প্রথমবার স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া ; পর্ব:১।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
পরিকল্পনা ছাড়া কোনো কাজ কখনো ভালোভাবে শেষ করা যায় না। এটা যেমন সত্য কথা। তেমনি বেশি পরিকল্পনা করলে ঐ কাজটাও আবার শুরু করাই হয় না। এমনটা আমার সঙ্গে অনেক বার হয়েছে। ঘটনা টা গত বৃহস্পতিবারের। আমার সব বন্ধুরা শের-এ বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ড এর মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ দেখতে গিয়েছিল। কিন্তু আমার একটা সমস্যার কারণে যাওয়া হয়নি। আমার মনটা কিছুটা খারাপ হয়েছিল। যাইহোক সেটা চলে গিয়েছে। যদিও সেদিন বেশ বৃষ্টির কারণে ম্যাচটা বেশিক্ষণ খেলা হয়নি। বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ড এর শেষ ম্যাচ ছিল গত মঙ্গলবার। এইদিনও যে আমার বন্ধুরা খেলা দেখতে যাবে আমি জানতাম না। দুপুরে আমি দেখি ওরা খেলা দেখতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবং আমি গোসল করতে গেলাম।
গোসল করতে করতে আমার মাথায় একটা চিন্তা আসলো। কয়েক মাসের মধ্যে আর বাংলাদেশে বাংলাদেশের কোন ম্যাচ নেই। এবং আমি ঢাকায় সম্ভবত আর থাকব না। এটাই শেষ সুযোগ। সবাই যাচ্ছে যাই ওদের সঙ্গে খেলা দেখে আসি। গোসল শেষ করে বের হয়েই আমি বললাম এই আমি খেলা দেখতে যাব টিকিট কী পাওয়া যাবে? ওরা বলছে সত্যি তুই যাবি? আমি বললাম হ্যা আমি যাব। ওরা বলল ঠিক আছে টিকিট ম্যানেজ করা যাবে। শুধুমাত্র কিছু টাকা বেশি লাগবে এই যা। মিরপুরে ম্যাচ শুরু দুপুর ২ টাই। কিন্তু তখন বাজে ১ টা ১৫। আমি খুব দ্রুত তৈরি হয়ে গেলাম। এবং দেড় টার সময় বাসা থেকে সবাই বের হয়ে গেলাম। আমরা থাকি উওরাতে। এখন বাসে মিরপুর যেতে গেলে অনেকক্ষণ লেগে যাবে। এটার সমাধান একটাই মেট্রোরেলে যেতে হবে। আমাদের বাসা থেকে বেশ দূরে উওরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল।
সবাই মিলে বাসে করে চলে গেলাম উওরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনে। ভেতরে ঢুকেই প্রথম টিকিট কেটে নিলাম। উওরা থেকে মিরপুর-১০ এর ভাড়া মাএ ৪০ টাকা। এবং যেতে মাএ ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে বলতে পারেন। টিকিট কাটা শেষ হলে আমরা উপরে স্টেশনে চলে যায়। দেখি মেট্রোরেল আসতে এখনো দুই মিনিট বাকি আছে। ঐসময়ে আমি কয়েটা ফটোগ্রাফি করি। মেট্রোরেল এর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এর বিষয়টি আমার কাছে বেশ চমৎকার লাগে। উওরা দিয়াবাড়ি হচ্ছে মেট্রোরেল এর শেষ স্টেশন। সেজন্য এখান থেকে ট্রেন ছাড়ে পুরো ফাঁকা থাকে। ট্রেন আসলে আমরা উঠে পড়ি। এরপর ট্রেন ছাড়লে বাইরের দৃশ্যট উপভোগ করতে থাকি। মেট্রোরেল যখন চলে উপর থেকে ভিউ টা অসাধারণ লাগে। একে একে আমরা উওরা সেন্টার, পল্লবী, মিরপুর -১১ সবগুলো স্টেশন পাড় করে মিরপুর-১০ এ নেমে পড়ি। ততক্ষণে ম্যাচ ঐদিকে শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং বাংলাদেশের তিন উইকেট নেই।
মিরপুর -১০ মেট্রো স্টেশন থেকে স্টেডিয়ামের দূরত্ব মাএ দুই মিনিট। আমরা হাঁটা শুরু করে দেয়। দেখি স্টেডিয়ামের আশপাশে অনেকে টিকিট বিক্রি করছে কিন্তু বেশি দামে। বাংলা কথা বলে গেলে এরা হলো টিকিট ব্ল্যাকার। এবং আশপাশে অনেকে প্ল্যাকার্ড, জার্সি, ক্যাপ, পতাকা বিক্রি করছে। অনেকে আবার হাতে মুখে পতাকা একে দিচ্ছে সাবাস বাংলাদেশ লিখে দিচ্ছে। এবং যেহেতু ম্যাচের আগে সেজন্য প্রচুর পরিমাণ ভীড় ছিল। আমরা ঐভাবেই এগিয়ে গেলাম। আমাদের টিকিট ছিল ইস্টার্ন গ্যালারির আপার লেভেল। এবং আমাদের এন্ট্রি গেট ছিল -৫। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা এন্ট্রি গেট-৫ এ পৌছে গেলাম। দেখি গেটে বেশ ভীড়। খেলা শুরু হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ পাওয়ার প্লে প্রায় শেষ। এবং এখনই যেন সবাই প্রবেশ করছে। আমরাই লাইনে গিয়ে দাঁড়ালাম প্রথমে একজন টিকিট চেকার আমাদের টিকিট চেক করল। এরপর ভেতরে যেতেই আরেকজন পুলিশ সদস্য আমাদের পুরো শরীর চেক করল দেখল কিছু আছে নাকী। এবং বাইরে থেকে পানির বোতল, ব্যাগ কিছুই নিয়ে যেতে দেয় না এরা।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | সেপ্টেম্বর,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঠিক বলেছেন ভাই, অনেক কাজ আগে থেকে পরিকল্পনা করা থাকলেও সেটা করা হয়ে ওঠে না। আবার পরিকল্পনা ছাড়াও কোন কাজ হঠাৎ করেই হয়ে যায়। ঠিক যেমন আপনার প্রথমবার স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া হয়ে গেল হঠাৎ করেই। কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হলেও আপনি যে শেষ পর্যন্ত খেলা দেখার জন্য টিকিট পেয়ে গেলেন এটাই ভালো। নিশ্চয় খুব মজা করেছেন আপনারা সবাই মিলে সেদিন।
যেহেতু প্রথম বার সরাসরি স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গেলেন। আপনার অনুভূতিটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। সব চেয়ে বেশি ভালো লাগলো আপনি মেট্রোরেলে করে খেলা দেখতে গেলেন। এক দিকে খেলা দেখা হলো অন্যদিকে রেলে চড়া হলো। চমৎকার একটি মুহূর্ত আপনি আমাদের সাথে তুলে ধরলেন। অনেক ভালো লেগেছে আপনার অনুভূতি পড়ে।
স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়ার সুন্দর অনুভূতি আজকে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশি মূল্য দিয়ে টিকিট ক্রয় করে ও প্রথম খেলা দেখতে সক্ষম হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে অনেক কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো সব সময় পরিকল্পিত থাকে না হুট করে ই হয়ে যায়। কেমন ছিল আপনার আজকের পোস্ট এর বিষয়।
প্রথমবার স্টেডিয়ামে খেলা দেখার অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আমি ছোটবেলা একবার গিয়েছিলাম স্টেডিয়ামে। খেলা তো কিছুই বুঝতাম না।শুধু ভাই-বোনরা বড় ভাইয়ার সাথে মজা করতে গেলাম।শুধু খাওয়া আর খাওয়া,হিহিহি।আপনি উত্তরা থাকেন। সেখান থেকে মেট্রোরেলে করে স্টেডিয়ামে এলেন।আমার এখনো চড়া হয়নি।খুব ভালো লাগলো অনুভূতি গুলো পড়ে।