পাকা বকুলের বাঁশি || আমার বাংলা ব্লগ

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আজ - মঙ্গলবার

০৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মে ২১, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

আসসালামুয়ালিকুম প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি। আমি বাংলাদেশ থেকে ইমন আজকে নতুন একটি পোস্টে আপনাদের সবাইকে আবারও স্বাগতম জানাচ্ছি

berry-1238070_1280.jpg

source

বকুলের ফুল আমার অনেক ভালো লাগে কারণ এই ফুলের সুবাস জাস্ট ওয়াও ! তবে সেই সাথে বকুল খেতেও কিন্তু বেশ মজাদার । আমি জানিনা হয়তোবা আপনারা এটা খেয়েছেন কিনা তবে বকুল যখন পেকে হলুদ হয়ে যায় তখন এটা খেতে বেশ মজা লাগে। তবে এটি খেলে মুখ অনেকটাই কষানো হয়ে যাই। তো সেই ক্ষেত্রে আপনারা এর সাথে লবণ মাখিয়ে খেতে পারেন তাহলে আমার মনে হয় আরো বেশি ভালো লাগবে। তো বকুল খাওয়ার পাশাপাশি এটা দিয়ে কিন্তু একটা সুন্দর জিনিস তৈরি করা যায় সেটা হচ্ছে বকুলের বাঁশি। আমি জানিনা এর আগে আপনার এগুলো তৈরি করেছেন কিনা তবে ছোটবেলা যখন প্রাইমারিতে ছিলাম তখন এগুলো আমি অনেক তৈরি করতাম এবং সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের প্রাইমারি স্কুলের পাশেই একটা বকুল গাছ ছিল এবং এটা সাইজও তেমন একটা বড় না । তাই আমরা খুব সহজেই এই গাছটিতে উঠে পড়তাম এবং পাকা বকুল খেতাম এবং ‌ এর বিচিগুলো দিয়ে বাসি তৈরি করতাম। তো বাঁশি তৈরি করার জন্য তেমন একটা লম্বা প্রসেস ফলো করতে হয় না খুব সহজেই এটা তৈরি করতে পারবেন।

mimusops-elengi-348211_1280.jpg

source

চলুন তাহলে একটু শেয়ার করি আমরা কিভাবে এটি তৈরি করতাম। তো প্রথমত আমরা হলুদ রঙের পাকা বকুলগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করতাম তারপরে ওগুলো লবণ দিয়ে খেতাম । খাওয়ার পরে বীজ টা অবশিষ্ট থাকতো ওটা একটা খর খরে কোন দণ্ডের সাথে অনেকক্ষণ যাবত ঘষতাম একপাশ। তো অনেকক্ষণ যাবৎ একপাশ ঘষার পরে এটা ক্ষয় হয়ে যেত এবং তারপরে ভিতরের সাদা আসগুলো দেখা যেত । তখন আমরা ওই সাদা আসগুলো যখন ভেতর থেকে বের করে ফেলতাম তখন ওই বীজ একটা বাসির মত আকার ধারণ করত। এবার যখন ওটা হাতের ভিতরে রেখে জোরে করে ফু দিতাম তখন এটা বেজে উঠত। তো এটাই হচ্ছে সিম্পল একটা প্রসেস এটা তৈরি করার জন্য । তবে এটা তৈরি করে যে কত আনন্দ পেতাম সেটা হয়তো ওখানে থাকলেই শুধু মাত্র উপলব্ধি করা যাবে। এই ছোট, ছোট বিষয়গুলো আমাদের জীবনটাকে আরো রঙ্গিন এবং উপভোগময় করে তোলে। তবে এখনকার জেনারেশনের মধ্যেও এই বিষয়গুলো তেমন একটা লক্ষ্য করা যায় না কারণ এরা অল্প বয়সেই হাতে ফোন পেয়ে যায়।

kids-3708586_1280.jpg

source

এর ফলে সোশ্যাল মিডিয়া গেমিং এ বিষয়গুলো এরা ঝুঁকে পড়ে এর ফলে শৈশবের আসল মজাটাই হয়তোবা এরা উপলব্ধি করতে পারে না। আমরাই মনে হয় শেষ জেনারেশন ছিলাম যারা এ ধরনের ছোট ছোট জিনিসগুলো নিয়ে ছোটবেলাটা কাটিয়েছি‌ ।আমাদের পর থেকে হয়তোবা এখন শুধু ছেলে মেয়েরা ফ্রি ফায়ার পাবজি এগুলোর পিছনেই লেগে থাকে যাইহোক আমরা আরো বেটার ফিউচার আশা করি এদের কাছ থেকে। প্রাইমারি শেষ করে যখন হাইস্কুলে উঠলাম তখন ৭-৮ ক্লাস পর্যন্ত বকুল নিয়ে অনেক খেলা করেছি। আমাদের হাই স্কুলের পিছনেও একটা বকুল গাছ ছিল তবে সমস্যা হচ্ছে এই বকুল গাছটাই লাল বোল্লার বাসা ছিল।‌ তো আপনারা হয়তোবা সবাই জানেন যে লালবুল্লার মোটামুটি ভালই বিষ থাকে এবং এটা যদি কোনভাবে শরীরে ফুল ফোটে তাহলে সেখানে অনেক ফুলে যায় এবং অনেক দিন যাবত ওখানে ব্যাথা থাকে তো এই ভয়ে আমরা ওই গাছটা উঠতাম না।

asian-giant-hornet-8335577_1280.webp

source

যদিও মাঝেমধ্যে বোল্লার কামড় খেয়েছি তবুও এ বিষয়গুলো অনেক ভালো লাগতো। আমরা ছেলেরা বকুল এর বাশি তৈরি করতাম এবং সকাল , সকাল এসে মেয়েরা দেখতাম বকুল তলায় এসে ফুল কুড়িয়ে নিয়ে যেত । অনেক সময় তো এদের ভিতর লক্ষ্য করা যেত ফুল নিয়ে ঝগড়া লাগতো ‌🤭 আমার বোনের জন্য আমিও মাঝেমধ্যে ফুল নিয়ে আসতাম এবং ওই ফুলগুলো দিয়ে মালা তৈরি করে কতই না খেলা করতাম। তবে যখন ফুলগুলো বাড়িতে নিয়ে এসে মালা তৈরি করে রাখার পরে এই ফুলগুলো বেশি দিন স্থায়ী হতো না কিছুদের মধ্যে দেখা যেত লালচে রং ধারণ করেছে এবং শুকিয়ে যাচ্ছে । তবে আমার মনে হয় যে গাছের ফুল গাছেই সুন্দর, গাছে থাকার সময় এই ফুলগুলো যে সুন্দর সুবাস দিত সারা স্কুল মনে হতো যে সুবাসে মো মো করত। তো যাই হোক পুরনো স্মৃতিগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে আমার মনটাও যেমন ফুরফুরি হয়ে গেল । আশা করি আপনাদের মাঝেও এমন কিছু স্মৃতি রয়েছে যেগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করে আমাদের উপর ভোগ করার সুযোগ করে দিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থেকে ব্লগটি উপভোগ করার জন্য সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এটাই কামনা করি।

🫂ধন্যবাদ!!!🤵


ব্লগার👨‍💼@emonv
ডিভাইস📱 Infinix note 11 pro

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

পাকা বকুলের বাঁশি কথাটি ভীষণ ভালো লাগলো।শুনেছি বকুল ফল খাওয়া যায় কিন্তু কখনো খাইনি। আপনারা বোলতার কামড় খেয়েও বকুল ফুল এবং ফল পেড়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ভালো লাগলো এটা জেনে যে আপনি বাজে বাজে আপনার বোনের জন্য বকুল ফুল করিয়ে দিতে এবং ভালা গেছে তা দিয়ে খেলতেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76781.75
ETH 3131.82
USDT 1.00
SBD 2.65