টাঙ্গাইল স্টেশনের পাঠাগার।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
টাঙ্গাইল বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম একটা ঐতিহ্যবাহী জেলা। টাঙ্গাইলের চমচম বাংলাদেশের মধ্যে বিখ্যাত। আপনাদের কে বলেছি একটা পোস্টের মাধ্যমে যে আমি একটা বিশেষ দরকারে টাঙ্গাইলে গিয়েছিলাম। তো টাঙ্গাইলে গিয়েছিলাম আমি ট্রেনে। এবং আমার ব্যাক করিও ট্রেনে। কিন্তু ট্রেন আসার প্রায় ঘন্টা দুই আগে আমি স্টেশনে চলে যায়। কারণ আমার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমি ছিলাম একা সেজন্য সময় কাটতে চাচ্ছিল না। ঐদিকে ফোনে চার্জ বা ডাটা কোনটাই নেই। ফোনও টিপতে পারছি না। এবং স্টেশনে একেবারেই লোকজন নেই। তো ভাবছি এই দীর্ঘ দুই ঘন্টা সময় আমি কী করব। কিছুক্ষণ টাঙ্গাইল স্টেশন টা ঘুরে দেখি। মোটামুটি বেশ ভালো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং সবচাইতে চমৎকার লেগেছে একেবারে নিরিবিলি। ট্রেনের সময় ছাড়া মানুষের কোলাহল থাকে না।
হঠাৎ আমার নজর পড়ে টিকিট কাউন্টারের পাশে একটা শেলফ এর দিকে। দেখেই আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় এবং কৌতূহলের লাগল। সেজন্য আমি এগিয়ে গেলাম সেদিকে। গিয়ে দেখি হ্যা যেটা ভেবেছি সেটাই। একটা সুন্দর বইয়ের শেলফ। যেখানে বেশ কিছু বই রয়েছে। এবং শেলফ এ লেখা রয়েছে "স্টেশন অনু পাঠাগার, ( বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার একটি বিশেষ প্রকল্প, )। এবং পাশেই আরেকটা ছোট নোটিশ রয়েছে আপনার পছন্দ মতো বই নিয়ে পড়ুন। এবং যাওয়ার সময় অবশ্যই সেটা যথাস্থানে রেখে যাবেন। ব্যাপারটা দারুণ লাগে আমার কাছে। সময় কাটানোর জন্য বই পড়ার চেয়ে আর উওম কী হতে পারে বলেন। আমি কাছে গিয়ে বেশ অনেক গুলো বই দেখলাম। সবগুলো কবিতার বই। শেষমেশ তালপাতার অক্ষর, মাহবুব আলম সুমনের লেখা কবিতার বইটা নিয়ে আমি পড়া শুরু করি।
বইটার মধ্যে অনেক গুলো কবিতা ছিল। ঐ সময়ে তো আর সবগুলো কবিতা পড়ে শেষ করা সম্ভব না। সেজন্য আমি প্রথম থেকে শুরু করলাম। যে কবিতা গুলো আমার বেশি ভালো লাগছিল টাইটেল ভালো ছিল সেগুলোই আমি পড়ছিলাম। এরমধ্যে একটা কবিতা ছিল মৃত পিন্ড। কবিতাটার ভাষা অসাধারণ। একজন প্রেমিক তার হারিয়ে ফেলা প্রেমিকাকে নিয়ে লিখেছে কবিতা টা। বহুদিন যাকে দেখেনি সে। তবে তার সবরকম খোজ খবর রেখেছে। সে ছেড়ে যাওয়ার পরে তার হৃদয় জুড়ে এখনও তার প্রেমিকার বসবাস। পরবর্তীতে আরেকটা কবিতা বেশ অসাধারণ লেগেছিল। কবিতা টার নাম ছিল প্রেত।
প্রেমের দেহ সৎকার শেষে
বেঁচে থাকে আত্মা,
স্মৃতির ঘারে চেপে বসে
কভু হয় না লাপাওা।
এটা ছিল কবিতাটার প্রথম চারটা লাইন। কী বেশ চমৎকার লাগছে না হা হা। এভাবে পড়তে পড়তে বেশ অনেক গুলো কবিতা আমার বেশ ভালো লেগে যায়। সত্যি বেশ সুন্দর ছিল কবিতা গুলো।
এভাবে কবিতা পড়তে পড়তে কখন যে আমার দুই ঘন্টা সময় কেটে গিয়েছে আমি বুঝতেই পারিনি। আমার কাছে বেশ ভালো লাগছিল। অন্যদিকে ট্রেনের সময় হয়ে গিয়েছে এবং দেখতে দেখতে স্টেশনে অসংখ্য লোক চলে এসেছে এটা আমি খেয়ালই করিনি। যাইহোক বেশ ভালো সময় কাটলো বইটা পড়ে। এরপর আমি বইটা যথাস্থানে রেখে দেয় এবং ট্রেনের অপেক্ষা করতে থাকি। সাধারণত যে সব জায়গা গুলোতে আমাদের অপেক্ষা করা লাগে যেমন ট্রেন স্টেশন বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক বা দীর্ঘ যাএার গাড়িতে এইরকম একটা অস্থায়ী লাইব্রেরি প্রয়োজন। যেখানে বেশ কিছু বই থাকবে। সময় কাটানোর জন্য সাধারণ মানুষ বইগুলো পড়তে পারবে। এবং পড়া শেষ হলে বইটা রেখে দিবে আবার যথাস্থানে। তাহলে কতই না ভালো হতো বলুন। এমন একটা উদ্যোগ নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু নেবে টা কে??
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | অক্টোবর ,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.