাঞ্ছনা।

" চলবে "

Sort:  
 2 years ago (edited)

সর্বোনাশা টিকটক যখন জীবনের কাল চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন। টিকটক হলো একটি অসুস্থ মানুষদের জন্য। আসলে এসব টিকটিক আইডি ব্যবহার করে অনেকের সংসারে কাল চলে এসেছে। ঠিক একই ভাবে নুরুন নাহার সুইটি জীবনেও তাই হয়েছে। সুখে থাকলে ভূতে কিলায়। বিষয়টি জেনে খারাপ লাগলো সুখে থাকার পরেও সুখের সংসার নষ্ঠ। স্যার আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।

 2 years ago 

ধন্যবাদ লিমন চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀।
সামনে আরো কয়েকটি পর্ব আসছে।
পুরো ঘটনাটা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

 2 years ago 

সুইটির মত এরকম অনেক নারী আছে যারা সামান্য ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে সংসার জীবন ত্যাগ করে অন্যত্র পালিয়ে যায়। বা ফাঁদে পড়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয় যেখানে তাদের অনিশ্চিত জীবন। এইতো কদিন আগের ঘটনা আমার মহল্লায় পাঁচ বছরের মেয়ে সন্তানের মা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটি ছেলের সাথে পরিচয় পরবর্তীতে বুঝতেই পারছেন...। শেষ পর্যন্ত ওই মা তার বাচ্চাকে রেখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এ ধরনের ঘটনা হর হামেশাই ঘটছে আমাদের সমাজে। তাই এই ব্যাপারটা একটু পরিষ্কার উপস্থাপনা করার জন্য গল্পটি লিখা।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀

 2 years ago 

আসলে অর্থের লোভ আর জনপ্রিয়তা পাওয়ার লোভ খুবই সাংঘাতিক।এখন এই রকম ঘটনা হরহামেশাই শোনা যাচ্ছে।কিন্তু কিছু বলার নেই, যার মানুষিকতা যেমন আরকি।তবে মহিলার যে চরিত্র ভালো নয় সেটা বলাই যায়।যাইহোক পরবর্তীতে কি হয় সেটাই জনার অপেক্ষায়।

 2 years ago 

অর্থ এবং জনপ্রিয়তার লোভ যে মানুষকে সত্যিই কত নিচে নামাতে পারে তা বলা যায়না।
ধন্যবাদ ভাই সুচিন্তিত মতামত দেয়ার জন্য 🥀

 2 years ago 

আমি কি বলবো কি উত্তর দিব ভাষা খুজে পাচ্ছি না। কোথায় আছে সুখে থাকলে ভূতে কিলায় এটা আমাদের আঞ্চলিক ভাষা। আপনার গল্পটি পড়ে খুবই খারাপ লাগছে। কারণ যার তিনটি সন্তান আছে সে একটিবারের জন্য চিন্তা করল না সে আসলে কি করতে যাচ্ছে। আর যার সাথে ফোনে কথা যার ব্যাকগ্রাউন্ড জানেনা অর্থের মোহ তাকে অন্ধ বানিয়ে দিয়েছে। আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে, তবে আমি বলব আমাদের সমাজে মা বোনদের সচেতন হওয়ার জন্য। তবে আপনার গল্পটি পড়ে বুঝতেই পারছি তার কপালে কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে। আমাদের সাথে এত সুন্দর গল্প উপহার দেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
সামনের পর্বে তার জন্য কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।

 2 years ago 

টিকটকের পক্ষে ভাই আমি কখনোই না। এটা আমার কাছে খুবই অস্থির লাগে। এটার ভিতরে যে বাজনা গুলো থাকে সেগুলো শুনলে আমার মাথা ঘুরে যায়। আপনি টিকটক নিয়ে খুবই সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন। প্রথম পর্ব খুবই ভালো লেগেছে পরবর্তী পর্বের জন্য কিন্তু অপেক্ষায় রয়েছি।

 2 years ago 

সোস্যাল নেটওয়ার্ক এর মধ্যে সবথেকে আনসোস্যাল হলো এই টিকটক যা অনেক মানুষকে নষ্ট করছে।
ধন্যবাদ ভাই সময় নিয়ে পড়ার জন্য।

 2 years ago 

সত্যি বলতে ভাই এই টিকটক প্রথম থেকেই আমার একেবারে ভালো লাগেনি। এজন্য
এখন পযর্ন্ত আমার ফোনে এসব অ‍্যাপস আমি ইনস্টল করি নাই। এটা একজন স্বামীর জন্য অনেক কষ্টের। এবং কী জানি সুইটি ম‍্যামের জন্য কী বিপদ অপেক্ষা করছে। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।

বি:দ্র: ভাই এই লেখা গুলো যদি সাধারণ মাপে থাকত তাহলে পড়তে সুবিধা হতো। ছোট হওয়াই একটু অসুবিধা হচ্ছে আমার ব‍্যক্তিগতভাবে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
হ্যা আগামী পর্বে একটু কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে সুইটি ম্যামের জন্য।
লিখা গুলো এই মাপের লিখতে আমার ভালো লাগে। দেখি পরবর্তী পর্বে লিখা আরেকটু বড় করা যায় কিনা 🤔

 2 years ago 

অর্থের লোভে পড়ে অনেক মানুষ এভাবে প্রতারিত হয়। সুইটির মতো অনেক নারীর জীবনের কাহিনি এর সাথে মিলে যাবে। কাতারে নিয়ে গিয়ে সুইটিকে হয়তো অন্য জনের কাছে বিক্রি করে দিবে। এর পর তার উপর নেমে আসবে নির্মম অত্যাচার। লেখাটি খুব বাস্তব।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
হ্যা সামনের পর্বে কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।
আশাকরি পরবর্তী পর্বে সাথে থাকবেন।

 2 years ago 

টিকটিকের প্রতি এখন আসক্তি প্রায় ছোট বাচ্চা থেকে বিয়ে করা মহিলা পর্যন্ত। নুরুন নাহার টাকার লোভে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে যাবে ঠিকই কিন্তু একটা সময় অর্থের লোভই কাল হয়ে দাঁড়াবে। গল্পটি বর্তমান সময়ের জন্য শিক্ষণীয় ছিল ভাইয়া। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম 😍

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার জন্য।
পরবর্তী পর্বে একটু কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে সুইটির জন্য।

 2 years ago 

আমি আপনার এই গল্পের লাস্ট পর্বে পেয়েছি, কিন্তু মনে হল প্রথম থেকে গল্পটি পড়া উচিত তাই এই পোস্ট থেকে শুরু করলাম, গল্পের শুরুটা ছিল বেশ চমৎকার।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আমার গল্পটি পড়ার জন্য।
আসলে এখানে বোঝার অনেক কিছু রয়েছে।
বাস্তব জীবনের অনেক কিছু তুলে ধরা হয়েছে ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 60115.56
ETH 3203.28
USDT 1.00
SBD 2.46