যাহ! আজকেও ঘুড়িটা কেটে গেল || 💯❤️ আমার বাংলা ব্লগ 💝

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আজ - মঙ্গলবার

৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মে ১৪, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

আসসালামুয়ালিকুম প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি। আমি বাংলাদেশ থেকে ইমন আজকে নতুন একটি পোস্টে আপনাদের সবাইকে আবারও স্বাগতম জানাচ্ছি

field-6558125_1280.jpg

source

ঘুড়ি একটা শখের জিনিস বলা যায় ৮ থেকে শুরু করে ১৫ বছর বয়সের মধ্য হয়তোবা এই শখটা প্রত্যেকটা মানুষেরই জীবনে একবার না একবার হয়েই থাকে। আমিও ছোটবেলায় ঘুড়ি অনেক পছন্দ করতাম তবে এটা সুন্দরভাবে তৈরি করতে পারতাম না। ওই যে কোন রকম তৈরি করলেও দেখা যাচ্ছে যে আর আকাশে উড়ে না। আমাদের এদিকে কিছু বিখ্যাত ঘুড়ি ছিল এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ডাউক, ফিঙ্গি রাজা ডোপ এছাড়াও সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য ছিল কোয়ারিঘুরি। আসলে এই ঘড়িগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আকাশেও অনেক দূর পর্যন্ত উঠে। এর মধ্যে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ঘুড়ি হচ্ছে কোয়ারি ঘড়ি। এটি আকাশে তেমন একটা উপরে না উঠলেও এর প্রচুর টান হত যেটা সামলানো মুশকিল হয়ে যেত। আমার দাদা একটা ঘুড়ি তৈরি করেছিলেন, ঘুড়িটার উচ্চতা প্রায় এক মানুষ সমান। ঘঙড়িটা যখন প্রথম তৈরি করেছিলেন তখন তো আমি হয়নি তবে যখন বুদ্ধি হল তখন দেখেছিলাম দাদার আর ঘরের চাঁলের ওই ঘড়ির পাখাগুলো রাখা থাকতো।

child-2887483_1280.jpg

source

তো প্রথমত এটা তো বুঝতে পারতাম না তারপরে যখন বুঝতে পারলাম তখন দাদাকে প্রশ্ন করলাম যে দাদা এটা কেমনে তুমি তৈরি করলা ? এই বিষয়ে সম্পর্কে তখন দাদা খুলে উত্তর দিলেন এটি তৈরি করতে ওনার প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লেগে গিয়েছিল আর যেহেতু অনেক বড় একটা ঘুড়ি তাই এটা ওড়ানোর জন্য সুতো ব্যবহার না করে দড়ি ব্যবহার করা হতো, আসলে আমাদের এদিকে যখন ধান কাটা হয় তখন মাঠগুলো সব ফাঁকা হয়ে যায়। তখন ঘুড়ি উড়ানোর একটা প্রতিযোগিতা হয়। এই প্রতিযোগিতায় যে যত সুন্দর ঘুড়ি তৈরি করবে এবং যার ঘুড়িটা সবচেয়ে উঁচুতে উড়বে তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করা হয় এবং যে দ্বিতীয় হবে তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে এভাবে পুরস্কৃত করা হতো। দাদা হঠাৎ করে কি জানি কি মনে হল বলল যে এই বছরে আমি আমার ওই ঘুড়িটা পুনরায় আবার মেরামত করব এবং আকাশে উড়িয়ে দেখব যে কতদূর উঠে। যেহেতু দাদা বলেছে যে ঘুড়িটা ওড়াবে তাহলে তো কোনো না কোনোভাবেই ঘুড়িটা আকাশে ওড়াবেই। কারণ সে অনেক রসিক এবং শখ প্রেমিক একজন মানুষ ছিলেন।

child-510604_1280.jpg

source

এবার এক পর্যায়ে ঘুড়ি মেরামত করার কাজ শুরু হলো এবং প্রায় দুইদিন কষ্ট করার পরে ঘুড়িটা ঠিকভাবে মেরামত করলেন। আসলে আগে যেহেতু ঘুড়িটা তৈরি করা ছিল তাই তেমন একটা কষ্ট হয়নি। তো যখন এটা তৈরি হয়ে গেল বিকেল বেলায় আমি দাদা এবং আর কয়েকটা লোক মিলে প্রথম চেষ্টা করলাম এটা আকাশে উড়ানোর জন্য কিন্তু যেহেতু অনেক বড় একটা ঘুড়ি ছিল 2-3 জন মিলেও দড়ি সামনে রাখতে পারছে না। কারণ আপনারা সবাই জানেন যে কোয়ারি ঘুড়ির প্রচুর টান হয়ে থাকে। তো অবশেষে প্রায় তিন চার জন ধরে এবং আমি এবং দাদা ঘুড়িটা আকাশে ঠেলে উড়িয়ে দিলাম তারপরে অবশেষে ঘুড়িটা আকাশে উঠলো এবং ওই দড়িটা একটা বড় গাছের সঙ্গে বেঁধে দেয়া হলো। আসলে আমার দাদা এখন আর দুনিয়াতে বেঁচে নেই তবে উনি অনেক শখ প্রেমিক একজন মানুষ ছিল। উনার অনেক কাজ এবং কৃতিত্ব এখনও রয়ে গেছে। তো এটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটা ঘুড়ি।

kite-2104099_1280.jpg

Source

এমন আরেকটা ঘুড়ি ছিল সেটা হচ্ছে ডাউক ঘুড়ি। আমাদের বা গ্রামে মামুন ভাই অনেক সুন্দর ঘুড়ি তৈরি করতে পারতেন । তো এই কারণে যখন ঘুড়ি ওড়ানোর সময় হতো উনি অনেকগুলো ঘুড়ি তৈরি করে বিক্রয় করতেন । আমি যেহেতু ভালো করে ঘুড়ি তৈরি করতে পারতাম না তাই আমার ছোট আব্বু কে বলেছিলাম আমি একটা ঘুড়ি ওড়াতে চাই। তো ছোট আব্বু মামুন ভাইয়ের কাছে গিয়ে একটা ঘড়ি ক্রয় করে এনে দিয়েছিলেন তখন ঘুড়িটার দাম নিয়েছিল মনে হয় ৩০ টাকা। তো ঘুড়িটা ছোট হলেও ঘড়িটার প্রচুর টান ছিল। প্রথমত আমরা প্যারাসুট সুতো দিয়ে এই ঘুড়িটা আকাশে তুলেছিলাম কিন্তু মনে হচ্ছিল এই প্যারাসুটস সুতো টিকবে না কেটে নিয়ে যাবে। কয়েক ঘন্টা পর এমনটাই হলো যখন জোরে একটা বাতাস আসল তখন প্যারাসুট সুতোটা ঠাস করে কেটে নিয়ে চলে গেল । আর আমি ঘুড়ির পিছনে পিছনে দিলাম এক দোর। তো অনেকক্ষণ যাওয়ার পরে আমাদের এদিকে মাছের পুকুরে অনেক সুতো টাঙানো থাকে তো গিয়ে দেখলাম যে একজনের মাছের পুকুরে সুতোই ঘুড়ি আটকে গেছে । অবশেষে ঘুড়িটা যখন পেলাম তখন পানির ভিতরে পড়ে ঘুড়িটার কাগজগুলো নষ্ট হয়ে গেছিল।

sunset-3926798_1280.webp

source

কালো সুতা দিয়ে ঘুড়িটা অনেকদিন উড়িয়েছিলাম আসলে ওই সুতার নাম আমার ঠিক এখন মনে পড়ছে না তবে ওটা কে হয়তো বা কট সুতা বলে সবাই আখ্যায়িত করত । সুতাটি দেখতে অনেক কালো ছিল এবং অনেক শক্ত। ওইভাবেই ছেলেবেলাটা ঘুড়ির পেছনে উড়িয়ে , উড়িয়ে কাটিয়েছিলাম 🤭 যাই হোক ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থেকে ব্লগটি উপভোগ করার জন্য । আবারও খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে নতুন কোন ব্লগ পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 last month 

💝💝❤️

 last month 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই শৈশবকালে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতি অনেক নেশা থাকে সবার মধ্যে। যেটা আমার মধ্যেও ছিল স্কুল থেকে বাড়িতে এসেই ঘুড়ি নিয়ে বের হতাম মাঠের উদ্দেশ্যে। মাঠে মাঠে শুধু আমাদের মতো সমবয়সীরা ঘুরে উড়াইতো। আসলে দাদার সমবয়সী লোকেরা অনেক সুন্দর সুন্দর ঘুড়ি বানাতে পারতো। তাদের অনুরোধ করে ঘুড়িগুলো তৈরি করে নিতাম। সেই সময় গুলো খুবই মিস করি । আবার অনেক গল্প শুনেছি এক মানুষ সমান ঘুড়ি যেটা উড়িয়ে দেওয়ার পর ধরে রাখা খুবই কষ্ট ছিল। সেজন্য গাছের সাথে বেঁধে রাখা হতো। তাছাড়া আমিও এক মানুষ সমান ঘুড়ি দেখেছি।

 last month 

তা সঠিক বলেছেন ভাই, আমিও ছোটবেলার সেই মুহূর্তগুলো এখন প্রচুর মিস করি।

 last month 

একদম ছোটবেলার সেই সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত যেন এক মিনিটের মধ্যেই খুঁজে পেলাম। একদম ঠিক কথা ছোট থেকে শুরু করে কিশোর বয়স পর্যন্ত সময়টা যেন ঘুড়ি উড়ানোর সময়। যাইহোক ভালো লাগলো এত সুন্দর স্মৃতিচারণ আর উপস্থাপনা পড়ে।

 last month 

অবশ্যই ভাইয়া, যদিও এখন আর ঘড়ি ওঠানো হয় না তবে আগের স্মৃতিগুলো এখনো মনের ভিতরে কেমন কেমন করে।

 last month 

দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শৈশবকালে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতি অনেক নেশা থাকে বিশেষ করে ছেলেদের। একটি সময় থাকে যখন ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় তখন কে কার থেকে কত উপরে উঠাতে পারে আর সেটার আনন্দ ছিল অন্যরকম।তবে ঘুড়ি উড়ানো দেখতে অনেক ভালো লাগে। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 last month 

আসলেই সেই স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে, তখন শুধু প্রতিযোগিতা হতো কে কেমন ঘুড়ি উড়াতে পারে।

 last month 

চমৎকার স্মৃতি শেয়ার করলেন আপনি আপনার দাদার তৈরি করা ঘুড়ি সম্পর্কে। আগের মানুষগুলো ঘুড়ি তৈরি করতে অনেক বেশি অভিজ্ঞ ছিলেন। যেহেতু তখন খোলামেলা আকাশ ছিল প্রচুর পরিমাণ ঘুড়ি উড়াতো মানুষ ঘুড়ি প্রতিযোগিতা হত তখন। যাক অবশেষে আপনার বাবার কিনা ঘুড়ি উড়িয়ে দিলেন আকাশে। ব্যাপারটি খুবই ইন্টারেস্টিং ছিল। যেহেতু আপনি ঘুড়ির পিছনে দৌড়ায় ছিলেন অনেক হা হা হা। পুরো বিষয়টা পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম।

 last month 

তা যা বলেছিলাম আপু, অবশেষে ঘড়িটা উড়িয়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম 💯🤭।

 last month 

ঘুড়ি উড়ানো নিয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই। তবে আমার বাবা আর আমার হাসবেন্ড দুজনের ই ভীষণ টান রয়েছে ঘুড়ি উড়ানো নিয়ে। ওদের থেকে দারুণ দারুণ মজার সব স্মৃতি শুনেছি ঘুড়ি উড়ানো সম্পর্কে। আজ আপনার ও দারুণ কিছু স্মৃতি জানলাম। সাথে কয়েক প্রকার ঘুড়ির নামও জানলাম, যা আগে জানতাম না।

 last month 

হিহিহি, সত্যি বলতে এই ঘুড়িগুলো আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি ছিল এবং সেই সাথে অনুভূতি দুটোই।

 last month 

শৈশবের ছোট বড় সকল ঘটনাই আমাদের একেকটি স্মৃতির ধারক। আপনার ঘুড়ি উড়ানোর পোস্টটি পড়ে ছোট বেলায় বাবার সাথে ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। আমার প্রথম এবং শেষ ঘুড়ি উড়ানো। খুব ইচ্ছে করে ঘুড়ি উড়াতে কিন্তু কিভাবে উড়ায় কিছুই জানি না।
আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

 last month 

যাই হোক ঘুড়ি ওড়ানো সম্পর্কে আমিও তেমন একটা জানিনা তবে ভালো লাগবে অনেক।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.030
BTC 60843.73
ETH 3406.11
USDT 1.00
SBD 2.57